- বই : হৃদয়জুড়ানো সালাত
- লেখক : শাইখ মিশারি আল-খাররাজ
- প্রকাশনী : সমকালীন প্রকাশন
- বিষয় : সালাত/নামায
- অনুবাদক : আশিক আরমান নিলয়
- সম্পাদক : আব্দুল্লাহ আমান, মাহবুবা উপমা
- পৃষ্ঠা : 64, কভার : পেপার ব্যাক
নামায ফার্সী শব্দ। আরবীতে একে বলা হয় সালাত। সাধারণত সালাত অর্থ উপাসনা, মঙ্গল প্রার্থনা, আশীর্বাদ। ইসলামের প্রথম থেকেই দৈনিক পাঁচবার নামায পড়ার বিধান নির্দিষ্ট হয়েছে। ফজর, জোহর আসর, মাগরিব ও এশা। ইসলামের পাঁচটি কম বা তার মধ্যে সালাত বা নামায একটি। প্রথম কন ঈমানের পরেই সালাতের স্থান। তারপর যাকাত, সওম রােজা ওব।
কুরআন মজিদে সালাত কায়েম করার জন্য বারবার তাকীদ করে বলা হয়েছে যে, সালাত উপযুক্ত ভাবে প্রতিপালিত হলে এটা মানুষকে সবর অন্যায় অসত কাত হতে বিরত রাখে। হাদীস শরীকেও সালাতকে দীন ৰা ইসলামের ভিত্তি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রকৃত সালাতে আল্লাহ তাআলার নৈকট্য লাভ ও তার সাথে আন্তরিক যােপাযােগ স্থাপিত হয়।
পাক-পবিত্র হয়ে পবিত্র স্থানে বিও অকরণে সালাত সল্প করতে হয় এবং একমাত্র প্রভু আল্লাহ তাআলার নিকট নিজের দীনতা ও হীনতা প্রকাশ করে তার অনুগ্রহ ভিক্ষা করতে হয়। সালাত সম্পাদনের পূর্বে শারীরিক পত্রিকার জন্য এৰু ৰা ভায়া প্রয়ােজন হলে গোসল করতে হয়। পরিখাসের পাক হওয়া একান্ত প্রয়োজন এবং পুরুষের পকে অন্তত নাতি থেকে হাঁটু পর্যন্ত এবং স্ত্রীলােকের অনন্য মুখমণ্ডল ছাড়া সমস্ত শরীর ঢাকা আবশ্যক। কিবলা অর্থাৎ বায়তুল্লাহ শরীফের দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে নিয়ত করতে হয়। নিয়তে যে সময়ের যে নামায তার উল্লেখ করতে হয়। নিয়ত মনে মনে ও নিজ নিজ ভাষায় করাই ভালাে।
কবর ও অপৰূিত্র স্থান নাড়া যে কোনাে নে নামায সম্পন্ন করা যায়। তবে মসজিদে সম্পন্ন করা উত্তম। কিবলামুখী দাড়িয়ে নিয়ত করে তাকবীর তাহরীমা অর্থাৎ 'আল্লাহু আকবর' বলে দু হাত পুরুষদের কান পর্যন্ত উঠিয়ে নাতি মূলে ও সীলােকদের ঝাঁধ পর্যন্ত উঠিয়ে বুকের উপর রাখতে হয়। ডান হাতের তালু বাম হাতের পিঠের ওপর থাকে। এভাবে দণ্ডায়মান মুসল্পী সানা, তা'আউবুষ ও তাসমিয়া পড়ে সূরা ফাতিহা ও তারপর কুরআন মজীদ থেকে অন্তত ছােট তিন আয়াত বা বড় এক আয়াত পরিমাণ পাঠ করেন, এরপর আল্লাহু আকবর বলে সৰুখে ঝুঁকে রুকুতে যান এবং রুকুর তাসবীহ পড়েন।
তারপর তাকবীর তসমী, ও তাহমীদ বলে সােজা হয়ে দাঁড়িয়ে স্থির হন ও পুনরায় আল্লাহু আকবর বলে সিজদায় যান ও সিজদার তাসবীহ পড়েন। সিজদা দুর করতে হয়। এভাবে এক রাকাআত নামায সম্পন্ন হয়। তারপর মুসল্পী আবার আম্মদ আকবর বলে উঠে সােজা হয়ে দাঁড়ান ও সূরা ফাতিহা ও অন্য সুরা বা সূরার অংশ পড়ে পূর্ব রাকাআতের ন্যায় তাকবীর রুক', তাসবীহ, তাসমী, তাহমীদ ও সিজদা শেষ করে বাম পায়ের ওপর বসেন ও ডান পা ভাজ করে গোড়ালী উর্ধে রাখেন। এভাবে উপবিষ্ট অবস্থায় তাশাহুদ ও দরূদ পাঠ করে ডানে ও বামে মুখ ফিরিয়ে সালাম করেন। এতে করে দুই রাকআত নামায সম্পন্ন হয়।
