রমযানে মুমিনের করণীয় ও বর্জনীয় | ডঃ সালেহ বিন ফাওয়ান

রমযানে মুমিনের করণীয় ও বর্জনীয়
লেখক : ডঃ সালেহ বিন ফাওয়ান বিন আব্দুল্লাহ আল-ফাওযান
প্রকাশনী : কাশফুল প্রকাশনী
বিষয় : সিয়াম, রমযান, তারাবীহ ও ঈদ
অনুবাদক : মিজানুর রহমান ফকির
সম্পাদক : ড. মোহাম্মদ মানজুরে ইলাহী
পৃষ্ঠা : 176
ভাষা : বাংলা

রমযানে মুমিনের করণীয় ও বর্জনীয় লেখক : ডঃ সালেহ বিন ফাওয়ান বিন আব্দুল্লাহ আল-ফাওযান প্রকাশনী : কাশফুল প্রকাশনী বিষয় : সিয়াম, রমযান, তারাবীহ ও ঈদ
ছবি : রমযানে মুমিনের করণীয় ও বর্জনীয়

রমযানে মুমিনের করণীয় ও বর্জনীয় : রমযান মাসকে আল্লাহ তা’আলা বরকতময় মাস বলে অভিহিত করেছেন। এ মাসের রয়েছে বিশাল মর্যাদা ও ফযীলত। রয়েছে বিশেষ বিশেষ আমল। এ মাসকে কেন্দ্র করে মহান আল্লাহ প্রতিটি ঈমানদারের ইহলৌকিক ও পারলৌকিক উন্নতি ও কল্যাণ সাধনের সুযোগ অবারিত করে দিয়েছেন। সে দিকে লক্ষ্য করে আমরা কয়েকটি পাঠে বিভক্ত করে এ নিবন্ধটি সাজিয়েছি। প্রত্যেক মুসলিম যাতে এ মাসের মহা মূল্যবান প্রতিটি মুহূর্তকে কাজে লাগিয়ে প্রতিশ্রুত প্রতিদান অর্জনে উদ্যোগী হয় এবং চেষ্টা-শ্রমের সবটুকু নিংড়ে দেয়, সেভাবে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করেছি। অনুপ্রেরণা বৃদ্ধি পাবে সে আশায় রমযানের ফযীলত ও মর্যাদার আলোচনাও যুক্ত করে দিয়েছি। প্রাসঙ্গিক ভাবনায় সিয়াম ও তারাবীহ সংক্রান্ত কিছু ফিকহী মাসআলা-মাসায়েলও উল্লেখ করেছি। সবকিছুর মূলে রয়েছে আমার নিজেকে এবং অপরাপর সকল মুসলিম ভাইকে সচেতন করা ও মহান আল্লাহ ও আখেরাতের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়া।

ক্ষণস্থায়ী পৃথিবীর মোহ থেকে আখেরাতমুখী করতে, মুসলিমদের জীবনে সম্প্রীতি ও সহানুভূতি জাগাতে আসে সিয়ামের মাস রমযান। আল্লাহ তা'আলা বলেন,

يأيها الذين ءامنوا كتب عليكم الصيام كما كتب على الذين من قبلكم

لعلكم تتقون ) [البقرة: 183]

“হে মুমিনগণ! তোমাদের জন্য সিয়াম ফরয করা হয়েছে, যেভাবে ফরয করা হয়েছে তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর, যাতে তোমরা তাওয়া অবলম্বন কর।” [সূরা আল-বাকারা: ১৮৩]

রমযান এমন এক মাস যখন মুমিন বান্দার ওপর শয়তানী প্রবৃত্তির আক্রমণ কম হয়, রাত-দিন হৃদয়-মন নরম থাকে। একজন দেখা যায় তার গুনাহের জন্য ক্ষমা চাইছে, আরেকজন আনুগত্যের তাওফীক প্রার্থনা করছে। তৃতীয়জনকে দেখা যায় আল্লাহর শাস্তি থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছে, চতুর্থজন ভালো কাজের ফলাফল সুন্দরভাবে পাওয়ার আশা করছে, পঞ্চমজনকে দেখা যায় তার প্রয়োজনের জন্য প্রার্থনা করছে। তিনিই মহান যিনি তাদেরকে তাওফীক দেন। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হচ্ছে, এই বরকতময় মাসের সঠিক জ্ঞান না থাকার কারণে অনেক লোক এমন আছে যারা এ সমস্ত কাজ থেকে দূরে অবস্থান করছে।

