চন্দন গন্ধের বন : আবদুল্লাহ আল ইমরান - একনজরে দেখে নিন বইটিতে কি কি আছে ! | Chondon Ghondher Bon : Abdullah Al Imran Book


  • বইয়ের নাম : চন্দন গন্ধের বন ( বই রিভিউ )
  • লেখকের নাম : আবদুল্লাহ আল ইমরান
  • প্রকাশন : শিখা প্রকাশনী
  • প্রথম প্রকাশ : ফেব্রুয়ারি, ২০২২
  • প্রচ্ছদ : সানজিদা পারভীন তিন্নি  
  • মুদ্রিত মূল্য : ৪৬৫৳ 
  • পৃষ্ঠা সংখ্যা : ২২৩

  "মায়ায় ঘেরা এক গহীন অরণ্য: চন্দন গন্ধের বন"

বারোয়ারি লেখক আবদুল্লাহ আল ইমরানের লেখায় সব সময়ে ফুটে জীবন সংগ্রাম, সমাজের চালচিত্র, নানা অসঙ্গতি। 'চন্দন গন্ধের বন'-ও এর ব্যতিক্রম নয়। পঁচিশ ঊর্ধ্বো এক যুবকের টানাপোড়েন, জীবন সংগ্রামই এখানে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। লেখকের উপন্যাসে সবসময়ই থাকে ছবির মতন আঁকা এলাকার বর্ণনা। যাতে মুগ্ধ হই বারবার। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। কখনো দেখা মনে হয়ছে অরণ্যের মাধ্যমে লেখক কখনো কখনো যেন আমাদেরই কথা বলতে চাইছেন।

হ্যাঁ, বলছি অরণ্যের কথা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সদ্য পাশ করা ছোট একটা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছে। অফিসের বসকে বিশেষ একটা পছন্দ হয় না তার। তার অবশ্য যথেষ্ট কারণও আছে বৈ কি! চাকরি নিয়ে রীতিমত দোটানায় ভোগে অরণ্য। পাশাপাশি আইএলটিএস-এর প্রস্তুতি নিচ্ছে। বাবা ফয়েজ মুন্সিকে আর বেশিদিন প্রবাসে কাটাতে দিতে চায় অরণ্য। মা শেফালী খাতুন আর বোন মিতুকে রেখে এ শহরে যে মন টেকে না অরণ্যের। মন পড়ে থাকে দিঘালিয়ায়, খুলনায় কাটানো সোনালী সেই দিনগুলোতে।

ব্যস্ততম এ নগরীতে অরণ্যের নির্ভরতার নাম রাফি। রাফি শুধু বন্ধু নয়, অরণ্যের আত্মসখা। রাফির অনেক কাজেই বিরক্ত সে। বেশ ঝামেলাতেই পড়তে হয় অরণ্যেকে, তবুও এ শহরে রাফিই যেন অরণ্যের সব। 

এত কিছুর মধ্যেও টুকটাক লেখালেখির অভ্যাস আছে অরণ্যের। ফেইসবুক, ব্লোগিং এসব আর কি! এ সূত্র ধরেই ইদানিং রায়া নামের মেয়েটির সাথে পরিচয় ঘটেছে অরণ্যের। মেডিকেল কলেজের ছাত্রী রায়া। সে মফস্বলের মেয়ে। রুমমেট মিরা ছাড়া ঢাকা শহরে বলার মত আর কেউই নেই তার। বুদ্ধিমতী, পরোপকারী ও ভালো মনের মেয়ে রায়া। অরণ্যের লেখা রায়াকে মুগ্ধ করে। তার সাথে কথা বলার শুরুতে কিছুটা ইতস্ততবোধ করলেও এখন মনে হয় অরণ্য এই শহরে ওরই মত নিঃসঙ্গ একজন।

অরণ্যের ছোট মামা সুফিয়ান ওদের জীবন থেকে হারিয়ে গেছে অনেক বছর আগে। এ শহরে অলিতে-গলিতে এখনও মামাকে খুঁজে বেড়ায় অরণ্য। ছোটবেলার মামার সাথে অজস্র স্মৃতি আর মামার বলা শেষ কথাগুলো এখনও পোড়ায় অরণ্যের হৃদয়কে। ভালোবাসার প্রতি এতটা অভিমান হতে পারে একটা মানুষের। ভাবায় অরণ্যকে। চাকরি-পড়াশুনার মাঝে যখনই মামার কোনো খবর পেয়েছে ছুটে গিয়েছে সে। মামার গল্প শুনে রায়াও এখন এই খোঁজা-খুঁজিতে সাহায্য করে তাকে। শুধু মামা নয় অরণ্যের জীবন থেকে হারিয়ে গেছে দিশাও। কে এই দিশা? মেয়েটা বেঁচে আছে তো? আদৌও পাওয়া গেলো কি অরণ্যের ছোট মামাকে?

রাফির সাথে শায়লার সম্পর্কটা অনেকদিনের। এখন তারা একটু আড়াল খোঁজে। মিলি আপুর বাসাটা তাদের জন্য নিরাপদ জায়গা। অটিস্টিক একটা ছেলে তার উপরে স্বামী পরিত্যক্তা সব মিলিয়ে কঠিন এক জীবন সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে যেতে হয় মিলিকে। শায়লা-রাফির সম্পর্কটা বিভিন্ন ঘটনাচক্রে অন্য দিকে মোড় নেয়। এসমস্ত বিষয়ও অরণ্যকে সামাল দিতে হয়। সময় ও অবস্থার পরিবর্তনের সাথে সাথে অরণ্যের সামনে এসে দাঁড়ায় এ যেন অন্য এক রাফি। অরণ্য মুগ্ধ হয়।

ক্লান্ত অরণ্য। জীবন থেকে একটু ছুটি চায় অরণ্য। যেতে চায় ওর নিজের কল্পনায় ঘেরা চন্দন গন্ধের বনে। রায়া কি ওর সঙ্গী হবে? অনন্তকালের সাথী হবে কী?

অনেক সময় এ জীবন বড্ড বিষাদময় মনে হয়। ইচ্ছে করে অরণ্যের মত করে চলে যাই কোনো এক গহীন আর মায়ায় ঘেরা চন্দন গন্ধের বনে। Chondon Ghondher Bon Original Copy

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