ভুতের নাম টিটং টং : আখতার বানু জলি | Vuter Naam Ting Tong

■ বই পরিচিতি:
বই: ভুতের নাম টিটং টং
লেখক: আখতার বানু জলি
প্রকাশনী: চলন্তিকা
প্রচ্ছদ: নিসা মাহ্জাবীন
প্রকাশকাল: অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০২২
মুদ্রিত মূল্য: ২০০ টাকা



 
“ভুতের নাম টিটং টং” বইটি মূলত শিশুতোষ গল্পের বই। লেখক আখতার বানু জলি শিশুদের জন্য লিখতে ভালোবাসেন। শিশুদের জন্য রচিত এই বইটিতে বিভিন্ন আকারের নয়টি গল্প রয়েছে। কয়েকটি গল্প নিয়ে নীচে আলোচনা করা হলো: 

★ জাহাজ বাড়ির বাতাস ভূত: জেলা শহরের বক্সী পাড়ার একদম শেষ প্রান্তে ছিল একটি দোতলা কাঠের বাড়ি, যা লোকমুখে ‛জাহাজ বাড়ি’ নামে পরিচিত। জাহাজ বাড়ির বিপরীত দিকের বাড়িতে একজোড়া নতুন ভাইবোন, রাতুল আর মিতুল থাকতে এসেছে। দুই ভাইবোনেরই প্রথম থেকেই জাহাজ বাড়ির দিকে তীব্র আকর্ষণ। একদিন সাহস করে তারা জাহাজ বাড়িতে যায়। ওই বাড়িতে পা দেয়ার পর, তারা শুনতে পায় কিছু অদৃশ্য আওয়াজ আর হাসির শব্দ। এই শব্দগুলোর পিছনের রহস্য কী ছিল? জাহাজ বাড়িতে কী আসলেই বাতাস ভূত ছিল?

★ ভূতের নাম টিটং টং: মুনা স্কুলের লাইব্রেরি থেকে একটি বই পড়তে নেয়। বইটিতে টিটং টং নামের এক বাচ্চা ভূতের নানা কার্যকলাপ উল্লেখ থাকে।

★ অয়ন নয়নের গল্প: অয়ন নয়ন নামের দুই জমজ ভাইয়ের নানা দুষ্টুমীর কথা গল্পটিতে রয়েছে। তবে, তারা একদিন একটি সাহসী কাজ করে যার মাধ্যমে অনেক মানুষের প্রাণ বাঁচে। সেই সাহসী কাজটি কী ছিল?

★ করোনা ও সুহাসের গল্প: বস্তির প্রাইমারি স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র সুহাস। সুহাসের বাবা রিক্সা চালায় আর মা বস্তির পাশের বিল্ডিং এর বাসগুলোতে কাজ করে। এভাবেই টেনেটুনে সুভাসদের সংসার চলতো। একসময় করোনা ভাইরাসের কারণে সারাদেশে লকডাউনের ঘোষণা দেয়া হয়। সুহাসের পরিবারের আয় বন্ধের পথে। খুব কষ্টে খেয়ে না খেয়ে তারা দিন কাটাতো। এরমধ্যে সুহাস এক স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজে যুক্ত হয়। এরপর কী হয়েছিল জানতে গল্পটি পড়তে হবে। 

★ মানবতা: মুক্তিযুদ্ধের সময়ের কাহিনী নিয়ে গল্পটি রচিত হয়েছে। গ্রামের সরকার বাড়ির কাজের মহিলার মেয়ে নীতু। নীতু গ্রামের প্রাইমারি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী।
পাকবাহিনীদের গ্রামে আক্রমণ চালানোর খবর শুনে, গ্রামের মানুষ পালিয়ে যায়। কিন্তু নীতু যুদ্ধ দেখতে গ্রামে থেকে যায়। 
তখন এমন একটি ঘটনা ঘটে, যার মাধ্যমে আমরা নীতুর মানবতাবোধের প্রকাশ দেখতে পাই। 

গল্পগুলো নিছক রূপকথার গল্প নয়। প্রতিটি গল্পেই শিক্ষণীয় বার্তা রয়েছে। শিশু- কিশোররা গল্পের মাধ্যমে নানা বিষয় জানতে ও শিখতে পারবে। প্রতিটি গল্প লেখক সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলেছেন। বইটির নাম “ভূতের নাম টিটং টং” হলেও, লেখক সবগুলো গল্পের মাধ্যমে এ কথাই প্রমাণ করার চেষ্টা করেছেন যে আসলে ভূত বলতে কিছু নেই। শিশুদেরকে বাস্তবভিত্তিক মজার মাধ্যমে গল্পের ছলে শিক্ষা দেয়ার চমৎকার একটি বই “ভুতের নাম টিটং টং”। 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