📖বইঃ বাঙালি মুসলমানের মন
✍️লেখকঃ আহমদ ছফা
🔵প্রকাশনীঃ হাওলাদার প্রকাশনী
🔵প্রকাশকঃ মোহাম্মদ মাকসুদ
🔵প্রচ্ছদঃ আনোয়ার ফারুক
🔵প্রচ্ছদ মুল্যঃ ২৫০ টাকা
🔵রিভিউদাতাঃ এম.এ.রানা
বই থেকে-
বাঙালি মুসলমানের মন যে এখনও আদিম অবস্থায়, তা বাঙালি হওয়ার জন্যও নয় এবং মুসলমান হওয়ার জন্যও নয়। সুদীর্ঘকালব্যাপী একটি ঐতিহাসিক পদ্ধতির দরুণ তাঁর মনের উপর একটি গাঢ় মায়াজাল বিস্তৃত রয়েছে, সজ্ঞানে তাঁর বাইরে সে আসতে পারে না। তাই এক পা যদি এগিয়ে আসে, তিন পা পিছিয়ে যেতে হয়। মানসিক ভীতিই এই সমাজকে চালিয়ে থাকে।এই বইটা পড়লে বোঝা যায় সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে বাঙালি মুসলমানদের চিন্তাধারা কেমন অপরিবর্তনীয় রয়ে গেছে। বিভিন্ন সময়ে ভারতীয় উপমহাদেশের নানা ধর্মাবলম্বীরা নিজেদেরকে সমসাময়িক সংস্কৃতির সাথে পরিবর্তন করেছে কিন্তু এই বাঙালি মুসলমানেরা তাদের ধর্মীয়,সাংস্কৃতিক ধারণা গুলোকে একটা নির্দিষ্ট বলয়ের মধ্যেই রেখে কিছু জিনিস নিজেদের মন মতো সাজিয়েছে। যেমন তারা নিজ ধর্মের কাহিনী নিয়ে পুঁথি রচনা করতে গিয়ে করেছে ধর্মের বিকৃতি, নিজেদের প্রমাণ করেছে ধর্মান্ধ, অজ্ঞ হিসেবে। স্বাধীন চিন্তা বলে যে একটা ব্যপার আছে এটা যেন তারা জানতোই না। সুদূর অতীতের রীতিনীতি,সংস্কারই নিজেদের জীবনে ধারণ করায় অভ্যস্ত তারা। সেসময় অন্যান্য জাতির উন্নতি ঘটলেও এইসব অজ্ঞতা, সীমাবদ্ধ ধ্যানধারণার জন্য বাঙালি মুসলমান জাতির কোন অভ্যুত্থান ঘটেনি, তারা যে অন্ধকারে সেই অন্ধকারেই থেকে গেছে।
বইয়ের কিছু কথা-
১. যে জাতি উন্নত বিজ্ঞান, দর্শন এবং সংস্কৃতির স্রষ্টা হতে পারেনা অথবা সেগুলোকে উপযুক্ত মূল্য দিয়ে গ্রহণ করতে পারেনা, তাকে দিয়ে উন্নত রাষ্ট্র সৃষ্টিও সম্ভব না।
২. বাঙালি মুসলমান সমাজ স্বাধীন চিন্তাকেই সবচেয়ে ভয় করে। তাঁর মনের আদিম সংস্কার গুলো কাটেনি। সে কিছুই গ্রহণ করেনা মনের গভীরে। ভাসাভাসা ভাবে অনেককিছুই জানার ভান করে আসলে তাঁর জানাশোনার পরিধি খুব সঙ্কুচিত।
৩. বাঙালি মুসলমানের মন যে এখনো আদিম অবস্থায় তা বাঙালি হওয়ার জন্যও নয় এবং মুসলমান হওয়ার জন্যও নয়। সুদীর্ঘকাল ব্যাপী একটি ঐতিহাসিক পদ্ধতির দরুন তাঁর মনের উপর একটি গাঢ় মায়াজাল বিস্তৃত রয়েছে, সজ্ঞানে তার বাইরে সে আসতে পারেনা। তাই এক পা যদি এগিয়ে আসে, তিন পা পিছিয়ে যেতে হয়। মানসিক ভীতিই এ সমাজকে চালিয়ে থাকে।
ব্যাক্তিগত অভিমতঃ-
একজন সচেতন মুসলিম হিসেবে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি বইটা আপনার পড়া প্রয়োজন।তাহলে,আপনি বুঝতে পারবেন মুসলমানদের ইসলামী সংস্কৃতির কোন কোন জায়গায় গুরত্ব দিতে হবে।আপনি যদি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বইটি পড়েন তাহলে ইসলামের সোনালী অধ্যায় এবং স্বর্ণযুগ প্রতিষ্ঠায় মনোনিবেশ করতে পারবেন। আর যদি ইসলামবিদ্বষী নেতিবাচক মনোভাব নিয়ে বইটি পড়েন তাহলে ইসলামের প্রতি বইটি বেশ খানিকটা আপনাকে উস্কে দিবা কিংবা ইসলামের প্রতি বিদ্বেষ খানিকটা বাড়িয়ে দিবে।তাই,একজন সচেতন মুসলিম নাগরিক হিসেবে বইটি পড়ার আহ্বান রইলো।
ব্যাক্তিগত রেটিংঃ ৮.৫/১০
0 মন্তব্যসমূহ
ℹ️ Your Opinion is very important to us, Please Writer your comment below about this Post.....