৫৩০ পৃষ্ঠার ঢাউস বই। পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা পড়তে গেলে মুখ হা হয়ে যাবে!
কোনো মাছওয়ালা বা সবজিওয়ালা যদি বলে আমার জিনিস খুব ভালো নিয়ে যান।তখন মুসলমান সে কথা বিশ্বাস না করে যাচাই করে দেখে।অন্য দোকানে যায়।কিন্তু কোনো আলেম যখন বলে এটা সত্য সেটা কখনও যাচাই করি না।অন্ধবিশ্বাস করি বসি।ভাবি সে মিথ্যা বলবে কেন?ইসলামকে জানতে বা বুঝতে না চাওয়ার অলসতায় সত্য যাচাই থেকে আমরা বিরত থাকি।
আরও বাজে ব্যাপার হলো, ছোট বেলায় বাংলা,
ইংরেজি, গণিত শেখার জন্য মাস্টার রাখি কিন্তু ৯০% মুসলমানদের দেশ হওয়া সত্ত্বেও ইসলামকে জানার জন্য কোনো আলেম রাখি না।অত জানার কী আছে?এই অজ্ঞতার সুযোগ অনেকেই নেয়।আবেগ পুঁজি করে ব্যবসা জমিয়ে ফেলে।আর আমরা ইসলাম থেকে বহু দূরে ছিটকে পড়েছি না জানার কারণে।
খুব গুরুত্বপূর্ণ বই।অভিভূত হয়েছি!আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ আচার-অনুষ্ঠান সত্য বলে জেনে এসেছি বা পালন করেছি সেগুলো মিথ্যা।কাল্পনিক।মাস্ট রিড!
শাদ্দাদের জন্ম কাহিনী, জীবন কাহিনী,বেহেশতের লাগামহীন বর্ণনা,বেহেশতে প্রবেশ এর পূর্বে মৃত্যু ,ইত্যাদি যা কিছু কাহিনী বলা হয় সবই বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। কিছু ইহুদীদের বর্ণনা কিছু জালিয়াতগণের কল্পকাহিনী। নবীজির কাছ থেকে কোন সহীহ বা জয়ীফ সনদে বর্ণিত হয়নি।
*
প্রচলিত একটা কথা, মিরাজের সকল ঘটনায় মুহুর্তের মধ্যে সংঘটিত হয়ে যায়। নবীজির সকল ঘটনার পর ফিরে এসে দেখেন পানি পড়ছে,শিকল নড়ছে,বিছানা তখনও গরম রয়েছে ইত্যাদি। এই সকল কথার কোন ভিত্তি আছে বলে জানতে পারিনি ।তাবারানি সংকলিত হাদীসে বর্ণিত রয়েছে, নবীজী বলেন,প্রভাতের পূর্বে আমি মক্কায় সাহাবীদের নিকট ফিরে আসলাম।তখন আবু বকর আমার নিকট আগমন করে বলেন, হে আল্লাহর রাসূল,আপনি গত রাতে কোথায় ছিলেন?আপনাকে আপনার স্থানে খুঁজে পাই নি।...তখন তিনি মিরাজের ঘটনা বলেন।
*
স্বামীর পায়ের নিচে স্ত্রীর বেহেশত বহুল প্রচলিত একটি পুস্তকে রয়েছে: “নবীজী বলেছেন,স্ত্রীগণের বেহেশত স্বামীর পায়ের নিচে।”এই কথাটি একটি ভিত্তিহীন ও বানােয়াট কথা। কোনাে সহীহ, যয়ীফ বা মাউযূ সনদেও এই কথাটি নবীজী থেকে বর্ণিত হয়েছে বলে জানা যায় না। কুরআন ও হাদীসের নির্দেশনা থেকে বোঝা যায় যে, স্বামী-স্ত্রী উভয়ের জান্নাত উভয়ের হাতে। উভয়ের প্রতি উভয়ের দায়িত্ব পালন ও অধিকার আদায়ের মাধ্যমেই আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ সম্ভব।
*
লাশ বহনের সময় সশব্দে কালিমা পাঠ,দোয়া বা কোরআন পাঠ–এটি একটি বানোয়াট ভিত্তিহীন সুন্নাত বিপরীত কর্ম।শোক ও মৃত্যু চিন্তা নিয়ে নীরবে চলবে।পরস্পর কথা বলাও সুন্নাত বিরোধী।ইমাম নবাবী বলেন- লাশ বহনের সময় নীরব থাকাই সুন্নাত সম্মত সঠিক কর্ম যা সাহাবীগণ বা পরবর্তী যুগের মানুষের রীতি ছিল।
*
আমাদের দেশে প্রচলিত জাল হাদিসে মসজিদে দুনিয়াবি কথা বলতে কঠোরভাবে নিষেধ করেছে।মসজিদে দুনিয়াবি কথা বলা যাবে এ মর্মে কোন নিষেধাজ্ঞা বা কোন সহিহ হাদিসে বর্ণিত হয় নি। সাহাবিগণ মসজিদের মধ্যে জাহেলি যুগের গল্প কাহিনী আলোচনা করতেন।কবিতা পাঠ করতেন।হাসতেন।আর নবীজি মুচকি হাসতেন।
*
ওয়াজের মধ্যে শ্রোতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ,মনোরঞ্জন,তাদের মধ্যে প্রভাব বিস্তার ও নিজের সুনাম,সুখ্যাতি,নগদ উপার্জন বৃদ্ধির জন্য অনেক মানুষ ওয়াজের মধ্যে বানোয়াট কথা হাদিসের নাম দিয়ে চালিয়ে দিয়েছে। মিথ্যা ও জাল হাদিস প্রসারে এসকল ওয়ায়েজ ও গল্পকারদের ভূমিকা ছিল খুব বড়।হাদিসের নামে মিথ্যা কথা বানিয়ে বলতে এদের দুঃসাহস ও প্রত্যুৎপন্নমতিতা ছিল খুব বেশি। তাদের অনেকেই শ্রোতাদের অবাক করে পকেট খালি করার জন্য তাদের চাহিদা মত মিথ্যা বানিয়ে নিত দ্রুত ।এছাড়া কোন জালিয়াতের জাল হাদিস বা আকর্ষণীয় গল্প কাহিনী অন্য জালিয়াতরা তা চুরি করত এবং নিজের নামে সনদ বানিয়ে প্রচার করত।
*
নবীজি ইন্তেকালের পূর্বে সাহাবীগণকে সমবেত করে বলেন,আমি যদি কাউকে কোন জুলুম করে থাকি আজ সে প্রতিশোধ বা বদলা নিক।এক পর্যায়ে উকাশা নামের এক বৃদ্ধ বলেন,সফরে থাকার সময় আপনার লাঠির খোঁচা আমার কোমরে লাগে।আমি প্রতিশোধ নিতে চাই কোমরে খোঁচা মেরে।সাথে সাথে সাহাবীগণ নিজেদের শরীর পেতে দেন প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য। কিন্তু উকাশা রাজি হননি।উকাশার দাবি অনুসারে নবীজি জামা খুলে দেন।উকাশা নবীজির পেটে চুমু খায় এবং তাকে ক্ষমা করে দেন।ইত্যাদি।পুরো ঘটনাটি বানোয়াট।সনদসহ বানোয়াট।
প্রিয় বই থেকে
0 মন্তব্যসমূহ
ℹ️ Your Opinion is very important to us, Please Writer your comment below about this Post.....