- বই : দ্য ম্যান ইন দ্য হাই ক্যাসেল পিডিএফ ডাউনলোড
- লেখক : ফিলিপ কে ডিক
- অনুবাদ : খালেদ নকীব
- এডিটিং : আশরাফুল সুমন
- প্রচ্ছদ : সালমান ইউজারসিফ
- পৃষ্ঠা সংখ্যা : ২৮৮
- মুদ্রিত মূল্য : ৩২০ টাকা
- বাঁধাই : পেপারব্যাক
- ধরণ : অল্টারনেটিভ হিস্ট্রি
যদির কথা নদীতে ফেলো বলে একটা কথা আছে বৈকি। অর্থ ক্লিয়ার। যদির কথা নিয়ে বেশি মাথা ঘামিও না। সময় নস্ট করো না। তবে মানুষের ক্রিয়েটিভ চিন্তার ইতিহাসে এই যদি ধারণাটার ইমপ্যাক্ট কিন্তু ম্যাসিভ। এই ক্ষেত্রে অবস্য যদি দিয়ে কথাটা কে তুলছেন, সেটা গুরুত্বপূর্ণ!
ACKNOWLEDGMENTS
The version of the I Ching or Book of Changes used and quoted in this novel is the Richard Wilhelm translation rendered into English by Cary F. Baynes, published by Pantheon Books, Bollingen Series XIX, 1950, by the Bollingen Foundation, Inc., New York.
The haiku on page 45 is by Yosa Buson, translated by Harold G. Henderson, from the Anthology of Japanese Literature, Volume One, compiled and edited by Donald Keene, Grove Press, 1955,
New York.
The waka on page 128 is by Chiyo, translated by Daisetz T. Suzuki, from Zen and Japanese Culture, by Daisetz T. Suzuki, published by Pantheon Books, Bollingen Series LXIV, 1959, by the Bollingen Foundation, Inc., New York,
I have made much use of The Rise and Fall of the Third Reich, A History of Nazi Germany, by
William L. Shirer, Simon and Schuster, 1960, New York; Hitler, a Study in Tyranny, by AlanBullock, Harper, 1953, New York;
The Goebbels Diaries, 1942-1943, edited and translated by Louis P. Lochner, Doubleday & Company, Inc., 1948, New York; The Tibetan Book of the Dead, compiled and edited by W. Y. Evans-Wentz, Oxford University Press, 1960, New York;
The Foxes of the Desert, by Paul Carell, E.P. Dutton & Company, Inc., 1961, New York. And I owe personal thanks to the eminent Western writer Will Cook for his help with material dealing with historic artifacts and the U. S. Frontier Period.
যদি মানুষ আলোর গতিতে ভ্রমন করে, তাহলে কি হবে? খুবই সিম্পল, এমন কি হাস্যকরও মনে হতে পারে প্রশ্নটাকে, কিন্তু যখন প্রশ্নটা একজন বৈজ্ঞানিক করেন, তখন আর এটা হাস্যকর থাকে না। প্রশ্নটা তখন গভীর তৎপর্যপূর্ণ চিন্তায় রুপান্তরিত হয়। আপাত সাধারণ দৃশ্যমান অনেক ঘটনা থেকেও অসাধারণ অদৃশ্য সব ঘটনা বের করে আনা সম্ভব যদি দিয়। সব ধারণের ক্রিয়েটিভ কাজের পেছেনে, দৃশ্যমান বা অদৃশ্য, একটা “যদি” থাকেই থাকে।
ফিলিপ কে ডিকের লেখা অল্টারনেটিভ হিস্ট্রে জনরার উপন্যাস “দ্য ম্যান ইন দ্য হাই ক্যাসেল”-ও ওই যদির উপরে ভিত্তি করে লেখা। কেমন হতো, যদি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মিত্রবাহিনি বিজয়ি না হয়ে অক্ষশক্তি জয়লাভ করতো? কেমন হতো যদি পুরা দুনিয়াটা হিটলারের জার্মানি, ইতালির মুসলিনি আর জাপনা সম্রাটের মধ্যে ভাগাভাগি হয়ে যেত? কেমন হতো সেখানকার মানুষের জীবন? কোন কোন কালচারাল এবং ধর্মিয় প্রভাব ডমিনেট করতো মানব সমাজকে?
