শেষ ভালো যার , হযরত মাওলানা মুফতি শুয়াইবুল্লাহ খান মিফতাহী । Sesh Valo Jar by Mufti Shuaibullah Khan Miftahhi

শেষ ভালো যার 
লেখক : হযরত মাওলানা মুফতি শুয়াইবুল্লাহ খান মিফতাহী
প্রকাশনী : আলোকধারা
বিষয় : ইসলামি বিবিধ বই, আদব, আখলাক
পৃষ্ঠা : 208, কভার : হার্ড কভার, সংস্করণ : 1st Published, 2021
আইএসবিএন : 978-984-95703-4-9

Imge

               প্রকাশকের কথা

আমরা আমাদের চারপাশে নিত্য-নতুন যা কিছু দেখি তার অধিকাংশই মানুষকে মৃত্যুর কথা ভুলিয়ে রাখার শয়তানী আয়োজন। কারণ, মৃত্যু ও পরবর্তী জীবনের কথা অন্তরে জাগ্রত থাকলে মানুষকে ধোকায় ফেলা শয়তানের পক্ষে সহজ হয় না। তাই শয়তান প্রথমে মানুষকে গাফেল করে এরপর ধীরে ধীরে তাকে জাহান্নামের দিকে নিয়ে যায়।

মানুষকে শয়তানের এ কূটচাল থেকে রক্ষা করে সুখময় জান্নাতের পথে পরিচালিত করার উদ্দেশ্যেই নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে উপদেশ দিয়েছেন

أكثروا ذكر هاذم اللذات الموت

তোমরা সর্বনাশা মৃত্যুর কথা বেশি বেশি স্মরণ কর। বোঝা গেল, মৃত্যুর অধিক স্মরণ নিজেকে শয়তানী ধোকা থেকে রক্ষা করার অন্যতম হাতিয়ার। এমনই একটি হাতিয়ার পাঠকের হাতে হাতে তুলে দিতেই আমাদের এবারের পরিবেশনা- ‘শেষ ভালো যার'।

এ গ্রন্থখানি আমাদেরকে শুধু মৃত্যুর কথাই স্মরণ করিয়ে দেবে না। পাশাপাশি জীবনের সুন্দর ও সফল পরিসমাপ্তির পথ ও পাথেয়গুলোও বাতলে দেবে। ভারতের বিখ্যাত আলেম ও বুযুর্গ মাওলানা মুফতী শুআইবুল্লাহ খান মিফতাহী দা. বা. এর উর্দূ ভাষায় লেখা “হুসনে খাতেমা” নামক সুন্দর ও উপকারী কিতাবটির স্বচ্ছ সাবলীল বঙ্গানুবাদ করেছেন তরুণ মেধাবী আলেম মাওলানা রায়হান ফেরদৌস। লেখক অনুবাদক উভয়কে জানাচ্ছি অসংখ্য মোবারকবাদ। আমরা বইটিকে সর্বাঙ্গীণভাবে সুন্দর করার যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি। হযরত মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম দা. বা. এর তত্ত্বাবধানে বইটির পরিমার্জন হয়েছে। বইটি নির্ভুলভাবে মুদ্রণের চেষ্টায় কোনও ত্রুটি রাখা হয়নি। এরপরও মুদ্রণজনিত কোনও ভুল-ত্রুটি পাঠকের চোখে পড়লে আমাদের অবহিত করবেন বলে আশা করি। পরবর্তী সংস্করণে আমরা সংশোধন করে নেব- ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ তা'আলা আমাদের সকলের চেষ্টা কবুল করুন।

              লেখকের কথা


الحمد لله رب العالمين، والصلاة والسلام على أشرف الأنبياء والمرسلين، وعلى آله وصحبه أجمعين، ومن تبعهم بإحسان إلى يوم الدين، أما بعد:

