- বই: রহস্যলীনা ৩ বুক রিভিউ
- গল্প: নবজাতক
- লেখক: সুস্মিতা জাফর
- সম্পাদক: ফৌজিয়া খান তামান্না
- ধরণ: যৌথ গল্প সংকলন
- প্রকাশনী: চলন্তিকা
- মুদ্রিত মূল্য: ৪৫০৳
- Review Credit 💕 Samiha Hossain Shoily
Cover image : Rohossholina 3 Novel |
Rohossholina 3 is a great collection. Every story was great in one way or another. Finally I read Fauzia Khan Tamanna Apur Tablet Strip. Like awesome. A really nice story. After We Add This Book you can download Rohossholina 3 or Read easily.
"ওয়ার্ডের বারান্দাতেই সারি সারি শুইয়ে রাখা হয়েছে লাশ।
লাশগুলো ঢেকে রাখা হয়েছে সাদা চাদরে। ইশ্! এত্ত দুর্গন্ধ ভেসে আসছে বারান্দাটা থেকে। ঠিক যেন একদম আজ রাতের গাইনি ওয়ার্ডে ভেসে বেড়ানো দুর্গন্ধের মতন"!
সময়টা সেহেরির প্রায় ঘণ্টা তিনেক আগের। ওয়ার্ড থেকে কেমন একটা চাপা শুঁটকি পচা গন্ধ আসছে। ভীষণ কটু গন্ধ। রাত একটার সময় ছত্রিশ সপ্তাহের গর্ভবতী এক রোগী এলো। তাৎক্ষণিক ডেলিভারি করাতে চাইছে অথচ রোগীর ব্যথা ওঠেনি, পানি ভাঙেনি। এমনকি গর্ভকালীন কোনো জটিলতাও নেই। তাহলে?
বলছিলাম গল্পকার সুস্মিতা জাফর রচিত ছোটগল্প 'নবজাতক' নিয়ে। গল্পটি ফৌজিয়া খান তামান্না সম্পাদিত রহস্য, ভৌতিক ও থ্রিলার জনরা ভিত্তিক যৌথ গল্প সংকলন রহস্যলীনা সিরিজের তৃতীয় বইটিতে স্বমহিমায় স্থান করে নিয়েছে। রহস্যলীনা ৩ বইটির এবারের স্লোগান ছিল "অল্প কথায় রহস্য গল্প"। এই নাতিদীর্ঘ ছোটগল্পটিও সেই স্লোগানকে মাথায় রেখেই রচিত। সংকলনটির জনরার বিষয়টি থেকে প্রশ্ন আসতে পারে, গল্পটি কোন ঘরানার? ভৌতিক, রহস্য নাকি থ্রিলার? সেই প্রশ্নের উত্তর পাঠক না হয় গল্প পড়েই বুঝে নেবেন।
'নবজাতক' গল্পটি বর্ণিত হয়েছে একজন গাইনোকোলজিস্টের ভাষ্যে অর্থাৎ উত্তম পুরুষে এবং পুরো গল্পটিতে যে ঘটনাটি উত্থাপিত হয়েছে তা শুধুই একটি রাতের কিছু সময়ের ও ব্যাখ্যাহীন অভিজ্ঞতার বর্ণনা, যার সাক্ষী স্বয়ং বক্তা।
সার্জারি ওয়ার্ডের সারি সারি লাশ, গাইনি ওয়ার্ডের উৎকট গন্ধ, সেই সাথে হঠাৎ হাজির হওয়া আতঙ্কগ্রস্ত দম্পতি— আপাতদৃষ্টিতে ঘটনাগুলো বিক্ষিপ্ত মনে হলেও গল্পকার বেশ নৈপুণ্যের সাথে এই বিচ্ছিন্ন ঘটনাগুলোকে এক সুতোয় গেঁথে সৃষ্টি করেছেন গল্পটির। পেশাগত জীবনে চিকিৎসক হওয়ার সুবাদে গল্পের ভাঁজে ভাঁজে হাসপাতালের পারিপার্শ্বিক পরিবেশের আবহ বেশ চমৎকারভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন লেখক। গল্পপাঠের সময় করিডোর, গাইনি ওয়ার্ড, তার পাশের লিফট, চার তলার শিশু ওয়ার্ড, সার্জারি ওয়ার্ডের বারান্দায় থাকা সারি সারি লাশ— এই দৃশ্যগুলো চোখের সামনে ভাসছিল। এই গল্পটা এক বসায় ঝটপট পড়ে ফেলার মতো হলেও আমি পাক্কা এক ঘণ্টা বসে দু বার পড়েছি। ঝরঝরে বর্ণনা, অথচ পরিস্থিতির তাৎপর্য উপলব্ধিতেই সময়টা পেরিয়ে গেল।