তিন বা চার রাকাআত ফরয নামায পড়ার নিয়ত করে থাকলে তাশাহুদের পর তাকবীর বলে উঠে দাঁড়িয়ে বাকী এক বা দুই আত পূর্ব নিয়মে শেষ করতে হয়। কিন্তু এ বাকী এক বা দুই রাকাআতে শুধুমাত্র সুরা ফাতিহা পড়তে হয়। অন্য সূরা বা সূরার অংশ পড়তে হয় না। নামায একাকী পড়তে পারা যায়, কিন্তু জামাআতে পড়াই শরীয়তের বিধান। জামাআতে নামায পড়তে আবানের জন্য আযান দেয়া হয়। আমাঝাতে ফরয নামাযের আগে ইকামত দেয়া হ। জামা'আতে নামায পড়ার সওয়াব অনেক বেশী। জামাআতে নামায পড়লে ইমামের পিছনে ইকতিদা করছি বলে নিয়ত করতে হয়। কিন্তু কোনাে সূরা পড়তে হয় না। চুপ করে ইমামের পিছনে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থেকে তাঁর সূরা কিরাআত শুনতে হয়। জামা'আতের ইমাম আগন্তুক না হয়ে স্থানীয় যোগ্য ব্যক্তি হওয়া উচিত।
কর্তব্যের গুরুত্ব হিসেবে সালাতকে চার শ্রেণীতে ভাগ করা হয়। ওয়াজিব, সুন্নাত ও নফল। ফজরে দুই রাকআত সুন্নাত ও দুই রাকাআত ফরয, জোহরের চার রাকাআত সুন্নাত, চার রাকাআত ফরয ও দুই রাকাআত সুন্নাত। আসরের চার রাকাআত ফরয, মাগরিবে তিন রাকাআত ফরুষ ও দুই রাকাআত সুন্নাত।
এশার চার রাকাআত ফরয, দুই রাকা'আত সুন্নত ও তিন রাকা'আত ওক্সান্ধিৰ বিতৰ। এছাড়া নফল নামায যত ই পড়া যায়। ফজর, মাগরিব, এশা ও জুমআর ফরয নামায ঘড়া সব নামাযই নীরবে পড়তে হয়। কোনাে বিশেষ কারণে সালাত আদায় না করতে পারলে তার কাযা আদায় করতে হয়। দৈনিক পাঞ্জেগানা নামায় কায়েম করা প্রত্যেক বালিগ ও সুস্থ মস্তিষ্কের পুরুষ ও নীলাকের জন্য ফরয। ফরষ ত্যাগ করলে কবীরা গুনাহ হয় এবং অস্বীকার করলে কাফের হয়। ওয়াজিব ত্যাগ করলে শক্ত গুনাহ হয় কিন্তু অস্বীকার করলে কাফের হয় না।
খুশুখুযু হলো সালাতের প্রাণ। খুশুখুযুহীন সালাত যেন যান্ত্রিক ওঠাবসা ছাড়া কিছু নয়। দুঃখজনক হলেও সত্য, আমাদের সালাত থেকে খুশুখুযু হারিয়ে গেছে। ফলে আমাদের জীবন থেকে হারিয়ে গেছে সালাতের সেই প্রভাবও। উদাসীনতার তলদেশে হারিয়ে যাওয়া সেই খুশুখুযু ফিরিয়ে আনতেই আমাদের এবারের পরিবেশনা। সালাতের প্রতিটি পর্বে খুশুখুযু ধরে রাখার অব্যর্থ সব কলাকৌশলে সমৃদ্ধ ‘হৃদয়জুড়ানো সালাত’ বইটি। এ বই পাঠের পর আমাদের সালাতে আসবে কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন, ইনশাআল্লাহ।
0 মন্তব্যসমূহ
ℹ️ Your Opinion is very important to us, Please Writer your comment below about this Post.....