Abul Asad Most Popular 6 Books PDF

ফযীলত ও মর্যাদার আলোচনাও যুক্ত করে দিয়েছি। প্রাসঙ্গিক ভাবনায় সিয়াম ও তারাবীহ সংক্রান্ত কিছু ফিকহী মাসআলা-মাসায়েলও উল্লেখ করেছি। সবকিছুর মূলে রয়েছে আমার নিজেকে এবং অপরাপর সকল মুসলিম ভাইকে সচেতন করা ও মহান আল্লাহ ও আখেরাতের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়া।

হে আল্লাহ! আপনি এর দ্বারা লেখক, পাঠক ও শ্রোতাসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে উপকৃত করুন। যাবতীয় ভুল-ত্রুটি মার্জনা করে দিন এবং সবদিক থেকে তা কবুল করে নিন।

وصلى الله وسلم على نبينا محمد وآله وصحبه
- লেখক
৯ সফর ১৪০৮ হিজরী

মুসলিমদের ওপর রমযানের রোযা কখন ফরয হয়?

الحمد لله رب العالمين، شرع الصيام لتطهير النفوس من الآثام، والصلاة والسلام على نبينا محمد خير من صلى وصام. وداوم على الخير واستقام، وعلى آله وأصحابه ومن اقتدى به إلى يوم الدين وبعد:

সকল প্রশংসা বিশ্বজাহানের রব আল্লাহর জন্য, যিনি গুনাহ থেকে আত্মাকে পরিশুদ্ধ করার জন্য সিয়ামকে ফরয করেছেন এবং আমাদের নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর সালাত ও সালাম বর্ষিত হোক, যিনি সালাত ও সিয়াম আদায়কারীদের মধ্যে সর্বোত্তম, যিনি সর্বদা কল্যাণের ওপর আছেন এবং থাকবেন, আর তাঁর পরিবার পরিজন, সঙ্গী-সাথী ও বিচার দিবস পর্যন্ত যারা তাঁকে অনুসরণ করবে তাদের ওপর।

আল্লাহ তা'আলা বলেন,

يأيها الذين ءامنوا كتب عليكم الصيام كما كتب على الذين من قبلكم

لعلكم تتقون ﴾ [البقرة: 183]

“হে মুমিনগণ! তোমাদের জন্য সিয়ামের বিধান দেয়া হলো, যেমন বিধান তোমাদের পূর্ববর্তীদেরকে দেয়া হয়েছিল, যাতে তোমরা তাওয়ার অধিকারী হতে পার।” [সূরা আল-বাকারা: ১৮৩]

উল্লিখিত আয়াতসহ পরবর্তী কয়েকটি আয়াতে আল্লাহ তা'আলা সিয়াম প্রসঙ্গে বলছেন যে, সিয়াম এ উম্মতের ওপর ফরয করা হয়েছে, যেমন তা পূর্ববর্তী উম্মতের ওপর ফরয করা হয়েছিল। সুতরাং সিয়াম এ উম্মত ও পূর্ববর্তী উম্মত উভয়ের ওপরই ফরয।

এ আয়াতের তাফসীরে কতিপয় আলেম বলেন, সিয়াম নামক মহান ইবাদতটি আদম ‘আলাইহিস সালাম থেকে নিয়ে শেষ যমানা (সর্বশেষ নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) পর্যন্ত সকল নবী ও উম্মতের ওপর ফরয করা হয়েছে।

আল্লাহ বিষয়টি কুরআনে কারীমে আলোচনা করেছেন। এর তাৎপর্য হচ্ছে, কঠিন একটি বিষয় যদি ব্যাপকতা লাভ করে তাহলে তার বাস্তবায়ন সহজ হয়ে যায় এবং মানসিক প্রশান্তিও লাভ হয় অধিক।

সুতরাং সিয়াম সকল উম্মতের ওপর ফরয। যদিও সময় ও ধরনে কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে।

সাঈদ ইবন জুবাইর রাহিমাহুল্লাহ বলেন,

كان صوم من قبلنا من العتمة إلى الليلة القابلة، كما كان في ابتداء الإسلام.