বাস্তব এই সত্যটিকে ভুলে থাকার কোনও সুযোগ নেই যে, পৃথিবীতে একজন মু'মিন যেই আকীদা ও বিশ্বাস নিয়ে জীবন অতিবাহিত করে, তার মধ্যে একটা হলো, এই পৃথিবী একটি ক্ষণস্থায়ী ও ধ্বংসশীল স্থান যেখানে মানুষকে অস্থায়ীরূপে কেবল এই উদ্দেশ্যের অধীনেই প্রেরণ করা হয়েছে যে, সে তার আখিরাত গড়বে ও পরিপাটি করবে। এ কারণে যতদিন তার জন্য এখানে অবস্থান করা নির্ধারিত হয়ে আছে ঠিক ততদিনই সে এখানে অবস্থান করতে পারবে। আর যখন তার নির্ধারিত সময় শেষ হয়ে যাবে, সে এখান থেকে যাত্রা করে আখিরাতে গিয়ে অবস্থান শুরু করবে।

হ্যাঁ, এই পর্যায়ে কিছু প্রশ্ন ঠিকই তৈরি হয়। সেখানে তার হাশর কী ও কেমন হবে? সে কি জান্নাতে যাবে না জাহান্নামে? আর এর ফয়সালা কীসের ভিত্তিতে হবে? দুনিয়াতে আল্লাহ তা'আলার আদেশ ও নিষেধ অনুযায়ী জীবন পরিচালনার ভিত্তিতে নাকি খেয়াল-খুশিমতো জীবন অতিবাহিত করার প্রেক্ষিতে? উত্তরটা সহজ। অর্থাৎ আখিরাতে সুন্দর জীবন পেতে চাইলে অবশ্যই দুনিয়াতে আল্লাহর আদেশ ও নিষেধ অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করতে হবে। তখন শেষ পরিণামটাও হবে সুন্দর। এ কারণেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগকালে একজন মানুষের চাওয়া থাকে – শেষটা যেন তার সুন্দর ও মসৃণ হয়; যাতে করে হাশরের ময়দানে সে সৌভাগ্যবানদের কাতারে দাঁড়াতে পারে ও জান্নাতে যেতে পারে।

এ কারণে প্রত্যেক মু'মিনের এই চিন্তা ও ব্যাকুলতা থাকা আবশ্যক শেষ পরিণাম যেন তার সুন্দর হয় এবং ঈমান ও ইয়াকীনের সঙ্গে

সে দুনিয়া থেকে বিদায় নিতে পারে যাতে করে সেখানে সে আল্লাহ তা'আলার সন্তুষ্টি ও জান্নাতের নেয়ামত লাভে ধন্য হয়।

সূফী সারমাদ রহ. তার এক কবিতায় বলেছেন

تو گریاں ہمہ خندان بودند و ہمہ گریاں بودند و تو خنداں یاد داری که وقت زادن تو

آن چنان زی که وقت مردن تو

স্মরণ করো তোমার জন্মের সময় সবাই খুশিতে হাসছিল আর তুমি কাঁদছিলে। সুতরাং তোমার জীবনটাকে এমনভাবে সাজাও; তোমার মৃত্যুতে সবাই কাঁদবে, আর তুমি নিশ্চিত হাসি ও আনন্দ নিয়ে দুনিয়া ছেড়ে যাবে।

ঠিক এই বিষয়টাকেই এক আরব কবি আরও সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলেছেন। তিনি বলেন কবিতায়

ولدتك أمك يا ابن آدم باكيا والناس حولك يضحكون شرورا فاعمل لنفسك أن تكون إذا بكوا في يوم موتك ضاحكا مسرورا

হে আদম সন্তান! তোমার ক্রন্দনরত অবস্থায় তোমার মা তোমাকে জন্ম দিয়েছিল; তোমার চারপাশে মানুষ তখন আনন্দে হাসছিল। সুতরাং তোমার নিজের জন্য এমন আমল করো, তোমার মৃত্যুদিনে মানুষ কাঁদবে ঠিক; তবে তুমি থাকবে আনন্দিত, হাস্যোজ্জ্বল ।

মৃত্যুর সময় এমন খুশি ও আনন্দ সেই ব্যক্তিরই লাভ হবে যার শেষ পরিণাম ঈমান ও কল্যাণের উপর হবে। এমন ব্যক্তিকে এখান থেকে অত্যন্ত সম্মান ও মর্যাদার সঙ্গে আল্লাহ তা'আলার মহান দরবারে হাজির

করা হবে। সেখানে তার অবস্থা ঠিক তেমন হবে, যেমনটি হাফেজ সিরাজী রহ. বলেছেন

خرم آن روز که گزیں منزل ویران بروم

راحت جاں طلبم، وزپے جاناں بروم

আমি সেদিন অত্যন্ত সুখী ও আনন্দিত হব যেদিন এই বিরান দুনিয়া আমি ছেড়ে যাব, আরাম ও শান্তির দেখা পাব, প্রিয়জনের পেছন পেছন ছুটতে থাকব।

