কেন পড়বেন একটু উষ্ণতার জন্য পিডিএফ?
একটু উষ্ণতার জন্য " এই উপন্যাসের আগাগোড়া প্রেম কেন্দ্রীক তবে এই প্রেমের অংশ দুটি। একটি মানব এবং অন্যটি প্রকৃতির প্রেম। বুদ্ধদেব গুহর লেখায় প্রকৃতির অপরুপ চিত্র মূল কেন্দ্রে থাকলেও এই যাত্রায় মানব প্রেমই বোধহয় প্রকৃতিকে পিছে ফেলেছে। যদিও মানব প্রেম গুলো নিয়ে প্রশ্নের, সমালোচনার জায়গা থেকেই যায়।
একটু উষ্ণতার জন্য বই পরিচিতি
Title | একটু উষ্ণতার জন্য PDF |
Author | বুদ্ধদেব গুহ |
Publisher | আনন্দ পাবলিশার্স (ভারত) |
Quality | PDF Download Free |
ISBN | 9788172153731 |
Edition | 1st Edition, 1987 |
Number of Pages | 246 |
Country | ভারত |
Language | বাংলা |
একটু উষ্ণতার জন্য " উপন্যাসে প্রকৃতির শীতের চাইতে মানুষের মনস্তাত্ত্বিক তাপহীন, উত্তেজনাহীনকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।আর এই উষ্ণতা পাওয়ার জন্য রমা সুকুমার বোস কে ছাড়লেন, সুকুমার বোস ধরলেন তার পাঠিকাকে, শৈলন পেলো নয়নতারাকে আর লাবু নূরানীকে। যার দরুন আমরা পাঠকরা পেলাম বুদ্ধদেব গুহর প্রকৃতিকে এবং তার লেখাকে।
একটু উষ্ণতার জন্য" মূলত অনেক গুলো প্রেমের গল্প যেগুলো অবশ্য পূর্ণতাহীন। সুকুমার বোস ভালোবেসে বিয়ে করলেন রমাকে। আর্থিক জীবনকে নিশ্চিত করতে, সুকুমার বাবু জীবনের জৈবিক চাহিদা গুলো বাক্সবন্দি করে রাখলেন। তবে রমাও বসে থাকেন নি। নিজের চাহিদা গুলো পূরন করতে বেছে নিয়েছেন সলিলকে, সলিলের আঙুলে খুঁজে পেয়েছেন নিজের উষ্ণতার ছোঁয়া। সুকুমার বোস আবার নিজেকে সঁপে দিলেন তার পাঠিকা ছুটির কাছে।তবে শেষ দিকে ছুটিও নিলেন অন্য কারো উষ্ণতা আর রমা ফিরে আসতে চাইলেও সুকুমার বোস আর ফিরলেন না।
একটু উষ্ণতার জন্য PDF " বিরহেরও গল্প আবার প্রাপ্তি আছে। শৈলন নয়নতারার প্রেম এবং পরিণতি একবারের জন্য হলেও পাঠকের মনে দুঃখের ভাবাবেগে তৈরি করবে আবার লাবুর জন্য ভালোলাগা কাজ করবে।
সবকিছুরই সীমানা থাকা উচিত, সীমারেখা, সীমাবদ্ধতা থাকা উচিত। জীবনে কেবল অর্থনীতিই সুখ আনতে পারে না যদি নিজের একজন মানুষ না থাকে, প্রচন্ড হাড়কাঁপানো শীতে যাকে একবার আলিঙ্গন করেই শীত গুলোকে উষ্ণতায় পরিনত করা যায়। যার কাছে নিজেকে সঁপে দিয়ে শান্ত মনে দুদণ্ড প্রকৃতি ভ্রমন করা যায়। সুকুমার বোস যদি আর্থিক জীবনের পাশাপাশি সাংসারিক জীবন বা জীবনকে রমাময় করতে পারতেন তখন হয়ত রমাকে সলিলের কাছে উষ্ণতা খুঁজতে হতো না। আবার যদি ছুটিতে নিশ্চিত থাকতে পারতেন তাহলে হয়তো ছুটিকেও অন্য কারো সাথে লিভ ইন করতে হতো না।
