দিমেন্তিয়া : লেখক এম.জে. বাবু - ডার্ক সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার | Dimentia By MJ Babu Books

  • বই : দিমেন্তিয়া
  • লেখক : এম.জে. বাবু
  • প্রকাশনা : গ্রন্থরাজ্য
  • জনরা : ডার্ক সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার

  • সকাল থেকেই বৃষ্টি। দোকানে কাস্টমার নাই। যা আসে তা দোকানের ছেলেকে দিয়ে আমি বসলাম দিমেন্তিয়া নিয়ে। ঝুম ঝুম বৃষ্টি সাথে চিলিং ডার্ক সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার, আহা! গত পাঁচ ঘন্টা কী করে গেল টের পাইনি।

    এম.জে. বাবু এর সাথে পরিচয় আমার জিন দিয়ে। জিন পড়েই বুঝেছি লেখকের ক্যালিবার অনেক হাই। এবার দুটো বই অর্ডার করি অ্যানার্কিস্ট সিরিজের। সকাল ৯ টার দিকে শুরু করি দিমেন্তিয়া আর কিছুক্ষণ আগে শেষ করলাম। গল্পের রেশ এখনো মাথায় কাজ করছে। যাক, আর না বকে মূল আলোচনায় যাই।

    গল্প শুরু হয় সিআইডি অফিসার শফিকে দিয়ে। সকাল সকাল ফোন পায় সিআইডির ডিরেক্টর থেকে। ডিরেক্টর জানায় গ্রিনরোডে একটা লাশ পাওয়া যায়। শফী সিআইডিতে আছে অনেক বছর। কিন্তু এরকম কেইস নিয়ে কাজ করে না। তার ফোকাস থাকে পুরনো কেইসগুলোর দিকে। যেগুলো অসমাপ্ত। আদালতের রায়ে ওপেন হয়। এজন্য ডিপার্টমেন্ট এ তাকে 'গোরখোদক' বলে ডাকে। কেসে না যেতে গড়িমসি করে শফি। কিন্তু ডিরেক্টর এর চাপে বাধ্য হয়ে যেতে হয়। ক্রাইম সিনে গিয়ে দেখা হয় সেই এলাকার ওসি দানিয়ালের সাথে। তার সাথে কথা বলে জানতে পারে লাশের অবস্থা। লাশকে ৭ টুকরো করে রাস্তায় ফেলে যায় খুনী। ময়নাতদন্তে বের হয়ে আসে আরও নির্মম সত্য। খুনী জীবিত থাকতেই বিউটিলিয়াম ৩৬ নামে এক ড্রাগের সাহায্য নিয়ে একের পর এক ভিক্টিমের অঙ্গ কেটে নেয়। নিয়ে যায় জরায়ু। সবাই দ্বীধায় পড়ে। কেসের রেশ কাটতে না কাটতে আবার লাশ পাওয়া যায়। এবার ৬ টুকরো করে ফেলে যায় খুনি। টর্চার করা হয় নতুন পদ্ধতিতে। নড়েচড়ে বসে সিআইডি আর পুলিশ। একের পর এক লাশ পড়ছে, পুলিশ কোনো ক্লু পাচ্ছে না।

    অপরদিকে অন্ধকার ঢাকায় এক সাইকোর আগমন ঘটে। এই দুনিয়ার প্রতি যেন তার অনেক অভিমান আর রাগ। সব রাগ দেখাতেই একের পর এক খুন করছে। আর পুলিশকে নাচাচ্ছে হাতের মুঠোই। পুলিশ-সাইকোর ইঁদুর বিড়াল খেলায় পড়তে থাকে একের পর এক লাশ। যার থামার নাম নেই। দানিয়াল আর শফি কি পারবে খুনিকে আটকাতে, না খুনি নিজের বেড়াজালে আটকে রাখবে তাদের। জানতে হলে পড়তে হবে দিমেন্তিয়া।

    এক কথায় সুপার সাসপেন্সড একটা বই পড়লাম। একের পর এক টুইস্ট দিয়ে গল্প এগিয়েছে লেখক। শফী-দানিয়াল-সাইকো এই তিনটে চরিত্রকে রাখা হয়েছে ফোকাসে। এবং ভালোই ডিটেইলিং করেছে। লেখকের বর্ণনার হাত বেশ ভালো। জিন থেকে কয়েকগুণ ভালো। শব্দের প্রয়োগ, বাক্যের মাধুর্যতা, চ্যাপ্টার সমাপ্তি সব ছিল চোখে পড়ার মত। ডার্ক সাইকোলজিক্যাল থ্রিলারের সাথে মিলিয়েছে সিরিয়াল কিলিং। প্লট প্রথমে ক্লিশে লাগবে কিন্তু শেষ করে বুঝবেন লেখক আপনার সাথে কী খেলাটা না খেললো। বইটা আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে, জিন থেকে অনেক ভালো লেগেছে। দেশীয় ভাইবে এরকম মারমার কাটকাট টাইপের বই আগে পড়িনি। ৩৫০ পৃষ্ঠার বই একটানেই শেষ হয়েছে।

    2021

    বেশ কিছু বানান ভুল ছিল। চোখে লাগার মতো ছিল। তবে অধিকাংশ বানান ভুলকে মনে হয়েছে কনভার্ট করতে গিয়েছে। কিছু আবার হয়েছে এমএস ওয়ার্ডের ভিন্ন ভার্শনের জন্য। প্রকাশনীকে এ ব্যাপারে সতর্ক অবলম্বন করার জন্য অনুরোধ রইল। প্রচ্ছদ -প্রোডাকশন টপ নচ। সার্ভিস ও ভালো গ্রন্থরাজ্যের।

    একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

    0 মন্তব্যসমূহ