লেখক : ড. মুহাম্মাদ মানসুর
প্রকাশনী : ইলহাম ILHAMন
বিষয় : আদব, আখলাক
পৃষ্ঠা : 192, কভার : হার্ড কভার, সংস্করণ : 1st Published, 2021
ব্যবহারে বংশের পরিচয়। আর স্বভাবে খাঁটি মুসলিমের পরিচয়। আপনি কতটা ভালো মুসলিম তার জীবন্ত সাক্ষী আপনার স্বভাব-চরিত্র। লোক-দেখানো ইবাদাত, গিবত, অশ্লীল ভাষা, মিথ্যে বলা, ওয়াদার খেলাপ, রাগ-ক্রোধ-অহংকার—এমন শত মন্দ স্বভাবে আমরা জর্জরিত। বইতে থাকছে এসব মন্দ স্বভাব উৎরানোর প্র্যাকটিকাল পরামর্শ।
থাকছে কীভাবে নিয়ত খালিস করব, সবরের গুণ অর্জন করব, মনে একই সাথে রাখব আশা ভয় ও ভরসা, কীভাবে হবো সাচ্চা মুসলিম তার তরিকা। আরও থাকছে আপন ইবাদাতগুলোতে আরও বেশি করে মন লাগানোর সিক্রেটস।
অনুবাদকের কথা
মানব-স্বভাব বড়ো অদ্ভুত। দুনিয়াজোড়া বিলিয়ন মানুষ। কারো সাথে কারো স্বভাবের পুরোপুরি মিলবে না। কেউ আল্লাহপ্রেমে মশগুল, কেউবা দুনিয়াপ্রেমে। কেউ সরলমনে দ্বীনের সরল পথ ধরে তরতর করে এগিয়ে চলে, কেউবা দ্বীনের রাজপথ ছেড়ে অন্ধকার কানাগলিতে হাতড়ে চলে। কেউ কেউ কিছুদূর গিয়ে অন্ধকারে হাঁসফাঁস করে, থাকতে না পেরে আবার রাজপথেই ফিরে আসে।
সত্যি বলতে, ইসলামের পথে থাকার জন্য খুব আহামরি অসাধ্য সাধন করা লাগে—এমন না। দ্বীনের মৌলিক বিষয়গুলোও হাতে গোনা। সলাত আদায়, সাওম রাখা, যাকাত দেওয়া, ফরযগুলোর সাথে নফল ইবাদাত করা, জ্ঞানার্জন করা, ভালো কাজ করা, খারাপ কাজ থেকে দূরে থাকা—এভাবে তালিকা করতে গেলে দু তিন পৃষ্ঠায় লিষ্টটা এঁটে যাবে। তারপরও আমরা পারি না কেন? আমাদের প্রবৃত্তির জন্য, আমাদের স্বভাবের জন্য।
মানুষের আছে ভালো স্বভাব, আছে মন্দ স্বভাব। মন্দ স্বভাবের সাথে আবার কাজ করে প্রবৃত্তির সুরসুরি আর শয়তানের ফিসফিসানি! তাই ভালো থাকার চেষ্টাটাও এক সংগ্রাম। এ সংগ্রাম নিজের ভালো স্বভাবকে জয়ী করার সংগ্রাম। এ সংগ্রামে টিকে থাকার জন্য কৌশল শেখা লাগে। যুগে যুগে আলিমরা আমাদের এ কৌশলগুলো হাতে-কলমে শিখিয়ে গিয়েছেন। নিজ নিজ যুগের সাথে তাল মিলিয়ে সমাধান বাতলে দিয়েছেন; দেখিয়েছেন মনকে বশ মানিয়ে কী করে উন্নতির সোপান বেয়ে আরো উপরে উঠা যায়, অর্জন করা যায় প্রশান্ত আত্মা যাকে তার জীবন সায়াহ্নে মহান রব ডেকে বলবেন,
“প্রশান্ত আত্মা! তুমি ফিরে এসো তোমার রবের প্রতি
সন্তুষ্টচিত্তে, সন্তোষভাজন হয়ে। শামিল হয়ে যাও আমার
বান্দাদের মধ্যে। প্রবেশ করো আমার জান্নাতে।"
বর্তমান যুগের দিকে খেয়াল রেখে আত্মশুদ্ধির উপায়গুলো নিয়ে লেখা হয়েছে "Rising Soul: A Guide to Personal Development" বইটি। লেখক মূলত মন্দ
স্বভাব দূর করে ভালো স্বভাব গড়ার ওপর জোর দিয়ে বইটি সাজিয়েছেন। তাই তাত্ত্বিক আলোচনার তুলনায় জীবনঘনিষ্ঠ প্রয়োগের কথা বেশি উঠে এসেছে যেন পাঠক ভালো স্বভাব গড়ার কৌশলগুলো একে একে রপ্ত করার সুযোগ পান।
