নফসের বিরুদ্ধে লড়াই pdf download লেখকঃ মাহমুদ বিন নূর | Nofser Biruddhe Lorai By Mahmud Bin Nur

  • বইঃ নফসের বিরুদ্ধে লড়াই pdf / পিডিএফ
  • লেখকঃ মাহমুদ বিন নূর
  • প্রথম প্রকাশঃ আগস্ট ২০২১
  • গ্রন্থস্বত্বঃ লেখক কর্তৃক সংরক্ষিত
  • প্রচ্ছদঃ আবুল ফাতাহ
  • মুদ্রিত মূল্যঃ ২০০৳
বই : নফসের বিরুদ্ধে লড়াই pdf download লেখকঃ মাহমুদ বিন নূর  Nofser Biruddhe Lorai By Mahmud Bin Nur book pdf download free নফসের বিরুদ্ধে লড়াই বইটি পিডিএফ ডাউনলোড করতে নিচে দেখুন ⤵️ নফসের বিরুদ্ধে লড়াই বুক রিভিউ। PDF Download Nofser Biruddhe Lorai By Mahmud Bin Nur Books PDF
নফসের বিরুদ্ধে লড়াই pdf download লেখকঃ মাহমুদ বিন নূর | Nofser Biruddhe Lorai By Mahmud Bin Nur

লেখকের কথা

মাঝে মাঝে একাকী নিভৃতে চোখ বুজে মনে মনে ভাবি আমি কার দ্বারা সবচেয়ে বেশি বেশি ক্ষতিগ্রস্ত?কে আমার জীবন চলার পথে ক্ষতি সাধনের কাটা ফেলে রাখে? কে আমাকে আলো থেকে অন্ধকারের দিকে নিয়ে যাচ্ছে?কেন আজ পথ খুজে পাই না? কেন আজ গন্তব্যের উদ্দেশ্য হেঁটে সঠিক রাস্তাকে উপেক্ষা করে বক্র রাস্তা বেছে নিয়েছি?কেন আজ আলোর মশাল---এর পরিবর্তে কয়লা নিয়ে ঘুরছি?


আবারো ভাবি__কেন আজ বিভিন্ন পাপ কাজে জড়িয়ে পড়ি কেন নিজের সাথে নিজেই ছলনা করছি___"আজ-ই ফার্স্ট, আজ_ই লাস্ট। আর কখনো পাপ কাজ করবোনা। আর কখনো নামাজ কাজা করবোনা"। পরক্ষণেই তা কেন ভুলে যাই?কেন বারবার পাপ কাজে জড়িয়ে পড়ি?


এই কারণ গুলো খোঁজতে গিয়ে কেবল শয়তান আর নফসের প্ররোচনাই খোঁজে পেলাম।বুঝে গেলাম ___এ সবকিছুর পিছনে নফল এবং শয়তানের_ই হাত রয়েছে। নফসের মাধ্যমে কিভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি তা সামনে আসার দরকার। আমরা কিভাবে নফসের বিরুদ্ধে লড়াই করবো? কিভাবে নফসকে নিয়ন্ত্রণে রাখব?

বইটি যেভাবে সাজানো হয়েছে

প্রথম পরিচ্ছেদ
১. নফস কী? তা কিভাবে ডাইভার্ট করবেন.............১৩
২.কে সবচে'বড় শত্রু, শয়তান নাকি নফস?............১৮
৩.নফসের ভিত্তিতে সৃষ্টির সেরা জীব?....................২৩
৪.নফসের হাতে তুলে দিচ্ছি আমাদের ক্ষতি সাধনের যাবতীয় অস্ত্র?......................২৯
৫.আজ--ই ফার্স্ট ‍আজ--ই লাস্ট?.....................৩৩
৬.নফস ঠিক তো,সব ঠিক.................................৩৭
৭.নফসের গোলামী করাও এক প্রকার শিরক........৪১
৮. মোকাবেলা....................................................৪৪
৯.নফসের খোরাক, রুহের খোরাক........................৪৭
১০.নফসের হাতিয়ার...........................................৪৯
১১.নফসের চিকিৎসা করুন, নয়তোপচন ধরবে......৫৪
১২.শেকলবন্দি---আমার কাছে নফস,নফসের কাছে আমি?....................৫৬
১৩.নফসের ব‍্যাপারে সতর্ক হোন...........................৫৮
১৪. এই গুনাহের পিছনে ইন্ধনদাতা কে?................৫৯
১৫.নফসের গোলামীর করণ................................৬১


প্রথম পরিচ্ছেদ
নফস কী?তা কীভাবে ডাইভার্ট করবেন?


