বইঃ ধোঁয়াটে শহর : কে এম সোহান | Dhowate Shohor K M Shohan


বই এর নাম:-"ধোঁয়াটে শহর"
লেখক:-কে এম সোহান
প্রথম প্রকাশ:-বইমেলা ২০২২ ইং
প্রকাশক:-দুয়ার প্রকাশনী
প্রচ্ছদ:-আল নোমান
মূল্য:-১৬০৳
পৃষ্ঠা সংখ্যা:-৪৮ পৃষ্ঠা
Review Credit 💕 Jakia Shifa

লেখক পরিচিতিঃ-
"সম্মানিত লেখকের ভাষায়:- ২৭ জুন ২০০২ থেকে আমার জীবনের দিন গননা শুরু হয়। আমার জন্ম সিরাজগঞ্জ জেলায় আমার নানার বাড়িতে।আমার পূর্বপুরুষদের ভিটাবাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ থানায় হওয়া সত্ত্বেও বাবার ব্যাবসার সুবাদে আমার শৈশব কাটে ঢাকা জেলার সাভার উপজেলায়।এই যান্ত্রিক শহরের কাক ডাকা ভোর,ব্যস্ত দুপুর, রাতের নিস্তব্ধ শহর এবং এই শহরের বসবাস করা হাজার রঙের হাজার মানুষই আমার মনে গল্প ও কাব্যভাবনা উথলে দিয়েছে।এই পৃথিবীতে মুসাফির হয়ে এসেছি, জানি যে-কোনো সময় চলে যেতে হবে আমায়; তাই সর্বদা ভালোবাসা বিলিয়ে যেতে চাই। স্বপ্ন আমার এদেশ ও দেশের মানুষদের নিয়ে। মায়ের ভাষায় জড়ানো মানুষগুলোকে বড্ড ভালোবাসি। স্বপ্ন আমার একদিন ফোটাব এদেশের অসহায় মানুষের মুখে হাসি।

✨ সূচি ✨
১)সড়ক দুর্ঘটনা
২)আত্নহত্যা
৩)পরোপকার
৪)স্বদেশপ্রেমী
৫)চৈতি
৬)পথশিশু
৭)হারুন মিয়ার সুখের সংসার
৮)স্মরনীয় এক বর্ষা
৯)দুঃস্বপ্ন
১০)গরীবের বন্ধু


🔰সিরোনামের সাথে গল্পের সামঞ্জস্যতা ও শিক্ষণীয় দিকঃ-
১)সড়ক দুর্ঘটনা:- গল্পটিতে ছয় বছরের একটি শিশুর মৃত্যু চিত্র তুলে ধরা হয়েছে,যেখানে "জিসান" নামের একটি ছেলেকে নিয়ে তার মা কিছু কেনাকাটার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়,এবং রাস্তা পার হওয়ার সময় ঘটে যায় দুর্ঘটনা,দুর্ঘটনায় 6 বছরের শিশু "জিসান"নিহত হয়, এবং জিসানের মা "রেহানা বেগম" আহত হয়.
'এই গল্পটির মাধ্যমে লেখক দেশের দুরবস্থার কথা তুলে ধরতে চেয়েছেন।যে,এভাবে প্রতিনিয়ত "জিসানের" মতো হাজারো প্রান হারিয়ে যাচ্ছে,এবং তিনি ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে নিহত ব্যক্তির মর্যাদা ও পরিবার-পরিজনকে সান্ত্বনা দানকারী ব্যাক্তির অসংখ্য-অগণিত সওয়াব এবং এই কঠিন পরিস্থিতিতে নিরাশ না হয়ে,ধৈর্য হারা না হয়ে,ধৈর্য ধারনের অগণিত সওয়াবের প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনা করেছেন।

২)আত্মহত্যা:- গল্পটি একজন মহিলার আত্নহত্যা নিয়ে, ধারণা করা হয় যে,পারিবারিক সামান্য মনোমালিন্যের কারণে মহিলাটি এই পথ বেছে নেয়,আত্মহত্যা একটি জঘন্য কাজ ও ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকেও এটি একটি গর্হিত ও নিন্দনীয় কাজ।
'আত্নহত্যাকারী ব্যক্তিকে দুনিয়াতে যেমন লোকমুখে বিভিন্ন মন্দ কথা শুনতে হয়, তেমনি ভাবে পরকালের কঠিন শাস্তি তো আছেই।লেখক উক্ত বিষয়গুলো খুব সুন্দর ভাবে এই গল্পটিতে ফুটিয়ে তুলেছেন।

