- বই : শরয়ি আলোকে কাফন-দাফন
- লেখক : মুফতি আরিফ মাহমুদ
- প্রকাশনী : মাকতাবাতুল ক্বলব
- বিষয় : ইসলামি বিবিধ বই
- পৃষ্ঠা : 176, কভার : পেপার ব্যাক
- ভাষা : বাংলা
মৃত্যু অবধারিত। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন—
‘প্রাণমাত্রই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে। আর তোমরা কিয়ামতের দিন পরিপূর্ণ প্রতিদানপ্রাপ্ত হবে; অতঃপর যাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেওয়া হবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে, সে হবে সফল। বস্তুত পার্থিব জীবন প্রতারণা বৈ কিছু নয়।
পরলৌকিক ভাবনা মূলত যাবতীয় দুঃখ-বেদনার প্রতিকার; সমস্ত দ্বিধা-সংশয়ের উত্তর৷ উক্ত আয়াতে এই বাস্তবতাকেই সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়েছে। তাই এ ইহলৌকিক ক্ষণকাল জীবনে যদি কখনো কোথাও কাফিররা বিজয়ী হয়ে যায় এবং পূর্ণ সুখস্বাচ্ছন্দ্য লাভ করে আর এরই অপজিটে মুসলিমগণ যদি নানাবিধ বিপদ, শঙ্কা, জটিলতা ও পার্থিব সংকীর্ণতায় ভোগে, তাহলে বিস্মিত হওয়ার কিছু নেই। তাতে ক্ষুণ্ন হওয়ারও কিছু নেই। কেননা, এ সত্য সম্পর্কে কোনো ধর্ম, কোনো মতানুবতী, কিংবা কোনো দার্শনিকই অস্বীকার করতে পারে না যে পার্থিব দুঃখ-কষ্ট বা সুখস্বাচ্ছন্দ্য উভয়টিই মাত্র কয়েক দিনের জন্য। উপরন্তু এর দ্বারা মুমিনের গুনাহ মাফ হয়, সম্মান বৃদ্ধি পায়। কোনো প্রাণীই মৃত্যুমুক্ত নয়; তা ছাড়া মুমিনের পার্থিব দুঃখ-কষ্ট কিংবা সুখস্বাচ্ছন্দ্য অধিকাংশ ক্ষেত্রে ইহজগতে এসেই শেষ হয়ে যায়। সুখ কিংবা দুঃখ যেটাই আসুক এই ক্ষণাস্থায়ী দুনিয়ায় সবই ক্ষণাস্থায়ী; আজ সুখ আসলে দেখা যাবে কাল আসলো দুঃখ অথবা আজ দুঃখ আসলে কাল আসবে সুখ। সবই একসময় শেষ হয়ে যায়। আর যদি পৃথিবীতে শেষ নাও হয়, তবে মৃত্যুর সাথে সাথে তা সম্পূর্ণ নিঃশেষ হয়ে যায়। কাজেই কদিনের সুখ-দুঃখ নিয়ে চিন্তামগ্ন হয়ে থাকা, হা-হুতাশ করা, অবচেতন হয়ে পড়া কোনো বুদ্ধিমানের কাজ নয়; বরং মৃত্যু-পরবর্তী চিরস্থায়ী জীবনের চিন্তা করাই কর্তব্য যে—সেখানে কী হবে এবং এর জন্য ইমান ও আমলের প্রস্তুতি কীভাবে নিতে হবে এবং কতটুকু নিতে পারলাম, না পারলাম। এজন্যই এ আয়াতে বর্ণিত হয়েছে যে, প্রত্যেক প্রাণীই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে। আর পরকালে নিজের কৃতকর্মের পুরস্কার বা তিরস্কারপ্রাপ্ত হবে। সুতরাং বুদ্ধিমানের পক্ষে কেবল এ বিষয়েই চিন্তা করা কাম্য আর তারাই হলো সত্যিকার কৃতকার্য, যারা জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভ করবে এবং জান্নাতের স্থায়ী সুখ-শান্তির অধিকারী হবে। পক্ষান্তরে কাফিরদের চিরস্থায়ী ঠিকানা হবে জাহান্নাম। কাজেই তারা যদি দুনিয়ার অল্প কদিনের পার্থিব সুখস্বাচ্ছন্দ্যে গর্বিত হয়ে ওঠে, তবে তা আত্মপ্রবঞ্চনা বৈ কিছু নয়। সেজন্যই আয়াতে বলা হয়েছে, ‘দুনিয়ার জীবন ধোকার উপকরণ।' কারণ—সাধারণত এখানকার ভোগ-বিলাসই হবে পরকালের কঠিন যন্ত্রণার কারণ। পক্ষান্তরে, দুনিয়াতে দীনের জন্য দুঃখ-কষ্ট হবে আখিরাতের সঞ্চয়। ১
হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, ‘বুদ্ধিমান তো সে, যে নিজের মন ও বাসনাকে নিয়ন্ত্রনে আনতে সক্ষম হয় এবং মৃত্যুর পরবর্তী জীবনের জন্য সচেষ্ট হয়। শয়
[১] মুফতি মুহাম্মাদ শাফি রাহিমাহুল্লাহ, মাআরিফুল কুরআন: ২/২৫৫। [২] সুনানুত তিরমিজি, হাদিস : ২৪৫৯; সুনানু ইবনি মাজাহ, হাদিস : ৪২৬০।
[১] [সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ১৮৫।]
0 মন্তব্যসমূহ
ℹ️ Your Opinion is very important to us, Please Writer your comment below about this Post.....