বই : অপরাধ প্রতিরােধে ইসলাম
লেখক : মাওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম
ইফাবা প্রকাশনাঃ ১৭০৯/২ ইফাবা গ্রন্থাগার ঃ ৩৪০.৫৯
ISBN : 984-06-0061-3
প্রথম প্রকাশ জুন ১৯৯১ তৃতীয় সংস্করণ মে ২০০৭ বৈশাখ ১৪১৪ রবিউস সানি ১৪২৮
মহাপরিচালক মােঃ ফজলুর রহমান
প্রকাশক মােহাম্মদ আবদুর রব পরিচালক,
প্রকাশনা বিভাগ ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ আগারগাঁও, শেরেবাংলা নগর, ঢাকা-১২০৭ ফোন : ৮১২৮০৬৮ প্রুফ সংশােধন। মােঃ আজিজুল কাইয়ুম বর্ণ বিন্যাস ঃ আশরাফিয়া প্রেস প্রচ্ছদ শব্দরূপ মুদ্রণ ও বাঁধাই মুহাম্মদ আবদুর রহীম শেখ। প্রকল্প ব্যবস্থাপক, ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রেস আগারগাঁও, শেরেবাংলা নগর, ঢাকা-১২০৭ ফোন : ৯১১২২৭১ মূল্যঃ ৭৫.০০ টাকা
ইসলাম আল্লাহ তা'আলা মনােনীত একমাত্র পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান। মানুষের ইহকালীন ও পরকালীন জীবনকে কল্যাণময় করার সকল ব্যবস্থা ইসলামী জীবনবিধানে রয়েছে। মানুষ তা অনুসরণ না করে নিজেরাই নিজেদেরকে অশান্তি ও অকল্যাণের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ তা'আলা প্রদত্ত ইনসাফপূর্ণ ও কল্যাণকর জীবনবিধানের পরিপন্থী ক্রিয়া-কর্মের নামই অপরাধ। অপরাধ সভ্যতা ও সংস্কৃতির পরিপন্থী এবং শান্তি ও নিরাপত্তা বিনষ্টকারী। মানুষের জীবনে অশান্তি ও অকল্যাণ আপতিত হয় অপরাধ সংঘটনের মাধ্যমে। অপরাধ ও অপরাধ প্রবণতা থেকে মানুষকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য মহান ধর্ম ইসলামে রয়েছে কতকগুলাে সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা। এর মধ্যে রয়েছে ।
১. ভাল কাজের উত্তম প্রতিদান ও মন্দ কাজের শাস্তি সম্পর্কে মানুষকে অবহিত করা এবং ভাল কাজের প্রতি উৎসাহিত করা ও মন্দ কাজের পরিণাম সম্পর্কে সতর্ক করা। এই সম্পর্কে আল্লাহ তা'আলার বাণী হচ্ছে—“হে নবী! লােকদেরকে হিকমত এবং উত্তম উপদেশের মাধ্যমে আপনার প্রভুর দিকে আহ্বান করুন।” “হে নবী! আপনার নিকটতম সঙ্গীদেরকে মন্দ কাজের আযাবের ভীতি সম্পর্কে সতর্ক করুন।”
২. সৎকাজের আদেশ এবং অসৎকাজের বাধা দানের মাধ্যমে মানুষকে অপরাধ থেকে দূরে রাখা। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা'আলার নির্দেশ হচ্ছে, “তােমাদের মধ্য থেকে এমন একটি দল অবশ্যই হতে হবে, যারা কল্যাণের দিকে আহ্বান জানাবে এবং ন্যায়ের আদেশ ও অন্যায়ের নিষেধকরণের কাজে সর্বদা ব্যাপৃত থাকবে।”
৩. ইবাদত-বন্দেগীর মাধ্যমে কুপ্রবৃত্তিকে অবদমন করা এবং অপরাধ থেকে বিরত থাকার মাধ্যমে আত্মাকে কলুষমুক্ত ও পবিত্র রাখা। এ বিষয়ে আল-কুরআনের বাণী-“নিশ্চয়ই নামায সকল অশ্লীলতা ও পাপকার্য থেকে বিরত রাখে।” হাদীস শরীফে রােযাকে অন্যায় ও অশ্লীলতা থেকে আত্মরক্ষার ক্ষেত্রে ঢালস্বরূপ বর্ণনা করা হয়েছে।