“পূর্ববর্তী যুগে সাওমের নির্ধারিত সময় ছিল ইসলামের শুরু যুগের ন্যায়

আতামাহ (আঁধার) থেকে নিয়ে পরবর্তী রাত পর্যন্ত।”(১)

ইমাম হাসান রাহিমাহুল্লাহ বলেন,

كان صوم رمضان واجبا على اليهود، لكنهم تركوه وصاموا يوما من السنة زعموا عاشوراء. أنه يوم غرق فرعون وكذبوا في ذلك، فإن ذلك اليوم يوم .

“রমযানের সিয়াম ইয়াহূদীদের ওপর ফরয ছিল। কিন্তু তারা তা ছেড়ে দিয়েছে এবং বছরে কেবল এক দিনের সিয়াম পালন করেছে। তারা ধারণা করত, এ দিনটিতে ফির'আউনের সলিল সমাধি ঘটেছে। তবে তারা এ ব্যাপারে মিথ্যা বলেছে। কারণ, সে দিনটি ছিল, আশুরার দিন।”

তাফসীরে বাগভী (১/১৯৫)।

সাওম খ্রিষ্টানদের ওপরও ফরয ছিল। দীর্ঘ একটা সময় পর্যন্ত তারা তা নিয়মিত পালনও করে। কিন্তু কিছুকাল পর সিয়ামের নির্ধারিত সময়টি প্রচণ্ড গরমের মৌসুমে এসে পড়ে। ফলে তীব্র গরম সিয়াম পালনে তাদের জন্য কষ্টকর হয়ে পড়ে। বিভিন্ন দিকে সফর ও রোজগার কঠিন হয়ে যায়। এ নিয়ে তারা পরামর্শ সভার আয়োজন করে। ধর্মযাজক ও নেতৃবর্গের সম্মতিতে শীত ও গরমের মাঝামাঝি মৌসুম-বসন্তকালে সিয়াম পালন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। আরও সিদ্ধান্ত হয় যে, এখন থেকে সিয়ামের এ সময়টি অপরিবর্তিত থাকবে। অতঃপর তারা বলল: শরী'আত প্রবর্তিত সিদ্ধান্তে পরিবর্তন আনার কাফফারাস্বরূপ নির্ধারিত ত্রিশ দিনের সাওমের সাথে আরও দশ দিন বাড়িয়ে চল্লিশ দিন করা হয়। আল্লাহ তা'আলা বলেন, (3,21) অর্থাৎ সিয়ামের মাধ্যমে যেন তোমরা তাওয়া অবলম্বন করতে পার। দেখা যাচ্ছে, সিয়ামের মাঝে নিজেকে দমন ও কাম-রিপুর অপ-অভিলাষকে চূর্ণ করার বিষয়টি বিদ্যমান। তাই সাওম তাওয়া সৃষ্টিতে ফলদায়ক ভূমিকা রাখে। আল্লাহ তা'আলার বাণী,

أياما معدودات

“এগুলো গোনা কয়েক দিন।” [সূরা আল-বাকারা: ১৮৪] কেউ কেউ বলেছেন, এগুলো রমযানের বাইরের দিন। আর তা ছিল তিনদিন। আর কেউ কেউ বলেছেন, এগুলো রমযানের দিন। কেননা, আল্লাহ তা'আলা এগুলোর উল্লেখ এমন এক আয়াতে করেছেন যার পরেই বর্ণিত হয়েছে (4) [সূরা আল-বাকারা: ১৮৫]

শরী‘আত বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ইসলামের শুরুতে মুসলিমদেরকে সিয়াম ও ফিদ্ইয়া এর যেকোনো একটি বেছে নেয়ার সুযোগ ছিল। এ ব্যাপারে তারা স্বাধীন ছিল। যেমন আল্লাহ বলেন,