" জায়গায়টায় সকাল হয় না সকাল আসে। অনেক শিশির জড়ানো ভেজা পথ মাড়িয়ে, অনেক শঙ্খিনী নদী পেরিয়ে সোনা গলানো পোশাক পড়ে সকাল আসে এখানে " এরকম আরো কত শত লেখার মাধ্যমে লেখক ম্যাকলাস্কিকে বর্ণনা করেছেন। পাঠক যতোটা ছুটি, লাবু, বয়েলস, প্যাট এদের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছে ঠিক ততোটা বা তার অধিক আকৃষ্ট হয়েছে লেখকের প্রকৃতি বর্ণনায়। শীতের নেমে আসা সন্ধ্যা বা পাখিদের নীড়ে ফিরে যাওয়া , প্রকৃতির গন্ধ নেওয়া এসবকিছুই পাঠকদের মনে আলোড়ন সৃষ্টি করেছি। একটু উষ্ণতার জন্য " কে যদি কাল্পনিক ভাবে ধরে নিই কোনো সুন্দরী রমনীর শাড়ি তাহলে প্রকৃতি, লাবু, শৈলন, প্যাট,বয়েলস, ছুটি এই চরিত্র গুলো সেই নারীর অলংকার স্বরুপ।
এবার আসি কিঞ্চিত সমালোচনায় - লেখক কখনো নিশ্চিত ছিলো না তার কার কাছে যাওয়া উচিত, কার উষ্ণতা গ্রহন করা উচিত। যখন যাকে ভালো লেগেছে তার উষ্ণতাই গ্রহন করেছে। পেয়ারা তলায় দাড়িয়ে বালুচী শাড়ি, মুক্তার ইয়ার টপে সজ্জিত সুন্দরী রমাকে তার ভালবাসতে ইচ্ছে করে আবার রমাকে কাছে পেয়ে ছুটিকেও ভুলে যেতে মন চায়। তখন লেখকের ভালোবাসা নিয়ে প্রশ্ন উঠে, লেখকের কাছে ভালোবাসার ব্যাখ্যা জানতেও মন পীড়া দেয়। তবে শৈলনের প্রেমটা একপেশে হলেও সেটা আমার কাছে বেশ সলিড মনে হয়।
একটু উষ্ণতার জন্য PDF "উপন্যাসে কেউ রমার পক্ষ হয়ে ছুটিকে দোষ দিবে অথবা কেউ লেখক রুপী সুকুমার বোসকে দায়ী করে ছুটি রমা দুজনকেই সহমর্মিতা দেখাবে তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কিন্ত সেই সুকুমার বোসই। বুদ্ধদেব গুহর লেখা যেমন আকর্ষনীয় ছিলো তেমনি চরিত্রায়নও। বিশেষ করে ছুটিকে।
“এ জায়গাটায় সকাল হয় না, সকাল আসে । অনেক শিশিরঝরানো ঘাসে ভেজা পাহাড়ি পথ মাড়িয়ে, অনেক শখিনী নদী পেরিয়ে, সোনা গলানো পোশাক পরে সকাল আসে এখানে ।”
▫️আমার কথা : গ্রামে বিকেলের রেশ কাটতে না কাটতেই ঝুপ্ করে সন্ধ্যা নেমে আসে । মেঘ-জমা বর্ষার বিকেল হলে তো আর কথাই নেই... হঠাৎ বৃষ্টি আসে কালবৈশাখী ঝড়ের সাথী হয়ে । খেলতে যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়, কোথাও বেড়াতে যাওয়াও যায় না । ঠিক ঐ সময়ে বারান্দায় বসে বৃষ্টি দেখতে দেখতে নিজের পছন্দের বই হাতে নিয়ে পড়ার মত সুন্দর অনুভূতি আর কিছু আছে কি ?