৪. ন্যায়বিচারের মাধ্যমে শাস্তির বিধান কার্যকর করার দ্বারা মানুষকে অপরাধে লিপ্ত হওয়া থেকে বিরত রাখা। আল্লাহ তা'আলার ঘােষণা হচ্ছে, ব্যভিচারিণী এবং ব্যভিচারীর প্রত্যেককে তাদের অপরাধের শাস্তিস্বরূপ একশত বেত্রাঘাত করুন।”
বস্তুত, ইসলামী জীবনবিধানের মূল উদ্দেশ্য হলাে অপরাধ সংঘটিত হওয়ার সুযােগ সৃষ্টি হতে না দেয়া। অপরাধ সংঘটনের পূর্বেই এর সকল উপায়-উপকরণ ও পন্থা রােধ করে দেয়ার প্রতি ইসলাম সর্বাধিক গুরুত্ব প্রদান করেছে। যেমন, ব্যভিচারে উৎসাহ প্রদানকারী নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা, অশালীন পােশাক-পরিচ্ছদ ইত্যাদিকে ইসলাম পরিহার করতে বলেছে। এরূপ প্রতিবন্ধকতা ও নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের পরও কেউ অপরাধে লিপ্ত হয়ে পড়লে তখন ইসলাম তার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়েছে।
মানুষের প্রণীত বস্তুবাদী বিধানে কেবল অপরাধ সংঘটনের পর শাস্তির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আর ইসলাম অপরাধ সংঘটনের পূর্বে এর উপায়-উপকরণ ও পরিবেশকেই সংহত করে দিয়েছে। | ইসলামী বিধানের উদ্দেশ্য কাউকে শাস্তি দেয়া নয়, বরং অপরাধ সংঘটনের সুযােগকে বাধাগ্রস্ত করা এবং মানুষকে অকল্যাণ ও অনিষ্ট থেকে বাঁচিয়ে রাখা। তাই ইসলাম ব্যতীত অন্য সব বিধি-বিধানকে আল্লাহ তা'আলা ‘জাহিলিয়াত' বলে আখ্যায়িত করেছেন—“ওরা কি (ইসলামের পরিবর্তে) জাহিলিয়াতের বিধান ও প্রশাসন চায় ? অথচ দৃঢ় প্রত্যয়শীল লােকদের জন্য আল্লাহ্র চেয়ে উত্তম বিধানদাতা ও প্রশাসক আর কে হতে পারে ?”
এ বিষয়ে উপমহাদেশের প্রখ্যাত আলিম, লেখক, বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ মরহুম মাওলানা মুহাম্মাদ আবদুর রহীম রচনা করেন ‘অপরাধ প্রতিরােধে ইসলাম' শীর্ষক এই তত্ত্ব ও তথ্যবহুল মূল্যবান গ্রন্থটি। বইটির গুরুত্ব বিবেচনা করে ১৯৯১ সালে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ থেকে প্রথম প্রকাশ করা হয়। অল্পদিনের মধ্যেই এর দুটি সংস্করণের সকল কপি নিঃশেষিত হয়ে যায়।
ব্যাপক পাঠকচাহিদার প্রেক্ষিতে মূল্যবান এই গ্রন্থটির তৃতীয় সংস্করণ প্রকাশ করতে পেরে আমরা মহান আল্লাহর দরবারে জানাচ্ছি অশেষ শুকরিয়া।
মােহাম্মদ আবদুর রব।
পরিচালক, প্রকাশনা বিভাগ ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ
0 মন্তব্যসমূহ
ℹ️ Your Opinion is very important to us, Please Writer your comment below about this Post.....