মরণদৌড় : ইফতেখার আমিন | Morondour By Iftekhar Amin

  • বই             : মরণদৌড়
  • লেখক       : ইফতেখার আমিন
  • জনারা       : থ্রিলার,অ্যাকশন,অ্যাডভেঞ্চার
  • প্রকাশনী    : ঊর্মি প্রকাশনী
  • প্রচ্ছদ        : সাগর
  • পৃষ্ঠা           : ৪১৬ পৃষ্ঠা
  • মুদ্রিত মূল্য : ১৮০ টাকা

⚔️শুরুর আগে :
কখনো কী আপনার মনে এই প্রশ্ন জেগেছে যে, আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট কিভাবে গোটা পৃথিবী দখল করেছিলো? শুধুই কী পেশীশক্তি,বুদ্ধিমত্তা আর চৌকষ সেনাবাহিনীর কারনেই এটা সম্ভব হয়েছে, নাকি এর পিছনে লুকিয়ে রয়েছে অন্য কোনো রহস্য? যদি অন্য কোনো রহস্য থেকেই থাকে তবে সেটা কী? যদি এখন সেই রহস্য উন্মোচিত হয়ে যায় তবে তা কী মানবজাতির জন্য কল্যানকর হবে নাকি বয়ে আনবে অভিশাপ? সেই কল্পকাহিনী নিয়েই লেখা হয়েছে নাভেদ রেজা সিরিজের প্রথম বই ‘মরণদৌড়’।

🖋️সূত্রপাত : 
☠️☠️স্পয়লার এলার্ট☠️☠️

২০০৪ সালে নেতুরেই কার্তা আল্ট্রা-অর্থোডেক্স এর প্রধান মোশে হিলেল হিরশের একটি চিঠি যখন ফিলিস্তিনের মহান নেতা ইয়াসির আরাফাতের কাছে গিয়ে পৌঁছায় তখনি এই ঘটনার সূত্রপাত ঘটে। সেই চিঠিতে মোশে হিরোশ ইয়াসির আরাফাতকে সতর্ক করে দেয় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে খুঁজে পাওয় এক অজানা তবে ভয়ানক খনিজ সম্পর্কে যা মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম কোনো দেশের বিরুদ্ধে ব্যবহার হতে পারে। খনিজ পদার্থটা কী বা কোন দেশের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হবে সেটা জানা নেই মোশে হিরশের তবে মধ্যপ্রাচ্যের সবচাইতে অরক্ষিত মুসলিম দেশ ফিলিস্তিন। তাই ফিলিস্তিনের বিরুদ্ধে উক্ত বিপদজনক খনিজ ব্যবহারের আশংকাটা উড়িয়ে দেয়া যায় না। এই চিঠি যখন ইয়াসির আরাফাতের কাছে পৌঁছায় তখন তিনি রামাল্লায় বন্দি। তাঁর হাতে করার মতো কিছুই নেই। তবে মৃত্যুর আগে শেষ চেষ্টাটা তিনি করে যান। ছয়টি মুসলিম দেশের গোয়েন্দা সংস্থার কাছে ছয়টি চিঠি লিখে এক বিশ্বস্ত লোকের হাতে তুলে দেন তিনি। সেই চিঠি গুলো যথা স্থানে পৌঁছে দিতে ব্যার্থ হয় সেই লোক। কিন্তু জীবদ্দশায় লোকটি তার কাজ শেষ করে যেতে না পারলেও মারা যাবার পরে সেই চিঠি গুলো পুলিশের হাতে ঘুরে ফিলিস্তিন দূতাবাস হয়ে ঠিকই চলে আসে বাংলাদেশ কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির চিফ ইনাম আহমেদের কাছে। আর তখনি ইনাম আহমেদ দেখতে পান মাটির তলায় কেঁচো নয় সাপ রয়েছে। দ্রুত তিনি ফিলিস্তিনের মহান নেতা ইয়াসির আরাফাতের সুপারিশে তার সবচেয়ে দক্ষ এজেন্ট নাভেদ রেজাকে  ডেকে পাঠান। আদেশ দেন এই ভয়ানক খনিজ আকরিকের টিকির সন্ধান বের করে সম্ভাব্য বিপদের হাত থেকে পৃথিবীকে বাঁচাতে।

বইয়ের ভিতরের কাহিনী এখানেই শেষ করছি। বাকিটা আপনি পড়ার সময় জানতে পারবেন। এবারে শুরু হবে বইয়ের ভালো-মন্দ বিবেচনা।
তো ভালোটা দিয়েই শুরু করি।