নফস বলা হয়, মানুষের কামনা, বাসনা,চাহিদা ইত্যাদি __কে। এক কথায় যাকে বলা হয় প্রবৃত্তি। আল্লাহ্ তাআলা সৃষ্টির সময় তাঁর স্বভাবে কতিপয় চাহিদা দান করেছেন। যেমন:আহারের চাহিদা, যৌবনের চাহিদা, কর্তৃত্বের চাহিদা, ক্ষমতার চাহিদা, লোভ লালসা ইত্যাদি। সব গুলোকে একত্রে জৈবিক চাহিদা বলা যায়।
নফসের বৈশিষ্ট্যের দিক দিয়ে আবার তিন প্রকার
মূলত নফস একটি, কিন্তু কাল পরিক্রমায়, স্বভাবের তাড়নায় ভিন্ন ভিন্ন রুপ ধারন করে তাই নফস তিন প্রকার।
১. নফসে আম্মারাহ
২. নফসে লাওয়‍্যামাহ
৩. নফসে মুত্বমায়িন


নফসে আম্মারাহ
(প্রতারক আত্মা)
অর্থাৎ যে নফল,মানুষকে কুপ্রবৃত্তি ও জৈবিক কামনার দিকে আকৃষ্ট করে।সব সময় খারাপ চিন্তা-ভাবনা পোষন করে অনৈতিক চাহিদা পূরণার্থে ব‍্যস্থ রাখে। খারাপ কাজে উৎসাহিত করে তাকেই নফসে আম্মারাহ বলা হয়।

নফসে লাওয়‍্যামাহ
(অনুশোচনাকারী আত্মা)
অর্থাৎ যে নফস, অন‍্যায় করার পর আমাদের হৃদয়ে অনুশোচনার উদ্রেক করে।নফসে লাওয়‍্যামাহ এমন একটি নফস যা নিজের কার্জকর্মের হিসাব নিয়ে নিজেকে ধিক্কার দেয়। হযরত হাসান বসরি রহিঃ নফসে লাওয়‍্যামাহ -- এর তাফসির করেছেন নফসে মু'মিনা তিনি বলেন আল্লাহর কসম! মু'মিন তো সর্বদা নিজেকে ধিক্কার দেয়।


নফসে মুত্বমায়িন্নাহ
(প্রশান্ত আত্মা)
অর্থাৎ যে নফস, সকল কালিমা থেকে মুক্ত এবং যাবতীয় মহৎ ভাবনায় পরিতৃপ্ত। অবস্থা ভেদে তার গুনে পরিবর্তন আসে। নফস আমাদের কর্মের দ্বারা পরিবর্তিত হয়। যদি তা লাগামহীন হয়ে যায় তখন সে আম্মারাহ পরিণত হয়।


নফসকে কিভাবে ডাইভার্ট করবেন:- শরীয়তের নির্দেশ --- তোমরা জামাতের সাথে নামাজ আদায় করো। আর নফস বলে --- আরে আজকে বাসায় পড়ি একদিন বাসায় পড়লে নামাজে তেমন ক্ষতি হবে না।এরকম পরিস্থিতিতে আপনাকে জোরজবরদস্তি চালাতে হবে।
আপনি সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করলেন জিকির করবেন বলে প্রস্তুতি নিচ্ছেন, এমন সময় নফস বলে আরে উঠ, রাস্তায় ও করতে পারবি এই বলে নফস আপনাকে ধোকা দেয়। এমতাবস্থায় আপনাকে নফসের বিরুদ্ধে জোরজবরদস্তি করে ডাইভার্ট করতে হবে।


কে সবচেয়ে বড় শত্রু, শয়তান নাকি নফস :- শয়তান হচ্ছে এডভাইজার,আর নফস হচ্ছে আ‍্যসিস্ট‍্যান্ট ম‍্যানেজার। শয়তান পরামর্শ দেয় আর নফস বাস্তবায়ন করে। আচ্ছা বলুনতো শুধুমাত্র শয়তান-ই যদি আমাদেরকে গুমরাহ করে তো শয়তানকে কে গুমরাহ করছে শয়তানই যদি আমাদের পথভ্রষ্ট করে তো শয়তান কে পথভ্রষ্ট করলো। শয়তানের পূর্বেতো কোনো শয়তান ছিলোনা তাই ধরে নিন আমাদের বড় শত্রু নফস।


নফসের ভিত্তিতে সৃষ্টির সেরা জীব:- মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। ফেরেসতাদের উপর ও শ্রেষ্ঠত্ব দান করা হয়েছে। কিন্তু কথা হলো ফেরেশতারা সব সময় আল্লাহর ইবাদত করে।কিন্তু মানুষ আল্লাহর কতো। হুকুম অমান্য করে। ফেরেশতাদের কোনো চাহিদা নেই। কিন্তু মানুষের সব রকমের চাহিদার দরকার হয়। তাইতো মানুষ শয়তান এবং নফসের ফাদে পরে তাই সেই ভিত্তিতে মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব।