📝 গল্প-সংক্ষেপ : গল্পের প্রধান চরিত্র সুকুমার বোস, পেশায় বেশ নামকরা একজন উকিল । ওকালতির পাশাপাশি তার অন্য পরিচয়... তিনি একজন লেখক । রাজরোগ (টিবি) থেকে মোটামুটি সেরে উঠে তিনি হাওয়াবদলের জন্য আসেন ম্যাকলাস্কিতে । দূর্গম সে জায়গায় আছে কিছু সাধারন এবং অসাধারন চরিত্র আর অপরুপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য । তার স্ত্রী রমা এবং এক ছেলে রুণ । তাদের নিয়েই সুখী জীবন হওয়ার কথা ছিল তার, কিন্তু তা হয়ে ওঠেনি । রমা এবং সুকুমার বোসের প্রেমের বিয়ে । কিন্তু বিয়ের পর তাদের সম্পর্কের দারুণ অবনতি ঘটে । সুকুমার বোস ব্যস্ত হয়ে পড়েন তার ক্যারিয়ার নিয়ে, ফলে রমার সাথে তার দূরত্ব বাড়তে থাকে । যতদিনে নিজের ভুল বুঝতে পারেন ততদিনে রমাও নিজেকে বদলে নিয়েছে । দুজনের ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটানো অসম্ভব ।
▪️এই প্রতিকূলতার মাঝেই আসে ‘ছুটি’ চরিত্রটি । সুকুমার বোসের একজন একনিষ্ঠ পাঠিকা । তার তৃষ্ণার্ত জীবনে স্নিগ্ধ হিমশীতল ভালবাসার প্রতিশ্রুতি হয়ে ধরা দিলো ছুটি । ছুটি তার চাকরির সূত্রে রাঁচিতে একা থাকে । কাজের ফাঁকে রাঁচি থেকে বারবার চলে আসে ভালোবাসার লেখকের কাছে । অপবাদের তীক্ষ্ণ ফলা তীব্র থেকে তীব্রতর, ঘনিষ্ঠ থেকে ঘনিষ্ঠতম করে তোলে সুকুমার এবং ছুটি’র প্রেম কে ।
▪️এদিকে রমা নতুন করে টান অনুভব করে স্বামীর প্রতি, সে ফিরে আসে সুকুমারের কাছে । কী করবে সুকুমার বোস ? একজন সুখী মানুষ হওয়াই যার প্রবল ইচ্ছা, সেই সুকুমার বোস কি পারলেন সুখী মানুষ হতে ?
📝 পাঠ-প্রতিক্রিয়া : আমার অন্যতম প্রিয় উপন্যাসিক বুদ্ধদেব গুহ । ‘লেখক’ পরিচয়ের চেয়েও তার আরও বিশেষ পরিচয় তিনি ‘জঙ্গলের প্রেমিক’ । প্রকৃতির সাথে কতটা আত্মিক সম্পর্ক থাকলে এইভাবে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বর্ণণা লেখা যায় !! ওনার এই সব উপন্যাসগুলি বাংলা সাহিত্যের ‘ক্লাসিক’ । এইসব বইয়ের ‘পাঠ প্রতিক্রিয়া’ হয় না, এই আলোচনাকে ‘পাঠ অনুভূতি’ বললে যথার্থ বলা হয় । বহুবার পড়া হয়ে যাওয়ার পরেও এই বইগুলির কাছে বারবার ফিরে আসতে ইচ্ছে হয় বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কথাশিল্পী লেখণীর গুণে ।
📜 চরিত্রায়ন : ‘তোমার ঘরে বসত করে কয়জনা...’
একটি মানুষেরই কত ভিন্ন ভিন্ন রূপ । ভিন্ন ভিন্ন আঙ্গিকে চিন্তাভাবনা করে সম্পর্ককে জটিল করে তোলা মানুষের চিরকালীন অভ্যাস, তারপর সেই জটিলতা সমাধানের প্রচেষ্টা । আসলে... প্রতিটি মানুষই সুখের বড় কাঙাল । সবাই তার ভালবাসার মানুষটিকে সাথে নিয়ে হয়ে উঠতে চায় পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ । আর যখন সেই সুখের দেখা মেলে না, সুখ এসে ধরা দিয়েও দেয় না... তখনই মানুষ মুক্তি চায়, ছুটি চায় এই নির্মম পৃথিবী থেকে । ভালবাসার উষ্ণতা খুঁজতে গিয়ে মানুষ হয়ে যায় নিঃস্ব, একাকী ।
▪️গল্পের মূল চরিত্র সুকুমার বোসের মনস্তাত্ত্বিক জটিলতা খুব সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন লেখক । একদিকে অসম প্রেমের গল্প, অপরদিকে স্ত্রী-ছেলের প্রতি দায়িত্ববোধ, সংসার । মান, যশ, খ্যাতি, টাকার পিছনে ছুটতে গিয়ে ভালবাসার মানুষকে হারানোর যন্ত্রণা সবই উঠে এসেছে ওই চরিত্রের মাধ্যমে ।
▪️রমা চরিত্রটি আমাদের পরিচিত আর পাঁচটা সাধারণ নারীর মতোই । সে চেয়েছিল তার স্বামী সফল হোক এবং একইসাথে তাকে সময় দিক । রমা চাইতো ভালবাসা, যত্ন আর প্রায়োরিটি । তাই, রমার চোখে সুকুমার বোস ব্যর্থ একজন পুরুষ । রমার মতে, ’যে আমাকে ভালোবেসে বিয়ে করল, তারই এখন আমার দিকে তাকানোর সময় হয় না । তবে আমি কেন তার দিকটা ভাবব ?’