গল্প: নবজাতক
লেখক: সুস্মিতা জাফর
বই: রহস্যলীনা ৩
সম্পাদক: ফৌজিয়া খান তামান্না
ধরণ: যৌথ গল্প সংকলন
প্রকাশনী: চলন্তিকা
মুদ্রিত মূল্য: ৪৫০৳
রহস্যলীনা ৩ বই রিভিউ ২
রহস্যলীনা সিরিজের দুটো বই পড়া হয়েছিলো, সেই থেকেই মূলত আগ্রহ। তীব্র অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে রহস্যলীনা-৩ ও পেয়ে গেলাম।এবারের সংকলনকে একটু বেশিই দারুন মনে হলো।
আমাদের জীবনে চলার পথে প্রায়শই আমরা বিভিন্ন অস্বাভাবিক কিংবা অতিপ্রাকৃত ঘটনার সাথে পরিচিত হই। যেগুলোর কোনো ব্যাখা থাকে না আমাদের নিকট। খুব সময়ই আমরা নারীদের লেখনীতে এরকম গল্প পেয়ে থাকি। সেই ধারা থেকে বের হয়ে এসে রহস্যলীনা-৩ একটি ব্যতিক্রমী গ্রন্থ। তার উপর ছিল শব্দসীমা (১৫০০ শব্দের মধ্যে গল্পগুলো লিখতে হবে)। সবকিছু পেরিয়ে দারুনভাবে যথার্থতা পেয়েছে সংকলনটি।
রহস্যলীনা ছাড়াও আমি ফৌজিয়া খান তামান্না এবং সালসাবিলা নকি এই দুজন লেখিকার ফ্যান। তো প্রথমেই তাদের লেখা সে দুটো গল্প পড়ে ফেলছিলাম এবং আসলেই দারুন লেগেছে। পুরো বইটা পড়ার আগ্রহ আরো বেড়ে গেল। তবে সত্যি বলতে পুরো বইয়ের মধ্যে "ট্যাবলেট স্ট্রিপ" এবং "গল্পটা ভুলের" এই দুটো গল্পই ভয়ানক রকম সুন্দর লেগেছে। তবে বাকিগুলো বেশি ভয়ানক না হলেও সুন্দর। পুরো সংকলনটিতে ৩৫জন লেখিকা তাদের মেধা এবং শ্রম ঢেলে দিয়েছেন বইটিকে অনন্যতা দান করতে।
সুতরাং সে জায়গা থেকে বইটিকে সার্থক বলা যায়। কারন সবার গল্পগুলোতে ভিন্নতা ছিল, কারো সাথে কারো গল্প সাদৃশ্য কিংবা সাংঘর্ষিক না।
বইয়ের ব্যাপারেএকটা কথা বলতেই হয়, সেটি হচ্ছে, গল্পের নামকরণগুলো আমার চমৎকার লেগেছে। কয়েকটি নাম যদি উল্লেখ করি যেমনঃ সাপের হাঁচি, রোলেক্স, ভূত গোয়েন্দা, নরখাদক, অসূয়া।
গঠনমূলক সমালোচনাঃ দু'একটা গল্প আমার কাছে একটু কম ভৌতিক এবং কম গভীর মনে হয়েছে। ঘটনাটা কম উপভোগ্য লেগেছে। তবে ৩৫টা লেখার মধ্যে একটা লেখা এদিক-সেদিক হতেই পারে, এটি খুবই স্বাভাবিক।
ভৌতিক গল্পের প্রতি টান থাকলে বইটি পড়ে দেখতে পারেন আপনিও।
এক নজরেঃ
বইঃ রহস্যলীনা-৩
সম্পাদনায়ঃ ফৌজিয়া খান তামান্না
প্রচ্ছদঃ সোহেল আশরাফ
মলাট মূল্যঃ ৪৫০টাকা
প্রকাশনীঃ চলন্তিকা
রিভিউ ও বইছবিঃ মুশফিকা ইসলাম
রহস্যলীনা ৩ দুর্দান্ত একটা সংকলন। প্রতিটা গল্পই কোনো না কোনো দিক থেকে দারুণ ছিল। সবশেষে পড়েছি ফৌজিয়া খান তামান্না আপুর ট্যাবলেট স্ট্রিপ। অসাধারণ লেগেছে। আসলেই চমৎকার একটা গল্প। এবার আসি সবচেয়ে কোন গল্পগুলো ভালো লেগেছে সেই তালিকায়। ট্যাবলেট স্ট্রিপ, গরু, প্রহেলিকা, চন্দ্রহার, বিনিময়, বুলেট, অসূয়া, জাদুকর,চয়নিকা,গল্পটা ভুলের গল্পগুলো সবচেয়ে ভালো লেগেছে।