কয়েক মাস আগে এই অধম বান্দা ব্যাঙ্গালোরের বেদওয়ারী মহল্লায় অনুষ্ঠিত বৃহস্পতিবার সাপ্তাহিক ইসলাহী মজলিসে উক্ত বিষয়ে (মানুষের শেষ পরিণাম) আলোচনা পেশ করেছিলাম। আলোচনা চলাকালেই আমার মনে হলো, বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এমনকি আমাদের দিন রাত এই ফিকিরেই কাটিয়ে দেওয়ার মতো প্রয়োজনীয় একটি বিষয়। অথচ আমরা তা থেকে কতটা উদাসীন জীবন পার করছি! একথা চিন্তা করে এবং নিজের উদাসীনতার কথা স্মরণ করে অন্তরে অত্যন্ত বিচলিত ও চাঞ্চল্য ভাব সৃষ্টি হলো। সেই অনুভব থেকেই আমার মনে হলো, নিজের আখিরাত গঠন ও শুভপরিণাম অর্জন করতে কুরআন, সুন্নত ও বুযুর্গানে দীনের অমূল্য বচন থেকে আমি উপকৃত হব। সঙ্গে এটাও জানব কোন্ কোন্ আমলের মাধ্যমে এই শুভপরিণাম অর্জিত হয় এবং কোন্ কোন্ আমল তা অর্জনে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। এই পরিপ্রেক্ষিতেই আমি এ বিষয়ে পড়াশোনা শুরু করলাম। সেই সঙ্গে পড়াশোনার সারাংশও আমি নোট করতে থাকলাম যেন এটা রোজনামচার মতো করে আমার কাছে থেকে যায়। কিন্তু পুরোটা দেখার পর আমার মনে হলো, দারুণ একটা তথ্যবহুল সংগ্রহ দাঁড়িয়ে গেছে। তখন এই খেয়ালও হলো, এর দ্বারা যদি অন্য আরও মানুষ উপকৃত হয়, তবে সেটা আমার জন্যও অনেক বড় প্রাপ্তি হবে। কেননা হাদীছে আছে- alcuts a Je Jil “সৎকর্মের দিশারি সৎকর্মকারীর মতো” (ছওয়াব লাভ করে)।

এখানে মূলত সেই রোজনামচাটিই পেশ করা হচ্ছে। এতে কুরআন, হাদীছ ও বড়দের আলোচনা ও অবস্থার আলোকে প্রথমে নিজেকে,
 
তারপর অন্যদেরকে এই বিষয়ে মনোযোগী করে তোলার প্রয়াস চালানো হয়েছে যে, প্রত্যেক মু'মিনের জন্য তার শেষ পরিণামের ব্যাপারে চিন্তা ফিকির করা উচিত এবং এতে এর গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা বর্ণনার পাশাপাশি এও বর্ণনা করার চেষ্টা করা হয়েছে শুভপরিণাম লাভের মাধ্যম ও কারণগুলো কী কী? এবং ঐ বিষয়গুলোও কী – যা শুভপরিণাম লাভের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ায়? উদ্দেশ্য, আমরা যেন শুভপরিণাম লাভের ব্যাপারে নিজেদেরকে প্রস্তুত করতে পারি। সঙ্গে সঙ্গে তা অর্জনের মাধ্যমগুলো অবলম্বন করার পাশাপাশি তাতে বাধাদানকারী বিষয়গুলোও পরিহার করতে পারি।

সবশেষে পাঠকদের কাছে অত্যন্ত বিনয়ের সঙ্গে অধমের আরয আপনারা আমার জন্য অবশ্যই দুআ করবেন আল্লাহ তা'আলা যেন আমাকে, আমার সন্তানদেরকে এবং আমার সঙ্গে যে কোনও দিক থেকে সম্পর্ক রাখে এমন সবাইকে শুভপরিণাম দান করেন। এজন্য আমাকে যেন পূর্ণ প্রস্তুতি গ্রহণে তাওফীক দান করেন এবং এ ব্যাপারে আমাকে সাহায্যও করেন। মনে আমার আশা, এই কিতাব থেকে উপকৃত হওয়া প্রত্যেকেই আমার এই আবেদনটাকে বুঝবেন এবং আমার জন্য বিশেষ দুআ করবেন।

