কারবালা : বাস্তবতা বনাম কল্পকথা - লেখক ফরিদ আল বাহরাইনি | Karbala : Bastobota Bonam Kolpokotha By Forid Al Bahraini

বই - কারবালাঃ বাস্তবতা বনাম কল্পকথা
লেখক - ফরিদ আল বাহরাইনি
অনুবাদক - মুহাম্মাদ নাফিস নাওয়ার
নির্ধারিত মূল্য - ১০০ টাকা
কারবালা : বাস্তবতা বনাম কল্পকথা - লেখক  ফরিদ আল বাহরাইনি | Karbala Bastobota Bonam Kolpokotha By Forid Al Bahraini | কারবালা ও তার ইতিহাস জানতে পড়ুন
কভার ছবি : কারবালা : বাস্তবতা বনাম কল্পকথা

কারবালার ঘটনা নিয়ে আমাদের সমাজে প্রচলিত আছে বিভিন্ন ভুল ধারণা। হুসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু-এর শাহাদাতের ঘটনার সাথে অধিকাংশ সাধারণ মানুষের পরিচয় ঘটে ‘বিষাদ সিন্ধু’ এর মতো বই কিংবা মুহাররমের তাজিয়া মিছিলের মাধ্যমে। এসব সূত্র থেকে সাধারণ মানুষের সামনে ফুটে ওঠে ইতিহাসের বিকৃত একটি রূপ। দুঃখজনক বিষয় হলো, প্রতিবছর আশুরার সময় অনেক জাতীয় পত্রিকাতেও তুলে ধরা হয় একই ধরনের ভুলে ভরা কথা। বস্তুনিষ্ঠতা, গ্রহণযোগ্যতা এবং ইলমের পোশাকে ফেরি করা হয় জাল-বানোয়াট বর্ণনা এবং মিথ্যে ইতিহাস। মুসলিম উম্মাহর ইতিহাসের এত গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায় সম্পর্কে ভুল ধারণার ব্যাপক প্রচলন নিঃসন্দেহে একটি জনপদ ও জনগোষ্ঠীর জন্য বিপজ্জনক। এর ফলে সৃষ্টি হয় দ্বিমুখী সমস্যার। একদিকে যেমন ঝুঁকি থাকে রাফিদ্বীদের মিথ্যাচারের নিপুণ বুননে প্রতারিত হবার, তেমনি আশঙ্কা থাকে আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা’আহর অনুসারী হিসেবে নিজেদের ইতিহাস ও আত্মপরিচয় নিয়ে সংশয়ে পড়ার।
আরো পড়ুন ⤵️
A Gift For Ramadan PDF | The Gift Of Ramadan PDF Download Free

অলসপুরে সোনার কলস pdf short আরকানুল ইসলাম | Oloshpure Sonar Kolos

আজ চিত্রার বিয়ে pdf : হুমায়ূন আহমেদ | aj chitrar biye by humayun ahmed (পিডিএফ)

আমাজনিয়া : জেমস রোলিন্স | অনুবাদ : রাকিব হাসান | Amaznia Bangla Anubad PDF Download Link

আগ্রহীদের জন্য কারবালার প্রকৃত ইতিহাস জানার সুযোগ যে নেই, তা না। ইতিহাসের বিভিন্ন বই, তথ্যভিত্তিক আলোচনা, বিভিন্ন বয়ান, লেকচার ইত্যাদির মাধ্যমে একজন পাঠক সত্যকে খুঁজে নিতে পারবেন। কিন্তু এ কাজটা করার জন্য প্রয়োজনীয় সময় ও শ্রম বিনিয়োগ করা হয়তো অনেকেরই হয়ে ওঠে না। সবচেয়ে সহজলভ্য উৎসগুলোর দিকেই হাত বাড়াবার প্রবণতা কাজ করে আমাদের মধ্যে। সহজে ও সংক্ষেপে কারবালার ঘটনা নিয়ে দলিলনির্ভর ঐতিহাসিক বর্ণনা খুঁজে পাওয়া বাংলা ভাষাভাষী পাঠকের জন্য এখনো তুলনামূলকভাবে কিছুটা কঠিন। এ কারণেই এ বই নিয়ে কাজ করা।

কারবালা : বাস্তবতা বনাম কল্পকথা মূল কথা

"কারবালা: বাস্তবতা বনাম কল্পকথা" বইটি মূলত ফরিদ আল বাহরাইনির "The Martyrdom Of Al-Husayn (In Light Of The Authentic Traditions)" বইয়ের অনুবাদ। লেখক মূল বইকে দুটি অংশে সাজিয়েছেন :