৩)পরোপকার:- লেখক এখানে একটি দরিদ্র পরিবারের ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন,যে গল্পটিতে প্রতিবেশীদের নিয়ে খুব সুন্দর একটি আলোচনা করেছেন। এবং প্রতিবেশী কারা? তাদের সম্পর্কে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি বলেছেন?এ ব্যাপারেও বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।
'এ গল্পটি থেকে শিক্ষনীয় বিষয় হলো:-আমাদের আশে-পাশে এমন কিছু পরিবার আছে,যারা লোকলজ্জার কারনে,তাদের দরিদ্রতার কথা মুখে বলতে পারে না,অথচ আমরা তাদের ব্যাপারে একদমই অজানা।তাই আমাদের উচিত: গোপনে তাদের খোঁজ খবর নেয়া এবং সাধ্যমত এমন ভাবে তাদের সহযোগিতা করা, যাতে করে তারা সংকোচবোধ না করে।এরই একটি দৃষ্টান্ত মূলক ঘটনা "সম্মানীত লেখক" তার মূল্যবান বইটিতে খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপনা করে বর্ননা করেছেন। এবং হাদীসের উপদেশ বাণী দ্বারা গল্পটিকে আরো বেশি সুন্দর্যমন্ডিত করে তুলেছেন।

৪)স্বদেশপ্রেমী:- যেই বীর মুক্তিযোদ্ধাদের দেশপ্রেম ও দেশের জন্য তাদের প্রান বিলিনের বদৌলতে আমরা এই দেশকে পেয়েছি, তাদের প্রতি সম্মান ও স্রদ্ধা মাখা বাক্যমালা দ্বারা লেখক তার এ গল্পটি রচনা করেছেন। 
🌟লেখকের বানী"✒️
"হাজার সালাম হে বীরগন, তোমাদের আত্নত্যাগেই আজ এই বাংলাদেশের জন্ম"🇧🇩

এতো সুন্দর বাক্যটি দ্বারা লেখক তার "স্বদেশপ্রেমী" গল্পটি শেষ করেছেন।

৫)চৈতি:- দুষ্টু মিষ্টি ছোট্ট এক সোনামনিকে নিয়ে গল্পটি,যার শুরুটা মুখ ভেংচি দিয়ে এবং শেষটাও মুখ ভেংচি দিয়েই,(•‿•)তার নামেই গল্পের সিরোনাম।গল্পটি পড়ার সময় আমিও হাঁসি থামাতে পারি নি।

'গল্পটি থেকে শিক্ষনীয় বিষয় হলো:-ভালো মানুষ হতে না পারলেও ভালো মানুষ হওয়ার চেষ্টা করা।সদা সর্বদা সত্য বলা,সত্যের পথে চলা,এবং সত্যকে অনুসন্ধান করা।এটা ছিলো লেখকের পক্ষ থেকে ছোট্ট "চৈতিকে" দেয়া উপদেশ।

৬)পথশিশু:- সিরোনাম দেখেই বুঝা যাচ্ছে তাই না? গল্পটি কি বিষয় নিয়ে হতে পারে!! সত্যিই কি বুঝা যাচ্ছে?; না!!!
গল্পটি এক অবহেলিত সন্তানকে নিয়ে লিখা,যে ছিলো আমাদের মতোই সাধারণ মানুষ ও একটি সাজানো গোছানো পরিবারের ছেলে। "তারও ছিলো চোখ ভরা স্বপ্ন ও মন ভরা আশা"। কিন্তু কে জানতো অল্প সময়েই যে তা তছনছ হয়ে যাবে !! হ্যা এখন কিছুটা হলেও বুঝতে পেরেছেন।

'গল্পটি থেকে শিক্ষনীয় বিষয় হলো:- জন্ম থেকেই কেউ পথ শিশু নয়,কিছু সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তানকেও জীবিকার অভাবে অনেক সময় পরিস্থিতির শিকার হতে হয়,তাই পথশিশু বলে তাদের কে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা যাবে না।তারাও আমাদের মতোই রক্ত-মাংসে গড়া মানুষ।তাদেরও একটা মন আছে। তাই সামর্থ্য থাকলে তাদের পাশে দাঁড়াবো অন্যথায় ভালো ও সুন্দর ব্যবহার তাদেরকে উপহার দিব।

৭)হারুন মিয়ার সুখের সংসার:-গল্পটিতে রয়েছে এক রিকশা চালক ও একজন ভদ্রলোকের কথোপকথন। এবং রিকশা চালকের ছোট ছেলে তার বাবার প্রতি ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ। এই সেই গল্প যেটি পড়ে আমার দুই চোখ থেকে অশ্রু ঝরে পড়ছিল,খুব সুন্দর ছিলো গল্পটির উপস্থাপনার ধরন,যেনো গল্পটা চিত্রের ন্যায় চোখে ভেসে উঠছিলো।

