লেখক: বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়
ইছামতী পূর্ব-পশ্চিমবঙ্গের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত একটি নদী। লেখক যেকালের আবহে উপন্যাসটি লিখেছেন, সেকালে নদীটি অখন্ড ভারতবর্ষেরই একটি নদী ছিল। নাম ইছামতী হলেও মূল উপন্যাসে ইছামতীর পরিচয় কিংবা ভূমিকা অতি নগণ্য। উপন্যাসটির মূল প্রেক্ষাপট আবর্তিত হয়েছে ইছামতীর তীরবর্তী গ্রামনিবাসীদের জীবনযাত্রা, নীলচাষের নির্মমতা এবং পতন, বর্ণপ্রথাভিত্তিক সামাজিকতা এবং বেদান্তিক আধ্যাত্মিকতা নিয়ে।
ইছামতী কথাসাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় (১৮৯৪-১৯৫০) রচিত শেষ প্রকাশিত উপন্যাস। ১৯৫০ সালের ১৫ই জানুয়ারি এটি মিত্রালয় প্রকাশনা থেকে সর্বপ্রথম প্রকাশিত হয়। তাঁর মৃত্যুর পর পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই উপন্যাসের জন্য তাকে মরণোত্তর রবীন্দ্র পুরস্কার প্রদান করেন (১৯৫০-৫১)।
বিভূতিভূষণের লেখার অন্যতম বৈশিষ্ট্য তিনি পাঠকমনে তৎকালীন প্রকৃতি ফুটিয়ে তুলতে সিদ্ধহস্ত। তিতপল্লার ঝোপ, পানিতে ভেসে যাওয়া লাল টুকটুকে তেলাকুচা ফল, সোদালিফুলের মিষ্টি সুবাস কিংবা ঘনসবুজ আউশ ধানের মাঠের উপর আষাঢ়ের ঘনশ্যাম মেঘপুঞ্জ- নগণ্য প্রকৃতিপ্রেমীর মনেও যথার্থ চিত্র ফুটিয়ে তোলে। তার প্রতিটি উপন্যাসে যেমন ভারতীয় উপমহাদেশের রূপ-রস-গন্ধ খুজে পাই, এমনটা অন্য কোনো লেখকের বেলায় পাইনি। এই উপন্যাসেও তার ব্যত্যয় ঘটেনি। প্রাকৃতিক উদাহরণের আবেশে নিমেষেই কল্পনায় ভেসে ওঠে সেকালের প্রকৃত চিত্র।
সামাজিক আবহে রচিত উপন্যাসটিতে আধ্যত্মিকতা বিরাজ করেছে প্রবলরূপে। ভবানী বাড়ুয্যের অতীত রোমন্থন, শিশুপুত্রের সাথে কথোপকথন কিংবা রামকানাই কবিরাজের সাথে ইশ্বর নিয়ে আলাপচারিতা- সবকিছুর মাঝেই লেখক জীবনের নানান আধ্যত্মিক প্রশ্নের অবতারণা করেছেন- নানান সত্যকে ফুটিয়ে তুলেছেন। লেখনি আন্দাজে আজ বিভূতিভূষণের আরেকটি রূপ সম্পর্কেও জানা হলো- তিনি ইশ্বরের পরিচয় ও সত্য নিয়ে যথেষ্ট অনুসন্ধিৎসু ছিলেন।
মাঝে দর্শনের কিছু বই পড়তে গিয়ে যা বুঝলাম, শিক্ষক ব্যতীত এই বইগুলো পড়ে দর্শন বোঝা দুরূহ ব্যাপার। বাংলায় লেখা হলেও অর্থোদ্ধার অত্যন্ত জটিল। সে তুলনায় সামাজিক এই উপন্যাসটিতে যতটুকু দর্শনের পরিচয় দেওয়া- সাধারণ মানুষের জন্যে তা অন্তত দর্শনের ফাইন এপেটাইজার (Appetizer) হতে পারে। আমার নিজের জন্যেও মনে করি, দর্শনের মূল উদ্দেশ্য যদি ভাবতে শেখানো হয়- তা এইভাবে হলে বেশ বোধগম্য এবং হজমযোগ্য হয়।
