ইহুদিবাদের মুখ ও মুখোশ | লেখক মুসা আল হাফিজ | Ihudibader Mukh O Mukhosh

  • ইহুদিবাদের মুখ ও মুখোশ
  • লেখক : মুসা আল হাফিজ
  • প্রকাশনী : ফাতিহ প্রকাশন
  • বিষয় : ইতিহাস ও ঐতিহ্য
  • ভাষা : বাংলা

ইহুদিবাদের মুখ ও মুখোশ এটি এমন এক গ্রন্থ যার দর্পণে হিজবুশ শয়তানের চেহারা আমরা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে পারি। তাদের মানবতাবিরোধী প্রকল্পসমূহ, বিশেষত মুসলমানদের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের চিত্র বইটিতে রয়েছে। এই গ্রন্থ ইহুদি ষড়যন্ত্রের উদ্ঘাটক, খ্রিষ্টীয় বিভ্রান্তির নির্ণায়ক এবং উভয় সম্প্রদায়ের ধর্মীয় দেউলিয়াত্বের বিকৃত অবয়বের উন্মোচক। 

ইহুদিবাদের মুখ ও মুখোশ এটা যেন ঠিক কোনো গ্রন্থ নয়, ইহুদি ষড়যন্ত্রের বিরদ্ধে দুনিয়া কাঁপানো এক বিস্ফোরণ।ইহুদি খ্রিষ্টানদের ধর্মগ্রন্থে ঈসা মসীহ আলাইহিস সালাম, ঈমাম মাহদী আলাইহিস সালাম ও দাজ্জাল সম্পর্কিত হাদিসসমূহের সত্যায়ন দেখে পাঠকদের ঈমান বলিষ্ঠ ও দৃঢ়তর হয়ে উঠবে।

আশা করি ইহুদিবাদের মুখ ও মুখোশ গ্রন্থটি সত্যের প্রতিটি সৈনিক ও মানবতার প্রত্যেক খাদেমের জন্য মাইলফলক হিসেবে প্রমাণিত হবে।

কুরআন-হাদিসে এমন কোনো বক্তব্য নেই, যাতে বুঝা যায় মসজিদে আকসা ভেঙে ফেলা অসম্ভব। এটি ঘটবার জন্য ফিতনা বিষয়ক হাদিসে আলোচনা থাকতে হবে, তা জরুরি নয়। কুরআন হাদিসে উল্লেখ নেই এমন অনেক ঘটনাও পৃথিবীতে ঘটে গেছে। ভবিষ্যতের প্রত্যেক বড় ঘটনার সংবাদ দিতেই হবে, এটা কুরআন-হাদিসের কাজও নয়।

মসজিদে আকসা ভেঙে ফেলা কেন অসম্ভব হবে? হাজ্জাজ বিন ইউসুফের জামানায় কাবাঘর কি শহিদ হয়নি? অথচ তার উল্লেখ কুরআন হাদিসে নেই। বাতেনী চরমপন্থীরা হাজরে আসওয়াদ ছিনিয়ে বাহরাইনে নিয়ে গেল। পাথরটি তাদের হাতে কয়েক বছর ছিল। কুরআন-হাদিসে এসবের উল্লেখ নেই! অতএব কুরআন-হাদিসে উল্লেখ না থাকায় সেটা ঘটা অসম্বব, এমন ফতোয়া কারো দেওয়া উচিত নয়। দুনিয়ায় কোনো বিষয় সংঘটিত হওয়া পার্থিব উপায় উপকরণের সাথে সম্পর্কিত। একারণে স্বাভাবিকভাবে অস্তিত্বে আসতে পারে, কুরআন-হাদিসে উল্লেখ থাকুক বা না থাকুক।

আসল প্রশ্ন হলো মসজিদকে যারা শহিদ করতে চায়, তাদের প্রস্তুতি ও উপায় উপকরণ কতটুকু? বাস্তব পরিস্থিতি ও ঘটনাচক্রের পর্যবেক্ষণ থেকে জানা যায় যে, ইহুদি খ্রিষ্টানেরা বিগত শতাব্দীতে যে ধারাবাহিকতায় উপায়-উপকরণ আয়ত্তে এনেছে এবং যেভাবে আটঘাট বেঁধে এগোচ্ছে, তার শতভাগের এক ভাগ প্রস্তুতিও মুসলমান রাজা-বাদশাদের মধ্যে নেই।

ইহুদিদের প্রতীক্ষিত সম্রাট
সহস্রাব্দের বিশ্বাস এবং দুনিয়ার সাতযুগ বিষয়ক যে আকিদা ইহুদিদের মধ্যে রয়েছে, তা কোনো গোষ্ঠীমাত্রের আকিদা নয়, ইহুদিমাত্রই এই বিশ্বাস পোষণ করে। তারা মসীহ আলাইহিস সালামের আগমনের জন্য ইসরায়েল রাষ্ট্রকে বুনিয়াদ মনে করে। সরকারিভাবে এই বিশ্বাসকে লালন করা হয়।

