শিল্পী আমি, আঁকে সে : লেখক শাহরিয়ার হাসান | Shilpi Ami Ake She : Shahriar Hasan

  • বই : শিল্পী আমি, আঁকে সে 
  • লেখক : শাহরিয়ার হাসান 
  • প্রকাশনায় : বর্ণলিপি প্রকাশনী 
  • প্রচ্ছদ : সজল চৌধুরী 
  • জনরা : ফ্যান্টাসি 
  • মলাট মূল্য : ৪০০ টাকা (Pre Order Price 240৳/40% Discount ) 

অথোসিস, আমার মিত্র!
ভোরের প্রথম মিহি আলো স্টাডি রুমের জানালা ভেদ করে ভেতরে প্রবেশ করতেই স্যার থমাস খানিকটা কেঁপে উঠলেন। হাতে থাকা বাইবেলটা ধরে রাখতে কষ্ট হচ্ছে। শরীরটা কেমন যেন গুলিয়ে আসছে। বুঝতে পারেন, তাঁর উপর যিশুর কোনো কৃপা মনে হয় আর নেই। তিনি বাইবেলটা বাক্সতে রেখে দিলেন। এত বছর ধরে তিনি সেতান তথা শয়তানের গোলামি করে চলেছেন। তাও যেন তেনভাবে নয়, শয়তানের তুষ্টির জন্য এক সময় অসংখ্য মানুষকে জীবিত দশাতেই নরকের ভ্রমণ করিয়েছে। সেসব ব্যক্তিদের মধ্যে অন্যতম স্যার থমাসের সবচে কাছের ও বিশ্বস্ত ব্যক্তি রহমত!
মিনিট দুয়েক পর ওনার দেহে ছোপ ছোপ কালো দাগ দেখা দিতে লাগল। প্রকৃতপক্ষে ভোরের আলোর প্রভাব। 

এ সময়ে ফেরেশতাদের আনাগোনা হয়। বায়ুতে প্রাণের নতুন শুদ্ধ সঞ্চার ঘটে। রাতের শেষ ভাগটায় সর্বাধিক মায়াজাল ঘটলেও, ভোরের এই সময়টাতে সকল মায়াজাল কেটে যায়। তখন কেবল ইমানদার ব্যক্তিরাই নিদ্রা ত্যাগ করে ভোরের আলো গায়ে মাখে। সেই আলো সকল ক্লান্তি, মনোকাশ দূর করে দেয়।
কিন্তু দুঃখজনকভাবে স্যার থমাস কোনো ইমানদার ব্যক্তি নন।

ভোরের আলো আরো কিছুটা গায়ে লাগতেই এক বিস্ময়কর ঘটনা ঘটে। ওনার দেহের কালো অংশগুলোতে লোহার শিকল ধীরে ধীরে দৃশ্যমান হতে লাগল। দু হাত জড়িয়ে পেঁচিয়ে আছে দু সারি শিকল। সেগুলো দরজা ভেদ করে কোথায়ও একটা চলে গেছে। আশ্চর্যজনকভাবে দরজাটা ভেতর থেকে বন্ধ। তবু শিকল দুটো কী করে যেন দরজার ভেতর দিয়ে চলে যেতে পারছে।

নিজের দিকে নজর পড়তেই স্যার থমাস আঁতকে উঠলেন। রাতে জানালাগুলো বন্ধ করে পর্দা দিতে তিনি ভুলে গেছিলেন। অবশ্য, স্মৃতিচারণের ক্লেশে ভুলে যাওয়াটাই স্বাভাবিক।

দ্রুত উঠে গিয়ে জানালাগুলো বন্ধ করে পর্দা টেনে দিলেন। তবু শিকল এখনো দৃশ্যমান। তবে ওনার চোখ মুখে এখন আর চিন্তার ছাপ নেই, নিশ্চিন্ত তিনি। দ্রুত টেবিলের কাছে গিয়ে সবকিছু গুছাতে লাগলেন। বাক্সের বাকি রহস্য নিয়ে খুব একটা আগ্রহ দেখালেন না। বাক্স দুটো বন্ধ করে টেবিলের পাশে নিচে রাখলেন। আবেগ আদত ওনাকে মানায় না। হেতু, তিনি দীর্ঘকাল মানব অনুভূতির বাহিরে ছিলেন…! বাক্স দুটো রাখার পরপরই শরীরে থাকা লোহার শিকল ধীরে ধীরে অদৃশ্য হতে লাগল। তিনি যেন হাফ ছেড়ে বাঁচলেন। 

“বাইইবেএল…! ওশুভ!’’ দরজা ওপাশ থেকে কেউ একজন বলে উঠল। কণ্ঠস্বরটা অদ্ভুত। অনেকটা ফিসফিসিয়ে কথা বলার মতো। কিন্তু ধাচটা তেমন হলেও কণ্ঠস্বর নিচু নয়। বেশ জোড়াল!
ওনার বুঝতে বাকি নেই দরজার ওপাশটাতে কে রয়েছে। বলে উঠলেন, ‘ভেতরে আসো!’