আমলকেন্দ্রিক এ বইটি সাজানো হয়েছে তিনটি ধাপে। প্রথম ধাপে মনের মন্দ স্বভাবগুলো ধরে ধরে দূর করার উপায় বাতলে দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে মন্দ স্বভাবগুলোর জায়গায় সুন্দর স্বভাব গড়ার পথ দেখানো হয়েছে। এই দুই ধাপে যখন কেউ সফল হবে, তখন তার মন্দ স্বভাবগুলো অনেকাংশেই মুছে যাবে, সেখানে স্থান করে নিবে ঈমানী শুভ্রতা। তৃতীয় ও সর্বশেষ ধাপে বিভিন্ন ইবাদাতের কথা এসেছে যেন আমরা ভালো গুণে সমৃদ্ধ হয়ে অন্তরে নূরে তাজাল্লী আরও বাড়াতে পারি। এভাবে পুরো বইটিকে আত্মশুদ্ধির পথে এক রোমাঞ্চকর সফর হিসেবে সাজানো হয়েছে।
অনুবাদক হিসেবে কিছু বিষয় পাঠকের কাছে দায়বদ্ধতা থেকে না বললেই নয়। অনুবাদের স্বার্থে অনেক সময়ই মূল লেখার সাথে পুরোপুরি আক্ষরিক সাদৃশ্য রাখা সম্ভব হয়নি। জটিল বক্তব্যকে সহজভাবে তুলে ধরতে গিয়ে ভাবানুবাদকে বেছে নিয়েছি। মুসলিম আমেরিকান সোসাইটি বইটি প্রকাশ করেছে পশ্চিমা সমাজের কথা মাথায় রেখে। বাঙালি পাঠকসমাজের দিকে খেয়াল রেখে তাই কিছু জায়গায় পরিমার্জন ও পরিবর্ধন করা হয়েছে।
প্রিয় পাঠক, বইটি পড়তে গিয়ে ভুলত্রুটি চোখে পড়লে অবশ্যই আমাদের জানাবেন যেন পরবর্তী সংস্করণে আমরা তা শুধরে নিতে পারি। বইটির সাথে জড়িত সকলের জন্য দুআ করতে ভুলবেন না যেন!
আমাদের সবার অন্তর শুভ্রতায় ভরে উঠুক, যেন হাওজে কাওসারের ধারে আলোকিত মিলনমেলায় নবীজির (সা) সাথে আমাদের দেখা হয়! রব্বে কারীমের কাছে এই দুআই করি প্রতিনিয়ত।
মুখবন্ধ
আমল ও আধ্যাত্মিকতা পাখির দুই ডানার মতো। এই দু ডানায় ভর করে আল্লাহকে পাবার পথে মুসলিম এগিয়ে চলে। এ পথ সফলভাবে পাড়ি দিতে দুটো ডানাই সচল রাখতে হয়। বর্তমানে বহু মুসলিম এ ভারসাম্য ধরে রাখতে গিয়ে হিমশিম খায়। এরই পরিক্রমায় দেখা যায়, কেউ সন্ন্যাসজীবনে, কেউবা বস্তুবাদের প্রান্তিকতায় ঝুঁকে পড়ে।
সন্ন্যাসবাদের ব্যাপারে আল্লাহ বলেন,
“আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় তারাই বৈরাগ্যবাদ চালু করেছিল। এটা তো আমি তাদের জন্য লিখে দেইনি।”
বৈরাগ্যবাদকে যেমন আল্লাহ সমর্থন করেননি, তেমনি এ ভঙ্গুর দুনিয়াকেও তিনি কোনো গুরুত্ব দেননি। দুনিয়াকে তুলনা করেছেন শুকনো খড়কুটোর সাথে। চিন্তাশীলদের জন্য খোরাক রয়েছে এই আয়াতে
“দুনিয়ার জীবনের তুলনা তো বৃষ্টির মতো যা আমি আকাশ থেকে বর্ষণ করি। এরপর এর সাথে মাটির গাছের কাছে যায়, যা থেকে মানুষ ও চতুষ্পদ জন্তু খাদ্য পায়। অবশেষে যখন পৃথিবীর বুক শোভিত ও সজ্জিত হয়, আর এর বাসিন্দারা মনে করে মাটিতে উৎপন্ন ফসল নিতে তারা সক্ষম, তখন তাদের ওপর রাতে কিংবা দিনে আমার আদেশ চলে আসে। আমি সেগুলোকে বানিয়ে দেই ভেঙে পড়া ফসল, মনে হয় গতকালও এখানে কিছু ছিল না। এভাবে আমি চিন্তাশীল লোকদের জন্য নিদর্শনগুলো বিস্তারিত বর্ণনা করি।”
