Title | ম্যাগপাই মার্ডার্স |
Author | অ্যান্টনি হরোউইটয্ |
Publisher | চিরকুট |
Quality | হার্ডকভার |
ISBN | 9789849238256 |
Edition | 1st Published, 2019 |
Number of Pages | 432 |
Country | বাংলাদেশ |
Language | বাংলা |
ম্যাগপাই মার্ডার্স বই রিভিউ
"বইয়ের ভিতরে বই "!
বইয়ের ফ্ল্যাপ থেকেই জানতে পেরেছিলাম বিষয়টা। যে এটা একটা উপন্যাসের ভিতরের উপন্যাস!! যেখানে একই সাথে দুইটা আলাদা রহস্যের অবতারণা করা হয়েছে। তবে জিনিসটা এমন সুন্দর করে ২টা সম্পূর্ন আলাদা উপন্যাসের ফীল দিবে তা ভাবিনি। বিষয়টা বেশ মজার লেগেছে আমার কাছে৷ শুরুর দুই পৃষ্টার পরে এমনভাবে ১ম উপন্যাসটা শুরু হয়েছে যেনো মনে হচ্ছিলো আসলেই এটা একটা আলাদা গোয়েন্দা উপন্যাস সিরিজ। লেখকের বর্ণনা, আটিকাস পান্ড নামক ইমাজিনারি গোয়েন্দার ইমাজিনারি কিছু বইয়ের লিস্ট, বিভিন্ন প্রশংসা সূচক উক্তি দিয়ে বেশ গুছানো একটা বইয়ের শুরু করছি এমন একটা অনুভূতি দিচ্ছিলো বইটা। অথচ সেগুলা সবই স্রেফ আলাদা এই গল্পের জন্যই সৃষ্টি!!
ছবি : ম্যাগপাই মার্ডার্স বই pdf |
প্রথম রহস্য আবির্ভূত হয়ে ১৯৫৫ সালের পটভূমিতে। যেখানে স্যাক্সভি-অফ-এইভন নামক গ্রামে একটা অন্তেষ্টিক্রিয়ার আয়োজন করা হচ্ছে। কিন্তু ওই ঘটনার সাথে সাথেই সেই ছিমছাম নির্বিরোধী গ্রামটা একের পর এক অনিষ্টকর ঘটনা ঘটতে থাকে। যে কারনে এক সময় গ্রামে আসতে বাধ্য হন, এই আলাদা বইয়ের আলাদা সৃষ্টির প্রখ্যাত গোয়েন্দা আটিকাস পান্ড। এরপর স্বাভাবিক রহস্য উপন্যাসের মতোই এগিয়েছি এই পর্বের বাকী অংশটুকু। পুরো গ্রামের বেশ কিছু চরিত্রের বর্ণনা দিয়ে শুরু হয়েছে বইয়ের প্রথম কয়েকটা চ্যাপ্টার। যেখানে এক পর্যায়ে সকল চরিত্রকেই সন্দেহজনক মনে হয়। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কিছু ক্লু পুরো বইতে ছড়িয়ে দিয়েছেন লেখক। যেনো পাঠক দ্বিধায় পড়ে যায়। এবং বলতেই হবে তাতে পুরোপুরি সফল তিনি। এরপর রহস্যের একদম শেষ চ্যাপ্টারে এসে হুট করেই শেষ হয়ে যায় গল্পের ভিতরের গল্পটা। যেখানে মূল রহস্যটার সমাধাণ হওয়ার কথা সেখানে এসেই হুট করে থেমে যায়!!
ম্যাগপাই মার্ডার্স বইটি পিডিএফ ডাউনলোড করতে দেখুন ⤵️
আর সেটা থেমে যাওয়ার কারন হলো, আমাদের শুরুর ২ পৃষ্টা যার প্রসপেক্টস থেকে দেখানো হয়েছে তিনি হলেন সুজ্যান রাইল্যান্ড। যিনি মূলত উপরের উপন্যাসের পান্ডুলিপিটি পড়ছিলেন। এবং শেষে এসে তিনি আবিষ্কার করেন বইয়ের শেষ চ্যাপ্টারটি নেই পান্ডুলিপির সাথে!! এখান থেকে শুরু হয় বইয়ের দ্বিতীয় রহস্য কোথায় গেলো শেষ চ্যাপ্টারটি?? খুঁজতে গিয়ে আরো গোলকধাঁধা!! বইয়ের কাল্পনিক লেখক নিজেই মারা গিয়েছেন, আর তার সাথে গায়েব হয়ে গিয়েছে সেই শেষ চ্যাপ্টারটি!! অতএব এক রহস্যের শেষ প্রান্তে এনে থামিয়ে লেখক এন্টনি হরোউইটয আমাদেরকে এনে ফেলে দিলেন আরেক রহস্যের সামনে। এবার আবার এই রহস্য উদঘাটনে নেমে পড়তে হলো আমাদেরকে, ওইদিকে মাথায় কিলবিল করছে আগের রহস্য !!
