দ্য ল্যান্ড অফ মিরাকুলা : লেখক আসিফ মাহমুদ - রিভিউ | The Land Of Mirakula

বইঃ দ্য ল্যান্ড অফ মিরাকুলা
লেখকঃ আসিফ মাহমুদ
প্রথম প্রকাশঃ ২০২০
পৃষ্ঠাঃ ১৩৫ 

ব্যক্তিগত রেটিংঃ ২/৫ 

বুক রিভিউ লিখে আজ অবধি যত বই পেয়েছি তার মধ্যে তুলনামূলকভাবে কম মানসম্মত বই সম্ভবত এটি। বইয়ের নাম "দ্য ল্যান্ড অফ মিরাকুলা" লেখক আসিফ মাহমুদ।


প্লট ভালো ছিল। যদিও নতুন কোন প্লট না, শুভ আর অশুভর লড়াই নিয়ে কাহিনী। কিন্তু বাস্তব পটভূমিতে ফ্যান্টাসি ঘরানার উপন্যাস রচনা করাটা যথেষ্ট সাহসিকতার পরিচয় বহন করে। তবুও বইটাকে দুইয়ের বেশি দিতে পারলাম না লেখকের শব্দ চয়ন, চরিত্র চিত্রনে অদক্ষতা, কিছু প্রশ্নের উত্তর না পাওয়া, বানান ভুল,বাহুল্যদোষ ইত্যাদি কারনে। এ ধরনের বই কমপক্ষে ৩০০ পৃষ্ঠার হওয়া উচিৎ ছিল কিন্তু ১৩৫ এ শেষ করে দিয়ে উপন্যাসটার বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে। যদিও লেখক কষ্ট করেছেন এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। গ্রিক পুরাণ, স্পেনিস ভাষা, জিন জাতির অবতারনা, চীনের ঐতিহাসিক যুদ্ধ ইত্যাদি নানা ক্ষেত্র থেকে নানাবিধ তথ্য দিয়ে বইটা ভারি করার চেষ্টা করা হয়েছে (যাকে বলে "Jack of all trades master of none")। এতো দিকে না গিয়ে যেকোন একটি বিষয়ের উপর প্রয়োজনীয় জ্ঞান আহরন করে তারপর বইটা লিখলে বোধ হয় ভালো হতো। সব থেকে খারাপ লেগেছে যেটি তা হলো, উপন্যাসের খলনায়ক এবং নায়ক চরিত্র নির্মাণে অস্বাভাবিক রকমের উদাসীনতা। এরা হয় বমি করে না হয় অজ্ঞান হয়ে যায় কিন্তু এদের শক্তিমত্তা মোটেই বিশ্বাসযোগ্য হয়ে উঠেনি। ভিলেনের শক্তি প্রদর্শনের নমুনা হলো গলা টিপে দুটো মানুষ মেরে ফেলা, তাও ভুলে। আর নায়ক হলো "মেঘনাদবধ কাব্য" র রামের মতো। রাম যেমন দেব-দেবীর সাহায্য ছাড়া চলতেই পারেনি নায়কও তেমন। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কারো না কারো উপর ভর করে এসেছে। দুই চরিত্রের কোনটার মধ্যেই নিজস্বতা বলে কিছু পাইনি।  

শুভ শক্তি সম্পর্কে বিস্তর আলাপ থাকলেও অদ্ভুত ব্যাপার, প্রতিপক্ষ শক্তি সম্পর্কে তেমন কোন আলোচনা নেই। বইয়ের নাম "দ্য ল্যান্ড অফ মিরাকুলা" তাই এখানে মিরাকুলার আলোচনা থাকবে এটাই স্বাভাবিক কিন্তু উপন্যাসে একটা লক্ষ্য স্থির করে দেয়া আছে তা হলো দুই প্রতিপক্ষের সংঘর্ষ। সেই হিসেবে শয়তানের দল তাদের রাজ্য ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো উচিৎ ছিল। কিন্তু সেভাবে কিছুই পেলাম না। 

এতোকিছুর পরও ইতিবাচক কিছু দিক আছে। লেখকের রচনাশৈলী ভালো। এই বইটি আমি কোরবানি ঈদের ব্যস্ততার মাঝেও দেড় দিনে শেষ করতে পেরেছি কারন লেখার গতি ছিল। চরিত্রগুলোর পূর্ব জীবনের বর্ণনা যুক্তি সহকারে উপস্থাপিত হয়েছে। এমনকি শেষে যুদ্ধের চিত্রটি বেশ জীবন্ত। 

"বাংলা প্রকাশন" এর প্রডাকশন ভালো লেগেছে। ভালো মানের কাগজ, বইয়ের শক্ত বাঁধুনি, বুকমার্ক হিসেবে লাল ফিতা দেয়া (অনেক মোটা মোটা বইয়েও তা থাকে না) ইত্যাদি মিলিয়ে সুন্দর একটি বই। 

গুডরিডসে এটার রেটিং ৫। একজনই দিয়েছে। কী বুঝে দিল আমি জানি না। 

যাই হোক, দিনশেষে কষ্টই পেলাম।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