দুনিয়া নামক এই ট্রেনে উঠে প্রকৃত গন্তব্যের স্থান ভুলে গেছি আমরা। আমরা এই দুনিয়ার চাকচিক্যে মরিয়া হয়ে গেছি আজ। দুনিয়ায় আগমনের প্রকৃত উদ্দেশ্য ভুলে গিয়ে, আমরা আজ ব্যস্ত দুনিয়াবী সফলতার মোহে, আমরা ব্যস্ত দুনিয়ার প্রতিপত্তি অর্জনের প্রতিযোগিতায়। পুরো দিন টা জুড়ে আমাদের পার্থিব কাজে ব্যস্ততার শেষ নেই। আমরা ছুটছি অর্থ অর্জনের নেশায় আর জোগাড় করছি দুনিয়ার পাথেয়। দুনিয়ামুখী আমাদের কে দুনিয়ার প্রকৃত স্বরূপ দেখাতে পারে শাইখ আব্দুল মালিক আল কাসিমের “দুনিয়া এক ধূসর মরীচিকা” বইটি।
প্রিয় নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চোখে কেমন ছিল দুনিয়া? সালাফগণের দুনিয়া নিয়ে ভাবনা কেমন ছিল? কেমন ছিল তাঁদের দুনিয়ার জীবনযাপন? দুনিয়ার প্রকৃত স্বরুপ কেমন? এসকল কিছু সম্পর্কে লেখক সুন্দর, সহজ আর চমৎকারভাবে তুলে ধরেছেন বইটিতে। দুনিয়ার প্রকৃত পরিচয় দিয়ে লেখক খুব সুন্দর করে আমাদের কে ক্ষণস্থায়ী এই দুনিয়ার উদ্দেশ্য কে যেন চোখের সামনেই উন্মোচন করেছেন। সালফে সালেহীনদের দৃষ্টিতে দুনিয়ার এই মোহ থেকে বাঁচার উপায়ও তুলে ধরেছেন বইটিতে। দুনিয়ার প্রতিযোগিতার এই ময়দান থেকে বের হয়ে বান্দাকে রবের সন্তুষ্টি অর্জনের পথ দেখিয়েছেন বিভিন্ন সালাফদের জীবনী তুলে ধরার মাধ্যমে। মুমিন কে বারংবার আহবান করেছেন তার প্রকৃত গন্তব্যের দিকে অগ্রসর হতে। বারবার মুমিনকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন দুনিয়ার ক্ষনস্থায়ীত্বের কথা। দুনিয়ায় প্রতিপত্তিশালী হাজারো মানুষ শূন্য হাতেই ফিরে গেছে রবের নিকটে- কেমন হবে তাদের আফসোসের মাত্রা! দুনিয়াবি আমাদেরকে সতর্ক করে প্রকৃত মুমিনের চিন্তাভাবনাকে ধারণ করার এক সুন্দর বার্তা দিয়েছেন লেখক এই বইটিতে।
কেন পড়বেন
সালাফগণ আমাদের আদর্শ। মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের আদর্শ। তাঁরা যখন দুনিয়ার এই ধোঁকার পথ সম্পর্কে অবগত হয়ে আখিরাতের পাথেয় সংগ্রহের মাধ্যমে সুনিশ্চিত সেই গন্তব্য -জান্নাতের বার্তা পেয়েছিলেন। আমরা কি শয়তানের ফাঁদে পড়ে আমাদের আখিরাত কে জাহান্নামের দিকে ঠেলে দিব? অবশ্যই না। তাহলে আজই আমাদের বইটি পড়ে দুনিয়ার স্বরূপ সম্পর্কে নিজেদের অবগত করতে হবে। এই বইটি মুসলিম উম্মাহের জন্য অতীব জরুরি একটি বই৷ কারণ একটু নিজেকে নিয়ে আর আশেপাশের সবাইকে একনজরে দেখলেই উপলব্ধি করতে পারব কতটা দুনিয়ায় প্রেমে মত্ত আমরা, কতটা ধোঁকায় পড়ে আছি আমরা। যদি আমরা দুনিয়ার প্রকৃত রূপ সম্পর্কে জানতাম নিশ্চয়ই আমাদের পাথেয় ভিন্ন হতো।
ভালো লাগা কিংবা মন্দ লাগা
আরববিশ্বের খ্যাতনামা লেখক শাইখ আব্দুল মালিক আল কাসিমের বই সম্পর্কে নতুন করে কিছু বলার নেই। তাঁর বই নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার। বইটিতে যথাযথ রেফারেন্সের উল্লেখ ছিল যার কারনে নির্ভরযোগ্য লেগেছে বইটিকে। অনুবাদকের সহজ-সরল, চমৎকার অনুবাদ পাঠক কে বইটি সম্পর্কে পড়তে আগ্রহী করে তুলে।
একগুচ্ছ অনুভূতি
বইটি পড়তে গিয়ে সালাফগণের জীবনের সাথে নিজেকে মিলিয়ে বড্ড আফসোস হচ্ছিল। দুনিয়ায় মত্ত থাকার পরিণামের ভয়াবহতা আমাকে বারবার নিজেকে শুধরানোর বার্তা দিচ্ছিলো। আল্লাহ সুবহানা তায়ালা আমাদের সকলকে এই বই পড়ার এবং সালাফদের জীবনের ন্যায় জীবন গড়ার তাওফিক দান করুক। ক্ষনস্থায়ী এই দুনিয়ায় মোহ ত্যাগ করে পথচলা শুরু হোক সুনিশ্চিত গন্তব্যের দিকের সফলতার মোহে।
মুহাম্মদ মিল্লাত হুসাইন
0 মন্তব্যসমূহ
ℹ️ Your Opinion is very important to us, Please Writer your comment below about this Post.....