ভূতের বাচ্চা সোলায়মান PDF - মুহম্মদ জাফর ইকবাল | Vuter Baccha Sulaiman

ভূতের বাচ্চা সোলায়মান মুহম্মদ জাফর ইকবাল রচিত একটি শিশুতোষ কল্পকাহিনী যা ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাগৃতি প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয়। বইটি প্রকাশের পূর্বেই ২০০৬ সালে একই নামের একটি নাটক এনটিভিতে প্রচারিত হয়েছিল।

‘ভূতের বাচ্চা সোলায়মান’! মুসলমান হিসেবে নামটি দেখুন। কি? কিছু বুঝলেন? হ্যা, আমি বুঝেছি। পৃথিবীতে এত নাম থাকার পরেও কুরআনে উল্লেখিত একজন নবির নাম এটি। একজন মুসলমান হিসেবে যেই নামের প্রতি আমাদের সুবিচার করা ছাড়া উপায় নেই, এমনকি কেউ সেই নাম নিয়ে অশোভনমূলক আচরণ প্রদর্শন করলে তা সহ্য করাও কষ্টকর। নামের কারণে কিছুই হয় না আবার নামই পরিচয়ের বিরাট অংশ বহন করে। লেখক মুহম্মদ জাফর ইকবাল লিখিত ‘ভূতের বাচ্চা সোলায়মান’ নিয়ে আলাপ আরম্ভ করছি।

ভূতের বাচ্চা সোলায়মান PDF Download (At A Glance)

  • লেখকঃ মুহাম্মদ জাফর ইকবাল
  • প্রকাশকালঃ ২০১৭
  • ধরনঃ শিশুতোষ
  • পৃষ্টা সংখ্যাঃ ৮৮টি
  • প্রকাশকঃ জাগৃতি প্রকাশনী
  • ভাষাঃ বাংলা
  • প্রধান চরিত্রসমূহ: নিতু, দবির, নিতুর মধ্যপ্রাচ্য ফেরত চাচা,সোলায়মান, ভূতের বাচ্চা

পরিচয়

লেখক ‘ভূূতের বাচ্চা সোলায়মান’ নামক একটি নাটক রচনা করেছিলেন। সেখান থেকেই তিনি এটিকে একটি বইতে রূপ দেন কেননা নাটকটি তার পছন্দ হয়ছিল।

আলোচনা

বইটির ভালো গুন বলতে প্রথমে আমার মাথায় তেমন কোন বৈশিষ্ট্য হাজির হয়নি তবে লেখক খুব সহজ ভাষায় তার লেখা উপাস্থাপন করেছেন। বইটির কেন্দ্রীয় চরিত্র দেওয়া হয়েছে নীতু নামের এক মেয়েকে। তার কয়েকজন চাচাতো ভাইবোনও তার সাথে থাকে এবং অন্যতম চরিত্র হলো সোলায়মান নামের একটি শিশু যে কিনা ভূতের বাচ্চা! এছাড়া গল্পের ভিলেন রাখা হয়েছে দবীর চাচাকে। দবির চাচার কাছে একটু পড়ে আসছি।