নফসের হাতে তুলে দিচ্ছি, আমাদের ক্ষতি সাধনের যাবতীয় অস্ত্রঃ- কৃত অপরাধের কারণে সাধারণত অপরাধীদের কারাগারে রাখা হয়। যেন সে আর অপরাধ না করতে পারি। এই জন্যেই আমরা শত্রুর হাত থেকে রক্ষা পেতে পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে রাখি।
যেভাবে আমরা নফসের হাতে তুলে দিচ্ছি আমাদের ক্ষতি সাধনের অস্ত্র /
অসৎ কর্মে রাষ্ট্রীয় কোনো বাত্তি নেই।ছেলে মেয়ে অবৈধ মেলামেশা করছে। এই ব‍্যাপারে আইনানুগ কোনো ব‍্যবস্থা নেই। হাজার হাজার হোটেলে চলছে রমরমা দেহ ব‍্যবসা। সবার হাতে স্মার্টফোন বাচ্চারাও আজকাল এডাল্ট ফিল্মের সাথে পরিচিত।


আজ-ই ফার্ষ্ট, আজ-ই লাষ্টঃ- কখনো নফসের চাহিদার পরিসমাপ্তি ঘটবেনা যত দিবেন ততই লাগবে। সে আপনাকে নানা দিক দিয়ে ফাঁদে পালাবে আপনার আম খেতে ইচ্ছে করছে। টাকা নেই পকেটে তখনই নফস বলে চুরি করে নিয়ে আয়। আজকেই শেষ আর কখনো না তবুও আপনি উপলব্দি করেন চুরি করা ভালো না। তখন নফস বলে আজকে ই ফাষ্ট আজকেই লাষ্ট।


নফস ঠিক তো, সব ঠিকঃ- একটা গাড়ির যেমন বিভিন্ন পার্টস রয়েছে।সাথে থাকে মূল ইন্জিন --- যা ছাড়া গাড়ি অস্তিত্বহীন। কিন্তু গাড়িটা নিয়ন্ত্রণ করতে একজন ড্রাইভারের প্রয়োজন। সে যেভাবে চালাবে গাড়িও সেভাবে চলবে। ঠিক তেমনি আমাদের মানবদেহে একটা ইন্জিন রয়েছে যার ইন্জিন হলো রুহ ড্রাইভার হলো নফস। তাই নফস আমাদের পুরো দেহটাকে নিয়ন্ত্রণ করে। তাই নফস যেভাবে ইচ্ছে আমাদের সেভাবে চালিত করে। তাই আমাদের উচিৎ ড্রাইভারকে ভালো ভাবে প্রশিক্ষন দেওয়া।তাহলে সে আমাদের দিয়ে কোনো পাপ কাজ করাতে পারবেনা।


নফসের গোলামী করাও এক প্রকার শিরকঃ- শিরক পিপিলিকার পদধ্বনির চেয়েও সূক্ষ্ম যা থেকে মুক্ত থাকা অত্যন্ত কঠিন। নফসের গোলামি কি, আল্লাহ্ তাআলার নির্দেশ তোমরা নামাজ আদায় করো। আর নফস বলে নামাজ রেখে খেলতে যা।
আল্লাহ্ তাআলার নির্দেশ তোমরা যাকাত প্রদান করো। আর নফস বলে যাকাত দিসনা মাল কমে যাবে।
আল্লাহ্ তাআলার নির্দেশ তোমরা রমজানে রোজা রাখো। নফস বলে রোজা রাখলে শুকিয়ে যাবি দরকার নেই হজ্জ করারও দরকার নেই।


মোকাবেলাঃ- শুরুতেই বলছিলাম নফসে আম্মারার কথা। সাধারণত আম্মারাহ আপনাকে খারাপ কাজে ধাবিত করতে চায়।তখন মুতমায়িন্নাহ এসে বাধা প্রদান করে। বলে না না যাসনা এটা খুবই গর্হিত কাজ। আজান দিছে নামাজ পড়তে হবে কিন্তু আম্মারাহ ঘুমিয়ে থাকে কিন্তু মুতমায়িননাহ তাগিদ দেয় নামাজের জন্য। কিন্তু আম্মারাহ বলে এতো আরামের ঘুম নষ্ট করা যাবে না।


