জাগরণে যায় বিভাবরী : লেখিকা সুস্মিতা জাফর

বই: জাগরণে যায় বিভাবরী (রিভিউ)
লেখক: সুস্মিতা জাফর
প্রচ্ছদ ও অলংকরণ: জারীন তাসনিম
ধরন: থ্রিলার
প্রকাশনী: চলন্তিকা
পৃষ্ঠা সংখ্যা: ১৪৯
মলাট মূল্য: ৩৫০ টাকা

জাগরণে যায় বিভাবরী


“বাবা আর আম্মা না হয়, মাত্র দুই মাস হলো, ইরাপুকে দেখতে পাচ্ছে। কিন্তু আমার বেলায় কী ব্যাখ্যা দেবে? এখন তুমি বলো, তোমার ডাক্তারি পরিভাষায়, এই যে দুজন অস্তিত্বহীন চরিত্রকে দীর্ঘ প্রায় এক দশক ধরে আমি দেখে আসছি, কথা বলে আসছি, খেলে আসছি- এরকম রোগকে আসলে কী বলা হয়? আমরা কি আসলেই কোনো রোগে আক্রান্ত না কি আমাদের এই শিউলি বাড়িতে অশরীরিরা ঘুরে বেড়ায় নির্দ্বিধায়? প্রশ্নের উত্তর কিন্তু তোমার কাছে আছে বড়োপু।”

একজন মানবসন্তান প্রথমবার যখন হাঁটতে শিখলো, প্রথমবার যখন কথা বলতে শিখলো, তখন সেটা রপ্ত করে ফেলল সারাজীবনের জন্য। যা সে কখনো ভুলবে না। উপরন্তু একজন পরিপূর্ণ মানুষ হতে সময়, অভিজ্ঞতা ও জ্ঞানের প্রয়োজন পড়ে। যার সূচনা ঘটে শৈশবে। স্বভাব চরিত্র, মানবিক মূল্যবোধ, দৃষ্টিভঙ্গি, এমনকি জীবন-যাপনের কায়দা কানুন শৈশবকালীন সময়েই নির্ধারণ হয়ে যায়। ফলে মানুষ হিসেবে কে কেমন, সেটা তার শৈশব কৈশোর থেকেও ধারণা করা সম্ভব।

জাগরণে যায় বিভাবরী উপন্যাসের গল্প আবর্তিত হয়েছে অভয়নগর শীর্ষক এক মফস্বলের বিশাল প্রাসাদোপম ‘শিউলিবাড়ি’ এবং তাতে বসবাসরত পরিবারকে ঘিরে। মূল চরিত্রে রয়েছে সেই পরিবারের বড় কন্যা পারিজাত আমিন এবং তার ভাষ্য-বর্ণনাতেই পুরো গল্পটি এগিয়ে গেছে।

বাবা-মা, ছোটবোন ইরাবতী, তিন ভাই তারিন, অরিন ও পিয়ালসহ আরও ক’জন মানুষ মিলে পারিজাতের বিশাল পরিবারকে আপাতদৃষ্টিতে সাদামাটা মনে হয়। কিন্তু তাদের বাড়িটিতে কী যেন এক অস্বাভাবিকত্ব আছে। আর পরিবারে রয়েছে অজানা এক রহস্য। এখন ভাগ্য অথবা দুর্ভাগ্য যেটাই বলি, পারিজাতের সমস্ত শৈশব কৈশোর কেটেছে অনাদর অবহেলায়। এমনকি তার জন্মদাত্রী মা তাকে আদর করতেন না, যত্ন নিতেন না। অথচ বাকি সন্তানদের ঠিকই যত্ন নিতেন। কিন্তু কেন? কারণ তো অবশ্যই আছে।

ভিডিও রিভিউ দেখুন 


দুঃখ, কষ্ট, দ্বিধা ও হীনমন্যতায় ভুগতে থাকা পারিজাতের শৈশবটা আরও বেশি জটিল হয়ে যায় যখন তার খুব কাছের মানুষ মারিয়া আন্টির ভিন্নরূপ সামনে আসে। অপরদিকে বাড়িতে ঘটতে থাকে অদ্ভুতুড়ে ঘটনা। কীসের এক ছায়ামূর্তি যেন মসৃণ খাড়া দেয়াল বেয়ে উঠে যায়। ওটা কি মানুষ না অন্যকিছু? ছেলেবেলার প্রতিবেশী ও খেলার সাথী দিলু ছবি এঁকেই যে কাউকে শাস্তি দিতে পারে। কীভাবে সম্ভব?