“দ্য ম্যান ইন দ্য হাই ক্যাসেল” উপন্যাসের ব্যাকগ্রাউন্ড—
১৯৩৩-এ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ফ্র্যাঙ্কলিন ডি রুজভেল্ট আততায়ীর গুলিতে খুন হলেন। ফলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে আগে আমেরিকায় তীব্র অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দেয়, যুদ্ধে ইনভল্ভ হওয়া থেকে তারা বিরত থাকে। এই সুযোগে হিটলারের নাৎসি জার্মানি ইউরোপ এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন দখল করে “বৃহত্তর জার্মানিক রাইখ” নামের একটা দেশ প্রতিষ্ঠা করে। এদিকে ইম্পেরিয়াল জাপান একাই পূর্ব এশিয়া এবং ওশেনিয়া ভোগ-দখল করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম উপকূলে হামলে পরে। উল্টো দিক থেকে পূর্ব উপকূলে আগ্রাসন চালায় নাৎসি জার্মানি। শেষে ১৯৪৭-এ মিত্র বাহিনীর আত্মসমর্পণে অবসান ঘটে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের।
এই হলো সংক্ষিপ্ত ব্যাকগ্রাউন্ড। উপন্যাস শুরু হয় ১৯৬২ সালের প্রক্ষাপটে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার ১৫ বছর পর। আমেরিকান ভুখন্ড তিন ভাগে বিভক্ত। বেশির ভাগ অংশই জাপান আর জার্মানির কবলে। মাঝে একটা নিউট্রাল জোন আছে। ততদিনে এই দুই শক্তির মধ্যেও আবার শুরু হয়ে গেছে দখলদারি আগ্রাসন, ইন্টারনাল টেনশন। একটা কোল্ড ওয়ার পরিস্থিতি। এই পরিস্থিতির মধ্যেই বেশ কয়েকটা ক্যারেক্টারকে সেন্টার করে এগুতে থাকে গল্প।
বড় কোন একশন নেই। নেই মাথা ঘুরিয়ে দেয়ার মত কোন টুইস্ট। নেই লোমহর্ষক থ্রিলও। আছে বেশ কয়েকটা চরিত্র। তাদের আন্তর্দ্বন্দ্ব, মানষিক টানাপোড়েন। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে বেঁচে থাকার জন্য বিশ্বাস আর যুক্তিকে আকড়ে ধরার চেষ্টা। আর আছে “দ্য গ্রাসহপার লাইজ হ্যাভি” নামের একটা ফিকশনের কথা। জ্বী, এ্যা নভেল ইউথইন এ্যা নভেল। যেটা আবার একটা অল্টারনেটিভ হিস্ট্রি উপন্যাস। সেখানে অন্য এক লেখক দেখান যে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আদতে মিত্রবাহিনি হারে নাই। আমেরিকানরাই দুনিয়ার নেতৃত্ব দিতেছে! কিছু আমেরিকানদের মনে এই উপন্যাস র্যাজিস্ট্যান্স, কারো মনে একটা আশা জাগানিয়া ঘোর তৈরি করে। বাস্তাব দুনিয়ার দুঃখ-যন্ত্রনাকে ভুলে তার এমন একটা অবাস্তাব দুনিয়ার কল্পনা করে যেখানে তারা বিজয়ি, যেখানে হীনমন্য নয় তাদের জীবন। স্বপ্ন আর আত্মবিশ্বাসে ভরপুর। দুনিয়ার নেতা তারা!
কিন্তু এ্যাজ এ পাঠক, আমাদের অবস্থান আদতে এই উপন্যাসের মধ্যে কোথায়?
