বইয়ের নাম : "না"
লেখক: ডা.মোহিত কামাল
ধরণ : মনোবৈজ্ঞানিক উপন্যাস
প্রকাশ কাল : ফেব্রুয়ারি ২০০৯
প্রকাশন : বিদ্যাপ্রকাশ
প্রচ্ছদ : চন্দ্রজিৎ
মূল্য: চার'শ টাকা
জীবন ঘনিষ্ঠ সাহিত্য মানব মনে আলোড়ন সৃষ্টি করে। তেমনি একটি আলোড়ন সৃষ্টিকারী কথাশিল্পী ও মনোচিকিৎসক ডাঃ মোহিত কামালের "না" উপন্যাস। বইটি পড়ে ভীষণ ভালোলাগা থেকেই আজ লিখছি।
এই উপন্যাসের মূলস্রোতে রয়েছে "না" বলার সুফল, প্রতিকূলতা থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জয়গান।
তরুণ বয়সীরা সহজেই অন্যের দ্বারা প্রভাবিত হয়। এ ক্ষেত্রে নিজের ব্যক্তিত্ব থাকা খুব প্রয়োজন। আত্মবিশ্বাস, আত্মপ্রত্যয়ের গুণে গুণান্বিত হলে তরুণ-তরুণীরা অশুভকে চিনতে পারে এবং "না" বলার ক্ষমতা রাখতে পারে।
এই গুণ শিশুকাল থেকেই শক্ত করে ব্যক্তিত্বের কাঠামো। আমি মনে করি প্রত্যেকটি মানুষের জীবনে শৈশবের পারিবারিক আবহ গুরুত্বপূর্ণ।
এবার উপন্যাসের ঘটনায় আসি। "না" উপন্যাসের প্রধান চরিত্র রুবা। ছোটকালেই মাকে হারায়। যথারীতি বাবা বিয়ে করেন। সৎ মায়ের চক্ষুশূল হতেই হয়। তারপরও হেরে যায় না। রুবা নামের মেয়েটির তেজস্বী জীবন যাত্রা, ইতিবাচক মূল্যায়নের অসাধারণ ক্ষমতায় নেতিবাচক ঝড় সামলে সাহস নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার দুরন্ত কাহিনী "না" উপন্যাস। লেখক নিপুণ হাতে গড়েছেন রুবা চরিত্রটি। প্রতিকূল পরিবেশ ডিঙ্গিয়ে পড়াশোনার জন্য কুষ্টিয়া থেকে ঢাকায় আসে রুবা। নিজের মনোবল তার প্রধান শক্তি। বেসরকারি ছাত্রীনিবাসে থেকে পড়াশোনা চালিয়ে সর্বোচ্চ ডিগ্রী অর্জন করে। পরবর্তীতে চাকুরীর পেছনে ছোটা ও চাকুরী পেয়েও যায়। হোস্টেল জীবনের নানা চাপের মধ্যেও অচেনা ছোট, বড় বোন, বন্ধুদের নিয়ে এক মায়াবী পরিবেশ তৈরী করে। গড়ে তোলে নিজস্ব ভালোবাসার জগৎ। এই জগতের আরেক সদস্য রবিন। যাকে রুবা ভালোবাসে। রবিনও রুবা বলতে অজ্ঞান। সম্পর্কের তীব্রতা থাকা সত্যেও সন্দেহের বিষ,সম্পর্কের টানাপোড়নে এগিয়ে যায় গল্প। প্রত্যন্ত অঞ্চলের মেধাবী মেয়েরা আসে ঢাকায় পড়াশোনা করতে। হোস্টেলের সংগ্রামী জীবনে যোগ হয় সিমি, মনি,সানিয়া। কঠিন বাস্তবতার মধ্য থেকে উপন্যাসে উঠে এসেছে সমাজে রন্ধ্রে রন্ধ্রে বিস্তৃত হওয়া অপরাধ চিত্র। এ অপরাধ জগতের একজন ঘৃণ্য অপরাধী বন্ধু সেজে ছোবল বসাতে চায় রুবার বুকে ---রুবার ব্যক্তিত্ব ভেদ করে ঢুকতে পারেনি বিষবাণ। কিন্তু এই বিষবাণে আক্রান্ত হয় রুমমেট সিমি। উপন্যাসের ঘটনা প্রবাহ এভাবেই এগুতে থাকে। রবীন্দ্রনাথের কুঠিবাড়ি শিলাইদহের কথাও আসবে গল্পে। অন্যের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে নিজের ভুল শুধরে নেয়ার পথ খুঁজে পাবে তরুণ-তরুণীরা উপন্যাসের শেষে।
"না" উপন্যাসের নেতিবাচক ও ইতিবাচক ঘটনার মূল বক্তব্য হচ্ছে --- বুঝতে হবে অনৈতিকতা ও অশুভকে এবং বলতে শিখতে হবে "না" আর শুভকে বলতে হবে "হ্যাঁ"।
আসুন, অশুভর বিরুদ্ধে প্রস্তুত করি নিজের বোধশক্তি ও মন।
রিভিউ লিখেছেন 💕 শাবানা ইসলাম বন্যা
(বই পড়ি, জীবন গড়ি। সকলকে বই দিবসের শুভেচ্ছা।)
0 মন্তব্যসমূহ
ℹ️ Your Opinion is very important to us, Please Writer your comment below about this Post.....