এমনই শত শত প্রশ্ন তাড়া করে পারিজাতকে। কিন্তু সে জবাব চায় না। পালাতে চায়। দীর্ঘ একটা সময়ের পর সেটা সম্ভবও হয়। সমস্ত অতীতকে পেছনে ফেলে ডাক্তারি পড়তে শহরে পাড়ি জমায়। তারপর সব ঠিকঠাকই চলছিল। কিন্তু হঠাৎ পারিজাতের ছোটবোন ইরাবতী আত্মহত্যা করে। মুহূর্তেই সব এলোমেলো হয়ে যায়।

যে মেয়ে একদিন পরেই জার্মানিতে পড়তে যাবে, প্রাণোচ্ছল ও ভীষণ আত্মবিশ্বাসী সেই মেয়ে হঠাৎ ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করল কেন? আবারও রহস্যের জট তৈরি হয়। যার শাখা-প্রশাখা ক্রমশ বাড়তে থাকে। এবার আর কোনোকিছু এড়ানোর সুযোগ থাকে না। পারিজাত কী পারবে এই ভয়াল রহস্যের সমাধান করতে? সামনে তার জন্য কী অপেক্ষা করছে? এসকল প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে উপন্যাসের শেষ পাতা অবধি পাঠককে আবদ্ধ থাকতে হবে।

2021

দ্য ইম্ব্যালান্সড বাফেলো বইটি কেন পড়বেন? লেখক: রাজীব হোসেন | The Imbalanced Buffalo By Rajib Hosen

More Jay Nokkhotrera : Javed Rasin Book | মরে যায় নক্ষত্রেরা লেখক জাবেদ রাসিন বই রিভিউ

আই লাভ ইউ বই রিভিউ - লেখক : মুহাম্মাদ আতীক উল্লাহ | I Love You : Mohammad Atiq Ullah Books

আগুনি : লেখক : মাহবুব আজাদ | Aguni By Mahbub Azad Books

ইলুমিনাতি এজেন্ডা : ডিন এবং জিল হ্যান্ডারসন - পাঠ প্রতিক্রিয়া! Iluminati Agenda Boi

খুন উপন্যাসটি কেন পড়বেন? মিনা শারমিন | Khun By Mina Sarmin Books

চন্দ্রভুক : মুনিরা কায়ছান - বইটি কেন পড়বেন? Chandrovuk By Munira Kaysan Books

নীলুফার বইটি কেন পড়বেন? লেখক: সাইফুল ইসলাম | Nilufar By Saiful Islam Books

পুষ্প ফুটিবার তরে : হাফিজ পাশা - চমৎকার কিছু তথ্য | Pushpo Futibar Tore By Hafiz Pasha Books

বই : পিনবল - এম. জে. বাবু | Pinbol By M J Babu Books

বই অভিনেতা পাঠক অনুভূতি! : মুনীরা কায়ছান | Ovineta : Munira Kaysan Books

বই মায়ের চিঠি : লেখক পরিতোষ বাড়ৈ | Mayer Chithi : Author Poritosh Bare

বাঙলা বানান রীতি বইটি কেন পড়বেন? : জাফর সাদিক | Bangla Banan Riti By Zafar Sadiq


মোট ২০টি অধ্যায়ে বিভক্ত ১৪৯ পৃষ্ঠার এই উপন্যাসের প্রতিটি পাতা হরর, ফ্যান্টাসি, থ্রিলে ভরপুর। চমৎকার ভাষাশৈলী আর নিখুঁত বর্ণনা পড়ার আগ্রহ বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়। গল্প বলার ঢঙটাও দারুণ। মূল চরিত্রের বর্ণনায় কাহিনিতে ভিন্ন দুটি সময়কালকে উপস্থাপন করা হয়েছে। একটি বর্তমানকাল, অপরটি শৈশবকাল।

গল্পটা শুরু হয় বর্তমানকালে ঘটা আত্মহত্যাকে কেন্দ্র করে। এই ঘটনা পরবর্তী সময়ে পুলিশি তদন্ত, পারিজাতের পেশা জীবন ও ব্যক্তি জীবনের টানাপোড়েন, পরিবারের সদস্যদের মানসিক বিপর্যয় ও অবস্থাকে ঘিরে এক রহস্যময় পরিবেশ সৃষ্টি করে।