রচিত লেখাটি পড়ে মানুষ যদি কল্পনায় সেইকালকে ভালভাবে অনুভব করতে পারে, তবে আমার মনে হয়- সেটিই লেখকের সবচেয়ে বড় অর্জন। উপন্যাসটিতে গুণটির কমতি নেই, বরং কিছুক্ষেত্রে কিছুটা বেশি মনে হয়েছে।
বিভূতিভূষণের লেখার অন্যতম বৈশিষ্ট্য তিনি পাঠকমনে তৎকালীন প্রকৃতি ফুটিয়ে তুলতে সিদ্ধহস্ত। তিতপল্লার ঝোপ, পানিতে ভেসে যাওয়া লাল টুকটুকে তেলাকুচা ফল, সোদালিফুলের মিষ্টি সুবাস কিংবা ঘনসবুজ আউশ ধানের মাঠের উপর আষাঢ়ের ঘনশ্যাম মেঘপুঞ্জ- নগণ্য প্রকৃতিপ্রেমীর মনেও যথার্থ চিত্র ফুটিয়ে তোলে। তার প্রতিটি উপন্যাসে যেমন ভারতীয় উপমহাদেশের রূপ-রস-গন্ধ খুজে পাই, এমনটা অন্য কোনো লেখকের বেলায় পাইনি। এই উপন্যাসেও তার ব্যত্যয় ঘটেনি। প্রাকৃতিক উদাহরণের আবেশে নিমেষেই কল্পনায় ভেসে ওঠে সেকালের প্রকৃত চিত্র।
সামাজিক আবহে রচিত উপন্যাসটিতে আধ্যত্মিকতা বিরাজ করেছে প্রবলরূপে। ভবানী বাড়ুয্যের অতীত রোমন্থন, শিশুপুত্রের সাথে কথোপকথন কিংবা রামকানাই কবিরাজের সাথে ইশ্বর নিয়ে আলাপচারিতা- সবকিছুর মাঝেই লেখক জীবনের নানান আধ্যত্মিক প্রশ্নের অবতারণা করেছেন- নানান সত্যকে ফুটিয়ে তুলেছেন। লেখনি আন্দাজে আজ বিভূতিভূষণের আরেকটি রূপ সম্পর্কেও জানা হলো- তিনি ইশ্বরের পরিচয় ও সত্য নিয়ে যথেষ্ট অনুসন্ধিৎসু ছিলেন।
মাঝে দর্শনের কিছু বই পড়তে গিয়ে যা বুঝলাম, শিক্ষক ব্যতীত এই বইগুলো পড়ে দর্শন বোঝা দুরূহ ব্যাপার। বাংলায় লেখা হলেও অর্থোদ্ধার অত্যন্ত জটিল। সে তুলনায় সামাজিক এই উপন্যাসটিতে যতটুকু দর্শনের পরিচয় দেওয়া- সাধারণ মানুষের জন্যে তা অন্তত দর্শনের ফাইন এপেটাইজার (Appetizer) হতে পারে। আমার নিজের জন্যেও মনে করি, দর্শনের মূল উদ্দেশ্য যদি ভাবতে শেখানো হয়- তা এইভাবে হলে বেশ বোধগম্য এবং হজমযোগ্য হয়।
রচিত লেখাটি পড়ে মানুষ যদি কল্পনায় সেইকালকে ভালভাবে অনুভব করতে পারে, তবে আমার মনে হয়- সেটিই লেখকের সবচেয়ে বড় অর্জন। উপন্যাসটিতে গুণটির কমতি নেই, বরং কিছুক্ষেত্রে কিছুটা বেশি মনে হয়েছে।
0 মন্তব্যসমূহ
ℹ️ Your Opinion is very important to us, Please Writer your comment below about this Post.....