জান্নাতে একদিন : লেখক ড. মুস্তফা হুসনি | Jannate Akdin : Dr. Mustafa Hushni



রুহামা পাবলিকেশন থেকে প্রকাশিত "জান্নাতে একদিন" বইটির লেখক : ড. মুস্তফা হুসনি, চমৎকার এই বইটিতে পরকাল ও জান্নাত-জাহান্নাম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। লেখক ড. মুস্তফা হুসনি জান্নাত কে স্বপ্নে কল্পনা করেছেন।  "জান্নাতে একদিন" প্রথম প্রকাশিত হয় ১৬ জুন ২০২২ এ। চমৎকার এই বইটির অনুবাদক হলেন আমীমুল ইহসান পৃষ্ঠা সংখ্যা ১৩২ এবং ১২১ টাকায় "জান্নাতে একদিন" বইটির পেপার ব্যাক সংগ্রহ করা যাবে।

যখনই একটু সুযোগ পাই, কল্পনার পাখায় ভর করে উড়ে যাই স্বপ্নের জান্নাতে–একটি আলো-ঝলমলে দিন কাটাব বলে। জান্নাত সুখ ও ও সমৃদ্ধির এক অনন্ত কানন, যেখানে আমি খুঁজে পাব হারিয়ে যাওয়া প্রিয়জন—যাদের বিরহে বিষণ্নতায় ছেয়ে ছিল আমার দুনিয়ার জীবন। পৃথিবীতে কত কিছু পাইনি আমি; পূরণ হয়নি কত স্বপ্ন—কত প্রত্যাশা। কত মধুর তামান্না পুঁতে রেখেছি হৃদয়ের সবুজ আঙিনায়। এখানে এই ধূসর দুনিয়ায় সাধ ও সাধ্যের মাঝে এই যে বিশাল ব্যবধান বরাবরই ক্ষতবিক্ষত করেছে আমার অবুঝ মনকে।

দুনিয়ায় পদে পদে শৃঙ্খল, পথে পথে বিচিত্র কাঁটাতার; কত বিধি, কত বাধা, কত নিয়মের দেয়াল আটকে রেখেছে আমার চলার পথ। কিন্তু জান্নাত? স্বপ্নের সেই জগতে নিয়মের কোনো বালাই নেই—আছে উদ্দাম ঘুরে বেড়ানোর অফুরান আনন্দ আর ইচ্ছেডানা মেলে উড়ে চলার অনন্ত স্বাধীনতা।

স্বপ্নের সেই কাননে পাপড়ি মেলে হেসে উঠবে সেই সব ভালোবাসার কলি, যার সৌরভে আমোদিত হওয়ার প্রতীক্ষায় ব্যাকুল হয়ে দিন গোনে আমার বিরহী হৃদয়। অনন্ত সুখের সেই দেশে আবার মাথা তুলবে প্রেমের সতেজ অঙ্কুর, আবার ডালপালা ছড়াবে মিলনের কচি চারাগুলো— শাখায় শাখায় ছড়িয়ে পড়বে পত্রপল্লবের সবুজ আগুন। সেখানে প্রতিটি দেখাই যেন ঝরঝরে নতুন—যেন উদ্দাম কৌতূহলে ভরা এই প্রথম দেখা—প্রথম সাক্ষাৎ। এখানে এই অনন্ত কাননের পরতে পরতে এভাবে ছড়িয়ে আছে রাশি রাশি সুখ, শান্তি আর উল্লাস।

এখানে নেই কোনো বঞ্চনা না পাওয়ার বেদনা; নেই কোনো ভয়, বিরহ কিংবা মরণের যাতনা।

সবুজ কাননের প্রান্ত ছুঁয়ে এঁকেবেঁকে বয়ে যাবে শ্বেতশুভ্র দুধের নদী। তারই পারে দাঁড়িয়ে অনাবিল সুখের আমেজে আমি হাসব কেবল—চির অমলিন এই হাসিতে আমি খুঁজে পাব আমার জীবনের পরম সাফল্যের অনুভূতি। কারণ আমি জানি, আমার রব রাজি আছেন আমার প্রতি। বরং আমার এই হাসিতে তিনিও খুশি। সেদিন আমার রব কথা বলবেন আমার সাথে; বলবেন, 'বান্দা আমার, তোমাকে আমি ভালোবাসি।' সেখানে প্রিয় নবি মুহাম্মাদে আরাবির সঙ্গেও দেখা হবে। ফলভারে আনত চিরহরিৎ বৃক্ষরাজির মধুর ছায়ায় বসে কথা বলব আমরা—যেন যুগ-যুগান্তরের বন্ধুত্ব আমাদের। সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।