একারণে একজন প্রকৃত মুমিন দুনিয়াবি জীবন নিয়ে ব্যতিব্যস্ত থাকে না, বরং একে সীমার মাঝে থেকে কাজে লাগায়। দুনিয়ার কাছে আত্মসমর্পণ না করে একে নিয়ন্ত্রণ করে। ইমাম আহমাদকে একবার জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, “কারো কাছে যদি এক লাখ দিরহাম থাকে, তারপরও কি তাকে দুনিয়া বিমুখ বলা যাবে?” তার উত্তর ছিল, "যতক্ষণ অর্থগুলো তার হাতে থাকবে, কিন্তু হৃদয়ে জায়গা নেবে না—ততক্ষণ পর্যন্ত বলা যাবে।”
অনেক মুসলিম বস্তুবাদী সমাজব্যবস্থার সাথে তাল মিলিয়ে ইসলাম মানতে গিয়ে দোটানায় পড়ে যায়। এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, ইসলামি আধ্যাত্মিকতার কিছু বিশেষ দিক রয়েছে যা অপরাপর আদর্শ থেকে আলাদা ও অনন্য। এরকম কিছু বিষয় হলো
১. সুদূরপ্রসারী শিক্ষা : ইসলামি আত্মোন্নয়নের সাধনা মানুষের জীবনের কোনো এক অংশে সীমাবদ্ধ নয়। বরং এটি মানুষের শারীরিক, ব্যক্তিক, সামাজিক তথা জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রের সাথে সম্পর্কিত। আল্লাহর সাথে সম্পর্ক বান্দার দৈনন্দিন জীবনের মান বাড়িয়ে দেয়। তাকে আরো ভালো বাবা-মা, সহকর্মী ও নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলে। ইসলাম মানে নিছক কিছু আধ্যাত্মিক ধর্মীয় প্রথার অনুসরণ নয়, বরং ইসলাম হৃদয়কে আলোকিত করে ফলে সমাজের সাথে মানুষের সম্পর্ক নিবিড় হয়, সমাজ উপকৃত হয়। নবুওয়তের উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলতে গিয়ে আল্লাহ তাআলা বলেছেন,
“যেভাবে আমি তোমাদের কাছে রসুল পাঠিয়েছি তোমাদের মধ্য থেকেই, যে তোমাদের কাছে আমার আয়াত তিলাওয়াত করে, তোমাদের পবিত্র করে এবং কিতাব ও হিকমত শিক্ষা দেয়। আর তোমাদেরকে শিক্ষা দেয় এমন কিছু যা তোমরা জানতে না।”।
এই আয়াতের “তোমাদের পবিত্র করে” কথার ব্যাখ্যায় ইবনু কাসির বলেন, "হৃদয়ের পঙ্কিলতা, অপবিত্রতা ও নির্বোধ কাজ থেকে মানুষকে তিনি পবিত্র করেন।" ২. জীবনঘনিষ্ঠ শিক্ষা আত্মশুদ্ধির এই পথ কারো কারো কাছে অনেক কঠিন মনে হতে পারে। অথচ এ পথে সফল হওয়ার ব্যাপারে আশ্বাস দিয়ে আল্লাহ বলেছেন,
“আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজতা চান এবং কাঠিন্য চান না। "2
“আল্লাহ তোমাদের জন্য (নিয়ম-নীতি) সহজ করতে চান। তবে মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে দুর্বল করে।”
