- বই: বর্ষা আসে বসন্ত
- লেখক: মাহবুবা আরিফ সুমি
- প্রকাশনী: চলন্তিকা
- প্রচ্ছদ: নিসা মাহ্জাবীন
- প্রকাশকাল: অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০২২
- মুদ্রিত মূল্য: ২৪০ টাকা
বিভিন্ন ঋতুতে প্রকৃতি ভিন্ন ভিন্ন রূপ ধারণ করে। বর্ষায় থাকে এক রূপ আবার বসন্তে আমরা ভিন্ন রূপ দেখতে পাই। তেমনি আমাদের জীবনেও অনেক রূপের দেখা মেলে। “বর্ষা আসে বসন্ত” গ্রন্থটিতেও নানা রকম কাহিনী তুলে ধরা হয়েছে। বইটিতে ১৪ টি ছোটগল্প রয়েছে। গল্পগুলোতে সুখ, দুঃখ, হাসি-কান্না, প্রেম, দ্রোহ ইত্যাদি ফুটে উঠেছে। বইয়ের কয়েকটি গল্প নিয়ে নীচে আলোচনা করছি:
নিশা: বইটির প্রথম গল্প “নিশা”। অপাত্রে ভালোবাসা দানের পরিণতি দেখা যায় গল্পটিতে।
ক্ষত: সন্তান নিয়ে পিতা- মাতার কখনো অহংকার করা উচিত নয়। নিজের সন্তানকে সেরা মনে করে অন্যদের মনে আঘাত করা একদমই অনুচিত। ছোটবেলা থেকেই সন্তানকে সুশিক্ষা দেয়া উচিত। আর মনে রাখা দরকার যে অহংকার পতনের মূল। “ক্ষত” গল্পটিতে এক অহংকারী মায়ের সন্তানের পরিণতি দেখানো হয়েছে।
বহে সমান্তরাল: বিদেশী পাত্র দেখে আগ্রহের সাথে বিয়ে করতে রাজি হয় সুচিরা। বিদেশ যাবার স্বপ্ন আর টাকার জন্য সে মধ্যবয়স্ক পাত্রকে বিয়ে করে। সুচিরার স্বপ্ন কি পূরণ হয়েছিল?
কর্মফল: প্রতিটি মানুষকেই তার কর্মফল ভোগ করতে হয়। এই চিরন্তন সত্যটিই লেখক সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন ‘কর্মফল’ গল্পটিতে।
গোলকধাঁধা: দোলনের যখন ছয় বছর বয়স, তখন তার মা আত্মহত্যা করে। মায়ের মৃত্যুর দশ বছর পর, তার বাবা জসিম মাস্টার দ্বিতীয় বিয়ে করেন। সৎ মা সংসারে এসে, এক ভালো পাত্র দেখে দোলনের বিয়ে দেয়। বিয়ের পরে
দোলন জীবনের গোলকধাঁধা সমাধান করতে পেরেছিল কিনা, তা জানতে “গোলকধাঁধা” গল্পটি পড়তে হবে।
ফেরা: কিশোর বয়সে করা এক ভুলের কারণে মৌমিতার জীবন বদলে যায়। এত প্রতিকূলতার মাঝে থেকে মৌমিতা কি জীবনযুদ্ধে ফিরে আসতে পেরেছিল?
এছাড়া বইয়ের অন্যান্য গল্পগুলো: পিতা, অসুখ, কাপুরুষ, প্রতিবাদ, সুখতারা, রঙিন ফানুস, জুঁইফুল ভিলা এবং যাত্রা।
প্রতিটি গল্প আমার কাছে ভালো লেগেছে। লেখকের লেখার ধরণ খুব সুন্দর। এতগুলো গল্প একবারে পড়ার পরও একঘেয়েমি আসেনি। জীবনের নানা ঘটনার প্রতিফলন ঘটেছে গল্পগুলোতে। গল্পগুলো পড়ার পর মনে হয়েছে, এগুলো আমাদের চারপাশের ঘটে যাওয়া ঘটনা। সবশেষে বলবো, যারা আমার মতো ছোটগল্পপ্রেমী, তাদের কাছে বইটি অবশ্যই ভালো লাগবে।
ভুল শুধরে নিজেকে পাল্টে নেবার সুযোগ সবার জীবনে আসে কিন্তু সেই সুযোগ সবাই কাজে লাগাতে পারে না।
সন্তান সৃষ্টিকর্তার বড়ো নেয়ামত। তাদের সাফল্যে আনন্দিত হওয়া যায় কিন্তু অহংকার কখনো নয়।
সমান্তরালে চলা রেললাইনের শেষ মাথাটা বাস্তবে কখনো এক হয় না।
বিনা কারণে মানুষকে ছোট করলে, অপমান করলে সে অপমান এক সময় দ্বিগুন হয়ে নিজের কাছেই ফিরে আসে। স্রষ্টা কাউকে ছেড়ে দেন না।
যে মানুষের কাছে জীবন যত সুন্দর তার বাঁচার আকুলতা তত বেশি।
একজন মানুষের অসংখ্য রূপ থাকে। বিচিত্র সব মানুষ চিনবার গোলকধাঁধায় ঘুরতে ঘুরতে এভাবেই আমাদের এক জীবন কেটে যায়।
0 মন্তব্যসমূহ
ℹ️ Your Opinion is very important to us, Please Writer your comment below about this Post.....