চিরসুখের এই দেশে রোগ নেই, শোক নেই, দুঃখ নেই, কষ্ট নেই—আছে কেবল সুখ, শান্তি আর আনন্দের প্রবহমান ঝরনাধারা।

আপনার হাতের বইটিজুড়ে এই গল্পগুলোই আমি আপনাদের বলার চেষ্টা করেছি। কিন্তু এই গল্প তো নিছক গল্প নয়; এগুলো আল্লাহ রব্বুল আলামিনের সুনিশ্চিত ওয়াদা— যা তিনি স্বীয় অনুগ্রহে অবশ্যই পূরণ করবেন। আল্লাহ রব্বুল আলামিনের প্রতি আমাদের হৃদয়ে আছে অনিঃশেষ 'হুসনুজ জন' ও অফুরন্ত সুধারণা। আর তিনি বান্দার সাথে ঠিক তেমনই আচরণ করেন, বান্দা যেমনটি তাঁর ব্যাপারে ধারণা রাখে।

প্রিয় পাঠক, তাহলে চলুন আমাদের সাথে, সুখ ও সমৃদ্ধির দেশে, বেহেশতের সবুজ আঙিনায়। আসুন, হাদিসের আলোকে শুনি জান্নাতের দাস্তান—যাতে আবার নতুন করে আমাদের হৃদয়ে জেগে ওঠে চিরস্থায়ী বসতভিটায় ফেরার অমলিন তামান্না ।

               অনুবাদকের কথা

সকল প্রশংসা আল্লাহ তাআলার জন্য, যিনি আমাদের একমাত্র রব। আমরা কেবল তাঁরই ইবাদত করি, তাঁর কাছেই সাহায্য প্রার্থনা করি। আমরা তাঁর কাছ থেকেই এসেছি এবং অবশেষে তাঁর কাছেই ফিরে যাব। সালাত ও সালাম নাজিল হোক প্রিয় নবি, তাঁর পরিবার-পরিজন ও সাহাবায়ে কিরামের ওপর।

রাসুলুল্লাহ ইরশাদ করেন :
الحجبت النار بالشهوات، وحجبت الجنة بالمكاره»

“জাহান্নামকে বেষ্টন করা হয়েছে কামনাবাসনা দিয়ে; পক্ষান্তরে

জান্নাতকে বেষ্টন করা হয়েছে দুঃখ-কষ্ট দিয়ে।১

জাহান্নামের পথ সাজানো হয়েছে শাহাওয়াত দিয়ে – প্রবৃত্তির কামনাবাসনা

দিয়ে। হারাম সম্পদ, হারাম নারী হারাম কথা, হারাম কাজ প্রবৃত্তির বড়ই

প্রিয়। পক্ষান্তরে জান্নাতের পথ বড়ই কণ্টকাকীর্ণ। প্রবৃত্তির অপছন্দনীয় সব

বিষয়াদি দিয়ে সাজানো হয়েছে জান্নাতের পথ।

ইমাম ইবনুল কাইয়িম বলেন, 'পার্থিব জীবন ক্ষণিকের সুখস্বপ্ন কিংবা ছলনা বিলাস বৈ কিছু নয়। কামনাবাসনায় ঘেরা এই জগতের সর্বত্রই ভোগবিলাসের নিরন্তর হাতছানি। আর আখিরাত পরিণামফল লাভের অনন্ত এক জগৎ। আল্লাহ তাআলা বলেন:

زين للناس حب الشهوات من النساء والبنين والقناطير المقنطرة من الذهب والفضة والخيل المسومة والأنعام والحرب ذلك متاع الحياة الدنيا والله عنده حسن التآب)

