🇬 🇴 🇩 🇫 🇦 🇹 🇭 🇪 🇷 PDF ⬇️
গডফাদার। নামটাতে মিশে আছে একরাশ ক্ষমতা, দাম্ভিকতা আর অহংকার। সমাজের একদম নিচু স্তর থেকে উঁচু স্তর পর্যন্ত, এর করাল গ্রাস, প্রত্যেকটা স্তরকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে আছে। হয়ে আছে বিষবাষ্পে বিষাক্ত। একে কখনও চাইলেই কেউ, সমূলে উপড়ে ফেলতে পারবে না। বরং এতে পুঞ্জিভূত আছে সমস্ত ক্ষমতার উৎস। তাই চর্মচোখে একে দেখা হয় শ্রদ্ধা আর সম্মানের দৃষ্টিতে!
🖌️এক পলকে বই -
বইয়ের নাম গডফাদার পিডিএফ (সর্ট কপি)
লেখক আমিনুল ইসলাম
সিরিজ নাম গডফাদার (PDF Download)
জনরা ক্রাইম-থ্রিলার
প্রকাশনী সতীর্থ প্রকাশনা
প্রথম প্রকাশ ২০২১ / অক্টোবর
প্রচ্ছদ আদনান আহমেদ রিজন
পৃষ্ঠা ২৭৮
কভার মূল্য ২৮০ টাকা
নবীন লেখক আমিনুল ইসলামের "গডফাদার" সিরিজের দ্বিতীয় বই এটি। "বাটারফ্লাই ইফেক্ট"কে যদি তুলনা করা হয় পুকুর তাহলে "গডফাদার" হচ্ছে সাগর।
লেখক তার নিজস্ব ভঙ্গিমায়, নিজস্ব শৈলিতে তুলে এনেছেন আমাদের চিরচেনা জগতের এক অন্ধকার, কদর্য দিক। যত-ই আমরা এই জগৎটাকে ঘৃণা করি কিংবা এড়িয়ে চলতে চেষ্টা করি না কেন, আদি কাল থেকে এটি ছিলো, বর্তমানে আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।
🖌️প্রারম্ভ -
"বাটারফ্লাই ইফেক্ট" এ আমিও ইনফেক্ট হয়ে তাড়াতাড়ি শুরু করি এক সাগর প্রত্যাশা নিয়ে। বদলে পেলাম এক মহাসাগর তৃপ্তি। সে তৃপ্তি ছিলো আকণ্ঠ। চিরটা কাল মনে রাখার মতো। লেখক তার জাদুর কলমের সাহায্যে এক নিমেষে তুলে নিয়ে গিয়েছিলেন চেনা জগতের অচেনা দিকে। সেখানে কেবল ক্ষমতার লড়াই। আর দিন শেষ বলি হয় সাধারণ মানুষ। যেগুলোর হিসাব কেউ রাখে না। যে টিকে থাকে, সে-ই হয়ে উঠে সর্বময়, সর্বেসর্বা।
🖌️ফ্ল্যাপ থেকে -
খুব সাধারণ একটা ছেলে, নাম মাসুদ কবির। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি জড়িয়ে পড়ে অন্ধকার জগতের সাথে। যার হাতের ইশারায় দেশ জুড়ে ঘটতে শুরু করে একের পর এক হঠকারী ঘটনা।
সেই সময়ে দেশে ফিরে আসে নব্বই দশকের আরেক মাফিয়া ত্রাস দাউদ খলিল,
যাকে মাফিয়া জগতে চেনে ‘দ্যা গডফাদার কিলার' নামে। জেল থেকে বের হওয়া অর্ক, মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসা আব্রাহাম রাতুল; দুজনেরই লক্ষ হয়ে দাঁড়ায় অদৃশ্য শক্তির উৎসকে খুঁজে বের করা। যার কারণে তছনছ হয়ে গেছে অর্কের জীবন, যে কিনা পুরো দেশে বিছিয়ে রেখেছে অদৃশ্য এক জাল।