"লেখকের ভাষায়:-হারুন মিয়ার পরিবারের এই সুখের মূল্য অল্প হলেও এমন অল্প মূল্যের সুখ এই শহরের বড়ো বড়ো শিল্পপতির পরিবারেও নেই। একথা সত্য যে,অঢেল সম্পদেও সুখ নাই।

এই গল্পটির একটি বিষয় যেটা আমার কাছে ভালো লেগেছে তা হলো:- বাবার পকেট খালি হলেও সে চায় না আমার সন্তান করো কাছে হাত পাতুক,প্রতিটা বাবা মা'ই চেষ্টা করে,তার সন্তানকে সাধ্যমত সব দিক থেকে পরিপূর্ণ রাখতে।

৮)স্মরনীয় এক বর্ষা:- সম্মানিত লেখক তার বন্ধুদের সাথে"বর্ষার দিনে পানিতে ভিজে শাপলা তুলে দিন কাটানোর" একটি আনন্দের মুহুর্ত পাঠকদের সাথে শেয়ার করেছেন।যেই দিনটি তিনি তার স্মৃতিপটে স্মরনীয় দিন হিসেবে রাখতে চেয়েছেন।
"দিনটি হলো:-২০২০ সালের ২৩ এ জুলাই"

৯)দুঃস্বপ্ন:- গল্পটি লিখা হয়েছে "আবু রায়হান" নামক এক ভাইকে নিয়ে,যিনি তার মৃত্যুপূর্ব কিছু মুহূর্ত লেখকের সাথে কাটিয়েছেন,গল্পটি পড়ে আমি যতোটুকু বুঝতে পেরেছি,তিনি তার একটি স্বপ্নকে সাধারণ স্বপ্ন হিসেবে লেখকের কাছে বর্ননা করেছেন,কিন্তু কে জানতো !!এই স্বপ্নই তার হায়াতের সময় শেষ হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে ??

"মানুষ হয়ে কিভাবে হতে হয় মানুষের হাতে খুন !! গল্পটি আমার কাছে লেগেছে খুব করুন",(ভাইটির জন্য দোয়া করি আল্লাহ তা'য়ালা তাকে শহীদের মর্যাদা দান করুক এবং তার কবরকে জান্নাতের বাগিচা বানিয়ে দেক আমীন।)

১০)গরীবের বন্ধু:- গল্পটিতে কয়েকজন সম্মানিত ব্যক্তি বর্গের নাম উল্লেখ করা হয়েছে,তাঁরা সকলে মিলে অসহায়-দরিদ্র মানুষদেরকে নিয়ে একটি সুন্দর পরিকল্পনা করেন,যার মাধ্যমে ক্ষুধার্তদের জন্য খাবারের একটি সুব্যবস্থা চালু হয়েছে,এবং যার মাধ্যমে এই ব্যবস্থাটি চালু হয়েছে মানুষ খুশি হয়ে তার নাম বদলে তাকে "গরীবের বন্ধু" উপাধি দেন। 

গল্পটি আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে,শিক্ষনীয় অনেক কিছু লুকিয়ে আছে এই গল্পে।

বইটি নিয়ে কিছু কথাঃ-
"ধোঁয়াটে শহর" বইটি মূলত পথ শিশুদের প্রতি স্নেহ-মায়া ও ভালোবাসার দৃষ্টি পোষনের দিকে মানুষকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে রচিত। লেখক তার গল্পের ঝুড়ি থেকে ফুলের পাপড়ির মত গল্প ঝরিয়ে মানুষের মাঝে এ কথাটিই ছড়িয়ে দিতে চেয়েছেন।

যে,"আমাদের মতো সামর্থ্যবান মানুষরা যদি এদের পাশে এগিয়ে না আসি,তাহলে কারা এগিয়ে আসবে ভাই ?? মানুষ মানুষের জন্য এই কথাটা আমরা কেনো ভুলে যাই ?

