বিয়ের জন্য প্রয়ােজনীয় কিছু বিষয়

আবু কুরায়রা ৭৪ বর্ণনা করেছেন, নাবি বলেছেন, “চারটি জিনিস দেখে একজন নারীকে বিয়ে করা হয় তার সম্পদ, বংশমর্যাদা, রূপসৌন্দর্য এবং দীনদারি। তােমরা বিয়ের সময় দীনদার নারীদের অগ্রাধিকার দাও।” (সহীহ আল-বুখারি, হাদীস নং-৫০৯০)

বিয়ে করতে চাচ্ছেন এমন অনেকেই আমার কাছে পরামর্শ চেয়েছেন জীবনসঙ্গী নির্বাচনের ব্যাপারে। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে উভয়ের প্রতি আমার পরামর্শ একই। বিয়ের জন্য যে ছয়টি বিষয় খুব দরকার সেগুলাে হচ্ছে:

১. ইসলাম: রাসূলুল্লাহ ক্লঃ যেমনটা বলেছেন, চারটি বিষয় দেখে নারীদের বিয়ে করা হয়ে থাকে। এর মধ্যে দীনদারি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। পুরুষদের বেলাতেও একই বিষয় প্রযােজ্য। সুতরাং প্রথমেই দেখতে হবে, আপনার সম্ভাব্য জীবনসঙ্গী ইসলামের নূ্যনতম মৌলিক বিধিনিষেধগুলাে পালন করে কি না। ব্যাপারটি যাচাই করার জন্য কয়েকটি বিষয় লক্ষ্য করা যেতে পারে। যেমন:
দীন: সালাত, সাওম ও যাকাত ঠিকমতাে আদায় করে কি না। কুরআনের জ্ঞান আছে কি না, নিদেনপক্ষে দেখে স্বচ্ছন্দে কুরআন তিলাওয়াত করতে পারে কি না। যেসব নারীপুরুষেরা বিয়ে করার মতাে পরিণত বয়সে উপনীত হয়েছে, অথচ শুদ্ধভাবে কুরআন পাঠ করতে পারে না; তাদের জন্য এটা খুবই লজ্জাজনক বিষয়!

চরিত্র: সাহস, ধৈর্য, আত্মসম্মান, আত্মবিশ্বাস, ধীরস্থির স্বভাব, পুরুষের পৌরুষদীপ্ততা, নারীদের লজ্জাশীলতা, বিনয়, যেকোনাে পরিস্থিতিতে মাথা ঠান্ডা রাখতে পারা, শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান, নীরবতায় স্বাচ্ছন্দ্য বােধ করা, বাচাল প্রকৃতির না হওয়া ইত্যাদি।

চেহারা: মেয়েদের ক্ষেত্রে পরিপূর্ণ পর্দা আর ছেলেদের ক্ষেত্রে দাড়ি। রুচিশীল ও বুদ্ধিমতি কোনাে মেয়ে নিশ্চয়ই এমন একজন পৌরুষহীন পুরুষকে বিয়ে করতে চাইবে না, যাকে দেখতে মেয়েদের মতাে লাগে। বিষয়টি সত্যিই বিব্রতকর। বুড়াে বয়সে বেশিরভাগ ছেলে তার বাবার মতাে আর বেশিরভাগ মেয়ে তার মায়ের মতাে চেহারা পায়। তাই চেহারার বিষয়টি যদি আপনার কাছে খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে থাকে, তাহলে তাদের বাবা ও মায়ের চেহারার গঠন দেখে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। কারণ, এই চেহারাটিই আপনি প্রতিদিন সকালে দেখবেন।

সতর্কতা: কোনাে মানুষ যদি আল্লাহর কথাকেই গুরুত্ব না দেয়, তাহলে একসময় তারা আপনার কথাকেও পাত্তা দেবে না। জীবনের যেকোনাে কঠিন মুহূর্তে আল্লাহভীতিই আপনার সমস্যা সমাধানে সবচেয়ে বেশি কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে; বরং বলা যেতে পারে, আল্লাহভীতি না থাকাটাই একটা বিপদ এবং সবচেয়ে ভয়াবহ বিপদ। কেননা, যেকোনাে বিরােধ মীমাংসায় আপনার শেষ আশ্রয় হলাে কুরআন ও সুন্নাহ। 

অতএব, আপনার জীবনসঙ্গী যদি এর প্রতি গুরুত্ব দেয় তাহলে আপনি নির্ঘাত এক অকূল পাথারে পড়বেন। কয়েক মাস বাদেই তাদের রূপলাবণ্য বা স্মার্টনেসের আকর্ষণ হারিয়ে যেতে শুরু করবে। তার সব সম্পদও কোনােভাবেই আপনার নয়। এই মানুষটিই আপনার সন্তানদের প্রতিপালন করবে, আর এই সন্তানেরাই আপনার জান্নাত বা জাহান্নামের কারণ হবে। সুতরাং, আপনি যদি এমন কাউকে খুঁজে বের করে থাকেন যে তার দীনদারির ব্যাপারে সচেতন নয়, তাহলে সে দেখতে যতই দারুণ হােক না কেন আপনি ডুবেছেন! এখনি সরে আসুন, এক্ষুনি! এটা খুবই ভয়ানক একটা ব্যাপার। আর এই লেখাটাও পড়া বন্ধ করে দিন; কেননা কারও দীনদারিই যদি ঠিক না থাকে, তাহলে এই বই পড়ে সময় নষ্ট করাটাও হবে অর্থহীন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