এই গল্প অন্ধকার জগতের গল্প, যে গল্পের নির্মাতাই বিধ্বংসী। যেখানে প্রতিটা অধ্যায়ে রয়েছে পরাজিত মানুষের গল্প। যারা আলোর দেখা পেয়েও সেই আলো কখনোই স্পর্শ করতে পারে না।
বাটারফ্লাই ইফেক্ট এর পরের গল্প ‘গডফাদার'। অর্থাৎ এটি একটি "টপ নচ" সিকুয়েল।
🖌️পাঠ অভিব্যক্তি -
বইয়ের কয়েক পাতা পড়ার পর-ই বুঝতে পারলাম, বইটায় একটুও সময় নষ্ট করবে না। বরং জ্ঞানকে বাড়িয়ে দিবে। বুঝাই যাচ্ছিলো লেখক হোমওয়ার্ক করতে কোনো কমতি রাখেননি। না, বাড়তি কোনো তথ্য দিয়ে বইয়ে মোটাতাজাও করেননি। বরঞ্চ বলবো কিছু তথ্য সংযোজন করতে আবেদন বাড়তো বৈ কমতো না।
অন্ধকার আর ক্ষমতার গল্প হলের এর সাথে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে আছে ভালোবাসার গল্প। কিছু পাওয়া, কিছু না পাওয়ার অভিমান। এক ফালি মন খারাপ আর এক চিলতে একাকীত্বের নিঃসঙ্গতা।
আগাগোড়ায় রয়েছে খাঁটি বন্ধুত্বের সজ্ঞা। বিশ্বাসী কিছু মানুষের আত্মত্যাগের বলিদান। কিছু দিক আছে, মনের অজান্তে চোখে পানি চলে আসে।
অন্ধকারের গল্পে বিশ্বাসঘাতকতা থাকবে না, এটা তো হতেই পারে না। অন্ধকারের পরতে পরতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে কিছু বন্ধু নামক দুমুখো সাপ। যে কোনো দিকেই ছোবল দিতে প্রস্তুত নিজের সার্থে। বিশ্বাস এখানে সবচে' সস্তা বস্তু। বিক্রি হয় বিনে পয়সায়।
অন্ধকারের রন্ধ্রে-রন্ধ্রে মিশে আছে হিংসা আর ক্ষমতার লড়াই। পেছনে ছুরি মারা মানুষের অভাব নেই। সামান্য কয়টা টাকার কাছে, নীতি আর মূল্যবোধ হার মানে প্রতিনিয়ত।
এই জগতে একেক "গডফাদার" এর নাম লেখা হয় অন্য "গডফাদার" এর রক্তে। অলিগলিতে মুখের ভাষার চেয়ে বন্দুকের ভাষা বেশি পরিচিত। এখানে কখনও পূর্ণিমা আসে না, কেবল অমাবস্যার নিকষ কালো। বিরাজ করে সারাটা দিন।
সারাটা বছর। সারাটা জীবন।
🖌️প্রধান চরিত্র -
মাসুদ কবির-
যাকে ঘিরে আবর্তিত হয় পুরো উপন্যাস। নায়ক কিংবা খলনায়ক মাসুদ কবির। একদম ছোট বেলা থেকে বর্তমান সময়কালের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অংশও লেখক ফুটিয়ে তুলেছেন আপন শৈলিতে। একসময় সে হয়ে ওঠে আতঙ্কের প্রতিশব্দ। কায়েম করে ত্রাসের রাজত্ব। কারও কাছে কখনো অমিত, আবার কারও কাছে কখনও কৌশিক নামে পরিচিত। সবকিছু কলকাঠি নেড়েও থেকে যায় ধরা ছোঁয়ার বাইরে। সে যেনো থেকেও নেই!!