১) কারবালার ঘটনার ব্যাপারে সহীহ বর্ণনাগুলোর ধারাবাহিক উল্লেখ। এ অংশে স্থান পেয়েছে মু’আবিয়া রাদ্বিয়াল্লাহু 'আনহুর খিলাফতের সময় থেকে শুরু করে সায়্যিদিনা হুসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু 'আনহুর শাহাদাত পর্যন্ত ঘটনাপ্রবাহের সবচেয়ে দালিলিক ও নির্ভরযোগ্য বর্ণনাগুলো।

২) পরিশিষ্ট–যেখানে বহুল প্রচলিত বর্ণনাগুলোর অসংগতি এবং সেগুলোর ব্যাপারে আপত্তির জায়গাগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে।

Rauful Alam Book  Review

Read Before Buy

সাধারণ পাঠকের সুবিধার জন্য এ দুটি অংশের আগে সহীহ রেওয়ায়েতগুলোর আলোকে কারবালার ঘটনাপ্রবাহের সহজ বর্ণনা পাঠকের জন্য তুলে ধরা হয়েছে। আমরা আশা করি, সহজে ও সংক্ষেপে কারবালার সঠিক ইতিহাস জানার ক্ষেত্রে এ বইটি অত্যন্ত উপকারী হবে–ইন শা আল্লাহ। পাশাপাশি বোদ্ধা পাঠক কিংবা তালিবুল ইলমগণও তাদের গবেষণার ক্ষেত্রে বইটি থেকে উপকৃত হতে পারবেন, ইন শা আল্লাহ।

"কারবালাঃ বাস্তবতা বনাম কল্পকথা" বইটি অর্ডার করতে ইনবক্স করুন সমাহার ডট কম এর ফেসবুক পেইজে।

Review Credit 💕 Mahmudullah Anik

ভূমিকা 

কারবালা : বাস্তবতা বনাম কল্পকথা

ঘটনাপ্রবাহের আলোচনার যাবার আগে কারবালার ঘটনা সম্পর্কে সর্বাধিক প্রচলিত বর্ণনাগুলোর ব্যাপারে আগে কিছু কথা বলা দরকার। এ বর্ণনাগুলোর মধ্যে কিছু প্রাথমিক উৎস (প্রাইমারী সোর্স) থেকে নেয়া আর কিছু নেয়া হয়েছে দ্বিতীয় পর্যায়ের উৎস (সেকেন্ডারি সোর্স) থেকে।

অধিকাংশ সুন্নি কারবালা বা হুসাইন -এর শাহাদাতের ব্যাপারে কথা বলার ক্ষেত্রে সাধারণত রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করবে ‘আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া'-কে। কেউ কেউ হয়তো ইবনু হাজার ৯-এর ‘আল ইসাবা’-এর সূত্র ব্যবহার করবেন। ইবনু হাজার ৯-এর বর্ণনা ইবনু কাসীর ৯-এর চাইতে কিছুটা ভিন্ন। কিন্তু আমাদের যে
বিষয়টা মনে রাখতে হবে তা হলো ‘আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া’ কিংবা ‘ইসাবা’ দুটোই কিন্তু উৎস হিসেবে দ্বিতীয় পর্যায়ের বা সেকেন্ডারি সোর্স। আর এ দ্বিতীয় পর্যায়ের উৎসগুলো সাধারণত নির্ভর করে কয়েকটি প্রাথমিক উৎসের বর্ণনার ওপর। প্রশ্ন হলো
হুসাইন -এর শাহাদাতের ব্যাপারে জানার জন্য প্রাথমিক উৎসগুলো কী?

আমি এখানে সংক্ষেপে প্রাথমিক উৎসগুলো সম্পর্কে কিছুটা ধারণা দেয়ার চেষ্টা করব। সংক্ষেপে হলেও এ আলোচনাটুকু আগে সেরে নেয়া দরকার, তা না হলে বেশ কিছুটা অস্পষ্টতা থেকে যাবে।

