রিভিউ | দূরবীনে ব্যাকবেঞ্চার : অসীম হিমেল Durbine Backbencher By Oshim Himel

Title দূরবীনে ব্যাকবেঞ্চার
Author অসীম হিমেল
Publisher শব্দশৈলী
Quality হার্ডকভার
ISBN 9789849574354
Edition 1st published 2022
Number of Pages 192
Country বাংলাদেশ
Language বাংলা
মূল্য-৩৫০
রেটিং-৩.৭/৫


ফ্লাপ থেকেঃ-
ব্যাকবেঞ্চার, প্রথমবার এডমিশন টেস্টে কোথাও চান্স না পেয়ে বন্ধুদের থেকে এক বছর পিছিয়ে পড়া তিন বন্ধুর টানাপোেড়ন এবং জয়ী হওয়ার গল্প।

ব্যাকবেঞ্চার, জীবন থেকে ষোল বছর হারিয়ে যাওয়া এক অন্ধকার জীবনের গল্প।

সব পেয়েও এক অভিমানী বাবার জীবন ও পরিবার থেকে পালিয়ে দেশে ফিরে আসার গল্প ।

ব্যাকবেঞ্চার, পিতাকে খুঁজে পাওয়া এক মেয়ের গল্প। কতগুলো স্বপ্ন পূরণ হওয়ার গল্প ।

ব্যাকবেঞ্চার, একটি ব্যান্ডের এবং একজন ব্যান্ড শিল্পীর প্রতি এক ভক্তের ভালোবাসার গল্প। একটা প্রজন্মের বেড়ে উঠার গল্প।

ব্যাকবেঞ্চার একটি পাওয়া না পাওয়ার হিসাবেরও গল্প...

দূরবীনের একদিক দিয়ে দেখলে যেমন খুব কাছের দেখা যায় আবার আরেকদিক দিয়ে দেখলে খুব দূরে দেখা যায়... ব্যাকবেঞ্চার এরকমই এক উপন্যাস... একই জিনিস একদিকে একরকম আরেকদিকে অন্যরকম।

রিভিউ আলোচনাঃ

চরিত্র-শুভ্র,রাশেদ,কমোল,সুইটি ও মালিহা।

তিন বন্ধুর সফলতার গল্প,তিন জনের জীবন যুদ্ধে জয়ী হবার গল্প।কখনো ভেঙে পড়া,আবার ও উঠে দাঁড়ানো।
বন্ধুত্ব এমনই এক জিনিস একসূতোতে বাধা।দূরবীনে তিন বন্ধুর অসম্ভব মেলবন্ধন।ভার্সিটির চান্সের জন্য তিন বন্ধুর অসম্ভব লড়াই,প্রথম চান্সে না হলে কেমন কথার সম্মুখীন হতে হয় তার সব কিছুই।যেনো বাস্তব মুখচ্ছবি।তারপর চান্স পাওয়া,বন্ধুত্ব ছেড়ে যাওয়া।সবাই নিজ নিজ দৈনন্দিন কাজে আলাদা হয়ে যাওয়া।কর্মে ব্যস্ত। সময়ের ব্যবধানে সব বদলে যাওয়ার গল্প।

দূরবীনে শুভ্র,কোমল ও রাশেদ তিন বন্ধুর ভালোবাসা।শুভ্রকে ঘিরে কত চিন্তা,আবেগ।অন্যদিকে শুভ্রের একতরফা ভালোবাসা,ভালোবেসে গেলো শেষ মূহুর্ত পর্যন্ত,কিন্তু কখনো সুইটি জানলো না,কমোল জানলো না।
শুভ্রর স্কলারশিপ পেয়ে দেশের বাইরে চলে যাওয়া।সেইখানে নতুন পরিবেশে সন্ত্রাসবাদের স্বীকার।সেই খানে হ্যারীর মতো বন্ধুর সাহচার্যে দেশে ফিরে আসা।
দীর্ঘ ষোল বছরের অন্ধকারের জীবন,কতই না যন্ত্রনার ছিল।কিন্তু শুভ্র আগে থেকেই জ্ঞানী ও বুদ্ধিমান।সব খানেই শুভর বুদ্ধি প্রোজ্জলিত।