وعلى الذين يطيقونة, فدية طعام مسكين فمن تطوع خيرا فهو خير له، وأن.........
“আর যাদের জন্য সিয়াম কষ্টসাধ্য তাদের কর্তব্য এর পরিবর্তে ফিদ্ইয়া একজন মিসকিনকে খাদ্য দান করা। যদি কেউ স্বতঃস্ফূর্তভাবে সৎকাজ করে তবে তা তার জন্য কল্যাণকর। আর সিয়াম পালন করাই তোমাদের জন্য অধিকতর কল্যাণকর।” [সূরা আল-বাকারা: ১৮৪]

অতঃপর নিম্নোক্ত আয়াত নাযিল করে সিয়াম সকলের জন্য আবশ্যিক করে প্রদত্ত স্বাধীনতাকে রহিত করা হয়েছে। আল্লাহর বাণী:

فمن شهد منكم الشهر فليصمة » [البقرة: 185] “কাজেই তোমাদের মধ্যে যে এ মাস পাবে সে যেন এ মাসে সিয়াম পালন করে।” [সূরা আল-বাকারা: ১৮৫]

এর হিকমত হচ্ছে, বিধান প্রবর্তনে উম্মতের প্রতি সহজীকরণ ও ক্রমান্বয়িক নীতি পরিগ্রহণ। কারণ সিয়াম একটি কষ্টসাধ্য ইবাদত। মুসলিমরা আগে থেকে এ ব্যাপারে খুব একটা অভ্যস্ত ছিল না। যদি সূচনাতেই এটি তাদের ওপর চাপিয়ে দেয়া হতো তাহলে ব্যাপারটি তাদের জন্য কঠিন হয়ে যেত। তাই প্রথমে সিয়াম ও ফিয়ার মাঝে স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে। যখন তাদের বিশ্বাস মজবুত হয়েছে, মানসিক অবস্থা স্থিরতা লাভ করেছে এবং ধীরে ধীরে সিয়ামের অভ্যাস গড়ে উঠেছে তখন (স্বাধীনতা উঠিয়ে নিয়ে) কেবল সিয়ামকে আবশ্যিক করা হয়েছে। কঠিন ও কষ্টসাধ্য বিধি-বিধানের ব্যাপারে ইসলামে এর বহু নজির বিদ্যমান। একে পরিভাষায় ক্রমান্বয়ে প্রবর্তন বলা হয়। তবে বিশুদ্ধ অভিমত হচ্ছে, সিয়াম পালনে সক্ষম ব্যক্তির পক্ষে এ আয়াত রহিত। আর বার্ধক্য কিংবা আরোগ্য লাভের সম্ভাবনাহীন অসুস্থতার কারণে অক্ষম লোকের পক্ষে রহিত হয়নি। তারা প্রতি দিনের সিয়ামের পরিবর্তে একজন মিসকিনকে খাবার দানের বিনিময়ে সাওম পালন হতে অব্যহতি লাভ করার অধিকার সংরক্ষণ করে। এজন্য তাদের কাযাও করতে হবে না।

তবে সুস্থ হওয়ার আশা আছে এমন অসুস্থ ব্যক্তি কিংবা সফর জনিত অসুবিধার কারণে সাওম পালনে সাময়িক অক্ষম ব্যক্তিরা এ ছাড়ের আওতাভুক্ত হবে না। সাওমের আবশ্যিকতা তাদের ওপর বলবৎ থাকবে। সাময়িক অসুবিধার কারণে সময়মত সিয়াম পালন করতে না পারলেও পরে কাযা করতে হবে। কেননা আল্লাহ তা'আলা বলেন,

فمن شهد منكم الشهر فليصمه ومن كان مريضا أو على سفر فعدة من أيام

“কাজেই তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি এ মাস পাবে সে যেন এ মাসে সিয়াম পালন করে। তবে তোমাদের কেউ অসুস্থ কিংবা সফরে থাকলে অন্য দিনগুলোতে এ সংখ্যা পূরণ করবে।” [সূরা আল-বাকারা: ১৮৫] রমযান মাসের সিয়াম দ্বিতীয় হিজরীতে ফরয করা হয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বমোট নয়টি রমযানের ফরয সিয়াম পালন করেছেন।