অথচ দুঃখ লাগে যখন দেখি, অনেকে আধ্যাত্মিকতার পথ খুঁজতে গিয়ে প্রান্তিকতা ও পথভ্রষ্টতায় পড়ে যায়। মাত্রাতিরিক্ত কষ্ট করে অতিরঞ্জিত কায়দায় জীবনযাপন কখনোই ইসলাম চায় না। বরং নবিজির ও নিজের প্রতিটি আমল ছিল
সাধ্যের মধ্যে এবং তাঁর অনুসারীদের জন্যও আমলগুলো সাধ্যের মধ্যেই রেখেছেন। আয়িশা বলেন, “আল্লাহর রসুল সাহাবিদের যখন কোনো কাজের নির্দেশ দিতেন, তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী নির্দেশ দিতেন।”
৩. যুগোপযোগী : বর্তমানে প্রকাশিত বহু বই, ভিডিও, কনফারেন্স আর লেকচারের সাথে অনেকেই হয়তো মুসলিমদের অতীত ইতিহাসের খুব বেশি মিল খুঁজে পাবেন না। এক্ষেত্রে মনে রাখা উচিত, অতীতের সাথে মেলবন্ধন করেই সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ গড়ে ওঠে। মুসলিমরা গগণচুম্বী অট্টালিকায় কাজ করবে, মায়েরা বাচ্চাদের স্কুলে নিয়ে যাবে, তরুণরা খেলাধুলা করবে—এসবই জীবনের অংশ, দূষণীয় কিছু নয়।
মুসলিমদের বর্তমান পরিস্থিতি দেখে মনে হতে পারে, ইসলামের স্বর্ণালি অতীত যেন তাদের জীবন থেকে ধূসর হয়ে গিয়েছে, বর্তমানের সাথে কোনো সম্পর্ক নেই। অথচ ইসলাম প্রতিটি যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারে এমনই এক জীবনব্যবস্থা। ইসলামের শিক্ষা ও ঐতিহ্যকে আমাদের কর্মক্ষেত্র ও শিক্ষাব্যবস্থার সাথে সম্পর্কিত করার সুযোগ রয়েছে। অত্যাধুনিক বিশ্বের সাথে সম্পর্ক রেখে আমাদের সন্তানদের ইসলামের আলোয় গড়ে তোলা সম্ভব। আল্লাহ আমাদের দীনকে সম্পূর্ণ করেছেন এবং নবিজিকে সব যুগের জন্য রহমত হিসেবে পাঠিয়েছেন।
ইসলাম আমাদের আধ্যাত্মিকতার যে শিক্ষা দেয় দৈনন্দিন বাস্তবতার সাথে তা কোনো দিক দিয়েই সাংঘর্ষিক নয়। বরং, কর্মক্ষেত্রের জটিলতা, জীবনের সমস্যা নিয়ে সমসাময়িক আলেমগণ আলোচনা করেছেন। তাদের শিক্ষার আলোকে মুসলিমদের উচিত অতীত ইতিহাসের সাথে সম্পর্ক রেখে বর্তমান যুগের বাস্তবতার সাথে তাল মিলিয়ে আধ্যাত্মিক লক্ষ্যে অবিচল থাকা।
আপনাদের সামনে এই বইটি উপরোক্ত বিষয়গুলো অর্জনের পথনির্দেশিকা হিসেবে কাজ করবে। লেখক আত্মশুদ্ধির পন্থাকে সহজভাবে উপস্থাপন করেছেন। তিনি মূলত বিশুদ্ধ জ্ঞান ও বিশুদ্ধ আমল – এ দুটি মূলনীতির আলোকে পুরো বিষয়টি আলোচনা করেছেন। আশা করা যায়, এ বই আমাদের তরুণ মুসলিম ভাই বোনদের তৃষ্ণার্ত হৃদয়কে শীতল করবে, আল্লাহর নৈকট্যলাভে ভূমিকা রাখবে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বহু তরুণ ও বয়স্কের মাঝে ইসলামি জাগরণের ছোঁয়া লেগেছে। মূলত তাদের জন্যই উপহার হিসেবে MAS Youth এ বইটি নিয়ে এসেছে। আমরা আশা করি, নতুন প্রজন্ম এ বইয়ের মাধ্যমে অন্যদের কাছে আত্মশুদ্ধির স্বচ্ছ ভারসাম্যপূর্ণ-উপকারী দিকগুলো পৌঁছে দেবে। দুআ করি, যারা এ বই পড়বেন, এরভালো-খারাপ দুটোর প্রতি আকর্ষণ দিয়েই মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে। মূলত এর দ্বারা আল্লাহ আমাদের আত্মশুদ্ধির পথে অবিচলতার পরীক্ষা নেন। আত্মশুদ্ধির এ যাত্রায় আমাদের কোনোভাবেই হতাশ হওয়া যাবে না। হয়তো কিছু মন্দ অভ্যাস আমাদের কোনভাবেই পিছু ছাড়বে না, তবু সংশোধনের নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