অন্যদিকে মালিহা,যে আমেরিকান হলেই জন্মগত বাংলাদেশী।একটি গুপ্ত চরিত্র।বাবা ও কন্যার সুমধুর মিল।শুরুতে এতো চঞ্চলতা,যেচে পড়ে শুভর সাথে কথা বলা,শুভর সব কিছু নজরে রাখা!!!সব কিছুর পিছনে যে শুভ্র আছে সেটা স্পষ্টত প্রমাণ হয়।

অন্যদিকে ব্যাকবেঞ্চার জ্যাক একটা ব্রান্ড। শুভ্রদের শৈশব-কৈশর কাটে।পাগলা প্রেমিক জ্যাকের শুভ্র।প্রিয় গান গুলি শোনার জন্য কত শত পাগলামি।একটা পর্যায় থাকে,পুরানো সব পিছনে রেখে নতুন প্রজন্ম নতুন জিনিসের প্রতি আকৃষ্ট হয়,পুরোনো কিছুই তাদের ভালো লাগে না।পুরোনো মানুষ গুলি ও সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে নিজের সুর ছন্দ ভুলে যায়।এইখানেও তাই।সময়ের সাথে সাথে আমাদের রুচি ও বদলায়,চিন্তা চেতনা ও বদলায়।

যায় হোক,শেষ টা এমন না হলেও পারতো।অনেক খারাপ লেগেছে।শুভ্রর সাথে এটা না হলেই হতো।

নিজস্ব প্রতিক্রিয়া -
বইটি পড়ার আগে আমি ভেবেছিলাম শুধু ব্যাকবেঞ্চার নিয়ে গল্প হবে কিন্তু তা নয়।
শুরু থেকেই শুভ্র চরিত্র টা আমাকে ভাবাচ্ছিল শেষ কি হতে পারে,সাসপেন্স চরিত্র ছিল শুরুতে।শুভ্রর চুপ থাকা আমাকে বড্ড ভাবিয়েছে।শেষে সব টা ক্লিয়ার করেছে লেখক আস্তে আস্তে।শুরুতে কাহিনি এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় মন চলে যাচ্ছিল।যেমন ধরেন আমি এখন এয়ারপোর্টে আছি এর কিছুক্ষন পরেই আমি সেন্টমার্টিন চলে যাচ্ছি।এই খানে মন ডাইভার্ট হয়েছে।সব মিলিয়ে শেষের টা দারুন ছিল।ভাবতে পারি নি এতো কিছু হবে।
শুভ্র দের ঘোরাঘুরি আমার ভার্সিটির এডমিশনের সময় কে অনেক স্মরন করিয়ে দিয়েছে।আমরাও এমন করেই ঘুরেছি।

কিছু লাইন-

"দূরবীন" যার মাধ্যমে দূরের জিনিস অনেক কাছে দেখা যায় আবার উল্টো করা হলে কাছের জিনিস অনেক দূরে মনে হয়। সম্পর্ক ঠিক দূরবীনের মতোই, যার যত্নে দুরে থাকলেও কাছে মনে হয় আর যত্ন না নিলে কাছে থেকেও দুরে।"

"প্রতিটা মানুষের জীবন নিজস্ব। এই ছোট জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করা উচিত। ভালো বন্ধন ভালো মূহূর্ত সৃষ্টি করবে, খারাপ বন্ধন খারাপ মূহুর্ত।"

"মানুষের জীবনে কখন কি হয়, কোন দিকে মোড় নেয়, নেক্সটটাইম আবার আসবে কিনা কেউ জানে না। তারপরও মানুষ অনেক আশা নিয়ে বলে নেক্সটটাইমে আবার আসবে। মানুষ নেক্সটটাইম বলে অনেক স্বপ্ন দেখে যায়।"

লেখক সম্পর্কে -
৫ নভেম্বর কালীগঞ্জ, গাজীপুরে জন্ম। চিকিৎসা বিদ্যায় গ্রাজুয়েশন, অর্থোপেডিক্স ও ট্রমা সার্জারীতে পোস্ট গ্রাজুয়েশন, বর্তমানে জাতীয় অর্থোপেডিক ও পূনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (নিটোর) অর্থোপেডিক কনসালটেন্ট হিসাবে চাকুরিরত।

লেখকের অন্য প্রকাশিত গ্রন্থ সমূহ : ‘মধ্যরাতের অভিযান’, ‘জোছনায় নীল আকাশ’, ‘মেজোকুমার এক সন্ন্যাসী রাজা', ‘খেদু মিয়া

Shayma Khan

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