ইসলাম পরিচিতি : ড. মুহাম্মাদ ইবন আব্দুল্লাহ ইবন সালেহ আস-সুহাইম | Islam Porichiti

  • বই : ইসলাম পরিচিতি
  • লেখক : ড. মুহাম্মাদ ইবন আব্দুল্লাহ ইবন সালেহ আস-সুহাইম
  • প্রকাশনী : কাশফুল প্রকাশনী
  • বিষয় : ইসলামি বিধি-বিধান ও মাসআলা-মাসায়েল
  • অনুবাদক : জাকেরুল্লাহ আবুল খায়ের
  • সম্পাদক : শাইখ ড.আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া
  • পৃষ্ঠা : 224, কভার : পেপার ব্যাক
  • আইএসবিএন : 9789849502692, ভাষা : বাংলা


অনেকদিন থেকে চিন্তা-ভাবনা করছিলাম যে, সাধারণ মানুষের বুঝার মতো সহজ-সরল ভাষায় দীন ইসলামের পরিপূর্ণ ধারণার একটি বই পাঠকদের হাতে তুলে দেয়া খুবই জরুরি। অল্প শিক্ষিত থেকে শুরু করে সকলেই যেন বইটি পড়তে পারে এবং ইসলাম সম্পর্কে সুস্পষ্ট ও সন্তোষজনক ধারণা লাভ করতে পারে; এমনকি যারা বই পড়তে পারে না, তাদেরকে বইটি পড়ে শোনালে তারাও যেন দীন ইসলামের সঠিক ধারণা পেতে পারে। পাশাপাশি উচ্চশিক্ষিতরাও অপছন্দ করবে না এমন একটি বই প্রকাশ করতে চেয়েছি, যা থেকে জনগণ ইসলামের এ পরিমাণ জ্ঞান অর্জন করতে পারবে, যা তাদেরকে খাঁটি মুসলিম হিসেবে গড়ে তোলার জন্য সহায়ক হবে এবং অন্যদের নিকটও দীন ইসলামের আলো ছড়িয়ে দেয়ার জন্য তাদের সাহায্য করবে। 

আলহামদুলিল্লাহ আমার চাওয়া আল্লাহ তা’আলা কবুল করেছেন, ড. মুহাম্মাদ ইবন আব্দুল্লাহ ইবন সালেহ আস-সুহাইম এর লেখা “ইসলাম পরিচিতি” বইয়ের মাধ্যমে। বইটির সম্পাদনা করে মান আরো বৃদ্ধি করেছেন, শাইখ প্রফেসর ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া। দো’আ করি, আল্লাহ যেন এই বইয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট লেখক থেকে পাঠক সকলের নাজাতের উসিলা বানিয়ে দেন। আমীন।

সঠিক পথ কোনটি?

মানুষ যখন বড় হতে শুরু করে এবং বুঝতে শিখে তখন তার মাথায় বেশ কিছু প্রশ্ন জাগে। যেমন, আমি কোথা থেকে এসেছি, কেন এসেছি, আবার কোথায় আমার গন্তব্য? কে আমাকে সৃষ্টি করেছেন, কে আমার আশপাশের পৃথিবীকে সৃষ্টি করেছেন, কে এই পৃথিবীর মালিক এবং কে এ পৃথিবী পরিচালক? এ ধরনের আরও অনেক প্রশ্ন তার মাথায় ঘুরপাক খায়।

