২.২৫ সতর্কবার্তাঃ পুরা আলোচনাই স্পয়লার
পাঠ প্রতিক্রিয়া জানানোর আগে একটা ব্যাপার ক্লিয়ার করা দরকার। আমি নারীবিদ্বেষী না, নারীদের অনেক ভালোবাসি। লেখিকা বইলা নেগেটিভ রিভিউ দিছি বলার আগে আলোচনা মনোযোগ দিয়ে পড়ার অনুরোধ রইল। অনেকে হিউমার পছন্দ করেনা বইলা হিউমার বর্জিত জাস্ট নিজের পাঠ অনুভূতি জানাইলাম।
একে একে ৩ বৃহস্পতিবার ৩জন আর্মি অফিসারের লা*শ পাওয়া যায় নরসিংদীর নদীতে৷ ওসি জাফর খু*নের তদন্তে নামেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার নাফিজ সাহেবকে নিয়ে।
বইতে সমানতালে অযৌক্তিক আর কাকতালীয়ের খেলা চলে৷ এই দু'য়ের মধ্যে আক্ষরিকভাবেই প্রতিযোগিতা চলে কোনটা রেখে কোনটা আগায়া যাইব।
বিজয় আসল খুনি। বিজয়ের বাবার ইচ্ছা ছিল তাকে আর্মিতে দেওয়ার। কিন্তু চোখের পাওয়ার -২.২৫ হওয়াতে আর্মিতে চান্স পায়না সে। এই দুঃখে বিজয়ের বাবা মেঘনা নদীতে আত্মহত্যা করে (মানে যা খুশি)। বাবা আত্মহত্যা করায় বিজয় সেই ব্যাচে যারা চোখে সমস্যা নিয়েও আর্মিতে চান্স পায় তাদের খু*ন করার প্লান করে (সেরা যুক্তি)।
এই কাজে বিজয় সাহায্য চায় তার খালা পুলিশের এসপি রিনা খানের কাছে। মায়ের বোন খালা, মায়ের চেয়ে ভালা এই নীতিতে বিশ্বাসী এসপি সাহেব ভাগ্নের এই সুপার প্লান শুনে সাহায্য করার জন্য নরসিংদী জেলায় ট্রান্সফার নিয়ে আসে যেনো খালা-ভাগ্নে মিলে খু*ন করে লা*শ মেঘনা নদীতে ভাসাইতে পারে (মাটি খাইয়া এসপি হইছে, নাইলে এই প্লান শুইনা ভাগ্নেরে থাপড়ান উচিত আছিল ওনার)।
জাফর আর নাফিজ তদন্তে নাইমা সিদ্ধান্ত নেন যেহেতু আর্মি অফিসারদের অনেক টর্চারের মাধ্যমে খু*ন হইতেছে, তারমানে এয়াওব নির্জন জায়গায় ঘটতেছে। নরসিংদীর নির্জন জায়গার লিস্ট করেন ওসি জাফর। নাফিজকে লিস্ট জানাতে গিয়ে শোনেন সে আগেই লিস্টের ১নাম্বারে থাকা মডেল টাউনে চলে গেছেন৷ জাফর সাহেবও মডেল টাউনে যান। মডেল টাউনের সর্বশেষ সীমানার এক নির্মাণাধীন বাড়ির উপরের তলায় আলো জ্বলতে দেখে ঢুকে পড়েন তিনি। চিৎকার শুনে দৌড়ে উপর তলায় গিয়ে দেখেন নাফিজ সাহেব দারোয়ানকে চেয়ারের সাথে বেঁধে পিটাচ্ছেন। কারণ ডিসি অফিস থেকে নাফিজের পকেট থেইকা চুরি হওয়া মোবাইল দারোয়ানের কাছে। দারোয়ান জানায় চুরি যাওয়া মোবাইল ৫০০০ এ কিনছে, নাফিজ ১০০০০ টাকা দিলে ফিরায়া দিব। মোবাইল নিতে এসে নাফিজ দারোয়ানের রুমে আর্মির ড্রেসের ৩টা তারা পায়! এসব কথার মাঝেই দারোয়ান তাদের উপর ঝাপায়া পরে। আগের পৃষ্ঠায় বলল দারোয়ানরে বেঁধে পিটাইতেছে, এখানে আবার বলল বাঁধে নাই বইলা দারোয়ান ঝাপ দিছে মারামারি করতে! (বেস্ট সম্পাদনা এওয়ার্ড নিশ্চিত)।
ডিসি অফিস থেইকা এডিসির পকেটের মোবাইল চুরি হয়, সেইটা আবার খুনির সহযোগী কিনে নেয় যাতে খুনি পর্যন্ত যাওয়া যায়! এত কাকতালীয় ঘটনা কেমনে সম্ভব আমার মাথায় আসে নাই। আর কোন চোরের এতবড় বুকের পাটা যে ডিসি অফিসে গিয়া এডিসির মোবাইল চুরি করে তারে দেখতে মন চাইছিল।
আর লেখতে মন চাইতেছে না। সব নেগেটিভ পয়েন্ট লিখতে গেলে বইয়ের চেয়ে আলোচনা বড় হইয়া যাইব। বইতে মোট ২০টা চিত্র আছে। এই চিত্রগুলা ছাড়া পুরা বইটাই ফালতু। কাহিনি অযৌক্তিক। এক্সিকিউশান জঘন্য। কোনভাবেই প্রকাশ হওয়ার উপযুক্ত না। ফেসবুকে ফ্রি পড়ার যোগ্যও না এই বইটা।
এই বইয়ের মোটিভের সাথে ২০০৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত সুস্মিতা সেন অভিনিত "সময়" নামে একটা মুভির সাথে অনেক মিল। যদিও ওইটাতে আর্মি অফিসার থাকে না। কিন্তু খু*নি চোখের সমস্যার কারণে পুলিশে চাকরি না পাইয়া সমাজে প্রতিষ্ঠিত মানুষ যাদের চোখে সমস্যা আছে তাদের খু*ন করে।
প্রকাশকের উদ্দেশ্যে কিছু কথাঃ প্রতি বইতে ভুমিকা লেখার দরকার নাই। আপনার ভূমিকা পইড়া প্রচ্ছদ দেখার সাথে সাথে বই পড়ার আগে মোটিভ জাইনা গেছি। অথচ বইতে মোটিভ বলছে একদম লাস্ট চ্যাপ্টারে।
- বইঃ ২.২৫
- লেখকঃ তাহমিনা জাফর কল্পনা
- প্রকাশনীঃ সতীর্থ প্রকাশনা
- পৃষ্ঠাঃ ৮৮
- মুদ্রিত মূল্যঃ ১৬০
বিঃদ্রঃ এত রুড হওয়ার জন্য ক্ষমাপ্রার্থী, সরাসরি এতটা বাজে বলিনা কিছুরে। হিউমার না মেশানোয় বেশি কড়া লাগতেছে জানি কিন্তু অনেকে হিউমার সহ্য করতে পারে না, আর এই বইটা যত নেগেটিভ কথা থাকতে পারে তার সবকিছু প্রাপ্য৷
0 মন্তব্যসমূহ
ℹ️ Your Opinion is very important to us, Please Writer your comment below about this Post.....