- যেদিন নবীরাও ভুলে যাবেন পরিবারের কথা.
নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের স্ত্রীদের মধ্যে বয়সে সবার ছোট যিনি ছিলেন, তিনি হচ্ছেন আয়েশা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা। বয়সে কনিষ্ঠ হলে কী হবে, জ্ঞান-গরিমায় ছিলেন অতুলনীয়। নবীজির ইন্তেকালের পর নারী সাহাবীদের মধ্যে সবথেকে বেশি হাদীস বর্ণনা করেছেন তিনি। আবূ বকর আস-সিদ্দিকের আদরের কন্যা আয়েশা। মানুষদের মধ্যে সবথেকে বেশি যাকে নবীজি (সা.) ভালোবাসতেন, তিনি হচ্ছেন এই আয়েশা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা।
তো একদিন আয়েশা (রাদ্বি.) কাঁদছিলেন। কোনো একটা বিষয়ে তিনি খুব চিন্তিত। নবীজির চোখে পড়ল বিষয়টি। এগিয়ে গিয়ে জানতে চাইলেন, 'আয়েশা, তুমি কাঁদছো কেন?' আয়েশা বললেন, 'জাহান্নামের কথা মনে করে কাঁদছি। আল্লাহর রাসূল, আপনারা (নবীরা) কি কিয়ামতের দিন আপনাদের পরিবার-পরিজনের কথা মনে রাখবেন না?'
নবীজি শুধালেন, 'তিনটা জায়গায় কেউ কাউকে মনে রাখবে না আয়েশা। জায়গাগুলো হলো:
১. মীযানের কাছে। সেখানে প্রত্যেকেই নিজের নেকীর ওজন ভারী না হালকা হয়, সেই দিকেই খেয়াল রাখবে।
২. যখন আমলনামা দিয়ে বলা হবে, 'ওহে! নাও তোমার আমলনামা, পড়ে দেখো।' তখন প্রত্যেকেই এ চিন্তায় বিভোর থাকবে যে, তার আমলনামা ডান-হাতে দেওয়া হয়, না পিছনে থেকে বাম-হাতে দেওয়া হয়।
৩. পুলসিরাতের কাছে। যখন তা জাহান্নামের দুই পার্শ্বের ওপর স্থাপন করা হবে। (আবূ দাউদ, ৪৩৭৩)
হাদীসটি এতটুকুই, কিন্তু কথাগুলো ভীষণ চিন্তার। আল্লাহর কাছে সমগ্র সৃষ্টির মধ্যে সবচেয়ে প্রিয় হলেন তাঁর নবী-রাসূলরা। তারা যেমন ছিলেন আল্লাহর নিষ্কলুষ বান্দা, তেমনি ছিলেন মানুষেরও সবচেয়ে আস্থাভাজন ব্যক্তি। দুনিয়াতে তারা ছিলেন হিদায়াতের বাতিঘর। আখিরাতেও তারা তাদের উম্মতের সম্বল। কাল হাশরের ময়দানে মানুষেরা যখন অতিষ্ঠ হয়ে যাবে, তখন কিন্তু সবার আগে নবীদের কাছেই ছুটে যাবে।
তবে এই নবীগণই তিনটি জায়গায় নিজের পরিবারকেও ভুলে যাবেন। সেসব জায়গায় কেউ সেদিন কারও কথা চিন্তা করতে পারবে না। এতটাই ভীতিকর পরিস্থিতি হবে। এ থেকে বোঝা যায়, ভয়ংকর এই স্থানগুলোতে নিজের ভালো আমল এবং আল্লাহর দয়া ও ক্ষমাই আমাদের একমাত্র সম্বল।
কিছু কি সঞ্চয় করতে পেরেছি আমরা নিজেদের জন্য? কোনো সম্বল কি রয়েছে সেই স্থানগুলোর জন্য?
'অনেক আঁধার পেরিয়ে' বই অবলম্বনে লেখা
0 মন্তব্যসমূহ
ℹ️ Your Opinion is very important to us, Please Writer your comment below about this Post.....