চক্ষে আমার তৃষ্ণা PDF | বই রিভিউ | Chokkhe Amar Trishna

বই: “চক্ষে আমার তৃষ্ণা”
লেখিকা: মুন্নি আক্তার প্রিয়া
প্রকাশকাল: বইমেলা ২০২২ 
প্রকাশনী: নবকথন প্রকাশনী
মুদ্রিত মূল্য: ২৭০৳

চক্ষে আমার তৃষ্ণা PDF | বই রিভিউ | Chokkhe Amar Trishna

কাহিনি সংক্ষেপ

চক্ষে আমার তৃষ্ণা : এতদিন ধরে যেই আকাঙ্ক্ষা, যেই পিপাসা, তৃষ্ণা আমার চক্ষুদ্বয়ে ছিল আজ তার পরিসমাপ্তি ঘটেছে। আমি আরও একবার দেখতে পেয়েছি আমার প্রিয়দর্শিনীকে। কিন্তু এবার যে আমার ইচ্ছে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল, আল্লাহ্। মানুষ স্বভাবসুলভভাবেই লোভী প্রজাতির, আমিও বোধহয় তার ব্যতিক্রম নই। এবার যে প্রিয়দর্শিনীকে জীবনসঙ্গিনী হিসেবে পাওয়ার তৃষ্ণা জেগেছে মনে!
            রবী ঠাকুরের “চক্ষে আমার তৃষ্ণা” সঙ্গীতটির এই লাইনটা যেন মানবজীবনের কিছু কিছু মানুষের মনে প্রকট আকার ধারণ করে। তৃষ্ণা মেটানো কারো কারো পক্ষে দুঃসাধ্য হয়ে পড়ে। কারো বা সেই তৃষ্ণা মিটে; আবার কারো বা মিটে না। 'চক্ষে আমার তৃষ্ণা' নামকরণের এই উপন্যাসটির প্রায় চরিত্রের মাঝেই এমন কিছু তৃষ্ণা আছে যেগুলো মেটানো শুধু প্রয়োজনই নয় বরং আবশ্যক বটে। একেকজনের চোখের এই তৃষ্ণা, পিপাসা কী শেষ পর্যন্ত মিটবে?

বইটি কী বিষয়ে: 
চক্ষে আমার তৃষ্ণা বইটি পারিবারিক সম্পর্ক ও ভালোবাসার প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি নিয়ে বইটি।

বইয়ের চরিত্র

চক্ষে আমার তৃষ্ণা বইয়ের সবগুলো চরিত্র নিজ জায়গা থেকে দারুণ ভাবে ফুটিয়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে লেখিকা। কোন চরিত্রে কমতি মনে হয়নি।

শিক্ষনীয় দিক

প্রতিটি চরিত্র থেকে শিক্ষা নেওয়ার মতো বিষয় রয়েছে বইটিতে। সংগ্রামী ও সহনশীলতা হওয়া, অন্যায়ের প্রতিবাদ করা সহ আরও অনেক দিক রয়েছে যা বইটি পড়লে শেখা যাবে। 

অপছন্দের দিক: 
কোন অপছন্দীয় দিক নেই।

লেখিকার দক্ষতা

 ❝ চক্ষে আমার তৃষ্ণা ❞ বইটিতে লেখক মুন্নী আক্তার প্রিয়া তার লেখার দারুণ দক্ষতা দেখিয়েন। প্রিয়জনদের ভালোবাসা, কাউকে তীব্রভাবে চাওয়া এবং তার কাছ থেকে পাওয়া অবহেলা একজন মানুষকে কতোটা নির্মম পরিণতি দিতে পারে তা লেখিকা বাস্তবভাবে ফুটিয়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে।যা পাঠক হৃদয়কে ছুঁয়ে যাবে।

ব্যক্তিগত মতামত

ভালোবাসা ও জীবনের বাস্তবটার মিশেলে বইটি আকর্ষণীয় ভাবে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন লেখিকা। বাস্তবটা অনেক কঠিন। কেউ না চাইতেও পেয়ে যায়, কেউ পেয়ে হারায় কেউ'বা পেয়েও পায় না। বইটিতে কিছু মিষ্টি সম্পর্ক উঠে এসেছে। সেই সাথে অপ্রিয় কিছু সত্য উঠে এসেছে যা মানুষের জীবনকে মুহূর্তেই বদলে দিতে পারে। 
❝ চক্ষে আমার তৃষ্ণা ❞ বইটিতে আপনি পাবেন সম্পর্কের মধুরতা, সংগ্রাম,কঠিন সত্য, ভালোবাসা, অবহেলা, অকাঙ্খিত ঘটনা।
প্রিয়জন হারানোর শোক, তার অনুপস্থিতে যে কতটা প্রভাব ফেলে তা বইটি পড়ে পর্যালোচনা করা যায়। পরিবারের এক মধুর মিল বন্ধন রয়েছে বইটিতে।  
মন ছুঁয়ে যাওয়া একটি উপন্যাস। প্রতিটি অংশে রয়েছে বাস্তবতার ছোঁয়া। 