আর এ রহস্যই আমাদেরকে পারিজাতের শৈশব স্মৃতিতে ফিরিয়ে নিয়ে যায়। সেই সময়গুলোতে কী ঘটেছিল, কেন ঘটেছিল, সেগুলোর সঙ্গে বর্তমান সময়ের ঘটনাগুলোকে পাশাপাশি রেখে রহস্যের জট খোলার চেষ্টা করা হয়। এখানে বলতেই হয়- লেখক এই পুরো প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত সুনিপুণভাবে ফুটিয়ে তুলতে সক্ষম হয়েছেন। একাধিক সাসপেন্স আর টুইস্ট নিঃসন্দেহে চমকে দেবে আপনাকে।

তবে দারুণ এই উপন্যাসের অতিসামান্য কয়েকটি দুর্বল দিক রয়েছে। পারিজাতের ভাষ্যমতে যেহেতু গল্পটা বলা, চরিত্রের বয়স ও মনস্তাত্ত্বিক পরিবর্তন অনুযায়ী দুটি ভিন্ন সময়ের ব্যাখ্যা উপস্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু শৈশবকালীন সময়ের কিছু অংশে নড়বড়ে লেগেছে সেটা। কাহিনির আবহটা ৯ম অধ্যায় অর্থাৎ ৬৫ পৃষ্ঠায় গিয়ে পরিবর্তন হয়। অনেকটা কয়েন ফ্লিপ করার মতো।


বলা যায়, এখান থেকেই থ্রিলের শুরু। গল্পের গতিও বেড়ে যায় অনেক। এর আগের অংশটুকুতে অত্যন্ত ধীর গতিতে গল্প এগিয়েছে। যদিও ক্যারেক্টার বিল্ডআপ আর রহস্যের ছক তৈরিতে এটুকু প্রয়োজন ছিল। কিন্তু চাইলে সেটা আরও সংকুচিত করা যেত। সেইসাথে প্রতিটি অধ্যায়ের একটি করে শিরোনাম দেওয়ার বিষয়টাও কেন জানি অতটা ভালো লাগেনি। মূল গল্প থেকে সরে শিরোনামের অর্থ খুঁজতে গিয়ে কয়েকবার খেই হারিয়েছি। শিরোনাম ছাড়াই পড়তে ভালো লাগছিল।

একটা বিষয়ে না বললেই নয়। এই উপন্যাসের সবচেয়ে বড় প্লাসপয়েন্ট হলো, প্রতিটি অধ্যায়ে ক্লিফহ্যাঙ্গার বিদ্যমান। আপনি একটা অধ্যায় শেষ করবেন, পরবর্তী অধ্যায়টি পড়ার তাড়না অনুভব হবে। অর্থাৎ, একবার পড়া শুরু করলে কাহিনির গভীরে তলিয়ে যেতে আপনি বাধ্য

উপন্যাসের শুরুটা স্লো বার্ন হলেও গতির সাথে তাল মেলাতে কষ্ট হবে না। জোর দিয়ে বলতে পারি- পড়ে মজা পাবেন, আত্মতৃপ্তি মিলবে। যারা থ্রিলার পছন্দ করেন, তাদের জন্য ‘জাগরণে যায় বিভাবরী’ বইটি সাজেস্ট রইল। হ্যাপি রিডিং।

জামসেদুর রহমান সজীব
৪ জুন ২০২২

রিভিউ ২ 

একজোড়া ধবধবে ফর্সা পা পারিজাতের চোখের সামনে ঝুলছে। ঠিক এমনই একটি মৃত্যুর রহস্য দিয়ে শুরু হয়েছে উপন্যাসটি। 
ভয় ব্যাপারটা প্রত্যেক মানুষের মস্তিষ্কে থাকে, কিন্তু উদ্দীপনা সবার ভিন্ন ভিন্ন হয়। বাংলা সাহিত্যে কিছু হরর বা থ্রিলার বই এমন আছে যা আপনাকে শ্বাস তুলে ফেলা রোমাঞ্চকর এক নতুন জগতে নিয়ে যাবে। লেখক সুস্মিতা জাফর রচিত তার প্রথম একক উপন্যাস "জাগরণে যায় বিভাবরী"।এটি একটি সাসপেন্সিভ, রোমাঞ্চকর ফ্যান্টাসি হরর থ্রিলার উপন্যাস।