অন্যদিকে আল্লাহর কাছে চাওয়া, তিনি আমাদের সবাইকে শুভপরিণাম দান করুন! আমাদেরকে ঐ সকল আমল করার তাওফীক দান করুন যা এ ব্যাপারে সহায়ক ও সমর্থক হয় এবং সকল বিষয় ও আমল থেকে দূরে থাকার ব্যাপারে সাহায্য করুন যা এক্ষেত্রে আড়াল ও বাধা হয়ে দাঁড়ায়। আমীন! ইয়া রাব্বাল আলামীন৷৷

            অনুবাদকের কথা


প্রচলিত একটি প্রবাদ রয়েছে- ‘শেষ ভালো যার, সব ভালো তার'। প্রবাদটির বাস্তবতা অনস্বীকার্য। কারণ, মানুষের শেষ কাজের উপরই তার সফলতা নির্ভর করে।

আমরা যদি ইসলামের দিকেও তাকাই তবে এই প্রবাদের জোর সমর্থন দেখতে পাব। আমাদের প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম সব সময় এমন একটি দুআ পড়তেন- যাতে সব কাজের শেষে ভালো ও সুন্দর একটি ফলাফল লাভের আবেদন রয়েছে। আর একজন মু'মিন যেহেতু আখিরাতে পূর্ণ বিশ্বাস রাখে, সে কেবল দুনিয়া নিয়েই মেতে থাকে না; দুআটিতে তাই দুনিয়ার লাঞ্ছনা থেকে মুক্তি চাওয়ার পাশাপাশি আখিরাতের শাস্তি থেকে রেহাই পাওয়ার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সেই দুআতে বলতেন

اللهم أحسن عاقبتنا في الأمور كلها، وأجرنا من خزي الدنيا، وعذاب الآخرة হে আল্লাহ! আপনি আমাদের সকল কাজের শেষফল সুন্দর করুন এবং আমাদেরকে দুনিয়ার লাঞ্ছনা ও আখিরাতের শাস্তি থেকে মুক্ত রাখুন। (মুসনাদে আহমাদ)

আর সব কাজের শেষটাই যে মূখ্য বিষয়টি অন্য একটি হাদীছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্পষ্ট করেই উল্লেখ করেছেন। হাদীছের ভাষ্য এমন

إنما الأعمال بالخواتيم

(মানুষের) সমস্ত আমল তার শেষ পরিণামের উপর নির্ভরশীল।

(সহীহ ইবনে হিব্বান)

মোটকথা একজন মু'মিনের কাছে পার্থিব এই জীবনের প্রথম ও প্রধান চাওয়া হলো— তার জীবনের শেষটা যেন শুভ, সুন্দর ও মসৃণ হয়।

কারণ সে জানে, এ শুদ্ধতা ও সৌন্দর্যের উপরই নির্ভর করে তার অনন্তকালের জীবনের সফলতা। আর তাই সে পুরো জীবনভর ঐসব আমলই করে – যা তার এ উদ্দেশ্যের সহায়ক। অপরদিকে ঐসব আমল পরিহার করে - যা তার উদ্দেশ্যের প্রতিবন্ধক। আমাদের এ বইয়ের মূল ভাষ্য ও বিষয়বস্তু এটাই। অর্থাৎ মানুষের শুভপরিণাম, সেটা অর্জনের মাধ্যমসমূহ ও তা থেকে বঞ্চিত হওয়ার প্রতিবন্ধকতাসমূহ নিয়েই মূলত এই বইয়ে আলোচনা করা হয়েছে। উদ্দেশ্য, পাঠক যেন শুভপরিণামের গুরুত্ব অনুধাবন করে, তা অর্জনের জন্য উন্মুখ হয়ে সেই ঘনিষ্ট আমলসমূহ দিয়ে নিজের জীবন সজ্জিত করে এবং তার প্রতিবন্ধক কর্মসমূহ থেকে নিজে বিরত থাকে ও অন্য সবাইকে বিরত রাখার চেষ্টা করে।

বইটির সম্পাদনা করেছেন আমার শ্রদ্ধেয় বড় ভাই, সময়ের উদীয়মান লেখক ও সম্পাদক মাওলানা তাওহিদুল ইসলাম তায়্যিব। আল্লাহ তা'আলা ভাইকে উত্তম প্রতিদানে মর্যাদাবান করুন!