উপসংহার

 লেখিকা শুরু থেকে গল্পটি দারুণ ভাবে টেনে নিয়ে গেছেন উপসংহার অবধি। 
আদৌও কী উপসংহারে ভালোবাসার এই তৃষ্ণা মিটে? না আরও গভীর তৃষ্ণা পেয়ে বসে।  
জানতে হলে পড়তে হবে বইটি।
যে সব পাঠিকা রোমান্টিক বইপ্রেমী।তারা এই বইটি পড়তে পারেন। ভালো লাগার মতো একটা বই।

রেটিং : ০৯/১০

( প্রথম বার রিভিউ। ভুল-ভ্রান্তি ক্ষমা করবেন)
Review Credit 💕 Jebin Zara

PDF Download Free Chokkhe Amar Trishna Book - Writer : Humayun Ahmed



প্রতিটি মানুষের জীবনেই কোনো না কোনো কারণে চক্ষে তৃষ্ণা থাকে।সে হয়তো কোনো ভালোবাসার মানুষকে দেখার জন্য কিংবা আপন কাউকে দেখার জন্য আবার হয়তো কোনো অপরিচিত মানুষকে দেখার জন্য। আর এই তৃষ্ণা নিয়ে আমরা চলছি জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত! 
অনেকের রিভিউ কিংবা কমেন্ট এ দেখেছি কেউ বলেছে নাম টা পছন্দ হই নি কিন্তু গল্প পড়ার তারা বলেছে নামটার স্বার্থকতা তারা এবার বুঝেছে।আমি ও বলব গল্প না পড়লে "চক্ষে আমার তৃষ্ণা" নামটির স্বার্থকতা বোঝার উপায় নেই।যে নামের মধ্যেই ছিল বিষাদের ছায়া সেই নামের গল্পে যে বিষাদ থাকবে আমার মনে কখনোই আসে নি।আর এই বিষাদ যেন তেন বিষাদ নই ছিল এক ভয়ংকর বিষাদের গল্প।গল্পের চরিত্র নিয়ে কথা বলা যাক....

নিধি,নীনিকা ও নীলা ও নাঈম মাহমুদ নিয়ে ছিল ছোট একটা সংসার। যেখানে বাবার ভালোবাসা ছিল,বোনদের ভালোবাসা ছিল।শুধু ছিল না মায়ের ভালোবাসা।উহু একেবারেই ছিল না তা না ছিল কিন্তু সে মা না বড় বোন নিধি ছিল।যে নিজের সন্তানের মতন করে আগলে বড় করেছিল দুইবোনকে।একজন পিতার দায়িত্ববান বড় মেয়ে হয়ে উঠেছিল সে।

নিধিঃ এই চরিত্রকে আমি ভালোবাসি।ওইযে সকলে বলে না বড় বোন থাকা ভাগ্যের ব্যাপার। আমার ও বড় একটা বোন আছে আমি কিন্তু সেই দিক থেকে ভাগ্যবতী। নিধি নিজের ইচ্ছা-অনিচ্ছা বিসর্জন দিয়ে অকৃত্রিম ভালোবেসে গিয়েছিল তার পরিবারকে।ছোট বোন গুলোকে অতি যত্নে বড় করেছিল।নিজের কোনো এক ভয়ংকর অতীতের জন্য নিজের ভালোবাসাকে ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিল।ভালোবেসে ও মুখ ফুটে আতিফকে বলতে পারি নি হ্যা আমি ভালোবাসি তোমাকে আমি পাষাণ নই।কিন্তু পিছুটান তার মুখ বোবা করে দিয়েছিল। এতো ত্যাগ, এতো কষ্ট সহ্য করে, এতো দায়িত্ব, কর্তব্য পালন করেছিল একটু সুখের আশায় কিন্তু কে জানত শেষটা এমন হবে?

নীনিকাঃগল্পের সবচেয়ে শান্ত স্বভাব বোধহয় এই চরিত্র ছিল আমার মতে।মেয়েটা শান্ত স্বভাবের ছিল।পড়ালেখার বাইরে তার কোনো দুনিয়া ছিল না।কিন্তু কোথা থেকে যেন হুট করেই ভালোবাসার সাত রঙা নিয়ে হাজির হয় ফাহিম নামের এক প্রতারক।যে মেয়ের জীবনে ভালোবাসার স্থান ছিল না সেই মেয়েই কিনা আসমান সমান ভালোবেসেছিল ফাহিমকে।কিন্তু শেষটা এমন হওয়ার কি খুব দরকার ছিল?