এক নজরে শিউলি বাড়ি
অভয়নগর নামের কোন এক মফস্বল শহরের কোন এক এলাকার প্রাসাদসম একটি বাড়ির নাম শিউলি বাড়ি। গল্পের মূল চরিত্র পারিজাত। যার নিজের ভাষায় গল্পের কাহিনী বিবর্তিত হয়েছে, তার জন্ম এবং বেড়ে ওঠা অভয়নগরের এই শিউলী বাড়িতেই। গল্পের মূল রহস্য এইবাড়ি এবং এই বাড়িতে বসবাস করা প্রতিটা সদস্যকে ঘিরেই। কি কারণ ছিল যে পারিজাতের মা নিজের গর্ভের সন্তানকে নিজের থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছিলেন? কি কারণ ছিল মারিয়া মত মানুষ যে কিনা পারিজাত কে ছোটবেলা থেকেই নিজের মেয়ে নার্গিসের চেয়েও বেশি আদর-স্নেহ মমতায় আগলে রেখেছিল তাকেই পারিজাত সহ্য করতে পারত না। কি হয়েছিল রাহেলা আর মুন্নির সাথে? কেনইবা ইরাবতীর মতো হাসি খুশি মেয়ের ঝুলন্ত লাশ সবাই দেখতে পায়, ঠিক তার জার্মানি যাওয়ার আগের দিন সকালে। কে ছিল দিলু? যে কিনা শুধু ছবি আঁকার মাধ্যমে কারো মৃত্যু নিশ্চিত করতে পারে, কিভাবে সে মসৃন দেয়াল বেয়ে যেকোনো জায়গায় চলাফেরা করতে পারে। কি ছিল এসকল রহস্যের মূল কারন? পারিজাত কি পেরেছিল নিজের বোনের আসল হত্যাকারী কে খুঁজে বের করতে? এ সকল প্রশ্নের উত্তর পেতে হলে পড়তে হবে চমৎকার এই বইটি।

এই বইটির পড়ার শুরুতে সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক আমার কাছে মনে হয়েছে, বইটির প্রতিটা পর্বকে ১,২, এভাবে না লিখে নাম দেয়া হয়েছে যা বইটিকে পাঠকের কাছে আরও চমৎকারভাবে তুলে ধরেছে বলে আমার ধারনা।
বইটির অধ্যায়গুলো যথাক্রমে, 
১. ইরাবতী                                      
২. ভয়
৩. সুহাস
৪. ছায়ামানব
৫. পক্ষীরাজ্য
৬. পারফিউম 
৭. নতুন স্যার
৮. পেছন বাড়ি
৯. প্রত্যাবর্তন
১০. দিলুর গল্প
১১. ডায়েরি
১২. পোর্ট্রেট
১৩. বন্ধুত্ব
১৪. রহস্যপুরীর রহস্য 
১৫. অভিশপ্ত সময়
১৬. প্রতিবিম্ব 
১৭. পিয়ালের চিঠি 
১৮. জলদেবী
১৯. মারাত্মক ভুল 
২০. শিউলি বাড়ি
প্রতিটা পর্ব প্রতিটা চরিত্র আর বস্তুর রহস্য প্রকাশ করেছে।এককথায় পুরো উপন্যাসটির সার্থকতা বহন করে এর এক একটি পর্ব। 

প্রচ্ছদ এবং নামকরণ

যে কোন উপন্যাসের ক্ষেত্রে তার প্রচ্ছদ এবং নামকরণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। উপন্যাসটির প্রচ্ছদ করেছেন জারিন তাসনিম। খুবই চমৎকার এই প্রচ্ছদটি এক কথায় পুরো উপন্যাসের কাহিনী ও শিউলি বাড়িকে পাঠকের সামনে তুলে ধরেছে। পুরো উপন্যাসটি পড়ে এর নামকরণ আমার কাছে যথাযথ মনে হয়েছে। এর ফ্ল্যাপ লিখেছেন জনপ্রিয় লেখক ও সম্পাদক ফৌজিয়া খান তামান্না। 

উৎসর্গ

একজন লেখকের কাছে বোধহয় একটি উপন্যাস তৈরি করার পরে এটা সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়ায় । সেখানে বহু কাঙ্খিত উপন্যাস হলে তো কথাই নেই । সেই হিসেবে নিজের জীবনের অন্যতম প্রিয় মানুষ দুজনকে, যাদের সাথে জীবনের প্রতিটি মূহুর্ত জড়িত। সেই শ্রদ্ধাভাজন শ্বশুর শাশুড়ীকে উৎসর্গ বিষয়টাই সুন্দর এবং ভালো লাগার মতো।