মানুষ এ প্রশ্নগুলোর উত্তর নিজে নিজেই জানতে পারে না। আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানও এ প্রশ্নগুলোর সঠিক উত্তর দেয়ার মত উন্নতি লাভ করেনি। কারণ, এগুলো এমনই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যেগুলো দীনের গণ্ডিভুক্ত ও তার সীমারেখার বিষয়। এ কারণেই বিষয়গুলোকে কেন্দ্র করে রয়েছে একাধিক বর্ণনা, বিভিন্ন কুসংস্কার ও অসংখ্য রূপকথা রচিত হয়েছে, যা মানুষের হতভম্বতা ও দুশ্চিন্তা বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে। বস্তুত একজন মানুষ এ বিষয়গুলোর পরিপূর্ণ ও যথেষ্ট উত্তর তখনই জানতে পারবে যখন আল্লাহ তা'আলা তাকে এমন সঠিক দীনের পথ প্রদর্শন করবেন, যে দীন এ বিষয়গুলো সম্পর্কে এবং এ ধরনের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে চূড়ান্ত ও যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত প্রদান করেছে।

কারণ, এ বিষয়গুলো এমনই বিষয় যেগুলো গায়েবী তথা অদৃশ্য বিষয়াবলির সাথে সম্পৃক্ত। সঠিক দীনই শুধুমাত্র সত্য, সঠিক ও হকের কথা বলে। কেননা, দীন এককভাবে কেবল আল্লাহর পক্ষ থেকে যাকে আল্লাহ তা'আলা তার নবী ও রাসূলগণের নিকট ওহী হিসেবে প্রেরণ করেছেন। এ কারণেই প্রত্যেক মানুষের জন্য বাধ্যতামূলক হলো, সঠিক দীন অন্বেষণ করা, দীনের শিক্ষা গ্রহণ করা এবং এর প্রতি পরিপূর্ণ ঈমান আনা। যাতে করে তার থেকে সন্দেহ, সংশয় এবং কিংকর্তব্যবিমূঢ়তা দূর হয় এবং সঠিক পথ প্রাপ্ত হয়।

প্রিয় পাঠক! নিম্নোক্ত পাতাগুলোতে আমি আপনাকে মহান আল্লাহর একমাত্র সঠিক পথের অনুসরণ করতে আহ্বান করবো এবং সাথে সাথে আপনার সামনে এর কতক অকাট্য দলীল-প্রমাণ ও যুক্তি উল্লেখ করবো, যাতে করে আপনি মনোযোগ ও ধৈর্য সহকারে বিষয়গুলো খেয়াল করেন।

মহান আল্লাহর অস্তিত্ব, প্রভুত্ব, এককত্ব ও একক ইবাদত প্রাপ্তির বর্ণনা

কাফিররা আল্লাহকে বাদ দিয়ে তাদের বানানো উপাস্য ও সৃষ্টি অর্থাৎ গাছ পালা, পাথর এবং মানুষের উপাসনা করে থাকে। আর এজন্যই ইয়াহূদী ও মুশরিকরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আল্লাহ তা'আলার গুণাবলি বিষয়ে জিজ্ঞেস করে এবং তিনি কোত্থেকে আসলেন তাও জিজ্ঞেস করে তখন আল্লাহ তা'আলা তাঁর পরিচয় জানিয়ে নিচের আয়াতগুলো

অবতীর্ণ করেন। (قل هو الله أحد © الله الصمد و لم يلد ولم يولد * ولم يكن له كفوا أحد

“(হে মুহাম্মাদ) আপনি বলুন, তিনি আল্লাহ এক-অদ্বিতীয়। আল্লাহ কারো মুখাপেক্ষী নন, সকলেই তাঁর মুখাপেক্ষী। তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং তাঁকেও জন্ম দেয়া হয়নি। আর তাঁর কোনো সমকক্ষও নেই।” [সূরা আল ইখলাস: ১-৪] আর তিনি তাঁর নিজের পরিচয় দিয়ে বলেন,

إن ربكم الله الذي خلق السموات والأرض في ستة أيام ثم استوى على العرش يغشى اليل النهار يطلبه, حثيثا والشمس والقمر والنجوم مسخرات بأمره ألا له الخلق والأمر تبارك الله رب العلمين @ ﴾ [الأعراف: 53]