উদাহরণস্বরূপ, আমাদের আচরণ থেকে হঠাৎ রেগে যাওয়ার অভ্যাস হয়তো পুরোপুরি দূর করতে পারব না। কিন্তু একে নিয়ন্ত্রণ করে অন্যদের ক্ষতি করা থেকে নিজেকে বিরত রাখতে পারব। এভাবে দুর্বল মুহূর্তে শয়তানের ওয়াসওয়াসার ছলনা থেকে আমরা অনেকখানি বেঁচে থাকতে পারব ইন শা আল্লা
আচ্ছা, কখনো ভেবেছেন কি মানুষকে পথভ্রষ্ট করার পেছনে ইবলিশ শয়তানের অভিজ্ঞতা কতদিনের? আদম থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত— হাজার বছর ধরে সে মানুষের সাথে ছলনা করেই চলেছে। কত বিলিয়ন মানুষের অভিজ্ঞতা তার ঝুলিতে। যার জন্য যেমনটা প্রয়োজন তাকে সেই মন্দ স্বভাবের চতুর ফাঁদে ফেলে আর সামনে বাড়তে দেয় না। এজন্য আমাদের মনোবল দৃঢ় করে কাজে নামতে হবে। তাহলেই তার চক্রান্ত নস্যাৎ করা সম্ভব হবে। তার চক্রান্ত বড়ই ঠুন
“নিশ্চয় শয়তানের চক্রান্ত দুর্বল।
মন্দ স্বভাবগুলো দূর করার জন্য শুরুতেই সেগুলো আমাদের চিহ্নিত করতে হবে। আত্মিক উন্নতির পথে প্রথম ধাপ হলো আত্মপর্যালোচনা। খাতা-কলম নিয়ে ভাবুন– নিজের কোন কোন অভ্যাস দূর করা প্রয়োজন। নিজেকে প্রশ্ন করুন— কিভাবে আমার অন্তর থেকে মন্দকে দূর করে আল্লাহর প্রিয় হতে পারি? কিছু সময় নিয়ে বসে নিজের আচরণ সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা ও মূল্যায়ন করুন। আশপাশের মানুষের সাথে মেলামেশার সময় তাদের আচরণ খেয়াল করুন, তাদের সাথে নিজের আচরণের মিল-অমিল খুঁজে বের করু
আত্মশুদ্ধির এ পথ বড় বন্ধুর, আছে বহু চড়াই-উতরাই। এ পথের যাত্রায় তাই সৎ-আন্তরিক বন্ধু ও শিক্ষকদের সান্নিধ্য খুঁজে নিতে হবে, তাঁদের জমায়েতে নিজেরন।”১কোহ।
যজায়গা করে নিতে হবে। তাঁরা আল্লাহর সাথে আপনার সম্পর্ক বাড়াতে সাহায্য করবে, আপনার দুর্বল দিকগুলো পরম মমতায় ধরিয়ে দেবে, উপদেশ দেবে। উমার ইবনুল খাত্তাব * বলতেন, “আল্লাহ তাঁর ওপর রহম করুন যে আমার চরিত্রের কোনো খুঁত ধরিয়ে দেয়।”
এ পর্বে আমরা বিভিন্ন মন্দ স্বভাব ও সেগুলোর প্রতিকার নিয়ে আলোচনা করব। অন্তরের কালিমাগুলো একে একে মুছে ফেলার চেষ্টা করব। আপনি প্রস্তুত তো?
আরো পড়তে অথবা দেখতে অনুগ্রহ করে Hardcopy ক্রয় করুন। We Respect Every Author Hardwork-boipaw team।
0 মন্তব্যসমূহ
ℹ️ Your Opinion is very important to us, Please Writer your comment below about this Post.....