নীলাঃ পরিবারের ছোট সদস্যকে নিয়ে আমি আর কি বলব?যেখানে আমি নিজেই পরিবারের ছোট সদস্য।আমরা বোধহয় একটু বেশিই ফাজিল হই?নীলা চরিত্র ছিল এমন এক চরিত্র যা শুধু তার পরিবার,খালাখালুর বাসা না আমাদের পাঠকদের ও মাতিয়ে রেখেছিল।গল্পের যেন প্রাণ ছিল নীলা।

আতিফঃএই ছেলেটা বোধকরি গল্পের সবচেয়ে অভাগা চরিত্র।কেন বলছি ভাবছেন?উত্তর পেতে হলে যে গল্পটা পড়তে হবে।তবে আমি খুব করে চাই আমার জীবনে আতিফের মত এক নিঃস্বার্থ ভালোবাসার প্রেমিক আসুক।এই মানুষটার ভালোবাসার গভীরতা এতো বেশি যে মনে নিধি নামটা একবার লেখার ফলে সারাজীবন সেই নামটা নিয়েই কাটিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল।এই মানুষটার জন্য আমার কষ্ট হয় অনেক বেশি কষ্ট হয়।নিধিকে দেখার তৃষ্ণা তার আজীবন রয়ে গেল।এই তৃষ্ণার পরিসমাপ্তি ও যে সম্ভব নয়!

আয়মানঃপেশায় একজন ডাক্তার হলে ও সে ছিল প্লেবয় বলতে গেলে।রিলেশন, প্রেম-ভালোবাসা এগুলো ছিল তার কাছে খেলার মত।কিন্তু ওইযে বলে না হুট করেই মনের কোথায় কি হয়ে যায় কেউ বলতে পারে না।আয়মানের সাথে ও ঘটেছিল এমন কিছু।বাসে এক অপরিচিত মেয়েকে শাড়িতে দেখে মনে অদ্ভুত শিহরণ জাগে তার।কিন্তু সে বুঝতে ও পারে নাই এই শিহরণে তার মধ্যে ভালোবাসার বীজ বুনতে শুরু করে।নাম না অজানা অচেনা সে মানুষটার নাম দেয় সে প্রিয়দর্শিনী। একবার দেখায় যে মেয়ে তার অন্তরে জায়গা করে নেয় সে মেয়েকে দেখার এক প্রবল ইচ্ছা তার মধ্যে শুরু হয় কিন্তু তার দেখা না পাওয়ায় আয়মানের চক্ষে তৃষ্ণা জাগতে থাকে।এমন এক তৃষ্ণা যার নাম হয় "চক্ষে আমার তৃষ্ণা"। আয়মানের চোখে তার প্রিয়দর্শিনীকে দেখার যে তৃষ্ণা তা কি পূরণ হবে?নাকি এই তৃষ্ণা না মেটার দহন নিয়ে আজীবন পুড়বে?

বাকি চরিত্র গুলো নিয়ে বিশ্লেষণ করছি না।নাঈম মাহমুদ ছিলেন একজন আদর্শ পিতা।তাদের সংসার ছিল আনন্দে ভরা।কিন্তু শেষ পরিনত যে এটা হবে কেউ জানত না।গল্পের প্রায় প্রতিটি চরিত্রের কাউকে না কাউকে দেখার তৃষ্ণা রয়েছে।নিধি,নীনিকা ও নীলার খালা খালুকে আমার বেশ লেগেছে।নীলা নিজের মেয়ে না হলে ও তারা অনেক বেশি ভালোবাসা দিয়ে রেখেছিল নীলাকে।ওদের গৃহকর্মী মেয়েটাকে অনেক ভালো লেগেছে।ফাহিম চরিত্র নিয়ে আমি কিছু বলতে চাচ্ছি না।তবে গল্পের শুরু থেকে যে আনন্দে উল্লাসে বা মজার সহিত পড়ছিলাম শেষটা যে অন্ধকারে ছেয়ে যাবে আমি ভাবতে পারি নি গল্পটা একদম সাদা মাটা ছিল কিন্তু শেষটায় যেন গল্পের সবকিছু বদলে গেলো।তবে গল্পের সাথে নামটা স্বার্থকতা পেয়েছে।সব মিলিয়ে আমার খুব ভালো লেগেছে।তবে গল্প যেন চোখের পলকে শেষ হয়ে গেলো। দ্বিতীয় পার্টের অপেক্ষায় রইলাম।

লেখিকার কাছে আন্তরিক ভাবে ক্ষমা চাইছি রিভিউ দিতে এতো দেরী করার জন্য।আমি লেখালেখি করলে ও রিভিউ লেখাতে খুব কাচা।যা মাথায় এসেছে লিখে ফিলেছি।ভালোবাসা নিও। দোয়া রইলো! তুমি ও আমার জন্য দোয়া করিও।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