দাউদ খলিল-
হতদরিদ্র ঘরে জন্ম নিলেও নিজ যোগ্যতা আর কৌশলের গুণে একসময় হয়ে ওঠে আশির দশকের গডফাদার। এরপর স্ত্রী হত্যার প্রতিশোধ নিতে গিয়ে তৎকালিক দুই গডফাদারকে একসাথে খুন করে হয়ে যায় "দাউদ খলিল - দ্য গডফাদার কিলার।"
অর্ক-
অর্ক একজন ক্রাইম কনসালটেন্ট। জেল থেকে ছাড়া পেয়ে (বাটারফ্লাই ইফেক্টের পরের অংশ) গোপনে ইনভেস্টিগেশন করে যাচ্ছে। অবিরত খোঁজে চলছে পর্দার আড়ালের অদৃশ্য সত্ত্বাকে।
আব্রাহাম রাতুল-
অর্কের বন্ধু, ভাই বা মেন্টর সব কিছুই বলা যায়। "বাটারফ্লাই ইফেক্ট" এ তাকে মৃত হিসাবে প্রতিষ্ঠা করা হয়। ছদ্মবেশ ও আত্মগোপনে সে কাজ করে যাচ্ছে অর্কের সাথে।
রুদ্র-
মাসুদ এর স্কুল জীবনের একমাত্র বন্ধু। মাসুদ রুদ্রের মাকে বাঁচাতে জীবনে প্রথম বার কিডন্যাপিং করে। পরে রুদ্রকে রেস্টুরেন্ট খুলে দেয় বিজনেজের জন্য। কালে-ভদ্রে দেখা করতে আসে মাসুদ।
অনন্যা-
মাসুদ এর জীবনে এক পশলা ভালোবাসা নিয়ে আসা একমাত্র প্রেমিকা। যাকে নিয়ে মাসুদ নতুন এক জীবন শুরু করার স্বপ্ন দেখে কিংবা দেখেছিলো।
সোবহান তালুকদার -
মাসুদের ভার্সিটির এক সিনিয়র ভাইয়ের মামা। তার ইনকামের সিংহভাগ আসে অবৈধ ব্যবসা থেকে। একপর্যায়ে জাতীয় নির্বাচনে সোবহান তালুকদার MP হিসাবে জয় লাভ করেন। এবং পরবর্তীতে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হয়ে যায়।
দিয়াগো ও কার্লোস -
আধা বাংলাদেশি, আধা মেক্সিকান। জমজ দুই ভাই। কুকর্মের ফলে জান বাচাঁতে বাংলাদেশে এসে আত্মগোপন করেছিল। পরে মাসুদের শেল্টারে কাজ করতে দেখা যায়।
মৃদুলা -
যাকে "বাটারফ্লাই ইফেক্ট" এ অর্কের বউ হিসাবে দেখা গেছে। সে একজন ট্রেইনড আন্ডারকাভার অ্যাসাসিন। সে মাসুদের কথায় একটা সিরিয়াল কিলিং মিশন কমপ্লিট করে।
এছাড়াও মাসুদের দলের রায়হান, বজলু, হ্যাকার তূর্য, ক্লাসমিট লিজা, ড্রাইভার রাজ্জাকসহ অনেক-কেই দেখা গেছে। দাউদের বউ মৌ, আন্ডারকভার এজেন্ট সামিয়াকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় দেখা গেছে।
🖌️লেখক সম্পর্কে কিছু কথা-
ক্রাইম-থৃলার জনরার ক্রাউন সাইজ উপন্যাসিকাটির লেখক আমিনুল ইসলাম। তিনি বর্তমানে রাঙ্গামাটি মেডিকেল কলেজে অধ্যায়নরত। "বাটারফ্লাই ইফেক্ট" উনার প্রথম বই।
আমার পড়া লেখকের প্রথম বই। প্রথম বারের মতো। এর আগে কখনো উনার লেখা বই পড়া হয়নি আমার। "বাটারফ্লাই ইফেক্ট" বইটির মাধ্যমেই উনার লেখার জগতে পদার্পণ।
উনার প্রকাশিত এই বইটির সিকুয়েল হচ্ছে গডফাদার। এছাড়াও অন্যান্য বই হলো- "দেজা ভ্যু" "আমার দেওয়া তোমার কোনো নাম ছিলো না" "এল ডোরাডো" "শিশি" "যুদ্ধের সহস্র বছর পর" ইত্যাদি।
এছাড়াও বেশ কিছু ফ্যান্টাসি, থৃলার বইয়ের সেরা লাইন-আপ রয়েছে সামনে।
বলা বাহুল্য দিন দিন ব্যস্ততা বাড়বে পাঠক ডিমান্ডে। লেখককে তার ভবিষ্যৎতের সবগুলো প্রজেক্টের জন্য রইলো আন্তরিক শুভ কামনা।