বাংলাদেশ বা আফ্রিকার, অথবা তৃতীয় বিশ্বের একজন নাগরিক হিসেবে আমরা যদি নিজেদেরকে ডিকের এই উপন্যাসের মধ্যে স্থাপনি করি, আমেরিকা, র্জামানি বা জাপান, ক্ষমতার ছড়ি যেই ঘুরাক না কেন, আমাদের বাস্তবতায় খুব বেশি পার্থক্য আসলে নেই। আমরা এখন যেমন কোন না কোন ভাবে আমেরিকার মুখাপেক্ষি। তখন জাপানের মুখাপেক্ষি হয়ে থাকতাম। এই যা! দখলদারী রেজিমে সকল মানুষই দ্বিতীয় শ্রেনীর নাগরিক। নিজ দেশে উদবাস্তু! খুব স্পষ্ট করে না হলেও এই ইঙ্গিতটাই ডিক দিয়েছেন।
কেন বইটা ভালো লাগছে শেষ আগে টু দ্য পয়েন্ট যদি বলি—
ঘটনার প্রেক্ষাপট অনুযায়ী চরিত্রগুলোর চিন্তার লজিক, দ্বন্দ এবং কনফিউশন ডিক যেভাবে প্রজেন্ট করেছেন সেটা বেশ এনজয় করেছি। চরিত্রগুলোর বেশ জটিল সব অনুভূতি চমৎকার নিরপেক্ষ টোনে এক্সপ্লোর করেছেন।
পাওয়ার কি ভাবে একটি জনগোষ্ঠীর সমাজ এবং ব্যক্তির চেতনায় প্রভাব বিস্তার করে তার একটা চমৎকার চিত্র ফুটে উঠেছে। গ্রামসি’র হ্যাজিমনি থিউরির দারুন একটা ফিকশনাইজেশন বলতে হবে এই উপন্যাসকে।
এই উপন্যাসের স্লো গতি, লো-টোনের ভাষা, ভিন্নি ভিন্ন উদেশ্যে ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রগুলোর ভিন্ন ভিন্ন অভিমূখের যাত্রা। ক্যারেকটার ডেভলাপমেন্ট। বইয়ের ফ্রেম ভেঙ্গে চরিত্রগুলোর জীবন্ত হয়ে উঠার প্রক্রিয়া। পড়তে পড়তে এদের সাথে পাঠক হিসেবে একটা সর্ম্পকও তৈরি করে ফেলা যায়। ভালো ফিকশনের এই উপাদনটা আছে।
ঠিক মন্দ লাগা নয়, বাট মিস করেছি এমন দুটো পয়েন্ট বলি—
বইটাতে আরো ডিটেইলিং এর অনেক জায়গা ছিলো। এখানে শুধুমাত্র জাপান শাষিত অংশ এবং নিউট্রালজোনের মধ্যেই কাহিনির ব্যাপ্তি ছিলো। জার্মন অংশ, এবং ওখানের ঘটনা প্রবাহ আনতে পারতো। একটা ক্লিয়ার রেজিস্ট্যান্স ফোর্সের উপস্থিতি দেখানো যেত। কিছু একশন এবং থ্রিল উপাদানও এড করার মত স্পেস ছিলো। এইগুলো থাকলে একটা থটফুল উত্তেজনাপূর্ণ রিড হতো বইটা।
দ্বিতীয় বইটার এন্ডিংটা ডিক ঠিক ক্লিয়ার কোন সমাপ্তির দিকে নেন নাই। ডিকের ইচ্ছে ছিলো এই উপন্যাসের একটা সিকুয়েল লেখা, কিন্তু নাজি ইতিহাস নিয়ে আবার পড়াশুনা করার মত মানষিক শক্তি না থাকাতে সেটা আর করা হয়ে উঠে নাই লেখকের। আর উপন্যাটা পড়তে পড়তেও বোঝা যায় যে রাইটারের উদ্দেশ্য ঘটনার বিস্তারের দিকে বা প্ল্যাট টুইস্ট, একশন জমিয়ে তোলার দিকে ছিলো না। ছিলো কতৃত্ববাদী স্টেটের মাঝে কতগুলো চরিত্রগুলোর নানামুখি বিন্যাসের দিকে।
১৯৬২ সালে প্রকাশিত পিকেডি’র এই উপন্যাস হুগো এওয়ার্ড জয় করে নেয়। এটি পিকেডি’র ওয়ান অব দ্য ফাইনেস্ট কাজ। খালেদ নকীবরে অনুবাদ বেশ ভালো লেগেছে। বইটির পেপারব্যাক এডিশন বের করেছে পেপারভয়েজার। নিঃসন্দেহে সময় উপযোগী উদ্যোগ। বইটি কৌতুহলী পাঠকদের হাতে হাতে শোভা পাক, এই প্রত্যাসা করছি।
0 মন্তব্যসমূহ
ℹ️ Your Opinion is very important to us, Please Writer your comment below about this Post.....