রমযান মাসের সিয়াম অবশ্য পালনীয় ও ইসলামের একটি রুকন। এর আবশ্যকীয়তাকে অস্বীকারকারী শরী'আতে কাফের হিসেবে গণ্য। যে ব্যক্তি ফরয বলে স্বীকার করে বিনা ওজরে পালন না করে সে গুরুতর পাপী হিসেবে বিবেচিত হবে। এসব লোকদের শাস্তি বিধান ও যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষের কর্তব্য। আর তাদের করণীয় হচ্ছে তাওবা করা এবং ছেড়ে দেয়া সিয়ামগুলোর কাযা করে নেয়া।
وصلى الله وسلم على نبينا محمد وآله وصحبه

মাহে রমযানের ফযীলত

الحمد لله رب العالمين، والصلاة والسلام على نبينا محمد وآله وصحبه أجمعين..

সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি সৃষ্টিকুলের রব। সালাত ও সালাম বর্ষিত হোক আমাদের নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর এবং তাঁর পরিবার-পরিজন ও সকল সাহাবীর ওপর। অতঃপর....

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা রমযান মাসকে বহুবিধ ফযীলতের জন্য নির্বাচিত করেছেন। অনেক বৈশিষ্ট্যের মাধ্যমে তিনি রমযানকে বিশেষ স্বাতন্ত্র দান করেছেন। আল্লাহ তা'আলা বলেন,

شهر رمضان الذي أنزل فيه القرءان هدى للناس وبينات من الهدى والفرقان فمن شهد منكم الشهر فليصمه ومن كان مريضا أو على سفر فعدة من أيام أخر

“রমযান মাস, এতে কুরআন নাযিল করা হয়েছে মানুষের হিদায়াতের জন্য এবং হিদায়াতের স্পষ্ট নিদর্শন ও সত্যাসত্যের পার্থক্যকারীরূপে। কাজেই তোমাদের মধ্যে যে এ মাস পাবে সে যেন এ মাসে সিয়াম পালন করে। তবে তোমাদের কেউ অসুস্থ থাকলে বা সফরে থাকলে অন্য দিনগুলোতে এ সংখ্যা পূরণ করবে।” [সূরা আল-বাকারা: ১৮৫]

আল্লাহ তা'আলা এ আয়াতে কারীমায় রমযান মাসের দুটি মহান বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করেছেন:

প্রথম বৈশিষ্ট্য:

মানবজাতিকে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে হিদায়াতের জন্য নাযিল করা হয়েছে আল-কুরআন। এ মহান কিতাবের মাধ্যমে মানবজাতিকে হক ও বাতিল পরিদৃষ্ট করানো হয়েছে। তাতে রয়েছে মানবজাতির উপকারিতা ও কল্যাণ। ইহলৌকিক ও পারলৌকিক সফলতার সঠিক দিক-নির্দেশনা।

দ্বিতীয় বৈশিষ্ট্য:

উম্মতে মুহাম্মাদিয়ার ওপর বহু ফযীলতপূর্ণ সাওমের মতো মহা গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত আবশ্যিক করা হয়েছে এ মাসেই। আল্লাহ তা'আলা এ ব্যাপারে বলেন,

فمن شهد منكم الشهر فليصمة » [البقرة: 185]

“কাজেই তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি এ মাস পাবে সে যেন এ মাসে সিয়াম পালন করে।” [সূরা আল-বাকারা: ১৮৫]

রমযানের সিয়াম ইসলামের অন্যতম একটি রোকন। আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত একটি গুরুত্বপূর্ণ ফরয বিধান। যে ব্যক্তি এ বিধান অস্বীকার করবে সে কাফের বলে বিবেচিত হবে। যে ব্যক্তি সুস্থ ও মুকিম তথা নিজ বাড়িতে অবস্থানকারী হবে সে ব্যক্তির ওপর এ মাসের সিয়াম পালন করা আবশ্যিক। যেমন আল্লাহ তা'আলা বলেন,

فمن شهد منكم الشهر فليصمة » [البقرة: 185]

“কাজেই তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি এ মাস পাবে সে যেন এ মাসে সিয়াম পালন করে।” [সূরা আল-বাকারা: ১৮৫]

আর যে ব্যক্তি সফরে থাকে অথবা অসুস্থ হবে সে ব্যক্তির ওপর অন্য মাসে তা পালন করা আবশ্যিক।

Islamic Book pdf

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