🖌️নামকরণের স্বার্থকথা -
উপন্যাসটির নামকরণের ব্যাপারে লেখক যথার্থতার পরিচয় দিয়েছেন। একদম সুচিন্তত-সুবিচারকের ন্যায়। তবে আমার পার্সোনাল চয়েজ হলো বাংলা নাম। তবে "গডফাদার" এর বাংলা সমার্থক সঠিক ও সুন্দর কোনটা নিজেও ভালো করে জানি না।
একটা বই পড়ার পর পাঠক যদি বইয়ের নামের সাথে একাত্মতা পোষণ না করে, তাহলে আমি মনে করি- এখানে যেমন লেখক ব্যর্থ, তেমনি পাঠক হারায় বইয়ের প্রকৃত স্বাধ আস্বাদনের আস্থা। অনেক সময় দেখা যায়, লেখকের প্রতি-ও আগ্রহ আর ততটা থাকে না।
কিন্তু "গডফাদার"এ, এ ব্যাপারটা একদম-ই নেই। নেই বলতে ছিটেফোঁটাও নেই। বরং বইয়ের নামকরণ যথার্থতার কারণে আগ্রহ আরও কয়েকগুণ বেড়েছে। একটা মাফিয়, গ্যাংস্টার ভাইব ফুটে উঠেছে। নিষিদ্ধ নিষিদ্ধ ভাইবের জন্য আরও বেশি আকর্ষণ করে।
🖌️বানান -
বইটি পড়ার সময় "বাটারফ্লাই ইফেক্ট" এর মতো এতো আরাম বোধ করিনি। কারণ বেশ কিছু শব্দবিভ্রাট পেয়েছি। যার কারণে মাঝে মাঝে থমকে দাড়াঁতে হয়েছে।
শব্দবিভ্রাটগুলো একক কারো দোষে হয়নি। কিছু পেয়েছি টাইপিং মিস্টেক হিসেবে। কিছু পেয়েছি প্রুফ রিডারের টেবিল থেকে। তবে সবচে' অবাক লেগেছে সম্পাদনার চোখ এড়িয়ে দুই-একটা কিভাবে ফাঁকি দিলো ভেবে।
তবে তা পরিমাণে খুব একটা বেশি না। কিছু আছে গভীরভাবে বাক্য বা সংলাপ খেয়াল না করলে ধরাই যায় না। এগুলো সচরাচর কেউ ধরতেও পারবে না। দৃষ্টিকটু কয়েকটা আছে। সব মিলিয়ে বড়জোর ০.৫/১০ হয়তো কাটা যায়। এর বেশি না।
🖌️প্রচ্ছদ -
প্রচ্ছদের কালার কম্বিনেশনটা অ্যাভারেজ লেগেছে আমার কাছে। তিনটি কালার কম্বিনেশন দেখা গেছে প্রচ্ছদে। সাদাকে প্রধান থিম রেখে কালো আর নীলের ছোঁয়া।
এটাকে ডীপ মিনিংফুল কোনো মতেই বলা যায় না। কালো নির্দেশ করে অন্ধকার জগতের দিকটাকে। তাই আমার মতে কালো রংটাকে বেজ করে নীল আর লাল রঙের ছড়াছড়ি বইটাকে আরও ফুটিয়ে তুলতো। বইটাই যেখানে রক্ত আর অন্ধকার গল্পের, সেখানে এই দুই রংটাই প্রাধান্য পাওয়ার দাবিদার।
🖌️প্রডাকশন -
সতীর্থ প্রকাশনীর পড়া আমার প্রথম বই "বাটারফ্লাই ইফেক্ট।" "গডফাদার" আমার দ্বিতীয় বই। সেইসাথে লেখকেরও দ্বিতীয় বই।
বইটার প্রডাকশনে, আমার সাদা চোখে অন্তত কোনো খুঁত ধরা পরেনি। তবে পেজের মাঝে মাঝে বেশ কিছু সূতা পেয়েছি, যেগুলো বাঁধাই করার পরও কাটা হয়নি। একটায় টান দিয়েছিলাম, বুঝলাম ছুটে আসতে পারে বাঁধাই। পরে কাঁচি দিয়ে কেটেছি।পরের বার আশা করি এই বিষয়টা খেয়াল রাখবেন।
সবমিলিয়ে বাঁধাই যথেষ্ট ভালো হয়েছে। আশা রাখছি সংরক্ষনেও বইটি হতাশ করবে না কোনোমতে।
🖌️ প্রিয় কিছু লাইন -
ক্রাইম-থৃলার উপন্যাস হলেও লেখন কিছু ধারালো কথা বলেছেন গল্পের ফাঁকেফাঁকে। হৃদয় ছোঁয়ে যাওয়ার মতো কথা। তার কয়েক লাইন নিম্নে....