সমালোচনা 

একটা গল্পে সাধারণত কোনো খারাপ চরিত্রে থাকা লোকের অর্থাৎ ভিলেনের দ্বারা সম্পাদিত কাজগুলো নেতিবাচক হয়ে থাকবে এটিই স্বাভাবিক। এর মানে হলো গল্পের ভিলেন যা করবে তাই বিরক্তিকর, অসহ্যকর এবং অন্যায় কাজ হবে এটাই স্বাভাবিক। যেমন ধরুন আমি একটা গল্প রচনা করলাম সেখানে ‘জাফর’ নামের একটি চরিত্র থাকল, যাকে আমি গল্পের ভিলেন হিসেবে উপস্থাপন করলাম। এখন আমি সাধারণভাবেই ওই জাফর নামক শয়তান দিয়ে এমন এমন কাজ করাব যেটা পাঠকের মনেও এই ধারণা বদ্ধমূল করে দিবে যে এই কাজগুলো করা ঠিকনা বা এগুলো বিরক্তিকর মানুষের কাজ। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, আমি ‘জাফর’কে দিয়ে এলাকায় মাস্তানি করালাম, ইভটিজিং করালাম ইত্যাদি। তো আসল কথা হলো, ওই জফরকে দিয়ে যদি আমি নামাজ পড়াই এবং সেই নামাজ পড়াটাকে আলাদাভাবে জাস্টিফাই না করে দিই তাহলে পাঠক নামাজ পড়াটাকেও অন্যায় হিসেবে উপস্থাপন করেছি বলে ধরে নিতে পারে।  তো ‘ভূতের বাচ্চা সোলায়মান’ নামক ফিকশন বইটিতে দবির চাচা ছিল ভিলেন বা গল্পের খারাপ মানুষ। তিনি বাচ্চাদেরকে বিব্রত করেন, তার খাবারের আদবও ভালো না ইত্যাদি। হ্যা আমিও বলি, গল্পের মধ্যে তার কিছু কাজ বিরক্তিকর। কিন্তু সেই চরিত্র দিয়ে ‘আস্তাগফিরুল্লাহ’ বলানো, ‘শয়তান আনা কুফুরি’ ইত্যাদি বলানো কিসের আলামত? বিষয়টা নরমাল হতো যখন একই বৈশিষ্ট্যগুলো সাধারণ চরিত্রগুলোতেও থাকত কিন্তু তা না। গল্পের নীতু বা অন্য কেউ কখনো বলে না ‘আস্তাগফিরুল্লাহ’ বা কোনো আরবি শব্দ। বলেন শুধু দবির মিয়া! তারপর আসতে হয়, বইয়ের নামে। বইয়ের নাম দেওয়া হলো ‘ভূতের বাচ্চা সোলায়মান’! আমরা জানি সোলায়মান/সুলাইমান হলেন একজন নবি। যিনি কিনা অনেক প্রভাবশালী ছিলেন জ্বিনদের উপর। এগুলো সত্য ঘটনা, যারা কিছুটা হলেও ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞান রাখেন তারা বলতে পারবেন। এখন মূল পয়েন্ট হলো, সুলাইমান/সোলায়মান আ. -এর নাম নিয়ে এসে তার সাথে ভূত/জ্বিনের সম্পর্ক জুড়ে দেওয়াকে কি কাকতালীয় ব্যাপার বলতে পারব আমরা? সেটা হবে চরম অন্যায়। আর জ্বিনকে বাংলাতে ভূত’ই বলা হয়। তাই ‘ভূতের বাচ্চা সোলায়মান’ বানানোটা নবি সুলাইমান আলাইহিসসালাম কে প্রত্যক্ষভাবে আক্রমণ করারই শামিল। এতে করে মুসলিম পাঠক হিসেবে কেউ কষ্ট পাবে বা আপত্তি করবে তাও স্বাভাবিক। কেন, একজন নবিকে অপমান করতে পারলেই কি কেউ বিশাল বড় লেখক হয়ে যাবে নাকি এটা সেই লেখকের ইসলাম বিদ্বেশী মনোভাব হিসেবেই ধরে নিব?
 এমনকি এই বইয়ের প্রচ্ছদ নিয়েও আপত্তি তোলা সম্ভব। কেন এই লোকের গায়ে ইসলামি সংস্কৃতির পোষাক থাকবে! 

মূল্যায়ন

আমার কাছে বইটিকে তেমন বিশেষকিছু মনে হয়নি। বইটি শিশুদের জন্য সহজপাঠ্য মনে হয়েছে। তবে আমি এই বইটি কখনোই কোনো শিশুর হাতে তুলে দিব না।

___________________
• বই পর্যালোচনা 
• মিনহাজ বিন মুঞ্জুর 
• ০৬-০৭-২০২২

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