১. সহিহুল বুখারি ৬৪৮৭।

‘নারী, সন্তান, রাশিকৃত স্বর্ণরৌপ্য আর চিহ্নিত অশ্বরাজি, গবাদিপশু এবং খেতখামারের প্রতি আকর্ষণ মানুষের জন্য সুশোভিত করা হয়েছে। এসব ইহজীবনের ভোগ্যবস্তু। আর আল্লাহর নিকটই রয়েছে উত্তম আশ্রয়।

যেসব মায়া ও মোহ দিয়ে থরে থরে সাজিয়ে তোলা হয়েছে পৃথিবী ও পার্থিব জীবন আর যেসব কামনাবাসনা দুনিয়াবিলাসী ও আখিরাতবিমুখ মানুষের পরম আরাধ্য, সেগুলো মৌলিকভাবে সাতটি বস্তুতে সীমাবদ্ধ :

• নারী—যাদের বিমুগ্ধ রূপলাবণ্য ও মোহিনী আকর্ষণ মানুষকে ফেলে দেয় ফিতনার জটিল আবর্তে।

• সন্তানসন্ততি— পুরুষের সৌন্দর্য, গর্ব ও সম্মানের প্রতীক।

• স্বর্ণরৌপ্য—কামনাবাসনার মূল চালিকাশক্তি।

• চিহ্নিত অশ্বরাজি—মালিকের মর্যাদা ও গর্বের সম্পদ। শত্রুকে ধাওয়া ও

আক্রমণ এবং আত্মরক্ষা ও নিরাপত্তার মোক্ষম হাতিয়ার।

• গবাদি পশু—সফরের বাহন ও মালপত্র পরিবহনে ব্যবহার্য। দুধ, গোশত, কাঁচামাল ইত্যাদির উৎস।

• খেতখামার—মানুষ ও গবাদি পশুর আহার্য, ফলমূল ও ভেষজদ্রব্যের অকৃত্রিম উৎস।

এই ক্ষণস্থায়ী পার্থিব জীবনোপকরণগুলো বর্ণনা করার পর আল্লাহ তাআলা আখিরাতের অন্তহীন সুখ ও অনুপম শান্তির দিকে বান্দাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন

(قل أونبئكم بخير من ذلكم للذين اتقوا عند ربهم جنات تجري من

تحتها الأنهار خالدين فيها وأزواج مطهرة ورضوان من الله والله بصير

بالعباد

২. সুরা আলি ইমরান ৩: ১৪।
৬ জান্নাতে একদিন।
“বলুন, “আমি কি তোমাদের এসব বস্তুর চেয়ে উৎকৃষ্টতর কোনো কিছুর সংবাদ দেবো? যারা তাকওয়া অবলম্বন করে চলে, তাদের জন্য তাদের রবের নিকট রয়েছে উদ্যানব্রাজি—যার পাদদেশ দিয়ে বয়ে যায় স্রোতস্বিনী। আর তারা সেখানকার চিরস্থায়ী বাসিন্দা – তাদের জন্য রয়েছে শুচিশুভ্র সহচরী আর আল্লাহর পক্ষ থেকে সন্তুষ্টি। আল্লাহ বান্দাদের সম্বন্ধে সম্যক দ্রষ্টা। ***

প্রিয় পাঠক,

জীবনে চলার পথে বরাবরই আমরা প্রবৃত্তির মোহে পড়ে জান্নাতের বিবর্ণ পথ ছেড়ে জাহান্নামের রঙিন পথে হাঁটতে শুরু করি। দুনিয়ার মনোলোভা রং দেখে আমরা ভুলে যাই জান্নাতের কথা, জান্নাতের অতুল নিয়ামতের কথা। ফলে আমরা সহজেই দুনিয়ার ফাঁদে পড়ে যাই, হারাম ও গুনাহের দিকে পা বাড়াই। অথচ দুদিনের এই দুনিয়ায় সামান্য সবর করলে পুরস্কার হিসেবে আল্লাহ তাআলা আমাদের জন্য প্রস্তুত করে রেখেছেন বিস্তৃত জান্নাত।