"মানুষ নাকি খুবই উঁচু বুদ্ধিসম্পন্ন প্রাণী! অথচ এই উঁচু বুদ্ধিমান প্রাণীদের সব নির্ধারণ হয় জন্ম দিয়ে! জাত, ধর্ম, বর্ণ, ধনী-গরীব সব!"
"যা মানুষ বুঝতে পারে না তা সে ভয় পায়।"
"মরুভূমিতে যদি কোন মানুষকে জিজ্ঞেস করা হয় তুমি এই মুহূর্তে কি চাও? তার একমাত্র চাওয়া হবে এক গ্লাস পানি। এক গ্লাস পানি খাওয়ার পর কি মরুভূমিতে তৃষ্ণা মেটে? বরং পেয়ে যায় এক সাগর পিপাসা।"
"নিজের চোখে নিজের বিশুদ্ধতা অনেক গুরুত্বপূর্ণ।"
"শত শত বছর আগের কোনদিন কোনো এক নির্মম ঘটনায় আমরা কত সহজেই আক্রান্ত হই কিন্তু আমাদের সময়েও যে কত কত নির্মম ঘটনা ঘটছে তা খুঁজতে যাই না।"
🖌️সিকুয়েল -
যে কোনো সিরিজের ট্রিলজি মানেই কমপ্লিট প্যাকেজ। একটা বড় কাহিনির শেষ কিংবা নতুন কোনো কাহিনির অবতারণা। তাই বর্তমানে ট্রিলজি শব্দটা একটা ট্রেন্ডিং শব্দ। "গডফাদার" পড়ার কেউ বলতে পারবে না, এটা কাহিনির অন্ত। বরং বইয়ের শেষাংশ পরবর্তী বইকে উস্কে দিয়েছে। যদ্দূর জানি "দ্য শ্যাডো" নামকরণও হয়ে গিয়েছে পরবর্তী সিকুয়েল বইটার।
তবে স্যাড নিউজ হচ্ছে, কিছুদিন আগে লেখক ফেসবুকে এক বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, আপাতত "দ্য শ্যাডো" এর কাজ হাতে নিচ্ছেন না। আমিও চাই সময় নিয়ে কাজটা হোক। ভবিষ্যতে গ্র্যান্ড স্কেলের অপেক্ষায় না হয় থাকলাম। তবে সময়টা যেন আবার ৯/১০ বছর না হয়। জাষ্ট কিডিং...