🍁ভালো দিক :
প্রথমেই বলতে হবে এর দুর্দান্ত প্লটের কথা। একেবারে জটিলও নয় আবার খুব সরলও নয়। সেই সাথে গল্পের বর্ণনা ও গতিময়তা পাঠককে আঁকড়ে ধরে রাখবে। পড়তে গিয়ে আমি বেশ অস্বস্তিতে ছিলাম কারন বইটা যখন পড়া শুরু করি তখন আমার হাতে দু'টো অ্যাসাইনমেন্ট ছিলো। বইটা পড়তে শুরু করে যেই উত্তেজনা আর আকর্ষণ সৃষ্টি হয়ছিলো তা ঠিক মতো মিটাতে পারছিলাম না কারন অ্যাসাইনমেন্ট ঠিক সময়ে জমা দিতে হবে। এক দিকে অ্যাসাইনমেন্টের চাপ আরেক দিকে গল্পে এর পরে কী হবে তা জানার ইচ্ছে। সবমিলে এক বাজে বেসামাল অবস্থায় পরে গেছিলাম। তবে গত দু'দিনে অ্যাকাডেমিক পড়াশোনার চাপ কমে যাওয়ায় বইটা শেষ করে এখন শান্তি পেলাম। এটা যে দুর্দান্ত এক থ্রিলার তাতে সন্দেহ নেই। 

🕷️খারাপ দিক :
বইটাতে খারাপ দিক বলতে কিছু টেকনিক্যাল আর তথ্যগত ভুল আছে। যেমন নায়াগ্রায় যেই লড়াইটা হয় সেখানে গল্পের নায়ক নাভেদ রেজার হাতে ছিলো এমপি-৪০ সাব-মেশিনগান যেটাতে ৯×১৯ মি.মি. বুলেট ব্যবহার করা হয়। কিন্তু লেখক প্রথম দু'বার লিখেছেন ৫.৫৬ ন্যাটো গ্রেড বুলেটের কথা। কিন্তু তৃতীয়বার সেই ভুল না করে সেখানে ৯ মি.মি. বুলেটের কথাই লিখেছেন। এখানে লেখক রেজার সহযোদ্ধাদের অস্ত্রের ক্যালিভারের সাথে রেজার অস্ত্রের ক্যালিভার গুলিয়ে ফেলেছিলেন। যারা বইটি ইতিমধ্যে পড়েছেন তারা বুঝতে পারবেন। কারন রেজার সহযোদ্ধাদের হাতে ছিলো এইচকে-৪১৬ যা ৫.৫৬ ক্যালিভারের বুলেট ব্যবহার করে।
আরেকটা তথ্যগত ভুল আছে সেটা হচ্ছে হযরত হুসাইন (রা.) এর সাথে ফোরাত নদীর তীরে কারবালা ময়দানে ইয়াজিদের সৈন্যদের যে যুদ্ধ সংগঠিত হয় সেটা ৬৮০ খৃষ্টাব্দে হয়। কিন্তু বইতে লেখা আছে ৮৬০ খৃষ্টাব্দের কথা। বুঝাই যাচ্ছে টাইপিং এর ভুল কিন্তু ইতিহাসের ব্যাপারটা সালের উপরেই নির্ভর করে। তাই এসব বিষয়ে কঠোর সতর্কতা অবলম্বন করা উচিৎ ছিলো। সেই সাথে হযরতে হুসাইন (রা.) ও তাঁর পরিবারকে ইসলামের প্রথম শহিদ বলে উল্লেখ করেছেন বইতে থাকা একটি চরিত্র। এই ব্যপারটা কোন দৃষ্টিকোণ থেকে বলা হয়েছে বুঝতে পারিনি। কারন আমরা জানি ইসলামের প্রথম শহিদ হযরত সুমাইয়া (রা.)। এছাড়া আর কোনো খারাপ দিক নজরে আসেনি। 