কারবালার ঘটনার ব্যাপারে সর্বাধিক ব্যবহৃত প্রাথমিক উৎস হলো আবু মিখনাফ লূত বিন ইয়াহইয়া আল আযদির (মৃত্যু : ১৫৮ হিজরী) বর্ণনা। আল বিদায়া ওয়ান নিহায়াতে ইবনু কাসীর তার বর্ণনা উদ্ধৃত করেছেন। কিন্তু আবু মিখনাফের ব্যাপারে আছে বড় প্রশ্নবোধক চিহ্ন। মুহাদ্দিসিনের মতে সে একজন মিথ্যাবাদী। আবু মিখনাফের ব্যাপারে ইয়াহইয়া ইবনু মা'ঈন-কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেছিলেন, 'ওহ! সে তো আমর বিন শিমারের চেয়েও জঘন্য। [৩]

আর আমর বিন শিমার সবার কাছে পরিচিত ছিল একজন মিথ্যাবাদী হিসেবে। অর্থাৎ ইয়াহইয়া ইবনু মা’ঈন -এর মতে আবু মিখনাফ ছিল এক সর্বজনস্বীকৃত মিথ্যাবাদীর চেয়েও বড় মিথ্যাবাদী।

আবু হাতিম বলেন, 'তার বর্ণনাগুলো প্রত্যাখ্যাত। [৫]

তাহলে দেখুন, শুরুতেই কিন্তু আমরা একটা সমস্যা দেখতে পাচ্ছি। কারবালার ঘটনার ব্যাপারে যার বর্ণনা সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয়েছে, সে একজন মিথ্যাবাদী। এটা কিন্তু বেশ বড় একটা সমস্যা।

এটা হলো সর্বাধিক উদ্ধৃত বর্ণনার অবস্থা।

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উদ্ধৃত উৎস হলো তাবাক্বাত ইবনু সা'দ। ইবনু সা'দ একজন বড় মুহাদ্দিস। কিন্তু দুঃখজনকভাবে কোন কোন উৎস থেকে হুসাইন ৯-এর শাহাদাতের ব্যাপারে বর্ণনাগুলো তিনি নিয়েছেন, সেটা সুনির্দিষ্টভাবে তিনি উল্লেখ করেননি। তিনি ঢালাওভাবে কয়েকজন ব্যক্তির নাম বলেছেন, যাদের কাছ থেকে তিনি বর্ণনাগুলো উদ্ধৃত করেছেন। এদের একজন হলো মুহাম্মাদ বিন উমার আল ওয়াক্বিদি। এই ব্যক্তি মদীনার ইতিহাসের সবচেয়ে বড় মিথ্যাবাদীদের একজন হিসেবে পরিচিত।[] কাজেই কিছু বর্ণনা তিনি আল ওয়াক্বিদির কাছ থেকে নিয়েছেন বলেই মনে হয় এবং আল্লাহ -ই সর্বাধিক জ্ঞাত।

তবে আমরা যদি ধরেও নিই যে ইবনু সা'দ আল ওয়াক্বিদির কাছ থেকে কোনো বর্ণনা নেননি, তাতেও তেমন একটা অগ্রগতি হয় না। কারণ, কোন উৎস থেকে তিনি বর্ণনাগুলো নিয়েছেন তা ইবনু সা'দ সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করেননি। যদি ওয়াক্বিদির কাছ থেকে না নিয়ে থাকেন, তাহলে অন্য কারও কাছ থেকে নিয়েছেন। প্রশ্ন হলো, এই অন্য কেউটা কে?

কারবালা : বাস্তবতা বনাম কল্পকথা বইটির Short PDF দেখতে অথবা বইটি ক্রয় করতে এখানে ক্লিক করুন

আমাদের জানার কোনো উপায় নেই। কাজেই হয় তিনি মিথ্যাবাদী আল ওয়াক্বিদির উদ্ধৃতি দিয়েছেন, অথবা তিনি এমন কোন উৎস থেকে উদ্ধৃতি দিয়েছেন যা আমাদের কাছে অজ্ঞাত। ব্যাপারটা আসলে দুঃখজনক। ইবনু সা’দ যদি সুনির্দিষ্টভাবে তাঁর

[৪] দেখুন : লিসান আল মিযান : ৪/৪২২ [৫] ইবনু আবি হাতিম -এর আল জারহ ওয়াল তা'দিল কিতাবে উল্লেখিত (৭/২৪৭)।

[৬] মুহাম্মাদ বিন উমার বিন ওয়াক্বিদ আল আসলামি আল ওয়াক্বিদি আল মাদানি। আয যাহাবী তাঁর মিযান আল ই'তিদাল কিতাবে উল্লেখ করেছেন : ইবনুল মাদানি, ইবনু রাহাওয়াইহ, আবু হাতিম এবং আন নাসাঈ সবাই আল ওয়াক্বিদিকে মিথ্যা বলার দোষে অভিযুক্ত করেছেন। আয যাহাবী, তারপর বলেন, আল ওয়াক্বিদির দুর্বলতার ব্যাপারে ঐকমত্য রয়েছে। (৬/২৭৩-২৭৬)