প্রত্যুত্তর এলো না কিংবা দরজা খোলার শব্দ। তার বদলে দরজায় আঁচড় কাটার তীক্ষ্ণ শব্দ ভেসে এলো। স্যার থমাস খানিক বিরক্তিভাব প্রকাশ করে নিজ থেকে গিয়ে দরজাটা খুলে দিলেন। দরজার ওপাশে কোনো মানুষ নেই। অন্তত ওনার চোখের সামনে তো নয়ই। এর বদলে ফুট তিনেক উচ্চতার একটা উদ্ভট জন্তু দাঁড়িয়ে। জন্তুটা কুজো, দেহের চামড়া লাল বর্ণের। সেই সাথে পেশিগুলো কেমন বেরিয়ে আসা, যেন চামড়ার পরত কম। তবে আরেকটি বিচিত্র ব্যাপার হলো, জন্তুটার কোনো লিঙ্গ নেই!
মুখ তুলে জন্তুটা উপরে তাকাল। এরপর বলল, ‘উপোরে কিহ! আমি নিচেহ!’

“আমি জানি। রহমত আশপাশে আছে কিনা তা দেখছি। ভেতরে ঢুকো!’’

এরপর জন্তুটা বিনা বাক্য ব্যয়ে ভেতরে ঢুকে পড়ল। জন্তুটার মুখ মানুষের মতো নয়। বরং ইঁদুরের মতো চেহারা, চোয়াল ভর্তি এলোমেলো ছোটো দাঁত এবং খরগোশের মতো খাঁড়া দুটো কান! সেই সাথে পিঠের উপর একদলা মাংসের স্তুপ। এই স্তুপের ভারেই জন্তুটা কুঁজো।

“কীজন্য এলে?’’ দরজা বন্ধ করে হতাশ স্বরে প্রশ্ন করলেন তিনি।
“বার্তাহ, বার্তাহ।’’ এরপর জন্তুটা দু'হাত দিয়ে চেয়ারের ওপর ভর দিয়ে উঠে বসল। 
“কী বার্তা?’’

“ওকেহ মারতেহ হবেহ।’’ ফিসফিস তবে কর্কশ স্বরে কথাটা বলল জন্তুটা।
“আমি পারব না। তুমি জানো সেটা। আমার দু'হাত বন্ধ, দু'পাও। আমি নিজের রুহকে বন্দি করে রেখেছি। না যিশু, না শয়তান- কারও গোলাম নই।’’
“শয়তান? সেতান বল!’’ রাগান্বিত স্বরে বলল জন্তুটা।
“অথোসিস, বছর দুয়েক পর এলে। একটু আমার ছবিগুলো দেখবে না?’’ বেশ আয়েশের সঙ্গে বললেন তিনি।

“আমিহ বার্তাহ এনেছিহ, ঘুরতেহ নয়।’’ এরপর অথোসিস নামক প্রাণীটা চেয়ার ছেড়ে ঝাঁপ দিয়ে মেঝেতে নামল। তারপর ধীর পায়ে এগিয়ে এসে বলল, ‘ছেলেটাকে মেরেহ ফেলোহ!’ বলেই জন্তুটা হাঁটা ধরল। দরজার দ্বারে এসে সামান্য কাঁধ বাকিয়ে বেশ নিচু স্বরে বলল, ‘সোলোমনস ঢাল…!’ এরপর দরজার ভেতর দিয়ে মিলিয়ে গেল। জন্তুটার শব্দ উচ্চারণে বিক্ষিপ্ততার কারণ, জিহ্ব। জন্তুটার মুখে জিহ্বা নেই!

স্যার থমাস মৃদু হেসে উঠলেন। তারপর নিজ থেকে বিড়বিড় করে আওড়ালেন, ‘মিত্র আমার!’

 সাথে থাকছে চিরকুট ও অটোগ্রাফসহ আকর্ষণীয় বুকমার্ক।
প্রি-অর্ডার চলবে ১০ই জুলাই থেকে ৩১ই জুলাই পর্যন্ত। ১ই আগস্ট রিলিজ ডেট! 

থামেন যাইয়েন না পোস্ট এখনো শেষ হয়নাই অফার আরো আছে!Rakib-SAAS67 আমার এই স্পেশাল প্রোমোকোডটা ব্যবহার করে প্রকাশনীর ইনবক্স থেকে অর্ডার করলেই পাবেন আরো ৫% ডিসকাউন্ট! বুকমার্ক চিরকুট, ৪৫% ছাড় আর চাই? সুতরাং চট জলদি অর্ডার করে ফেলুন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