🦋পাঠ অনুভূতি :
আগেই বলেছি যে পড়বার সময় অবসর খুব একটা পাইনি। তবুও অ্যাসাইনমেন্ট লিখার মধ্যেও মাঝরাতে বইটা পড়তাম। আসলে পড়তাম না, দেখতাম। বা বলা যায় পরিচালনা করতাম। যেনো ‘মরণদৌড়’ কোনো চলচ্চিত্র আর আমি তার পরিচালক। মস্তিস্ক সিনেমাটোগ্রাফি সাজিয়ে দিচ্ছে আর আমি সেখানে অভিনেতাদের আভিনয় করাচ্ছি। সবগুলো চরিত্রে কাল্পনিক মুখ তৈরি করে নিয়েছি শুধু নাভেদ রেজা ছাড়া। তার চরিত্রে হেনরি কেভিলকে খুব ভালো ভাবে মানিয়ে নিয়েছিলাম। আর শেষ দৃশ্যে কার্থেজের সাথে অ্যাকশন দৃশ্য আমার মনে হচ্ছিলো রেজা যেনো কার্থেজ নয় ডিসি কমিক্সের ভিলেন চরিত্র বেনের সাথে লড়াই করছে। কী দুর্দান্ত সব অ্যাকশন! সত্যিই অনবদ্য এক থ্রিলার পড়েছি। সেই সাথে ‘মরণদৌড়’ নামের সার্থকতাও খুঁজে পেয়েছি ভালো ভাবেই। পাঁচবার মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছে নাভেদ রেজা। কখনো মৃত্যু তাকে তাড়া করেছে আবার কখনো সে নিজেই মৃত্যুর দুয়ারে কড়া নেড়েছে।  বিস্ময়কর ভাবে প্রতিবারই মৃত্যুর মুঠো গলে বেরিয়ে এসেছে। যা সত্যিই বলে বুঝাবার মতো নয়।

🖊️লেখক সম্পর্কে :
ইফতেখার আমিন যে গুণী লেখক তাতে সন্দেহ কোথায়? তিনি ছায়ার আড়ালে এবং আলোতে বসে তৈরি করেছেন অসংখ্য জনপ্রিয় সাহিত্যকর্ম। সেই অভিজ্ঞতার ছাপ স্পষ্ট দেখা গেছে মরণদৌড়ে। যেভাবে গল্পের গাঁথুনি গেঁথেছেন তাতে পাঠকের আকৃষ্ট না হয়ে উপায় নেই। একই কাহিনিতে পাঁচবার অ্যাকশন দৃশ্য  রেখেছেন। তবে তাতে করে তদন্ত ও অনুসন্ধান অংশে মোটেও হেলা করেননি। একশন আর তদন্ত ও অনুসন্ধান সমান্তরাল ভাবে এগিয়ে নিয়েছেন। সেই সাথে উনার দেয়া ক্ষুদ্র ডিটেইলিং গুলো বেশ মুগ্ধ করেছে। যেমন নারীদের স্বর্ণের অলংকার যেমন উজ্জ্বল হয় পুরুষের স্বর্ণের অলংকার তেমন উজ্জ্বল হয় না। রানওয়ের টারমাকে কুয়াশা আর রৌদ্রের খেলা ইত্যাদি। সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে উনার লেখন কৌশল। প্রতিটা অ্যাকশন দৃশ্যের শেষে তিনি রেজাকে এমন নিরুপায় অবস্থায় ফেলে দিয়েছেন যে আমার মনে হয়েছিলো মৃত্যু ছাড়া রেজার আর কোনো উপায় নেই। কিন্তু আমাকে হতবাক করে দিয়ে কোনো না কোনো উপায় তিনি ঠিকই রেজাকে মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরিয়ে এনেছেন। আর আশ্চর্য্যের বিষয় হচ্ছে এরকমটা প্রতিটা অ্যাকশন দৃশ্যের শেষেই ঘটেছে। যা মোটেও সহজ কোনো কাজ নয়।

📜পাঠক হিসেবে লেখকের প্রতি অভিযোগ :
অভিযোগ একটা নয় বেশ কয়েকটা আছে। 
১. ইনাম আহমেদের কোনো অতীত ইতিহাস নেই। 
২. নাভেদ রেজার সার্ভিস টাইম এবং অরিজিন সম্পর্কে কোনো স্পষ্ট ধারণা দেয়া হয়নি।
৩. নাভেদ রেজার ট্রেডমার্ক ওয়েপন সম্পর্কে কিছুই বলা হয়নি। শুধু বলা হয়েছে বেরেটা .২২ ক্যালিভার পিস্তল। যদি তাই হয়ে থাকে তবে ধরে নেয়া যায় সেটা হবে বেরেটা-২১এ ববক্যাট বা তারই কোনো জাতিভাই। 
কিন্তু কেনো? বর্তমানে এত আধুনিক অস্ত্র থাকতে সেই ১৯৮০ সালের অস্ত্রই কেনো? গ্লোক,এফএন,সিগ সাওয়ারের মতো অত্যাধুনিক পিস্তল থাকতে থাকতে বেরেটাই কেনো? জিনিসটা দেখতে মোটেই ভালো লাগে না। গ্লোক-৪৩ বা সিগ পি-৩৬৫ হলে কী জিনিসটা বেশি মানাসই হতো না?