▪️এই উপন্যাসে অন্যতম প্রিয় এই ‘ছুটি’ চরিত্রটি । ছুটি খুব সাহসী, স্বাধীনচেতা, আধুনিকা । সে যথার্থ প্রেমিকা । ভালোবাসার ক্ষেত্রে সে সমাজকে তোয়াক্কা করে না ।
▪️এই উপন্যাসের অন্যতম আকর্ষণ গল্পের পার্শ্বচরিত্রগুলি । এই প্রতিটি চরিত্রকেই লেখক অনেক যত্ন নিয়ে তৈরি করেছেন ।
আছেন মিঃ বোয়েলস নামে এক নিঃসঙ্গ ভদ্রলোক, শৈলেন-নয়নতারা, লাবু, নুড়ানি, মিসেস কার্নি এবং প্যাট । প্রতিটি চরিত্রই ভীষণ স্বতন্ত্র এবং গুরুত্বপূর্ণ । লাবুর জন্য আপনার মায়া হবে, শৈলেনের জন্য মন খারাপ করবে নিশ্চিত । প্যাটের মধ্যে আপনি পাবেন এক জীবনসৈনিকের লড়াকু মনোভাব, সংগ্রাম । পড়তে পড়তে বুঝবেন এই চরিত্রগুলি ছাড়া এই উপন্যাস এতো পরিপূর্ণ হতো না ।
📜 প্রাকৃতিক বর্ণনা : বুদ্ধদেব গুহ’র লেখায় প্রকৃতির চিত্র ফুটে উঠবে না তা কী হয় ! এই উপন্যাসে ম্যাকলাস্কিগঞ্জের প্রাকৃতিক দৃশ্যপটের বর্ণনা পড়লে রোমাঞ্চিত হতে হয় ।
.... প্যাট আস্তে আস্তে বলল, “সেদিন রিডারস্ ডাইজেস্টে পড়ছিলাম একটা লেখা । ‘হাউ ইভনিং কামস্’। আমাদের সকলের সামনেই সন্ধ্যে হয় রোজ কিন্তু আমরা ক'জন সেদিকে চোখ তুলে তাকাই ? দিনের শেষ এবং রাতের শুরুর মধ্যে এই যে গোধূলি লগন, এই লগনকে আমরা ক'জন উপলব্ধি করি ?”
প্যাটের কথায় একটা চমক লাগল মনে । আর কেউ করুক আর না করুক, ভগবানের দিব্যি ; আমি করি । জঙ্গল-পাহাড়ের পরিবেশে সন্ধ্যালগ্নে দাঁড়িয়ে নাক ভরে আসন্ন হিমের রাতের গন্ধ নিতে নিতে, পশ্চিমাকাশের শেষ ফিকে গোলাপি রঙের আভার দিকে চোখ মেলে আমার বারে বারে মনে হয় যে আমি যেন এখানেই জন্মেছিলাম কোনো কালে । মনে হয় প্রকৃতিই আমার আসল মা.. আমার আসল, প্রথম এবং সর্বশেষ প্রেমিকা । হয়ত অনেক নারী এসেছে, চলে গেছে, অথবা আছে এখনো আমার জীবনে, তারা সকলেই জংলী হলুদ সানফ্লাওয়ারের মত, বেগনেরঙা প্রজাপতির মত, ঘুঘুর কবোষ্ণ বুকের মত, কিন্তু তারা এই প্রকৃতিরই টুকরো মাত্র । তারা খণ্ড এবং প্রকৃতি তাদের সমষ্টি ।
📜 জীবনদর্শন : “প্রেমের সমস্ত সার্থকতা প্রেমাস্পদকে পাওয়ার মধ্যেই সীমিত নয় । তাকে পাওয়া যেতে পারে, নাও যেতে পারে । প্রেমের সবচেয়ে বড় গৌরব প্রেমই । মানুষের জীবনে আর কোনো অনুভূতিই তাকে এমন এক আত্মিক উন্নতির চৌকাঠে এনে দাঁড় করায় না ।”