🖌️কিছু সত্য-মিথ্যা -
বইয়ের ভিতরে যে সব ঐতিহাসিক ঘটনা কিংবা ইন্সিডেন্ট যাই বলেন, সে সব ঘটনাগুলো পড়ার সময়-ই সত্য লেগেছিলো। আর কিছু কনফিউশনে ছিলাম। লেখকের প্রোফাইল ঘেঁটে বের করলাম সত্য-মিথ্যার বিবৃতি। হুবহু তুলে দিলাম এখানে-
📌📌📌গডফাদার কথা-
অধ্যায় বারো -
১৩ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৫ সাল দিয়ে একটা ঘটনা দেয়া হয়েছে। যেখানে গল্পের অন্যতম প্রধান এক চরিত্রের সামনে মিছিলে একটা ঘটনা ঘটে। রাওফুন নামে একজন মারা যায়। ঘটনাটা সত্য। তৎকালীন ছাত্রলিগের কেন্দ্রীয় যুব সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন রাওফুন বসুনিয়া।
অধ্যায় চুয়াল্লিশ -
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ হ্যাক করে বিরাট অংকের একটা চুরি দেখানো হয়। এটা নিয়ে সম্ভবত সবাই জানে। ঘটনাটা ঘটেছিল ৭ ফেব্রুয়ারী ২০১৬ তে (বইতেও একই ডেটে ঘটেছে আর সবরকম তদন্ত মতে যেসব বিষয় আর তথ্য পাওয়া গিয়েছে সেসবের সাথে মিল রেখেই সব ধরণের সত্য তথ্য ব্যবহার করা হয়েছে।)
অধ্যায় তেষট্টি -
ঢাকা এয়ারপোর্টে জাপানি প্রেসিডেন্ট কে মারতে যে মিসাইল সিস্টেম ব্যবহার করা হয়েছে তার অস্তিত্বও আছে। ওটার বিষয় সব তথ্য সঠিক। এছাড়াও বইয়ে ব্যবহৃত সকল অস্ত্র এর সব তথ্য ঠিক ঠাক দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।
অধ্যায় তিয়াত্তর -
দুনিয়া জুড়ে কিছু রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখানো হয়েছে। যার প্রতিটা তথ্য সত্য। যে কেউ নেট এ সার্চ দিলেই রাজনৈতিক এই অস্থিরতা গুলো খুঁজে পাবে।
অধ্যায় পঁচাত্তর -
এখানে একশন সিন এ ব্যবহার করা, এয়ার ডিফেন্স, এন্টি ট্যাংক মিসাইল সহ সবরকম যন্ত্রপাতির বাস্তব অস্তিত্ব আছে।
🖌️১৮+ ওয়ার্নিং -
মাফিয়া জগৎ মানেই যে সবাই গড কিংবা ফাদার লেভেলের, এমন কিন্তু নয়। বস্তির উঠতি ছেলেগুলোর অর্গানাইজেশনের আন্ডারে কাজ করে। সেটা হোক প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ ভাবে। নিষিদ্ধ পল্লিটা হচ্ছে সেরা আড্ডাখানা। আর এসব উঠতি ছেলে কিংবা পল্লির এক পা কবরে দেয়া মহিলাগুলো পর্যন্ত গালি ছাড়া কথা বলে না। অথবা দেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ের হলেই যে তার মুখ দিয়ে অমিয় বচন নির্গত হবে, বিষয়টা কিন্তু এমনও না।
তাই গডফাদারে গল্পের প্রয়োজনেই এসেছে অসংখ্য রাফ কথামালা। এসেছে অশ্লীল গালির ফুলঝুরি। কখনোবা কুরুচিপূর্ণ বাক্যবাণ।
তাই এসব বিষয় মাথায় রেখে বইটা পড়ার কথা বলবো। কিংবা গিফট করবেন ছোটদের।
🖌️শেষকথা -
আমার মনে পরছে না, মাফিয়া কিংবা অন্ধকার জগৎটাকে এতো অর্গানাইড ভাবে, এতো সুন্দর ও সাবলিল করে আর কোনো বইয়ে পড়েছি করে। লেখক চাইলে এই জগৎটাকে এক্সপ্লোর করতে পারেন। আপাতত সিকুয়েল না আনলেও স্পিন-অফ আনতে পারেন। স্পেশালি ডিফেন্স ফোর্সের সাইড থেকে।
বইটা সম্পর্কে পড়ার আগে, বিন্দু মাত্র ধারণা করতে পারিনি এতো ডীপ হবে। বুঝাই যাচ্ছে লেখক অনেক খেটেছেন বইটা নিয়ে। ঘন্টার পর ঘন্টা, রাতের পর রাত ঘেঁটেছেন বইপত্র, রেফারেন্স। সেইসাথে Google-কে আরও বেশী খাটিয়েছেন। য়্যাম শিওর মৌর দেন হানড্রেড পার্সেন্ট।
লেখকের কাছে অনুরুধ রাখবো ট্রিলজিটা কমপ্লিট করার জন্য অ্যাজ সুন অ্যাজ পসিবল। অপেক্ষায় রইলাম লেখকের আনকোরা সব বইয়ের।
হ্যাপি রিডিং। Godfather Novel PDF Download Safe Link PDF Download Safe Link
0 মন্তব্যসমূহ
ℹ️ Your Opinion is very important to us, Please Writer your comment below about this Post.....