“নিশ্চয় তোমাদের রব আল্লাহ, যিনি আসমানসমূহ ও যমীন ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন; তারপর তিনি আরশের উপর উঠেছেন। তিনিই দিনকে রাত দিয়ে ঢেকে দেন, তাদের একে অন্যকে দ্রুতগতিতে অনুসরণ করে। আর সূর্য, চাঁদ ও নক্ষত্ররাজি, যা তাঁরই হুকুমের অনুগত, তা তিনিই সৃষ্টি করেছেন। জেনে রাখ, সৃজন ও আদেশ তাঁরই। সৃষ্টিকুলের রব আল্লাহ কত বরকতময়!” [সূরা আল-আ'রাফ: ৫৪] মহান আল্লাহ অন্য আয়াতে বলেন, الله الذي رفع السموات بغير عمد ترونها ثم استوى على العرش وسخر الشمس

বিস্তারিত দেখুন: শাইখ আব্দুল আযীয ইবন আব্দুল্লাহ ইবন বায রাহিমাহুল্লাহ প্রণীত 'আল আকীদা আস-সহীহা ওমা ইউদ্বাদ্দুহা' এবং শাইখ মুহাম্মাদ ইবন সালেহ আল উসাইমীন রাহিমাহুল্লাহ প্রণীত 'আকীদাতু আহলিস সুন্নাহ ওয়াল জামা'আহ'।
والقمر كل يجرى لأجل مسمى يدير الأمر يفضل الآيات لعلكم بلقاء ربكم توقنون 2) وهو الذي مدّ الأرض وجعل فيها روسي وأنهراً ومن كل الثمرات جعل فيها زوجين أثنين يغشى اليل النهار إن في ذالك لآيات لقوم يتفكرون 2)

“আল্লাহ, যিনি আসমানসমূহ উপরে স্থাপন করেছেন খুঁটি ছাড়া, তোমরা তা দেখছ। তারপর তিনি ‘আরশের উপর উঠেছেন এবং সূর্য ও চাঁদকে নিয়মাধীন করেছেন; প্রত্যেকটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত চলবে। তিনি সব বিষয় পরিচালনা করেন, আয়াতসমূহ বিশদভাবে বর্ণনা করেন, যাতে তোমরা তোমাদের রবের সঙ্গে সাক্ষাত সম্পর্কে নিশ্চিত বিশ্বাস করতে পার। আর তিনিই যমীনকে বিস্তৃত করেছেন এবং তাতে সুদৃঢ়পর্বত ও নদী সৃষ্টি করেছেন এবং সব রকমের ফল সৃষ্টি করেছেন জোড়ায় জোড়ায়। তিনি দিনকে রাত দ্বারা আচ্ছাদিত করেন। নিশ্চয় এতে নিদর্শন রয়েছে চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্য।” [সূরা আর-রা'দ: ২, ৩] অবশেষে আল্লাহ তা'আলা আরও বলেন,

الله يعلم ما تحمل كل أنثى وما تغيض الأرحام وما تزداد وكل شيء عنده بمقدار ه علم الغيب والشهدة الكبير المتعال 5 ) [الرعد: ۸، ۹]

“প্রত্যেক নারী যা গর্ভে ধারণ করে এবং গর্ভাশয়ে যা কিছু কমে ও বাড়ে আল্লাহ তা জানেন এবং তাঁর নিকট প্রত্যেক বস্তুরই এক নির্দিষ্ট পরিমাণ আছে। তিনি গায়েব ও প্রকাশ্যের জ্ঞানী, মহান, সর্বোচ্চ।” [সূরা আর রা‘দ: ৮, ৯] তিনি আরও বলেন,

قل من رب السموات والأرض قل الله قل أفاتخذثم من دونه أولياء لا يملكون لأنفسهم نفعا ولا ضرا قل هل يستوى الأعمى والبصير أم هل تستوى الظلمت والثور أم جعلوا لله شركاء خلفوا كخلقه، فتشبه الخلق عليهم قل الله خلق كل شيء وهو الواحد القهر ﴾ [الرعد: 16]

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