একজন নিকৃষ্টতমা : মনিকা জাহান চৌধুরী | Akjon Nikristitoma By Monika Jahan Chowdhury Books

🔹বইয়ের নামঃ একজন নিকৃষ্টতমা
🔹লেখিকাঃ মনিকা জাহান চৌধুরী
🔹জনরাঃ সামাজিক উপন্যাস
🔹প্রকাশনীঃ অনুজ প্রকাশন 
🔹প্রকাশকঃ আশরাফুল ইসলাম
🔹প্রচ্ছদঃসজিব ওয়ার্সী
🔹প্রচ্ছদ মুল্যঃ২০০

জীবন যেন হাওয়াই মিঠাইয়ের মতো সুন্দর।কখন কে কেড়ে নিয়ে খেয়ে ফেলে কিংবা কোনদিক থেকে বাতাস এসে অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলে তার ঠিক নেই।জীবনের নানান মোড়ে ঘুরে মানুষের জীবন ও দর্শন প্রভাবিত হয়।একজন নারী ও পুরুষ ক্ষমতার লড়াইয়ে কাছাকাছি আসাই যেন এ সমাজে যুদ্ধের ডাক।

সবার কাছে একজন নিকৃষ্টতমা হয়ে উঠা গল্পের প্রধান চরিত্র কি আসলেই একজন নিকৃষ্টতমা নাকী এর পেছনে আছে ভিন্ন কাহিনী?

🔷লেখিকা পরিচিতিঃ মনিকা জাহান চৌধুরী। ডাকনাম কুইন। 
জন্ম ৯ জুলাই। 
দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ থানার পলাশবাড়ী। লেখিকার প্রথম গল্পগ্রন্থ "প্রতিশ্রুতি " ২০২০ সালে প্রকাশিত হয়। ২০২১ সালে প্রকাশিত হয় প্রথম উপন্যাস "এক পেয়ালা জীবন"। 
লেখালেখি ও পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে যুক্ত। তিনি স্বপ্ন দেখেন বিভেদহীন,স্বচ্ছ বাংলাদেশের। 

🔷প্রধান চরিত্রসমূহঃ অনুপমা,আবির,অন্তু,অরু,অগ্নি,অনুর বাবা ও অনুর মা প্রমুখ।

🔷কাহিনী সংক্ষেপঃ অনুপমা, যাকে আদর করে সংক্ষেপে সবাই অনু নামেই ডাকে। অনুর মা বাবা আলাদা থাকেন। অনুর বাবা অনুর মায়ের নামে ভালোবেসে সমস্ত সম্পত্তি লিখে দেন,তারপর অনুর মা অনুর ভাই আবিরকে নিয়ে অন্য আরেকজনকে বিয়ে করে চলে যান। নিয়ে যান অনুর ভাই আবিরকে। তারপর অনুর বাবা আরেকটি বিয়ে করেন যার ঘর থেকে জন্ম নেয় আরেক সন্তান অন্তু। আর এদিকে অন্তুর জন্মের পর অনুর নতুন মাও অভাবের সংসার ছেড়ে চলে যান। অন্যদিকে অনুর মা নতুন বিয়ে করলে নতুন স্বামীর ঘরে জন্ম নেয় আরেকটি সন্তান অরুনিমা বা অরু। এদিকে অনু,আবির,অন্ত,অরু সবার একমাত্র ঠিকানা অনুর বাবা। যিনি অনেক কষ্টে সবাইকে নিয়ে জীবনযাপনের চেষ্টা করে গেছেন। অনুর বিয়ে হয়ে যায় একজনের সাথে। 
অনুর মা তো অনুকে মমতার আদর জড়িয়ে রাখেন উল্টো চলে গেছেন একা বানিয়ে,কিন্তু অনুর স্বামীও অনুকে সুখের ঠিকানায় জড়িয়ে রেখেছে নাকী সেও ছিলো একজন নিকৃষ্ট স্বামী?
একটা মেয়েকে জন্ম দিয়ে না ফেরার দেশে চলে যায় অনু। 
তবে এই মেয়ের কপালেও কি ভালোবাসা নেই নাকী সে মামা-খালাদের আদর ভালোবাসায় গড়ে উঠবে সুখের স্বর্গে?
আবির-অন্তু-অরু আর অনুর মেয়ে অগ্নির ভবিষ্যত কী?