আশা করি নাভেদ রেজা সিরিজের পরের কিস্তিতে আমার এই অভিযোগ গুলো লেখক বিবেচনায় রাখবেন।

📗প্রচ্ছদ ও বাধাই :
প্রচ্ছদটা অন্যান্য পেপারব্যাক বইয়ের প্রচ্ছদের মতোই বিদেশি ছবির থেকে নেয়া হয়েছে। তাই প্রচ্ছদে এস্টারঅগ (গল্পের ভিতরের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান প্রচ্ছদে ফুটিয়ে তোলা, যেটা গল্প না পড়া অবধি বুঝা যায় না) খুব একটা নেই। মরণদৌড়ের প্রচ্ছদটা সম্ভবত ১৯৭৮ সালে মুক্তি পাওয়া ‘দ্য ড্রাইভার’ চলচ্চিত্রের পোস্টারকে সম্পাদনা করে তৈরি করা হয়েছে। তবে কাগজ ও বাঁধাইয়ের মান অন্যান্য পেপারব্যাক বইয়ের মানকে ছাড়িয়ে গেছে অনেকখানি। সাদা নিউজপ্রিন্ট কাগজে ছাপা হয়েছে লেখা। প্রচ্ছদের কাগজটাও বেশ উন্নত মানের। এই কাগজে প্রচ্ছদটা খুবই উজ্জ্বল হয়ে ফুটে উঠেছে। বাঁধাইও ভালো। অনেক ঝক্কিঝামেলার মধ্যে পড়েছি যেনোও বাঁধাই নরম হয়ে যায়নি। লেখক বই প্রকাশ হবার আগে বইয়ের মান নিয়ে কোনো আপোষ করবেন না বলে কথা দিয়েছিলেন। 
তিনি তার কথা রেখেছেন।

☘️শেষের আগে :
দেশের বর্তমান পরিস্থিতিটা গুপ্তচরদের নিয়ে সিরিজ লিখবার জন্যে মোটেও ভালো পরিস্থিতি নয়। কারন উপযুক্ত শত্রুদেশের অভাব। যেখানে শত্রুদেশ নেই সেখানে একজন গুপ্তচর লড়াই করবে কার সাথে? আপনি হয়তো বলতে পারেন যে আমাদের প্রতিবেশি দেশ গুলো আমাদের বন্ধুভাবাপন্ন হলে আদতে তো তা নয়। 

এমন পরিস্থিতিতে তো অনেক ভালো আর দুর্দান্ত গুপ্তচরাবৃত্তির কাহিনি লিখা যায়। কিন্তু সমস্যাটা হচ্ছে প্রতিবেশি রাস্ট্রগুলো আমাদের ভালো না চাইলেও সেই কথা বলবার মতো উপায় আমাদের কারোই নেই। এমনকি সরকারেরও না। কারন আমাদের পররাষ্ট্র নীতির মূল কথা হচ্ছে, “সবার সাথে বন্ধুত্ব,কারো সাথে শত্রুতা নয়।” এখন আমরা সবাই জানি কোন রাষ্ট্র গোপনে আমাদের ক্ষতি করতে চাইছে। কিন্তু তাকে আমরা শত্রু বানিয়ে দিতে পারি না। কারন তাদের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তুলাই আমাদের রাষ্ট্রের লক্ষ্য। আর এই কারনেই হালে পানি পাচ্ছে না বাংলা সাহিত্যের বাঘা বাঘা সব গুপ্তচরেরা। তাই তারা বেছে নিয়েছে দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালন নীতি। 

এমনি এক দুঃসময়ে নতুন একটি গুপ্তচর চরিত্র নিয়ে হাজির হওয়াটা সত্যিই এক চ্যালেঞ্জিং কাজ৷ সেই সাহস দেখিয়েছেন ইফতেখার আমিন সাহেব। আর ‘মরণদৌড়’ এর মাধ্যমে সেই চ্যালেঞ্জটাকে শুধু গ্রহনই করেননি,বাজিমাতও করে দিয়েছেন। 
কিন্তু এটা সবে শুরু। ভবিষ্যতেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আশা করি।

🍂শেষ কথা :
আপনি যদি পৃথিবীর চারটি মহাদেশ জুড়ে এক বিচিত্র ও রোমাঞ্চকর অভিযানের সাক্ষী হতে চান। তাহলে ‘মরণদৌড়’ বইটি আপনাকে ডাকছে। কিন্তু সাবধান! এটা আপনাকে মরণদৌড় করিয়ে তবেই ছাড়বে। 

ধন্যবাদ 
ভুলত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। 
এবং আমার লেখায় কোনো তথ্যগত ভুল থাকলে তা সংশোধন করে দিবেন।

Credit : Tanvir Hossain

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