বুক রিভিউ | বইয়ের নাম অপেক্ষা - লেখক হুমায়ূন আহমেদ

❝প্রকৃতি যাকে দেবার তাকে উজাড় করেই দেয়, যাকে দেবার না তাকে কিছুই দেয় না❞।

ইমনের মা সুরাইয়া সাধারণ বাঙালী নারীদের মতোই গৃহিণী এবং বাবা হাসানুজ্জামান চাকুরীজীবি। ইমনের দাদী আকলিমা বেগম এবং চাচা ফিরোজসহ পাঁচজনের পরিবার। 

গল্পের শুরুর দিকে দেখা যায় সুরাইয়া বেগমের সুখের সংসার। স্বামী হাসানুজ্জামান অফিসে রয়েছে। সুরাইয়া অন্তঃসত্ত্বা, এই সুখবরটা দেয়ার জন্য ফোন করে স্বামীকে কিন্তু কথার মাঝে আসল কথাটাই চাপা পড়ে যায়। সময় টেনেহিঁচড়ে ধরে আনে সন্ধ্যাকে অথচ হাসানুজ্জামান এখনও বাসায় ফিরছে না। 

সূচনা হয় অপেক্ষার। রাতকে বিদায় জানিয়ে ভোর আসে কিন্তু হাসানুজ্জামানের হদিস নেই। দিন যায়, সপ্তাহ যায়, মাস যায় হাসানুজ্জামান আসে না। এদিকে সুরাইয়া বেগমের দৃঢ় বিশ্বাস তার স্বামী একদিন ফিরে আসবে।

পরিবারের নতুন সদস্যের আগমন ঘটে। তার নাম রাখা হয় সুপ্রভা। সুরাইয়া বেগম ছেলে-মেয়েকে নিয়ে বড় ভাই জামিলুর রহমানের বাড়িতে থাকতে শুরু করে। জামিলুর রহমানের তিন সন্তান। দুই ছেলে শোভন ও টোকন এবং মেয়ে মিতু।

সুরাইয়া বেগম পুরোপুরি বদলে যায়। মেজাজ হবে ওঠে খিটখিটে। সন্তানদের সাথে খারাপ আচরণ শুরু করে। একটুতেই রেগে ওঠে। কাজ হিসেবে শুধুই অপেক্ষা..... 

শোভন ও টোকন বড় হয় উচ্ছন্নে যায়। বাবার টাকা চুরি করে তারা ফেরারি।  
অন্যদিকে মিতু ইমনকে পরিচয় গোপন করে চিঠি দেয়, তাকে ভালোবাসতে শুরু করে অথচ ইমন তার থেকে বয়সে ছোটো। 

করুণ দৃশ্য হিসেবে লেখক আমাদের পরিচয় করিয়ে দেয় সুপ্রভার মৃত্যুর সাথে। অজানা কারণে বাড়ির ছাঁদ থেকে পড়ে মা'রা যায় মিষ্টি মেয়েটা। 

উপন্যাসটি পড়ার সময় দুটি প্রশ্ন এসেই যায়,
ইমনের সাথে কি মিতুর বিয়ে হবে? 
সুরাইয়া বেগমের স্বামী কি ফিরে আসবে? 

জনপ্রিয় লেখক হুমায়ুন আহমেদের জনপ্রিয় উপন্যাস “অপেক্ষা”। সুরাইয়া বেগম তার স্বামীর জন্য অধীর আগ্রহে যে দিনগুনে তা নিয়েই এই উপন্যাস। হাসির খোরাক জোগায় ইমন ও মিতুর সম্পর্ক। আবেগপ্রবণ করে দেয় সুপ্রভার মর্মা'ন্তিক মৃ'ত্যু। এছাড়া নজর কাড়ে ইমন ও তার চাচার মধ্যে দারুণ সম্পর্ক।

উপন্যাসটি সুরাইয়া বেগমের সাথে আপনাকেও অপেক্ষা করাবে হাসানুজ্জামানের জন্য। শেষটা জানার জন্য বইটি পড়তে হবে। 





রেটিং :- ৮/১০

✍️ মাসুদ রানা।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