আপনার হাতের বইটি মূলত আপনার সামনে জান্নাতকে দৃশ্যমান করে তোলার একটি প্রয়াস। যাপিত জীবনে যেন জান্নাত সব সময় আপনার চোখের সামনে থাকে। জান্নাত যেন আপনার স্বপ্ন ও ধ্যানে পরিণত হয়। ক্ষণস্থায়ী এই দুনিয়ার নগণ্য আরাম-আয়েশ ও ভোগবিলাস যেন আপনার চোখে তুচ্ছ মনে হয়। জান্নাতের অনন্ত সুখ ও সমৃদ্ধির দিকে চেয়ে আপনি যেন দুনিয়ার ক্ষণিকের হারাম আনন্দকে ছুড়ে ফেলতে পারেন।

প্রতিভাবান লেখক ও দায়ি শাইখ ড. মুস্তফা হুসনি তার অসাধারণ রচনা 'ইয়াওমুন ফিল জান্নাহ' গ্রন্থটি এই উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে সংকলন করেছেন। লেখকের চিত্তাকর্ষক ভাষা ও প্রাণময় উপস্থাপনা কল্পনার বুরাকে তুলে আপনাকে নিয়ে যাবে জান্নাতের অনন্ত জীবনের সীমানায়; যেখানে আরশে আজিমের সুশীতল ছায়ায় দোল খায় ফলভারে আনত চিরহরিৎ বৃক্ষের পল্লবিত শাখা; কুলকুল রবে বয়ে যায় দুধের নদী, মধুর স্রোতস্বিনী।

জীবনে চলার পথে যখন দুনিয়ার রূপ-রস-গন্ধ আপনাকে মাতাল করতে চাইবে, জান্নাতের এই দৃশ্যগুলো আপনাকে সবর করতে সাহায্য করবে।

বইটির অনুবাদ প্রসঙ্গে কিছু কথা বলা দরকার। বইটি ভাষান্তর করা হয়েছে অনেকটা সম্পাদকের ভঙ্গিতে। প্রায় সবগুলো আলোচনাকেই পরিমার্জিত করা হয়েছে। জাল ও জয়িফ হাদিসগুলোর পরিবর্তে সহিহ হাদিস উল্লেখ করা হয়েছে এবং যথাস্থানে উদ্ধৃতিও সংযোজন করা হয়েছে। কোনো কোনো অধ্যায়ের আলোচনা আগাগোড়া পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে। জান্নাতের প্রকৃত বাস্তবতা তো আর ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়, তবুও যতটুকু কুরআন-হাদিসে এসেছে সেটুকুকে আমরা সুন্দর ভাষায় পেশ করার চেষ্টা করেছি।

আমরা আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি বইটিকে নিখুঁত ও সমৃদ্ধ করে তুলতে। কিন্তু মানুষ হিসেবে আমরা কেউ ভুলের ঊর্ধ্বে নই। তাই পাঠক ভাইদের যেকোনো ধরনের পরামর্শ, সংশোধনী ও সমালোচনা আমরা অবশ্যই বিবেচনা করব এবং পরবর্তী সংস্করণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব ইনশাআল্লাহ।

পরিশেষে আল্লাহ রব্বুল আলামিনের কাছে দুআ করি, তিনি যেন আমাদের এই টুটাফাটা আমলকে নিজ অনুগ্রহে কবুল করে নেন, আমাদের সবার অন্তরে ইখলাস ও নিষ্ঠা দান করেন এবং আমাদের এই দুর্বল মেহনতকে আমাদের নাজাতের অসিলা বানিয়ে দেন।

জান্নাতে একদিন বইটির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য

জীবনের বন্ধুর পথে যেন জান্নাত সব সময় আমাদের চোখের তারায় ভাসতে

থাকে।

আমরা কীভাবে জান্নাতের পথে চলব?

জান্নাতে পদার্পণের ধাপ : মৃত্যুর ফটক পেরিয়ে কবরজগৎ পাড়ি দিয়ে কীভাবে আমরা আল্লাহর দিদারের পরম সৌভাগ্য লাভ করব?