ইহুদিদের রাষ্ট্রীয় প্রতীক হলো শামাদান। হিব্রু ভাষায় যাকে আল মিনুরাত বলা হয়। এর সাতটি অংশ রয়েছে। যা দুনিয়া সৃষ্টির সাতদিনের ইশারাবাহী। এছাড়া এতে রয়েছে পৃথিবীর সাত সহস্রাব্দের ইঙ্গিত। অর্থাৎ প্রতিটি সহস্রাব্দে ইহুদিদের অনিবার্য ভূমিকা রয়েছে। ইসরাঈলী সাম্রাজ্য হচ্ছে পরিবর্তনের চালিকাশক্তি। সব সহস্রাব্দের রাজা হচ্ছে ইহুদিদের সহস্রাব্দ। সেটা হবে দুনিয়ার সবচেয়ে কল্যাণময় কালপর্ব। ইহুদিরা তাদের সহস্রাব্দকে নিশ্চিত করার জন্য সম্রাটের অপেক্ষায় রয়েছে। সেই সম্রাটের আকিদা তাওরাতে রয়েছে, 'সাহয়ুনের পুত্ররা, আনন্দ করো! হে জেরুজালেম, স্লোগান উচ্চারণ করো! দেখো, তোমার সম্রাট সাহায্যকারী অনুগত গাধার উপর সওয়ার হয়ে তোমার দিকে আসছেন।’

ইহুদিরা এই বাদশাকে মাশী বলে থাকে। শব্দটি নির্গত হয়েছে হিব্রু ‘মশহ' শব্দমূল থেকে। মশহ অর্থ পবিত্র যয়তুন, যা গায়ে মাখা হয়। এই সম্রাট দুনিয়া জুড়ে ছড়ানো ছিটানো ইহুদিদের সমবেত করবেন। আশরিয়া পুস্তকে উল্লিখিত হয়েছে, এই দিন সম্রাট স্বীয় হস্ত সম্প্রসারণ করে ইহুদিদেরকে আশুর, মিশর, ফাতরুস, কুশ, ইবলাম, শোনার, হামাত এবং জাযাইরুল বাহরকে একত্র করবেন।

কী আছে এই ভালোবাসার অন্তরালে?
ইহুদিদের প্রতি খ্রিষ্টানেরা ভালোবাসার যে জজবা দেখাচ্ছে, তা এক কথায় বিস্ময়কর। যে কেউ প্রশ্ন তুলতে পারেন, এই মহব্বতের অন্তরালে কী আছে? কেন এত প্রীতির উচ্ছ্বাস? আমার মনে হয়, এই প্রশ্নের উত্তর খুবই সহজ ও সংক্ষিপ্ত। কারণ ইহুদিদের প্রতি খ্রিষ্টানদের এমন অস্বাভাবিক ঝুঁকে পড়ার পেছনে রয়েছে কিছুটা বিভ্রান্তি আর কিছুটা গোপন অভিসন্ধি। পশ্চিমা খ্রিষ্টানেরা তো নিজেদের ফায়দা ছাড়া কোথাও দৃষ্টিপাত করতেও রাজি নয়। ইহুদিদের প্রতি সুনজরে তারা কখনো তাকায়নি। কিন্তু প্রোটেস্টান্ট বিপ্লব তাদের মধ্যে এই ভাবধারা তৈরি করল যে, খ্রিষ্টানদের বিশ্ব শাসন প্রতিষ্ঠিত হতে হলে ফিলিস্তিনে ইহুদিদের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা জরুরি। ইহুদিরা যখন কুদস শহরে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করবে, হাইকলে সুলেমানী নির্মাণ করবে, তারপরই ঈসা মসীহ আলাইহিস সালামের আগমন নিশ্চিত হবে। মূলত তার আগমনের পথ ইহুদিরা রচনা করবে।

কিন্তু তিনি এসে প্রথমেই ইহুদিদের মসীহকে হত্যা করবেন। এছাড়াও দুই তৃতীয়াংশ ইহুদিকে হত্যা করবেন এবং অবশিষ্ট ইহুদিদেরকে খ্রিষ্টান বানাবেন।

তাহলে দেখা যাচ্ছে, মরিয়ম আলাইহিস সালামের পুত্র মসীহ নবী আগমনের পূর্বে আরেক মসীহ আসবেন বলে খ্রিষ্টানদের একিন রয়েছে। প্রথম মসীহকে তারা দাজ্জাল এন্টিক্রাইস্ট মনে করে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