সোর্স উল্লেখ করতেন, তাহলে পুরো বিষয়টা আমাদের জন্য অনেক সহজ হয়ে যেত।

আরেকজন বর্ণনাকারী হলেন আম্মার আয-যুহাইনি। তারিখ আত তাবারীতে কারবালার ব্যাপারে তার বর্ণনা পাওয়া যায়। এ বর্ণনাটি তুলনামূলকভাবে আকারে ছোট এবং স্পষ্ট। একটি মজার ব্যাপার হলো, হুসাইন -এর শাহাদাতের ব্যাপারে বর্ণনাগুলোর মধ্যে যেগুলো আকারে অপেক্ষাকৃত ছোট, সাধারণত সেগুলো সহীহ হয়ে থাকে। আয-যুহাইনির বর্ণনা আকারে ছোট তবে এর বর্ণনাসূত্রে একজন দুর্বল বর্ণনাকারী আছেন, খালিদ বিন ইয়াযিদ বিন আসাদ। এ কারণে আমরা পুরোপুরি ভরসা করতে পারছি না আম্মার আয-যুহাইনির বর্ণনাটির ওপরও।

আবুল আরাব আত তামিমির ‘আল মিহান’ কিতাবে আমরা পাই আবু মা’শার নুজাইহ বিন আবদুর রাহমানের বর্ণনা। আবু মা'শার একজন দুর্বল বর্ণনাকারী ছিলেন এবং তাঁর বর্ণনা গ্রহণযোগ্য না। ইয়াহইয়া বিন সা'ঈদ, ইবনুল মাদিনি, আল বুখারী, আন নাসাঈ, ইবনু আদী এবং দারাকুতনী সবাই-ই আবু মা’শারকে দুর্বল বর্ণনাকারী হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।

কাজেই আমরা একটা মৌলিক সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছি। সবগুলো প্রাথমিক উৎস হয় দুর্বল অথবা অনির্ভরযোগ্য। তবে আলহামদুলিল্লাহ আমাদের কাছে বিশুদ্ধ বর্ণনাসূত্রে পর্যাপ্ত পরিমাণ আলাদা আলাদা বর্ণনা আছে, যেগুলো একত্র করলে হুসাইন -এর শাহাদাতের ঘটনার ব্যাপারে একটি স্পষ্ট এবং বিশুদ্ধ ছবি ফুটে ওঠে। এ ধরনের অনেক সোর্স আছে, যেমন : তারিখ খলিফা ইবনু খাইয়্যাত, তারিখ আত তাবারী, সহীহ আল বুখারী, মু'জাম আত তাবারানি, মুসান্নাফ ইবনু আবি শাইবা। এসব সংকলনে বিভিন্ন উৎস থেকে এসেছে ছোট ছোট বিভিন্ন বর্ণনা। এ সবগুলো বর্ণনা সামনে রাখলে পরিপূর্ণ এবং বিশুদ্ধ একটি ছবি পাওয়া সম্ভব। এবং আমার মতে, কোনো মিথ্যাবাদীর বর্ণনার ওপর নির্ভর করার চেয়ে এ পদ্ধতিতে আগানোই উত্তম।

তবে পাঠকের মনে একটি প্রশ্ন আসতে পারে, ইমাম ইবনু কাসীর কেন আবু মিখনাফের বর্ণনার ওপর নির্ভর করলেন? একজন মিথ্যাবাদীর উদ্ধৃতি কেন তিনি দিলেন?

এ প্রশ্নের উত্তর আসলে বেশ সহজ। আবু মিখনাফের বর্ণনা অনেক বিস্তারিত, অনেক তথ্যবহুল। সুবিন্যস্ত এবং স্পষ্ট। তার বর্ণনায় এমন অনেক কিছু পাবেন যা অন্য কোথাও পাওয়া যায় না। কীভাবে কারবালায় একেকজন নিহত হয়েছেন, এমনকি

[৭] বিস্তারিত পরিশিষ্টে।

[৮] তারিখ আত তাবারী : ৩/১০৫৮

কারবালা : বাস্তবতা বনাম কল্পকথা বইটি PDF Download Free চাহিয়া লেখকদের নিরুৎসাহিত করিবেন না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