মায়েরা তো সন্তানের ভালো চায়, তবে কেনো সন্তানদের জীবন তছনছ করে দিলেন কথিত "নিকৃষ্টতমা" মা। 
এমন রহস্যে ঘেরা কাহিনীর পুরোটা জানতে আপনাকে পড়তে হবে বইটি।

🔷লেখিকার দক্ষতা প্রসঙ্গঃ ২০২০ সালে লেখিকা মনিকা জাহান চৌধুরীর প্রথম একজন নিকৃষ্টতমা বই প্রকাশিত হয়। সেই হিসেবে লেখিকা লেখার জগতে নতুন। তবুও নতুন লেখিকা হিসেবে এই বইয়ে লেখিকা একটা অসাধারণ কাহিনির মাধ্যমে আমাদেরকে সুন্দর একটা বই উপহার হিসেবে দিয়েছেন। লেখিকা তার লেখনীর মাধ্যমে সমাজের বিভিন্ন দিককে খুব গোছালোভাবে এই বইয়ে তুলে এনেছেন। 
আশা করি সময়ের সাথে সাথে লেখিকার লেখনী আরো অসাধারণ ও সৃষ্টিশীল হবে।

 


একজন নিকৃষ্টতমা বইটির মাধ্যমে লেখিকা সমাজবাস্তবতার বিভিন্ন দিককে তার লেখায় সহজভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। আমরা যাকে দোষী ভাবি সে হয়তো দোষী নাও হতে পারে, হয়তো তৃতীয় কোনো পক্ষ আড়ালে থেকে যায় আর আমরা দোষী ভাবি আমাদের আপন লোকদের। তাছাড়া সমাজের নারীদের করুণ অবস্থাও তুলে ধরা হয়েছে, যেখানে সে অনেক সময় শ্বশুরবাড়িতেও তার কাঙ্ক্ষিত সুখ ভোগ করতে পারে না বিভিন্ন সম্যসার কারণে।
আবার আপন মানুষদের কুদৃষ্টি, নারীর অসহায়ত্ব,ত্যাগ এসব মেনেই গড়ে উঠে একজন নারী। "একজন নিকৃষ্টতমা" বইটি যেনো পুরো সমাজের কাছে একটা বার্তা যাতে নারীদের বিভিন্ন অসহায়ত্ব ও ত্যাগের দিককে তুলে ধরা হয়েছে।

🔷'একজন নিকৃষ্টতমা' বইয়ের প্রিয় কিছু উক্তিঃ

◾আমি,তুমি এবং তোমরাও একা। প্রচন্ড রকম একা। আসলে আমরা সবাই একা। 

◾ছেলেদের কাদঁতে হয় না। যে ছেলে অল্পতেই কাদেঁ,সে সমাজের কাছে কাপুরুষ । 

◾পতি পরম পূজনীয় প্রেমের সাধন। কেউই বুঝিবে না এই সাধিত সুখের মায়ার দাম। কেবলই নারী জানেন এই সাধনার মায়া।

◾পৃথিবীতে বাবারা হয় অসহায়ত্বের পথিক। বাবাদের কাদঁতে নেই। বাবারা কাদঁলে পুরো পৃথিবী যেন থমকে যায়। 

◾এই সৃষ্টিশীল দুনিয়ায় কোনোকিছুই আপনা-আপনি ঘটে না মৃত্যু আর জন্ম ব্যতীত। বাকী যা কিছু তা কেউ না কেউ ঘটায়।

🔷ব্যক্তিগত মতামতঃ ব্যক্তিগতভাবে "একজন নিকৃষ্টতমা" বইটি আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছ। প্রথমদিকে ভেবেছিলাম বইটি আহামরি কিছু হবে না,কিন্ত যতো সময় যাবে ততোই বইটি পাঠককে বইয়ের নেশায় ডুবতে সাহায্য করবে। 
সবকিছু মিলিয়ে সামাজিক প্রেক্ষাপটে লিখা দারুণ একটি বই "একজন নিকৃষ্টতমা"

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