চরিত্রদের উপস্থিতি

যেকোনো উপন্যাসের জীবনধারাকে একটি নির্দিষ্ট গতিপথ দেয় তার চরিত্রগুলো। যেন মনেই হয় এই চরিত্রগুলো এখন এর গতিপথ অনুসারে আকৃতি মেলে সেভাবেই চলবে । চরিত্রদের উপস্থিতি এই উপন্যাসে সুন্দরভাবে তুলে ধরা হয়েছে । প্রত্যেকটি চরিত্রের উপস্থিতি সঠিক সময়ে ছিল । যখন যার আসার প্রয়োজন ছিল তখন সেই এসেছে। তবে সুহাসকে আর দিলুকে নিয়ে আরও কিছু লিখলে ভালো হতো। এটা একান্তই আমার মতামত।

আমি যখন উপন্যাসটির মাঝপথে পড়ছিলাম তখন পৃষ্ঠা উল্টাতে উল্টাতে হঠাৎ একটা কথা বলে ফেলেছিলাম মনে মনে । এই উপন্যাসটি আমি কিনে ঠিক কাজই করেছি । এবং এটা যেন আমি জানতামই যে এই উপন্যাসটি আমার অন্যরকম লাগবেই । এই অন্যরকমের কোনো ভাষা নেই, মানে নেই ।

প্রকাশনী

যেকোন প্রকাশনীর বই হঠাৎ পড়তে বসলে কেনো যেন একটু খুঁটিয়ে দেখা আমার অভ্যাস । কারণ সবকিছু বিশ্লেষণ করে ভাবতে হয় । কিন্তু প্রকাশনী হিসেবে চলন্তিকা সেই সুযোগ আমায় দেয়নি । প্রথমেই প্রচ্ছদটা খুবই সুন্দর করে ফুটিয়েছে । আমি ভেবেছিলাম পৃষ্ঠা না জানি কেমন হয়! কিন্তু পৃষ্ঠাগুলোর বাইন্ডিং অসাধারণ ছিল । পৃষ্ঠা গুলো ধরে পড়তে বসলেই নির্ভার হয়ে যাওয়া যাবে এবার নিশ্চিন্তে একটা উপন্যাস পড়া যাবে । টাইপিং মিস্টেক তেমন একটা নেই বললেই চলে । আমার চোখে তেমন একটা পড়েনি । হলেও কেনো পড়েনি তা বোধহয় এত সুন্দর অন্যান্য কাজগুলো সুন্দর করার কারণেই । আর সবশেষে পুরো বইটির প্রোডাকশন হিসেবে পুরো কাজটি যথার্থই করেছে। তাদের আরো সুন্দর কাজ হতে থাকুক ।

রেটিং:

আচ্ছা সবকিছুর মূল্যায়ন কি সংখ্যা দিয়ে হয়। কিছু চমৎকার ও সুন্দর সৃষ্টি থাকে অমূল্য। এই উপন্যাসটিও আমার কাছে তেমনই। থাক না কিছু গল্প রেটিং বিহীন।শুধু ভালোবাসা আর ভালোলাগার বিনিময়ে। 

লেখক এর প্রথম উপন্যাস হিসেবে এই বইটি খুবই চমৎকার হয়েছে। কাহিনীবিন্যাস, শব্দ চয়ন, এবং ফ্যান্টাসি হরর বা থ্রিলার হিসাবে লেখক খুবই সাবলীল ও সুন্দরভাবে উপন্যাসটি পাঠকের সামনে তুলে ধরেছেন। এককথায় উপন্যাসটির শুরু করার পর আমি এর রহস্যের মায়াজালে আটকে গেছি। পুরো উপন্যাস শেষ করার পরও যেন এর রেশ কাটতে পারছিনা। তাই আমি বলবো ,ফ্যান্টাসি থ্রিলার বই হিসাবে এই বইটি খুবই ভালো লেগেছে আমার কাছে। লেখকের আগামী বই গুলোর জন্য অনেক অনেক শুভকামনা। 

লেখকঃ সুস্মিতা জাফর 
প্রকাশনীঃ চলন্তিকা 
প্রচ্ছদঃ জারিন তাসনিম
মুদ্রিত মূল্যঃ ৩৫০টাকা 
প্রকাশকালঃ ২০২২ গ্রন্থমেলা

একই রকম আরো একটি বই

জাগরণে বিভাবরী
লেখক : সমর ইসলাম

প্রকাশনী : বই ঘর
বিষয় : সমকালীন উপন্যাস

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