কাজ করতে গিয়ে মানুষ সব সময় ফলাফলের কথা চিন্তা করে। এটিই মানুষের স্বাভাবিক প্রবৃত্তি। যখন সে ওই কাজের সুন্দর ফলাফল দেখে সে কাজটি সম্পাদনের ব্যাপারে আগ্রহী ও উদ্যমী হয়ে ওঠে। ফলে যতক্ষণ না সে কাজটি শেষ করে সেই সুন্দর ফলাফল লাভ করতে পারছে, সে অবিরাম চেষ্টা করে যায়। পক্ষান্তরে সে যদি কাজটির মন্দ ফলাফল দেখে, তখন যেকোনোভাবে কাজটি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে।

উপমা
পড়াশোনা ও পরীক্ষার দিনগুলোতে আপনি কত মেহনত করেন, কত রাত জাগেন, কত সুখ ও আনন্দ বিসর্জন দিয়ে আপনি প্রস্তুতি নেন। কেন বলুন তো? কারণ আপনি জানেন, ভালোভাবে প্রস্তুতিটা নিতে পারলে আপনি পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করবেন। আপনি সিরিয়ালে একেবারে শুরুর দিকে থাকবেন। আর পরীক্ষায় সফল হওয়া, প্রথম হওয়া কতই না আনন্দের!

আল্লাহ রব্বুল আলামিন কুরআনের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ জুড়েই বলেছেন আখিরাতের কথা, আখিরাতের অনুপম সুখ ও সমৃদ্ধির কথা; যাতে সাফল্য ও কল্যাণ লাভের প্রত্যাশায় আমরা অবিরাম প্রচেষ্টা চালিয়ে যাই, দুনিয়ার ফিতনা ও মুসিবতে যেন কোমর বেঁধে দাঁড়াই, আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য যেন আমরা আমাদের প্রবৃত্তিকে দমন করি। যদি আমরা দুনিয়ার এই পরীক্ষায় সফল হতে পারি, তবে আমাদের জন্য রয়েছে পরম সুখের এক অনন্ত জীবন।

উপমা ২
ধরুন, আপনি একটি পরিস্থিতির সম্মুখীন হলেন, যেখানে মিথ্যা বলে আপনি অনায়াসেই পার পেয়ে যেতে পারেন। তবুও আপনি সত্য কথা বললেন। কারণ আপনি সব সময় আপনার নীতি, আখলাক ও মূল্যবোধের ওপর অবিচল থাকেন, যেগুলো আপনার দ্বীন আপনাকে শিখিয়েছে, আপনার রাসুল * আপনাকে শিখিয়েছেন। কারণ আপনি জানেন, আল্লাহ রব্বুল আলামিন সত্যবাদীদের ভালোবাসেন। তা ছাড়া আপনি জানেন, এই যে আপনি সত্যের ওপর অবিচল থাকতে কষ্ট স্বীকার করছেন, এর জন্য আল্লাহ তাআলার কাছে রয়েছে এক বিরাট প্রতিদান।

রাসুলুল্লাহ ইরশাদ করেন :

«الجنة أقرب إلى أحدكم من شراك تعلي»

*জান্নাত তোমাদের কারও জুতার ফিতার চেয়েও অধিক নিকটবর্তী।

এই কথা বলে রাসুলুল্লাহ আমাদের এটি বোঝাতে চেয়েছেন যেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর আনুগত্য করে, তার জন্য জান্নাত একেবারেই নিকটে।

উপদেশ

জান্নাতিদের একজন হতে—

→ আপন নীতি ও মূল্যবোধের ওপর অটল থাকুন।

→ মানুষের ওপর অন্যায় ও জুলুম থেকে বিরত থাকুন।

● কষ্ট ও মুসিবতে সবর করুন।

→ আল্লাহর নির্ধারিত তাকদিরের ওপর সন্তুষ্ট থাকুন। কারণ আল্লাহর ফায়সালা আপনার জন্য কেবল কল্যাণই বয়ে আনবে।

৬. সহিহুল বুখারি : ৬৪৮৮।

দুআ কামনায় 'আমীমুল ইহসান' ০১ মে, ২০২২ ইসায়ি
৩. সুরা আলি ইমরান ৩:১৫।
জান্নাতে একদিন।

Please Buy This Book Original Copy From Wafilife

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