সাইন্স ফিকশন হিসেবে অ্যান্টেনা,সাপের হাঁচি ( সায়েন্স ফিকশন ই তো তাই না?),অন্তরালে কে ভালো লেগেছে। যদিও অন্তরালে কে গল্পটার প্রথমে বুঝতে একটু সমস্যা হচ্ছিল। তবে পরমুহূর্তেই বুঝে ফেলেছি। নরখাদক এবং মঙ্গলী পড়ে খুব মায়া লেগেছে। ভানুমতি পড়ে বেশ মজা পেয়েছি। আমার যেহেতু থ্রিলার এবং ভৌতিক গল্পে " শেষ হইয়াও হইল না শেষ " অথবা " চলতেই থাকবে" টাইপের সমাপ্তি খুব পছন্দ তাই ভূতুরে পেইন্টিং গল্পটা বেশ ভালো লেগেছে।
শেষ বেলার গল্প, সব লতিফ লেট নয়, ভ্রম, অসিত ইন্দ্রজাল,লোভ,সাঁঝবেলায়,নিশির ডাক,কেবিন নম্বর-৪০৬,রোলেক্স, প্রতারক,কাটা আঙুল ইত্যাদি গল্পগুলোর রহস্য শুরুতেই বুঝতে পারলেও এদের চমৎকার লেখনশৈলী শেষ পর্যন্ত গল্পেই আটকে রেখেছিল। এবার যা বলব তার জন্য আগেই সরি বলছি। যেহেতু তামান্না আপু ভালোলাগা মন্দলাগা দুটোই শেয়ার করতে বলেছেন তাই বলছি।
সত্য উন্মোচন গল্পটা পুরোটাই প্রকৃতির হাতে না ছেড়ে একটু অন্যরকমভাবে লিখলে মনে হয় আরও ভালো লাগত। ভূত গোয়েন্দা গল্পে হঠাৎ করে কেন ভূত ছেলেটা মেয়েটার সাথে যোগাযোগ করল বিষয়টা একটু ব্যাখ্যা করলে ভালো হতো। ভক্ষকই রক্ষক, নীল চোখ গল্পগুলো আরেকটু বিশ্লেষণ করলে হয়তো আরও ভালো লাগত।
পাঠক হিসেবেই মতামত দিলাম।
সবশেষে লেখক না পাঠক হিসেবেই বলব, " রহস্যলীনা ৩" পুরাই একটা পয়সা উসুল সংকলন । ইনশাআল্লাহ পাঠকদের ভালো লাগবে।
রিভিউ লিখেছেন 💕 তুনা ফেরদৌসী
রহস্যের মায়াজালে আমাদের চারপাশ আবর্তিত। রহস্যের প্রতি মানুষের আকর্ষণ যুগ যুগ ধরেই। এই কারনে যুগে যুগে রহস্য নির্ভর লেখাগুলো পাঠক প্রিয়তা পেয়েছে খুব বেশিই। কারণ যেখানে রহস্য সেখানে মানুষের জানার প্রবল আকর্ষন। এমনই আকর্ষণ থেকে সম্প্রতি শেষ করলাম রহস্যলীনা ৩ গল্প সংকলনটি। ৩৫ জন নারী লেখকের রহস্যময় গল্প নিয়ে এটি সম্পাদিত হয়েছে। এই ববইয়ের তেমনি একটি গল্প হলো "বিনিময়"।
★ বিনিময় লাগবে বিনিময়, রক্তমাংসের নতুন শরীর পেতে, রক্তমাংসেরই বিনিময় লাগবে.......
বর্তমানের পাঠক নন্দিত লেখক রুকসাত জাহানের বিনিময় গল্পটি এমন একটি রহস্যপূর্ণ সংলাপ দিয়ে শুরু হয়েছে। গল্পটির মূল কেন্দ্রবিন্দু শুরু হয়েছে সওদাগর ইসমাইল ফরাজির বাড়ির থেকে যার নাম সওদাগরবাড়ি। এবাড়ির দুই নাত বউ হাসিনা যে কিনা নিঃসন্তান আর জরি যার দুই ছেলে ক৷ মেয়ে। কিন্তু ঘটনার আকস্মিকতায় জরির একমাত্র মেয়ে সুমনা এবং ছোট ছেলে শিমুল হঠাৎ করেই একদিন গায়েব হয়ে যায়। তারপর আর কোন খোজ নেই। কি হয়েছিল বাচ্চা দুটোর সাথে। তাহলে কি গাঁয়ের মানুষের কথাই কি সঠিক? এবাড়ির উপর অভিশাপ আছে? জরি কি পারবে তার মেজো পুত্র শামিমকে বাচাতে? নাকি এই অভিশাপের পিছে রয়েছে অন্য কোন রহস্য। জানতে চাইলে পড়তে হবে চমৎকার এই গল্পটি।
0 মন্তব্যসমূহ
ℹ️ Your Opinion is very important to us, Please Writer your comment below about this Post.....