▪️এই উপন্যাসের মূল বিষয়বস্তু কিন্তু প্রেম অথবা প্রকৃতি নয়, বরং ‘সম্পর্কের জটিলতা’। নর-নারীর পারস্পরিক সম্পর্ক চিরকালীন এবং চির জটিল । সেই চির জটিল সম্পর্ককে বিভিন্ন দিক থেকে বিচার-বিশ্লেষণ করে দেখছেন লেখক বুদ্ধদেব গুহ । তার লেখায় যেমনি প্রকৃতির সৌন্দর্যের বিবরণ উঠে আসে ঠিক তেমনি উঠে আসে একটা সম্পর্কের চুলচেরা বিশ্লেষণ । প্রেমের গভীর এবং বিচিত্র রূপ দারুণভাবে ফুটে উঠেছে এই উপন্যাস জুড়ে । একজন পুরুষ কতটা আদিম হতে পারে, কতটা প্রবল হতে পারে তার প্রবৃত্তি, কতটা ঝুঁকি সে নিতে পারে নিজের ভালোবাসাকে প্রতিষ্ঠিত করতে... তার সবটুকুই উপলব্ধি করা যায় এই উপন্যাসের সুকুমার চরিত্রটিকে বিশ্লেষণ করলে ।
“হৃদয়ের শূন্যতা যে দেহ-মনে অপার্থিব এক শীতলতার সৃষ্টি করে সে আমরা প্রায় অনেকেই অনুভব করি । অপার্থিব বলছি এ জন্য যে, প্রচণ্ড দাবদাহে যখন জ্বলছে প্রকৃতি তখন হয়ত আপনি শীতে কাঁপছেন । সে শীত আপনি কোন পার্থিব পোশাকে দূর করতে পারবেন না । সে শীত একাকীত্বতার শীত । সে শীত কেবলমাত্র তখন দূর হবে যখন আপনার আত্মা খুঁজে পাবে আত্মিক উষ্ণতা । আর সেই উষ্ণতাটুকুর নামই ভালবাসা ।”
📜 শেষটুকু : পৃথিবীতে বিভিন্ন লোক বিভিন্ন কারণে শীতার্ত, সকলেরই একটু উষ্ণতার প্রয়োজন । গল্পের মূল চরিত্র সুকুমার বোস তার স্ত্রীর কাছে উষ্ণতার ছোঁয়া না পেয়ে, দীর্ঘ শীতার্ত দিবসের পর ছুটি নামক এক উষ্ণতাকে আলিঙ্গন করে বাঁচতে চেয়েছিলেন । যেমনভাবে নয়নতারাকে আলিঙ্গন করে বাঁচতে চেয়েছিল শৈলেন । লাবুও একটু উষ্ণতার জন্য হাত ধরল নুরানীর, পিছনে ফেলে রাখলো তার শীতার্ত পরিবারকে ।
▫️লেখক বুদ্ধদেব গুহ’র এই উপন্যাস শেষ করে অদ্ভুত রকমের একটা ভালোলাগার অনুভূতিতে ডুবে ছিলাম বেশ কিছুদিন । এই উপন্যাস সেই সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে ভীষণ আধুনিক একটি উপন্যাস । লেখকের দৃষ্টিভঙ্গি যদি আপনার কাছে পরিষ্কার না হয়, তাহলে এই বইটি আপনার কাছে নিছকই একটি ‘পরকীয়া কাহিনী’ই মনে হতে পারে ।
বুদ্ধদেব গুহ
বুদ্ধদেব গুহ একজন বাঙালি কথাসাহিত্যিক। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে পড়াশোনা করেছেন। তিনি তাঁর জীবনের শুরুর সময়গুলি পূর্ববঙ্গের বিভিন্ন জেলায় কাটিয়েছেন। রংপুর, জয়পুরহাট এবং বরিশালের সেই দিনগুলি তাঁর রিভু সিরিজে চিত্রিত হয়েছে।
জন্ম: ২৯ শে জুন, ১৯৩৬, কলকাতা, ভারত
বই: জঙ্গল্মহল, ঋজুদার সঙ্গে জঙ্গলে, মাধুকরী, ঋজুদা
শিক্ষা: সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ, কলকাতা, বরিশাল জিলা স্কুল
পুরস্কার: ১৯৭৭ সালে আনন্দ পুরস্কার
0 মন্তব্যসমূহ
ℹ️ Your Opinion is very important to us, Please Writer your comment below about this Post.....