✓পথশিশু তারাও তো আমাদের মতোই মানুষ।আমরা যেমন নিজেদের নিয়ে ফুটন্ত একটি ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখি,তারাও আমাদের মতো স্বপ্ন দেখে। কিন্তু সামর্থ্য হীনতার কারণে তারা তাদের জীবন লড়াইয়ে পেরে উঠতে পারে না। আমাদের উচিত তাদের পাশে দাঁড়িয়ে ভালো কাজের প্রতি তাদের কে উৎসাহিত করা। কষ্টদায়ক ও অতিষ্ঠ জীবন থেকে শান্ত ও সুখময় জীবনের দিকে পা বাড়াতে সাহায্য করা। তাদেরকে যেনো আমরা অবহেলা ও বিরক্তিকর দৃষ্টিতে না দেখি। এবং সম্মানিত লেখক মানুষের মনে এতিম ও অসহায়দের প্রতি মায়া-মমতা সৃষ্টির প্রতি আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে বইয়ের কিছু কিছু এই জায়গায় তিনি হাদিসের আলোকে কথা বলেছেন কখনো বা তার সাহিত্য পূর্ণ বাক্য দ্বারা ছন্দের মালা গেঁথেছেন, এবং কখনো তারা কাব্য দ্বারা কবিতা রচনা করেছেন।

"বইয়ের যেই বাক্য লাইনগুলো আমার কাছে ভালো লেগেছে…
১). সাধারণ মানুষ নিরাপদ নয়। রাস্তায় বের হওয়া মানেই যখন-তখন ঘটতে পারে দূর্ঘটনা, হতে পারে অস্বাভাবিক মৃত্যু।আজ বলতে ইচ্ছে হয়----

"এদেশ স্বাধীন করার জন্য কত বীরের জীবন হয়েছে বিলীন! 
তবু চিৎকার করে বলতে পারি না, আমি মুক্ত, আমি স্বাধীন"।

২) অনেক প্রতিবেশী আছে যাদের দেখে বোঝার উপায় নেই যে তারা অভাবে দিন কাটাচ্ছে, আবার কারও কাছে বলেও না।এ ক্ষেত্রে আমাদের কর্তব্য নিজে থেকে তাদের খোঁজখবর রাখা এবং দেয়ার ক্ষেত্রে এমন পন্থা অবলম্বন করা যাতে প্রতিবেশী লজ্জা না পায়।

৩) দুনিয়ার কল্যাণ ও আখিরাতে রাসুল (সাঃ)-এর সাথে একত্রে জান্নাত লাভ করতে হলে আমাদের আশে পাশের সব অসহায়,অনাথ,এতিম শিশুর প্রতি সাধ্যমতো সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। আল্লাহ আমাদের তাওফীক দান করুন_ আমিন।

৪) হারুন মিয়ার পরিবারের এই সুখের মূল্য অল্প হলেও এমন অল্প মূল্যের সুখ এই শহরের বড়ো বড়ো শিল্পপতির পরিবারেও নেই।একথা সত্য যে অঢেল সম্পদেও সুখ নাই।

৫)এই নগরের কত জ্ঞানী-ধনী লোক খানা ফেলে দিয়ে কমায় ঘরের বোঝা,অন্যদিকে রাস্তায় শুয়ে থাকা কত অসহায় না খেতে পেয়ে রাখে সারাদিন রোজা।

৬) আমাদের মতো সামর্থ্যবান মানুষরা যদি এদের পাশে এগিয়ে না আসি,তাহলে কারা এগিয়ে আসবে ভাই ??। মানুষ মানুষের জন্য এই কথাটা আমরা কেনো ভুলে যাই? আমরা চাইলেই তো ফোটাতে পারি পথে থাকা অসহায়দের মুখে হাসি,অযথা কেন তারা ক্ষুধার জ্বালায় গলায় পরবে রশি?'

🗨️পাঠকের মন্তব্য:-
একজন সাধারণ পাঠক হিসেবে বইটি নিয়ে কিছু বলার ভাষা আমার নেই,তবে একথা না বললেই নয় যে,বইটি পড়ে আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে এবং আমার কাছে মনে হয়েছে বইটি সর্ব স্তরের মানুষ,ছোট বড় সবার জন্য উপযুক্ত একটি বই। সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে প্রতিটি সিরোনামের সাথে গল্পের সামঞ্জস্যতা খুবই চমৎকার এবং উপদেশ মূলক।

কে এম সোহান 
"আল্লাহ তা'য়ালার কাছে দোয়া করি, আল্লাহ তা'য়ালা তাকে দ্বীনের জন্য কবুল করুক ও সর্বদা সুস্থ রাখুক। আল্লাহ তা'য়ালা যেন তার মনের নেক মাকসাদ গুলো পূরণ করেন এবং আমাদের জন্য আরো সুন্দর সুন্দর বই রচনা করার তৌফিক দান করেন, আমীন সুম্মা আমীন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