#পর্যালোচনাঃ বই পড়ার লম্বা গ্যাপের আগে আমি বেশ অনেক বিদেশী রহস্যোপন্যাস পড়েছি। যার মধ্যে আগাথা ক্রিস্টির কিছু বই আর শার্লক হোমস সমগ্রও ছিলো। কিন্তু সত্যি বলতে এমন অদ্ভুত রহস্যোপন্যাস আমি এর আগে কখনো পড়িনি। এক কথায় বলতে গেলে চমৎকার এক উপন্যাস। বইয়ের ভিতরের বইটা আমার কাছে একটু বেশীই ভালো লেগেছে। স্যাক্সবি-অফ-এইভন গ্রামের বর্ণনা, প্রতিটা চরিত্রের বিভিন্ন খুঁটিনাটির বর্ণনা এই সবগুলা জিনিস আমি প্রচুর আগ্রহ নিয়েই পড়েছি। একবারও মনে হয়নি খুব বেশী বাহুল্যতা করা হয়েছে৷ একই সাথে পাল্লা দিয়ে সমান গতিতে এগিয়েছে গল্পের কাহিনী। চরিত্রগুলোর বর্ণনা এতো সুন্দর আর নিঁখুত ছিলো যে আমার মনে হচ্ছিলো আমি তাদেরকে দেখতে পাচ্ছি চোখের সামনে!! আর রহস্যটাও বেশ জমজমাট মনে হয়েছে আমার কাছে। মোটকথা পারফেক্ট মার্ডার মিস্ট্রি।
পরের অংশ মানে সুজ্যান এর রহস্যটা প্রথমটার মতো জমজমাট মনে না হলেও খারাপ ছিলো না। তবে আসলে কি আগের রহস্য মাথায় নিয়ে পরের রহস্যতে পুরোপুরি ডুব দিতে পারছিলাম না। বারবার ইচ্ছা করছিলো, ধুর!! লাস্টে গিয়ে আগে ১ম রহস্যের সমাধান পড়ে আসি !! যদিও শেষ পর্যন্ত সেটা না করে স্বাভাবিকভাবেই পুরোটা শেষ করেছি। এবং শেষ করার পর যে শব্দটা মাথায় এসেছে তা হলো "পারফেক্ট"। আমি মাত্র ২ দিনেই বইটা পড়ে শেষ করেছি, এটা থেকেই বুঝতে পারবেন কতোটা আকৃষ্ট করে রেখেছিলো বইটা আমাকে। আর বইয়ের চরিত্রগুলো নিয়ে আলাদা কিছু আসলে বলার নেই। সবাইই গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু ভালো লাগার মতো কাউকে খুঁজে পাইনি আমি!
#অসংগতিঃ বইয়ের ১৪তম পৃষ্টায় মেরি ব্ল্যাকিস্টনের মৃত্যুর তারিখ দেয়া ১৫ই জুলাই, কিন্তু যখন পুলিশ অফিসার চাব মেরির ডায়েরি পড়ছলেন তখন সেখানে ডায়েরির লাস্ট এন্ট্রি দেয়া ২৮শে জুলাই !! তারিখের এই সামান্য গড়মিল ছাড়া আর তেমন কোনো অসংগতি আমার চোখে পড়েনি। আরেকটা ব্যাপার যেটা একটু অড লেগেছে। আমি লেখকের এই বইয়ের আগেই দ্য ওয়ার্ড ইয মার্ডার পড়ে ফেলেছি। দুইটা গল্পের কিছু কিছু বিষয়ে প্রবল মিল লক্ষ্য করা যায়!!
#প্রোডাকশন_অনুবাদঃ আচ্ছা চিরকুটের পৃষ্টা গুলা উল্টাতে এতো মায়া লাগে কেনো!! এতো মসৃন পৃষ্টা, অতি শক্ত কিন্তু নমনীয় বাইন্ডিংস, সাথে ফন্ট সাইজ এর সাথে পৃষ্টার কালার মিলে একটা পারফেক্ট প্রোডাকশন চিরকুটের। আমি তাদের আর কিছু হোক না হোক প্রোডাকশনের ফ্যান হয়ে গেছি। আর অনুবাদক সায়েম সোলায়মান ভাই নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। মূল লেখক কতোটা প্রাঞ্জল আর সাবলীল ছিলেন আমি জানি না। তবে সায়েম সোলায়মান ভাই আমাকে একবারও এটা বুঝতে দেন নি যে আমি কোনো অনুবাদ পড়তেছি। কোনো কাটখোট্টা শব্দের বালাই নেই, নেই তেমন কোনো বানান ভুল। শুধু ওই একটাই আক্ষেপ "জ" এর জায়গায় "য" লেখা। যদিও সেটা এই বইতে খুব একটা সমস্যার সৃষ্টি করেনি। কারন ওই রকম শব্দ কমই ছিলো বইয়ে। তবুও অনুরোধ করি সায়েম ভাই আপনি কি পারেন না আমাদের জন্য এটা বাদ দিতে প্লিজ !
✍️ Review Credit 💕 Zakia Sultana
0 মন্তব্যসমূহ
ℹ️ Your Opinion is very important to us, Please Writer your comment below about this Post.....