নফসের খোরাক,রুহের খোরাকঃ- যখনই আমাদের গুনাহের পাল্লা ভারী হয়ে যায়। তখন নফস ধীরে ধীরে শক্তিশালী হয়ে যায়। আমরা প্রতিনিয়ত নফসকে খাবার দিচ্ছি কিন্তু রুহকে দিচ্ছিনা।খাবারের প্রভাবে একজন শক্তিশালী অন্য দিকে খাবারের অভাবে একজন দূর্বল। কিন্তু আমাদের রুহকে আহার করানো প্রয়োজন তা না করে নফসকে দিচ্ছি।


নফসের হাতিয়ারঃ- নফস যখন পুরো শরীরের ড্রাইবার তাই সে সবাইকে দিয়ে পাপ করাচ্ছে হেঁটে হেঁটে চুরি করতে যাওয়ার জন্য পা কে ব‍্য‍বহার করছে।রাস্তা চিনার জন্য চোখকে। এমন ভাবে যাবতীয় খারাপ কাজ করার জন্য সে সব অঙ্গ প্রতঙ্ঘকে হাতিয়ার বানিয়ে রাখছে।মোট কথা নফস হলো রাজা অন্য অঙ্গ প্রতঙ্গ হলো শ্রমিক, সীপাহি, মন্ত্রী ইত্যাদি


নফসের চিকিৎসা করুন, নয়তো পচন ধরবেঃ- নোংরা পচা জিনিসের গন্ধ আমরা সহ‍্য করতে পারিনা বাহ‍্যিক পচা দুর্গন্ধময় ময়লা আর্বজনা থেকে দূরে থাকি। কিন্তু কখনো কি নিজের নফস দূর্গন্ধময় নফস থেকে নিজেকে দূরে রেখেছেন। আপনি যতো বেশি নফসের বিরুদ্ধে যাবেন ততই সে পচতে শুরু করবে। সে যেটা করতে বলবে আপনি উল্টোটা করুন দেখবেন সে আস্তে আস্তে পচে যাবে।


কে শেকলবন্দি আমার কাছে নফস, নাকি নফসের কাছে আমিঃ- আমরা অনেকেই নামাজে মন বসাতে পারিনা। জিহ্বাকে সংযত রাখতে পারিনা চোখকে হেফাজত করতে পারিনা। আর এভাবেই আমাদেরকে শেকলবন্দি করেছে।


নফসের ব‍্যাপারে সতর্ক হোনঃ- নফসের উপর কোনো আস্তা করবেননা। নফস খুবই ভয়ংকর যখন তখন আপনাকে বিপদে ফেলতে পারে। হযরত ওমর রাযিয়াল্লাহু নিজের নফসকে বিশ্বাস করতেন না। তিনিছ নফসকে অনেক বড় শত্রু মনে করতেন। যে ঘরে তার কন‍্যা ঘুমিয়ে ছিলো সে ঘরে তিনি প্রবেশ করতেননা কারন তিনি তার নফসকে বিশ্বাস করতেননা।


এই গুনাহের পিছনে ইন্ধনদাতা কেঃ- নফস হচ্ছে বিড়ালের মতো।বিড়াল যখন কিছু খেতে আসে,তখন সাধারণত আমরা তাড়িয়ে দিই যখন তাড়াই তখন চলে যায়। কিন্তু পরে আবার ফিরে আসে।নফস ও এমন যখন যুদ্ধ করি তখন ভালো পরবর্তীতে আবার তার কুমন্ত্রণা শুরু করে।বিড়াল যেমন বেহায়া। নফস ও তেমন বেহায়া।


নফসের গোলামীর কারণঃ- শৈশবে নফস যেভাবে ফাঁদে ফেলে। এটা হয়ে থাকে মূলত পরিবারের কারণে অতি আদরের সন্তান যা বায়না ধরে তাই দিয়ে দিই বিচার করিনা এটা হালাল নাকি হারাম। ছোট থেকেই টিভি মোবাইল অশ্লীলতার দিকে আমরা কোনো ভ্রুক্ষেপ করিনা। আরো প্রস্রয় দিই। কিন্তু আমাদের তাকে ইসলামের শরীয়তের বিধি বিধান ছোটবেলা থেকেই তাদেরকে নামাজের তাগিদ না দিয়ে উল্টো বলি আরে এতো ছোট মানুষ ঘুমিয়ে থাকুক। এভাবেই আমরা নফসের গোলামী করি নিজেও নফসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারিনা। অন‍্যেকেও করতে দিইনা এভাবেই নফসের গোলামী করে যাই সবসময়।


[ভুল মানুষেই করে যদি আমার লেখায় কোনো ভুল হয়ে থাকে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন] Embed pdf tutorial. Programming Geek
I

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