বই : বিগ ব্যাং থেকে হোমো স্যপিয়েন্স পিডিএফ
লেখক : মুহম্মদ জাফর ইকবাল
প্রকাশনা : জ্ঞানকোষ প্রকাশনী
পৃষ্ঠা : ৫৫
মুহম্মদ জাফর ইকবাল একজন আগাগোড়া বিজ্ঞানের মানুষ। শিক্ষকতা করছেন বিজ্ঞানের বিষয়ে, গবেষণা করছেন বিজ্ঞানের বিষয়ে, লেখালেখি করছেন বিজ্ঞানের বিষয়ে। সকল কিছু নিয়ে ব্যক্তি জাফর ইকবাল স্যারও পুরোদস্তর বিজ্ঞানমনস্ক। বিজ্ঞান নিয়ে লেখালেখির হাতও অত্যন্ত চমৎকার, বিজ্ঞানের লেখা যখন লিখেন তা হয় একদম অমৃত। কিন্তু লেখালেখির বেশির ভাগ সময়টা প্রদান করেন সায়েন্স ফিকশন কিংবা কিশোর উপন্যাসে। এ নিয়ে বিজ্ঞানপ্রেমী পাঠকদের মাঝে একটা স্থায়ী আক্ষেপ, মুহম্মদ জাফর ইকবাল কেন আরো বেশি বেশি করে বিজ্ঞানের বই লিখেন না।
কে আমি? কোথা থেকে এলাম আমরা? এ মহাবিশ্বে আমদের অবস্থান কী? আমাদের বিশেষত্ব কী? প্রশ্নগুলো একদমই ভাববাদী হয়ে গেল। কিন্তু এগুলোকে কোনোভাবেই ফেলে দেয়া যাবে না। নিজেকে বুঝতে হলে নিজেদের গুরুত্বকে অনুধাবন করতে হলে নিজের ও নিজেদের ইতিহাস পর্যবেক্ষণ করতে হবে। নিজ জাতির হাজার হাজার বছরের ঘটনাবহুল অতীত পর্যবেক্ষণ করলে নিজের সত্যিকার স্বরূপের দেখা মিলবে। যদি হাজার হাজার বছর পেরিয়ে মিলিয়ন মিলিয়ন বছর কিংবা বিলিয়ন বিলিয়ন বছর আগের ইতিহাস পর্যবেক্ষণ করা হয় তখন নিজের সম্পর্কে নিজের ধারণা এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে যাবে।
হ্যাঁ, আজকের আমি আপনি যে দিব্যি খেয়ে বর্তে ঘুরে বেড়াচ্ছি, তার পেছনে লুকিয়ে আছে ১৩.৮ বিলিয়ন বছরের ইতিহাস। সেই বিগ ব্যাং থেকে শুরু করে আজকের হোমো স্যাপিয়েনস পর্যন্ত লম্বা এক ইতিহাস আছে। সেই ইতিহাসের গল্প তুলে ধরেছেন মুহম্মদ জাফর ইকবাল স্যার তার বই বিগ ব্যাং থেকে হোমো স্যাপিয়েনস নামের বইতে।
কাহিনী সংক্ষেপঃ লেখক শুরুতেই আমাদের রাতের আকাশ দিয়ে প্রবেশ করিয়ে গ্যালাক্সিতে গমন করান। সেখান থেকে বিগ ব্যাংয়ের বর্ণনা। তারপর ইনফ্ল্যাশন, দৃশ্যমান মহাবিশ্ব, বর্তমানের চোখ দিয়েই মিলিয়ন মিলিয়ন আলোক বর্ষ দূরের মিলিয়ন মিলিয়ন বছর অতীতের ঘটনা পর্যবেক্ষণ করার অবতারণা। এরপর এসেছে মহাবিশ্বের চার প্রকার শক্তি, পদার্থ ও প্রতি-পদার্থ, মহাবিশ্বে সর্ব প্রথম আলো, ডার্ক ম্যাটার ডার্ক এনার্জি ইত্যাদি। এরপর নক্ষত্রের জন্মের ঘটনা, সূর্য ও সৌরজগত গঠন, পৃথিবী ও অন্যান্য গ্রহের জন্ম, পৃথিবীতে পানির আগমন ও মহাদেশের উদ্ভব ইত্যাদি।
এরপর পৃথিবীর জলজ পরিবেশে প্রথম প্রাণ তৈরি হওয়া, প্রাণের উপযোগী প্রাথমিক প্রাকৃতিক পরিবেশ, এককোষী প্রাণের জন্ম, বিবর্তন, অক্সিজেন, ইউক্যারিওটিক কোষ এবং বহুকোষী প্রাণী। বহুকোষী প্রাণী থেকে উন্নত প্রাণী, প্রাণের বৈচিত্র্য তৈরি হওয়া, লজ থেকে ডাঙ্গায় প্রাণের উঠে আসা, ডায়নোসরের নাটকীয় আগমন ও বিলুপ্তি, ডায়নোসরের অনুপস্থিতিতে স্তন্যপায়ীর বিশ্ব বিজয়, প্রাইমেটের আগমন এবং মানুষের বর্তমান পরিস্থিতি।
এগুলোর পাশাপাশি চার প্রকার মানুষ হোমো ইরেক্টাস, হোমো ফ্লোরোসিয়েন্সিস, হোমো নিয়ানডারথাল, হোমো স্যাপিয়েনস নিয়েও সামান্য আলোচনা আছে। আরো আছে হোমো স্যাপিয়েনসের সম্ভাব্য ভবিষ্যতের কথা।
পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ
বইটি একটি নন ফিকশন ঘরানার বই এবং সম্পূর্ণ রঙিন। বিজ্ঞানের বই রঙিন হলে এর আনন্দই বেড়ে যায় অনেকগুণ। বাংলা ভাষায় প্রকাশিত বিজ্ঞানের রঙিন বলতে গেলে হয়ই না, সেক্ষেত্রে এটিকে রঙিন দেখে ভালো না লেগে উপায় নেই।
বইটি এত সুন্দর ও সাবলীল যে খুব সংক্ষেপে অনেক বড় বড় তত্ত্ব লেখক তুলে ধরেছেন। সব মিলিয়ে নাদুসনুদুস এই বইটিকে চমৎকার বলেই আমার মনে হয়েছে।
Tag's
0 মন্তব্যসমূহ
ℹ️ Your Opinion is very important to us, Please Writer your comment below about this Post.....