আফগানিস্তান যেভাবে চাঁদ দেখেছে ! | Eid Mubarak Afghanistan

আফগানিস্তান যেভাবে চাঁদ দেখেছে ! 

Time and Date নামে একটা ওয়েবসাইট (timeanddate.com) আছে, যেখানে বিশ্বের যেকোনো দিন যেকোনো দেশের যেকোনো স্থানের সূর্য এবং চন্দ্রের উদয়-অস্ত সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য দেখা যায়। এই সাইটের তথ্য সঠিক থাকলে, 'ইসলামিক ইমারাত অফ আফগানিস্তান' থেকে গতকাল সন্ধ্যায় চাঁদ দেখা সম্ভব ছিলো না। কারণ, হিসাব অনুযায়ী সেখানে পুরাতন চাঁদ অস্ত যাওয়ার কথা ছিলো সূর্যাস্তের প্রায় ২২ মিনিট আগে, এবং নতুন চাঁদ ওঠার কথা ছিলো সূর্যাস্তের অনেক পরে। তাই, ডেটা অনুযায়ী গতকাল আফগানিস্তানের আকাশ থেকে নতুন চাঁদ দেখা সম্ভব ছিলো না। কারণ, কাবুলের আকাশে গতকাল সূর্যাস্ত ছিলো সন্ধ্যা ৬টা ৩৬ মিনিটে, আর চাঁদ ডুবে গিয়েছিলো সন্ধ্যা ৬টা ১৪ মিনিটে। 

চাঁদ দেখার সমস্যা এবং সম্ভাবনা নিয়ে এই সিম্পল ব্যাপারটা অনেকেই তাদের পোস্টে উল্লেখ করেননি। সেখানে চাঁদের ইলুমিনেশন (উজ্জ্বলতা) নিয়ে অনেক কথা বলা হয়েছে, যেটা মূলত: আজকের জন্য প্রযোজ্য। যেমন,

আজকে আফগানিস্তান বা বাংলাদেশের আকাশে যে চাঁদ দেখা যাবে, সেটা সূর্যাস্তের পর বেশ কিছুক্ষণ আকাশে থাকবে ঠিকই, কিন্তু তার ইলুমিনেশন (উজ্জ্বলতা) এত কম হবে (মাত্র ০.২ থেকে ০.৩%) যে, তা খালি চোখে তো দূরের কথা থিওডোলাইট (চাঁদ দেখার যন্ত্র) দিয়েও দেখা প্রায় অসম্ভব। সুতরাং, আফগানিস্তানের আকাশে গতকাল যে নতুন চাঁদ উঠেনি, সেটা মোটামুটিভাবে নিশ্চিত করেই বলা যায়। যা-ই হোক,

এখানেই বিজ্ঞানের সীমাবদ্ধতা। বিজ্ঞান এটা বলতে পারএ যে, ঠিক অমুক দিন অমুক স্থানে চাঁদ ফিজিক্যালি উঠবে কি-না। কিন্তু, বিজ্ঞান কখনোই নিশ্চিত করে বলতে পারে না যে, সেই চাঁদ উঠলেও সেটা দেখা যাবে কি-না। কারণ, নুন্যতম ২ - ৩% ইলুমিনেশন না হলে 'চাঁদদেখা' ব্যাপারটা কঠিনই বটে এবং ইসলামি নিয়ম অনুযায়ী দেখাটাই মুল শর্ত।

তাহলে আফগানরা কী দেখেছে❓

Probably, Cosmic False Object. আকাশে তো শুধু চাঁদই থাকে না, গ্রহ-নক্ষত্রসহ আরো অনেক কিছুই থাকে। এবং মানুষ যখন চাঁদ দেখার জন্য অনেক বেশি আগ্রহ নিয়ে চেষ্টা করতে থাকে, তখন চাঁদের অবস্থানে অন্য কোনো তারা, তারকাপুঞ্জ বা গ্রহ দেখা গেলে সেটাকেই চাঁদ বলে ভ্রম হতে পারে। যেমন,

আগে থেকেই সতর্ক করা ছিলো যে, এ বছর শাওয়ালের ২৯ তারিখে বুধ গ্রহের অবস্থান থাকবে ঠিক নতুন চাঁদের অবস্থানে, কেউ যেন সেটাকে চাঁদ ভেবে ভুল করে না বসেন। হতে পারে আফগানরা (এবং আরও কিছু কিছু স্থানের মানুষরা) সেটাই দেখেছে। প্রশ্ন হচ্ছে, 

তাহলে আফগানদের ঈদ উদযাপন কি তাহলে ভুল❓ 

 হ্যাঁ, মোস্ট প্রবাবলি ভুল। কিন্তু এরকম ভুল নিয়মিতই হয়। এর আগেপরে অনেক দেশই এরকম ভুল করেছে এবং এখনও করে। এবং ইসলাম যেহেতু এসব ক্ষেত্রে বাস্তবসম্মত এবং উদার ধর্ম, তাই এরকম মনে করার কোনো কারণ নাই যে, এই ভুলের কারণে ঐ দেশের মানুষের ঈদই হবে না। ঈদ ইনশাআল্লাহ সবারটাই হবে। কিন্তু,

এখানেই আসে বিজ্ঞানের সাথে ধর্মের সমন্বয়ের ব্যাপারটা। ধর্মীয় শর্ত যেহেতু আছে, তাই তুরস্কের মতো পুরোপুরি পূর্বনির্ধারিত ক্যালেন্ডারভিত্তিক ঈদ পালন করা যদি প্রপারলি ইসলামিক না হয়, তাহলেও অন্তত ফিজিক্যালি নতুন চাঁদ আকাশে থাকবে কি-না, সেটা হিসাবে নিয়ে সেই দিন বাদে এরপর দিন চোখে দেখার উপর ছেড়ে দিলে এ ধরনের জটিলতা অনেকটাই দূর করা সম্ভব।

লিখেছেন- Mizanur Rahman Tipu

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