আমাদের এই বইয়ের মূলটি হলো উর্দূ। উর্দূ কিতাবটির নাম ‘হুসনে খাতেমা' — যার লেখক হলেন আল-জামিয়াতুল ইসলামিয়া মাসীহুল উলূম, ব্যাঙ্গালোর, ভারত-এর প্রতিষ্ঠাতা মুহতামিম, বর্তমান সময়ে ভারত উপমহাদেশের অন্যতম খ্যাতিমান আলেমে দীন মাওলানা মুফতী শুআইবুল্লাহ খান মিফতাহী দা. বা.। উর্দূ কিতাবে কুরআনের আয়াত ও হাদীছের আরবী বাক্য যেগুলো ছিল না সেগুলো আমরা তার মূল গ্রন্থ থেকে উদ্ধৃত করেছি। হাদীছের রেফারেন্সের ক্ষেত্রে আমরা অনলাইন লাইব্রেরী ‘মাকতাবায়ে শামেলা’ থেকে হাদীছ নম্বর যুক্ত করেছি। সঙ্গে আমাদের ঘরানার বড় বড় বুযুর্গ ও উলামায়ে কিরামের সঙ্গে সাধারণ পাঠকদের পরিচিতি স্থাপনের লক্ষ্যে কিতাবে উল্লিখিত বহুল পরিচিত আমাদের আকাবিরদের সংক্ষিপ্ত জীবনীও আমরা সংশ্লিষ্ট টিকায় বর্ণনা করার চেষ্টা করেছি। আর সাধারণ পাঠকদের কথা চিন্তা করেই কিছু কিছু স্থানে আমরা হাদীছকেন্দ্রিক অতি ভারি, তাত্ত্বিক ও গবেষণাধর্মী আলোচনা বাদ দিয়েছি।

বইটি প্রকাশের দায়িত্ব নিয়েছে ‘আলোকধারা প্রকাশন’ যার মুরুব্বি হলেন, বর্তমান সময়ে ইসলামি সাহিত্য ও লেখনীর জগতে সুপরিচিত, ঢাকা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট জামে মসজিদের সম্মানিত ইমাম ও খতীব এবং জামিয়াতুল উলূমিল ইসলামিয়া ঢাকা, মুহাম্মাদপুর মাদরাসার স্বনামধন্য শাইখুল হাদীছ মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম দা. বা.। আল্লাহ তা'আলা হযরতকে দীর্ঘজীবি করুন! তাঁর দুনিয়া ও আখিরাতকে তাঁর চাওয়ার চেয়েও সুন্দর করুন! এছাড়া এ ব্যাপারে আরও যারা উপদেশ আর উৎসাহ দিয়ে আমাকে কৃতার্থ করেছেন — এদের মধ্যে রয়েছেন মাওলানা এনামুল হক, মুহাদ্দিছ, জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মুহাম্মাদপুর এবং আমার শ্রদ্ধেয় উস্তায মাওলানা মুহিব্বুর রহমান, মুহাদ্দিছ, জামিয়াতুল উলূমিল ইসলামিয়া ঢাকা, মুহাম্মাদপুর — তাদের সবার জন্য দুআ করি আল্লাহ - তা'আলা সবাইকে উত্তম প্রতিদান দান করুন!

অনুবাদের ক্ষেত্রে মূল কিতাবের ভাব, গতি ও শক্তি ধরে রাখা স্বাভাবিক কারণেই কঠিন। সেই সঙ্গে আমার অযোগ্যতা বিষয়টিকে আরও জটিল করে তুলেছে। তাই এর যাবতীয় ভুল-ত্রুটির দায় সম্পূর্ণ আমার। আল্লাহ তা'আলার কাছে কেবল এতটুকু কামনা বইটির মাধ্যমে দীনের যেন কোনও ক্ষতি না হয়। তিনি যেন দীনের সহায়ক হিসেবে বইটিকে কবুল করে নেন। আমীন৷

আরো পড়তে অথবা দেখতে অনুগ্রহ করে Hardcopy ক্রয় করুন। We Respect Every Author Hardwork-boipaw team।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