জামায়াতে ইসলামে কি? আমরা কেন জামায়াত করি?

আল্লাহ্‌ তা’আলা তাঁর রাসূল হযরত মুহাম্মাদ (সা.) কে মূলত যে কাজটি করার জন্য দুনিয়ায় পাঠিয়েছেন তা কুরআনের তিনটি সূরায় স্পষ্ট ভাষায় ঘোষণা করেছেন, “তিনিই সে মহান সত্তা (আল্লাহ) যিনি তাঁর রাসূলকে হিদায়াত ও আনুগত্যের একমাত্র সত্য বিধান (দ্বীনে হক) সহ পাঠিয়েছেন, যেন (রাসূল) তাকে (ঐ বিধানকে) আর সব বিধানের উপর বিজয়ী করেন।” (সূরা আত্‌ তাওবা : ৩৩, সূরা আল ফাত্‌হ : ২৮, সূরা আস সাফ : ৯)

জামায়াতে ইসলামী কি? আমরা কেন জামায়াত করি?

রাসূল (সা.) আল্লাহ্‌র দ্বীনকে কায়েম করেই এ দায়িত্ব পালন করেছেন। ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র, আইন, শাসন, বিচার, ব্যবসা-বাণিজ্য ইত্যাদি সব ক্ষেত্রেই তিনি আল্লাহ্‌র বিধানকে চালু করে প্রমাণ করেছে যে, ইসলামই দুনিয়ার জীবনে শান্তির একমাত্র উপায়। তাই দ্বীন ইসলাম কায়েমের দায়িত্ব পালন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ। সাহাবায়ে কিরামও রাসূল (সা.)-এর সাথে এ দায়িত্বই পালন করেছেন। মুসলিম হিসেবে আমাদের সবারই এ দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করা কর্তব্য। এ দায়িত্ব অবহেলা করে আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টি হাসিল করা কিছুতেই সম্ভব নয়।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মুসলিদেরকে তাদের এই দায়িত্বের ব্যাপারে সচেতন করে যাচ্ছে। আমাদের সাথে আপনিও এই কাফেলায় সংযুক্ত হোন। মুসলিম হিসেবে দায়িত্ব পালনে আমরা সবাই মিলে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাই। আজ থেকে ১৫ তারিখ পর্যন্ত গণসংযোগ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। যারা এখনো জামায়াতে যুক্ত হননি আপনাদের জামায়াতে যোগ দেওয়ার আহবান জানাচ্ছি। এটা আমাদেরকে দায়িত্ব পালনে ও জান্নাতে যেতে সহায়তা করবে, ইনশাআল্লাহ।

ইসলাম কায়েমের এ মহান দায়িত্ব একা একা পালন করা যায় না, এটা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। যারাই নবীর প্রতি ঈমান এনেছেন তাদেরকেই সংঘবদ্ধ করে নবীগণ ইসলামী আন্দোলন করেছেন। যে সমাজে ইসলাম কায়েম নেই সেখানে ব্যক্তি জীবনেও পুরোপুরি মুসলিম হিসেবে জীবন যাপন করা কঠিন। আর আল্লাহ্‌র দ্বীনকে সমাজ জীবনে কায়েম করার কাজ তো জামায়াতবদ্ধভাবে ছাড়া কিছুতেই সম্ভব নয়। তাই আমরা যারা দ্বীন কায়েমের দায়িত্ব পালন করতে চাই তারা জামায়াতবদ্ধ জীবন যাপন করি। আর দ্বীন প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব কিন্তু নফল দায়িত্ব নয়। এটা অত্যাবশ্যকীয় দায়িত্ব। এজন্য আমরা জামায়াতবদ্ধ থাকার জন্য জামায়াতে ইসলামীর সাথে জড়িত হয়ে জামায়াতবদ্ধ থাকি ও দ্বীন কায়েমের দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করি। 

নবী করীম সা. বলেছেন, মেষের পাল থেকে আলাদা একটি মেষকে যেমন নেকড়ে বাঘ সহজেই ধরে খায়, তেমনি জামায়াত থেকে বিচ্ছিন্ন একজন মুসলিম সহজেই শয়তানের খপ্পরে পড়ে যায়। তাই জামায়াতবদ্ধ জীবনই ঈমানের অনিবার্য দাবী। উমার রা. বলেন, জামায়াত (সঙ্ঘবদ্ধতা) ছাড়া ইসলাম হয় না। অতএব জামায়াতের ইসলামের সাথে আমরা জড়িত হয়েছি সংঘবদ্ধ থেকে ইকামাতে দ্বীনের দায়িত্ব পালনের জন্য।   

আর জামায়াতে ইসলামী প্রচলিত অর্থে শুধুমাত্র ধর্মীয়, রাজনৈতিক, সামাজিক বা সাংস্কৃতিক দল নয়। ইসলামে ধর্মীয় জীবনের গুরুত্ব আছে বলেই জামায়াত ধর্মীয় দলের দায়িত্ব পালন করে। রাজনৈতিক শক্তি ছাড়া ইসলামী আইন চালু হতে পারে না বলেই জামায়াত রাজনৈতিক ময়দানে কাজ করে। সমাজ সেবা ও সামাজিক সংশোধনের জোর তাকিদ ইসলাম দিয়েছে বলেই জামায়াত সমাজসেবা ও সমাজ সংস্কারে মনোযোগ দেয়। এ অর্থেই জামায়াতে ইসলামী একটি পূর্ণাঙ্গ ইসলামী আন্দোলন। 

একজন মুসলিমকে অবশ্যই জীবনের সবক্ষেত্রে ইসলামের আদর্শ অনুসরণ করতে হবে। আল্লাহ তায়ালা সূরা বাকারার ২০৮ ও ২০৯ নং আয়াতে বলেন, হে ঈমানদারগণ! তোমরা পুরোপুরি ইসলামে প্রবেশ করো এবং শয়তানের অনুসারী হয়ো না, কেননা সে তোমাদের সুস্পষ্ট দুশমন। তোমাদের কাছে যে সুস্পষ্ট ও দ্ব্যর্থহীন হিদায়াত এসে গেছে তা লাভ করার পরও যদি তোমাদের পদস্খলন ঘটে তাহলে ভালোভাবে জেনে রাখো আল্লাহ‌ মহাপরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময়।

ইসলামকে পরিপূর্ণভাবে না মানাটা গোমরাহী ও পদস্থলন। যারা ইসলামকে পছন্দ অনুযায়ী মানে বা আংশিকভাবে মানে আল্লাহ তায়ালা তাদের প্রতি স্পষ্ট হুমকি দিয়েছেন। আমরা ইসলামকে পরিপূর্ণভাবে মানার জন্য জামায়াতে ইসলামীর সাথে সংযুক্ত হয়েছি। 

মুহাম্মদ সা. বলেছেন, সে ব্যক্তি ততক্ষণ পর্যন্ত ঈমানদার হতে পারবে না, যতক্ষণ না সে নিজের জন্য যা পছন্দ করে, অপর ভাইয়ের জন্যও তা পছন্দ করে। আমরা আমাদের নিজেদের কল্যানের জন্য জামায়াতে ইসলামকে পছন্দ করেছি। তাই আপনাদের জন্যও এই সংগঠনকে সাজেস্ট করছি। 

যারা এখনো জামায়াতে যোগ দেননি তাদেরকে জামায়াতে ইসলামীর সাথে সংযুক্ত হওয়ার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।    
 
জামায়াতকে জানুন। জামায়াতে যোগ দিন। 
#গণসংযোগ_পক্ষ 
#১মার্চ_১৫মার্চ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